বিশ্বাস

প্রায়ই শোনা যায় উপমহাদেশে ধর্মান্ধদের সংখ্যা বাড়ছে। সেই সাথে বাড়ছে সাম্প্রদায়িকতা, ভিন্ন মতের প্রতি অসহিষ্ণুতা। অথচ যেভাবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা তাতে উল্টোটা হবার কথা ছিল। একসময় ইউরোপের ধর্মান্ধ মানুষের সংখ্যা অনেক ছিল। এখন পরিমানে অনেক কম। এরা কিন্তু নাস্তিক নয়, এরাও রবিবার গির্জায় যায়। তবে জীবনের সব ভালোমন্দের দায় দায়িত্ব ঈশ্বরের হাতে ছেড়ে দেয় না। আমাদের দেশগুলোর লোকজন যেহেতু ঈশ্বরের উপর বেশি নির্ভরশীল তাই নিজেদের ইহকাল ও পরকালের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বরকে খুশি করা নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। আর তাদের অনেকের ধারণা ভিন্ন মতের মানুষকে হয় হত্যা করে নয়তো নিজেদের পক্ষে টেনে সেটা করা যায়। এর ফলে বিধর্মী বা ভিন্ন মতের মানুষকে হেনস্তা করা জাতীয় না হলেও গোষ্ঠীর আদর্শে পরিণত হয়। এসবই আমাদের ধর্মান্ধতা থেকে বেরিয়ে আসতে দেয় না। তাছাড়া আমাদের শিক্ষিত জনতাও এক্ষেত্রে নেগেটিভ ভূমিকা পালন করে। যেমন একজন ডাক্তার নিজের মেধা ও দক্ষতা দিয়ে রুগীকে সুস্থ করে সব প্রশংসা ঈশ্বরের কাঁধে চাপিয়ে দেয়। প্রায় প্রতিটি মানুষ নিজের চেষ্টায়, নিজের দক্ষতায় সাফল্য লাভ করলেও তার দায়িত্ব নিজে না নিয়ে ঈশ্বরের কাঁধে চাপিয়ে দেয়। এর ফলে সাধারণ মানুষ আরও বেশি করে ধর্মান্ধ হয়। যদি শিক্ষিত মানুষ সাধারণ মানুষকে মানুষের শক্তির উপর বিশ্বাসী করে না তোলে তবে সে এভাবেই অন্ধবিশ্বাস বুকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দেবে।

দুবনা, ২৬ জুন ২০২৩

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা