বাড়ি নেই

কথা হচ্ছিল কয়েকজন বন্ধুর সাথে। একজনকে প্রশ্ন করা হল
আপনার বাড়ি কোথায়?
আমার বাড়ি নেই।
মানে?
জন্ম বাংলাদেশে। তবে সেখানে আমাকে বলে হিন্দু। ভারতে গেলে বলে বাঙাল। তিরিশ বছর উত্তর আমেরিকায় আছি। ওরা বলে অভিবাসী।
আরেক বন্ধু বলল তাকেও এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। তখন নিজেকে সত্যি হিন্দু মনে হয়। তাহলে কি আমি সাম্প্রদায়িক?
সম্যস্যাটা সারা বিশ্বের সংখ্যালঘুদের। আরেকজন বলল। 
আমি আমার কোম্পানিতে একমাত্র বিদেশি। আমি কেন এই পদে সেটা অনেকেরই পছন্দ হয় না।
এসব শুনে আমার মনে হল সমস্যা আবার সেই শাসক (শোষক) আর শোষিতের। যারা ক্ষমতায় আছে তারা সবসময়ই নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করে। বৃটিশরা ভারতে সংখ্যায় কম ছিল তাই বলে তো নিজেদের হীন মনে করত না। যতদিন কেউ শাসকদের কথায় সায় দেয়, নিজেদের শোষণ করার অধিকার দেয় ততদিন সে অসাম্প্রদায়িক, সমাজে সমাদৃত। কিন্তু যখনই সে নিজের হিস্যা বুঝে পেতে চায়, সে সাম্প্রদায়িক, সমাজের জন্য ক্ষতিকর কেউ। আমাদের সবাই ছোটখাটো একেক জন একনায়ক। যতক্ষণ পর্যন্ত এটা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারব ততক্ষণ পর্যন্ত এসব চলতেই থাকবে, মানুষ একে অন্যের দ্বারা শোষিত হতেই থাকবে। অনেকেরই বাড়ি থাকবে না। বাড়ি কি? এটা একটা জায়গা যেখানে সে আত্মবিশ্বাসের সাথে
নিজের পরিচয় দিতে পারবে। যেখানে তার পরিচয় তাকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করবে না।

কাজানের পথে, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা