চিন্তার স্বাধীনতা

আমরা প্রায়ই মুক্তচিন্তা, চিন্তার স্বাধীনতা এসব কথা বলি। বলি জাতীয়, ধর্মীয় এসব ব্যাপারে স্বাধীনতা যতই থাকুক না কেন চিন্তার স্বাধীনতা না থাকলে এ সবই অর্থহীন। কিন্তু চিন্তার স্বাধীনতা কি আদৌ সম্ভব? আমার ধারণা সেটা অসম্ভব। কারণ চিন্তার স্বাধীনতা আপেক্ষিক। আমাদের চিন্তা অনেকাংশে আমাদের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা দ্বারা সীমাবদ্ধ বা অনুপ্রাণিত। আর সেই শিক্ষা আমরা কোথায় পাই? পরিবারে, সমাজে, স্কুলে, রাস্তায়। অর্থাৎ যা কিছু আমাদের ঘিরে আছে তা থেকে আমরা জীবনে বিভিন্ন ধরণের অভিজ্ঞতা অর্জন করি। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমরা শুধু নিজেরাই পথ চলি না, অন্যদের পথ দেখাই। এভাবেই সমাজে জন্ম নেয় গড়পড়তা মানুষ। এভাবেই সমাজে জন্ম নেয় ভালো মন্দের সংজ্ঞা। সে অর্থে প্রতিটি সমাজই এক একটা ধোলাই মেশিন যেখানে মানুষের মগজ ধোলাই করা হয়। আর মগজ ধোলাই মানে সমাজে প্রচলিত কিছু নিয়মকানুনে অন্ধভাবে বিশ্বাস করানো, সেসব কিছু বেদ বাক্য হিসেবে মেনে নেয়া। অন্য দিকে স্বাধীনতার মূল মন্ত্র হওয়া উচিত কোন কিছুতেই অন্ধভাবে বিশ্বাস না করা কারণ অন্ধ বিশ্বাস তা সে যেকোন আদর্শেই হোক না কেন মৌলবাদের জন্ম দেয়। তাই চিন্তায় স্বাধীন হওয়া বা চিন্তার স্বাধীনতা লাভ করা প্রায় অসম্ভব আর আপেক্ষিক।

মস্কো, ১৯ ডিসেম্বর ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি