প্রশ্ন

গতকাল একটা রিপোর্টে দেখালো আগাথা ক্রিস্টির একটা বিখ্যাত উপন্যাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ শব্দ পশ্চিমা বিশ্বের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সৈনিক শব্দ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। একই কারণে জেমস বন্ডের উপর বিভিন্ন মুভিতে পরিবর্তন আসছে। যেহেতু এটা দেখাল রুশ টিভি তাই এটা সত্য নাকি প্রপাগান্ডা সে ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত নই। ঐদিককার বন্ধুরা ভালো বলতে পারবে। তবে ইতিমধ্যে একই কারণে সাহিত্য ও সিনেমা শিল্পে বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে। তাই ধরে নেয়া যায় ঘটনা মিথ্যে নয়। 

পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় মহাশ্মশান শব্দ গোরস্থান দিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এ নিয়ে যারা বিভিন্ন সময় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল তাদের অনেকেই এখন নিশ্চুপ। মনে হয় তাদের কাছে যা পশ্চিমা বিশ্বের তাই ভালো। 

আমাদের বর্তমান অতীতের প্রতিফলন। যদি একে একে অতীতের সবকিছু অস্বীকার করতে শুরু করি তাতে এক সময় বর্তমানটাই হারিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া কপিরাইট বলে একটা কথা আছে পুঁজিবাদী সমাজে। সেটার কি হবে? 

এই যে পরিবর্তন চলছে সেটা কি সাহিত্য, সংস্কৃতি এসব বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ তাদের উদ্যোগে হচ্ছে? মনে হয় না। মনে হয় এটা করছে অতিবিপ্লবীরা - সৃষ্টি নয় ধ্বংস যাদের জীবনের মূলমন্ত্র। একটা সমাজের চালিকাশক্তি যদি হয় এমন লোকজন সেই সমাজের ভবিষ্যৎ কী? আইডোলজির কারণে একসময় সোভিয়েত ইউনিয়নে জেনেটিক্সসহ বিজ্ঞানের বিভিন্ন আধুনিক শাখা বিকাশ করতে দেয়া হয়নি। ফলাফল - এসব ক্ষেত্রে সমাজের পিছিয়ে যাওয়া। 

মুক্ত চিন্তা মানে যা খুশি তাই ভাবার স্বাধীনতা নয়। সেই ভাবনার পেছনে যদি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা না থাকে, তা যদি মানব জাতির জন্য মঙ্গল বয়ে না আনে তাহলে সেটাকে মুক্ত চিন্তা বলা যায় কি? 
মুক্তির নামে খুনিদের যা খুশি তাই করতে দিল এর জন্য চরম মূল্য দিতে হয় সমাজকে, সাধারণ মানুষকে।

দুবনা, ০২ এপ্রিল ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা