প্রায়োরিটি
সপ্তাহ দেড়েক আগে ক্লাসে যাব হলে তৈরি হচ্ছি এমন সময় কল এল। দেখি সুদীপ রিং করছে। ও আমার কলেজের বন্ধু। অনেক চেষ্টা করেছি ওকে দলে ভেড়াতে। পারিনি। তবে দুই ভিন্ন আদর্শের রাজনীতি করলেও এটা আমাদের সম্পর্কে ক্ষতি করেনি। এখনও দেশে গেলে দেখা করার চেষ্টা করি। সুদীপের মাধ্যমেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রমজান আর আলীমের সাথে। যদিও রাশিয়ায় আসার পর আমার চলাফেরা মূলতঃ রুশ ফেরৎদের সাথে তবে ইদানিং কলেজের বন্ধুদের সাথেও নতুন করে যোগাযোগ হচ্ছে। স্কুলের বন্ধুদের সাথে দেশে গেলে দেখা করি।
কিরে সুদীপ? কী খবর?
ভালো। ঠান্ডু তোমার সাথে কথা বলতে চায়।
আমাদের তুই সম্পর্ক ছিল। ওরা অনেকেই এখন আমাকে প্রমোশন দিয়ে তুমি বলে। যত্তসব।
দে।
রমজান মানে ঠাণ্ডুর সাথে কিছুক্ষণ কথা হল। ও নারায়ণগঞ্জে স্থিত হয়েছে। বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। সুদীপের সাথে কথা প্রসঙ্গে আমার কথা ওঠে। তাই কল করা। ওদের আস্তানা অবশ্য আমাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে। তবে ভাইদের মাধ্যমে আমরা একে অপরের খবর জানার চেষ্টা করি।
গতকাল হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। বাংলাদেশ থেকে। ধরার সাথে সাথে ওদিক থেকে শুনলাম
বন্ধু, আমি ঠান্ডু।
সুদীপের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে ফোন করেছে। এবার বেশ খানিকটা সময় নিয়ে কথা হল। অনেকের খবর নিলাম। আমি খুব একটা কাউকে ফোন করি না। তারপরেও রুশ ফেরৎ বন্ধুদের সাথে মাঝেমধ্যে কথা হত। ইদানিং কালে সেটা কমে গেছে। বিশেষ করে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে। আগে ফেসবুকে রুশ বা সোভিয়েত ফেরৎ অনেকের স্ট্যাটাসের অপেক্ষা করতাম। এখন প্রায়ই পাশ কাটিয়ে চলে যাই। জীবনের ভালোমন্দের সংজ্ঞা গুলো বদলে যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে প্রায়োরিটি। আসলে কে কোথায় পড়াশুনা করলাম, কে কোন দেশের বা কে কোন রাজনীতি করি - ব্যক্তিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ পরস্পরের প্রতি আগ্রহ, শ্রদ্ধাবোধ।
দুবনা, ০৭ জুন ২০২৩
Comments
Post a Comment