অসমাপ্ত আলোচনা

পলিক্লিনিকে বসে ছিলাম ডাক্তারের অপেক্ষায়। ইদানীং কালে প্রেসারটা প্রায়ই অধঃপতিত হচ্ছে। তাই একটু কনসালট করা আর কি। আরও একজন ভদ্রলোক সেখানে। 
হার্টের সমস্যা? 
এই প্রেসারটা একটু ওঠানামা করছে। তেমন কিছু না। 
হ্যাঁ, একে তো হেঁয়ালি আবহাওয়া তার উপর পারিপার্শ্বিক অবস্থা। সব মিলিয়ে প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন। 
এটা হয় আমাদের লোভ থেকে। আমরা সব সময় বেশি বেশি পেতে চাই। 
হ্যাঁ। সবার যদি যথেষ্ট পরিমাণ সবকিছু থাকতো তাহলে হয়তো এত সমস্যা থাকত না। 
সমস্যা কোন কিছু থাকা না থাকার মধ্যে নয়, সমস্যা মানুষের লাগামহীন চাহিদার জন্য। 
কেন এমন ভাবছ? 
আমি এ দেশে ১৯৮৩ সাল থেকে। আমাদের দেশে তখন অধিকাংশ মানুষের মৌলিক জিনিসপত্র পর্যন্ত ছিল না। সেখানে এদেশে সবার অন্তত খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষ, চিকিৎসা এসব ছিল। হয়তো সবকিছু খুব উন্নত মানের ছিল না, তবে ছিল। কিন্তু মানুষ তাতে খুশি ছিল না। আর খুশি ছিল না মূলত সেইসব মানুষ যাদের অনেক ছিল। চাহিদা এমন এক জিনিস যার শেষ নেই। যার যত আছে, সে তত বেশি চায়। আর তারাই একদিন দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলল। সুতরাং শুধুমাত্র ভোগের বস্তু দিয়ে সবাইকে খুশি করা যাবে না, মানুষকে মানসিক ভাবে উন্নত করে গড়ে তুলতে না পারলে, তার নৈতিকতার উন্নয়ন করতে না পারলে সাম্যবাদী সমাজই তৈরি করি আর উন্নত পুঁজিবাদী সমাজই তৈরি করি মানুষে মানুষে হানাহানি থাকবেই, আর সেই সাথে থাকবে হাজার রকমের টেনশন। 
এমন সময় ডাকার বেরিয়ে এসে আমাকে ডাকলেন। আলোচনা তাই এখানেই অসমাপ্ত রয়ে গেল। 
 
দুবনা, ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ 

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি