রামপালে রামের জমি





কয়েক দিন আগে আমাদের একটা সেমিনার ছিল সন্ত্রাসবাদের উপর। ওটা নিয়ে ভাবতে গিয়ে অনেকগুলো কারণের মধ্যে দেখলাম বর্তমান বিশ্বপরিস্থিতিতে তথ্যের সহজ লভ্যতা আর সেই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের প্রতি বিভিন্ন শ্রেণীর নিস্পৃহতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শক্তিশালী দেশগুলো বা গ্রুপগুলো খবর রটিয়ে ছাপোষা মিডিয়া ব্যবহার করে তাকে ঘটনায় পরিণত করে।  যদিও পরে মিথ্যেটা বেরিয়ে আসে, এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রূপগুলো তাদের কাজ ঠিকই হাসিল করে নেয়। কলিন্স পাওয়েলের সেই টেস্ট-টিউব বা রাশিয়ান অলিম্পিক দলকে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা এসবই প্রমান করে। দেশেও দেখি একই উপায়ে কারো বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধী লেখা প্রকাশের অপরাধে ঘটে চাপাতির রাজনীতি। এসব মাথায় রেখেই একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম

"গাঁধাকে মানুষ বললে গাঁধা মানুষ হয় না, গাঁধাকে গাঁধা বললেই বরং ওর মানুষ হবার একটা সম্ভাবনা থাকে।"

ভেবেছিলাম বন্ধুরা বুঝবে, তবে অনেকেই মিস করেছে।  তাই লিখছি। এখানে একটা কথাই  বলতে চেয়েছিলাম,

"মিথ্যাকে সত্য বললেই তা সত্য হয়ে যায়না, মিথ্যাকে মিথ্যা বললেই বরং সেটা সত্য হয় আর এর মধ্য দিয়েই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা থাকে।"

জানি অনেক কিছুই নির্ভর করে পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে। কোথায় দাঁড়িয়ে দেখছি তার উপর নির্ভর করে সংখ্যাটা ছয় (৬) না নয় (৯)।   কিন্তু সেটা ঘটে যদি কোনো কিছু দেখা হয় সম্পূর্ণ বিপরীত দৃষ্টিকোণ থেকে। তাই কোনো সমস্যার সমাধানে প্রথমে দরকার কমন প্ল্যাটফর্ম খোঁজার। চেষ্টা করা যতদূর সম্ভব পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কোনো কিছু দেখা আর তারপর সিদ্ধান্তে আসা। কিন্তু আমাদের দেশে সেটা মনে হয় সোনার হরিণ। রামপালের ঘটনা তাই বলছে - কোনো পক্ষই মিনিমাম চেষ্টা করছে না অন্যের কাছে আসতে - তাই হাজারো যুক্তি-প্রতিযুক্তির পরেও কোনো আলোচনা হচ্ছে না, যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিয়ে অপেক্ষা করছে দুপক্ষই। কিছুই কি করার নেই? আবারো মাথায় এলো কিছু দুর্বুদ্ধি - তাই দিচ্ছি।

আমার এক সময়ের ধারণা ছিল বাংলাদেশে কোনো প্রশ্নেই সরকারি ও বিরোধী দল একমত হতে পারবে না, তা সে যারাই ক্ষমতায় বা রাজপথে থাকুক।  তবে ইদানিং কালে দেখেছি হিন্দুদের সম্পত্তি দখলে সবাই এককাট্টা। আমার বিশ্বাস - রামপালে রাম নামে কেউ থাকবে না, তা হতেই পারে না। তাই এখন সবার উচিত ওখানে রামের সম্পত্তি বের করা আর তার পর সবাই একজোট হয়ে সেই সম্পত্তিকে ঘিরে কিছু করা। যদি  তখন দুই দল কোন ঐক্য মতে পৌঁছুতে পারে। যদি এর পরেও সুন্দরবনের (পড়েন দুই পক্ষের) ইজ্জত রক্ষা হয়।

দুবনা, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

Comments

Popular posts from this blog

রাজনীতি

২৪ জুনের দিনলিপি

স্মৃতি