ছায়া

আমার পুরানো অফিসে একটা পোস্টার ছিল যাতে লেখা ছিল আলেকসান্দর ব্লকের কবিতার দুটো লাইন 

আমরা কি নৃত্যরত ছায়া? 
নাকি আমরাই এই ছায়া ফেলি?  

ইউরোপিয়ান কমিশনের সভাপতি উরসুলা ফন ডের লাইএন কয়েকদিন আগে বলেছিলেন 

রাশিয়া ও ইউক্রেনের এ যুদ্ধে এ পর্যন্ত এক লাখ ইউক্রেন সেনা মারা গেছে। বেসামরিক লোক ২০ হাজার আর ক্ষয়ক্ষতি ৬০০ বিলিয়ন ইউরো। 

এরপরে ইউক্রেন এর প্রতিবাদ করে। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী মৃত সেনাদের সংখ্যা গোপন ব্যাপার। ইউক্রেন ক্ষতিপূরণে বা দেশ গড়ার জন্য ইতিমধ্যে এক ট্রিলিয়ন ডলার দাবি করেছে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে। তাই বুঝতে হবে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। আর সেনাদের হিসাব দিয়েছে ১০ হাজার, যদিও সেপ্টেম্বরে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা সেটা ৬০ - ৭০ হাজার বলেছিল। 

এ থেকে বোঝা যায় কেউ না কেউ মিথ্যা বলছে। রুশরা সরকারি ভাবে এ নিয়ে কিছু বলেনি, তবে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় সেটা ১ লাখের বেশি। 

এটা সবাই বুঝে যে জেলেনস্কি এখানে পুতুল মাত্র, পশ্চিমা বিশ্ব তার হাত দিয়ে ইউক্রেন ও ইউরোপ ধ্বংস করছে। কারণ অ্যাংলো-স্যাক্সদের কাছে ভালো স্লাভিক বলে কিছু নেই তা সে রুশ, ইউক্রেনিয়ান, বেলারুশ, পোলিশ, চেখ, স্লোভাক, সার্ব - যেই হোক। এখন বলে ভালো রুশ মানে মৃত রুশ, রুশরা যখন থাকবে না তখন এটা অন্যদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে। শুধু সময়ের ব্যাপার। এক শত্রু শেষ হলে নতুন শত্রু খুঁজে বের করতে হয়। এটাই নিয়ম। বিশ্বের দেশে দেশে এরকম উদাহরণের অভাব নেই।

যাহোক, ফিরে আসি পোস্টারের কথায়। পশ্চিমা বিশ্ব মনে করে তারাই জিলেনস্কিকে যেমন খুশি তেমনি চালাচ্ছে। আবার এই জেলেনস্কির কথাতেই ইউরোপিয়ান কমিশনের সভাপতি বাধ্য হন তাঁর বক্তব্য ফিরিয়ে নিতে যদিও এ জন্যে ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেছেন। তাই কে কাকে চালাচ্ছে সেটাই এখন প্রশ্ন। এটা অনেকটা বড়লোকের গাড়ির ড্রাইভারের মত। গাড়ি তাঁর, ড্রাইভারও তাঁর। তবে রাস্তায় ড্রাইভারের হাতেই এই বড়লোকের যান ও জান দুটোই। জেলেনস্কির হারানোর কিছু নেই। দেশ গেছে, যাচ্ছে। সে যদি বুঝে পশ্চিমা বিশ্ব তাকে ব্যবহার করে তার দেশ ধ্বংস করছে তাহলে সেই বা কেন পশ্চিমা দেশগুলোকে যুদ্ধে জড়িয়ে তাদের ধ্বংস ডেকে আনবে না। প্রতিহিংসা - খুবই মারাত্মক জিনিস। তাই শেষ পর্যন্ত কে কাকে চালাবে সেটাই দেখার বিষয়।

দুবনা, ০৩ ডিসেম্বর ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি