করা না করা


বেশ কয়েকদিন থেকেই একটা জিনিস নিয়ে ভাবছিলাম। সেটা সংগঠন করা। আমাদের দেশের অনেকেই কী করেন জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেয় "আওয়ামী লীগ করি।" "বিএনপি করি।" "সিপিবি করি।" "জামাত করি।" "হেফাজত করি।" "নারী নির্যাতন করি।" (এটা আসলে নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলন করি) ইত্যাদি। ভাবখানা এই, তাদের জীবনের এসেন্স বিভিন্ন সংগঠন। অথচ এদের অনেকেই লেখক, কবি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি। অন্য দেশের কথা জানি না, তবে না সোভিয়েত ইউনিয়ন, না রাশিয়া - এখানে কাউকে বলতে শুনিনি, আমি সিপিএসইউ করি বা অন্য কোন দল করি। তারা তাদের প্রফেশন কী সেটাই উত্তরে বলেন। তাহলে কী আমাদের দেশে এত মানুষ নিজেদের বিভিন্ন সংগঠনের হোল টাইমার মনে করে নাকি কোন দলের সংশ্লিষ্টতা তাদের পেশাকেও ছাড়িয়ে যায়?

গতকাল এক বন্ধু জিজ্ঞেস করলেন "এই যে "করে ", এর কোন প্রতিশব্দ নাই?" আমি তো অবাক। কেননা আমার যে পোস্টের নীচে তিনি এটা লিখেছেন সেখানে করার মত কিছু ছিল না। জিজ্ঞেস করলে লিখলেন
"আমার এক পরিচিত কে জিজ্ঞেস করলাম -ভাই তুমি কি কর এখন?
উত্তর : আমি এখন আওয়ামী লীগ করি।
এই যে "করা " শব্দটা গ্রাম্যভাষায় শ্রুতিকটু।
তাই বলছিলাম এখানে এই "করা" পরিবর্তে অন্য কোন শব্দ প্রয়োগ করা যায় কীনা?"
তখন আমার মনে হল লোকটি সত্যি কথাই বলেছেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীদের একটা বিরাট অংশ 'সংগঠন করা" বলতে গ্রাম্যভাষার "করা"কেই বোঝায়। তা নাহলে সামাজিক, রাজনৈতিক সব ধরণের সংগঠনের মানের এমন অবনতি ঘটবে কেন? কেন অপসংস্কৃতি, অপরাজনীতি গ্রাস করবে পদ্মার সোনালি ইলিশ।

দুবনা, ২০ মার্চ ২০২১




Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা