ভূত

সেদিন একজনের সাথে ফোনালাপ হচ্ছিল।

পশ্চিমা মাধ্যম থেকে প্রায়ই বলে রুশরা নাকি নিজেদের উপর নিজেরাই আক্রমণ করে, পাইপ লাইনে বিস্ফোরণ ঘটায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রকেট আক্রমণ করে। এসব কি সত্য? 

সত্য কি? মানুষ যা বিশ্বাস করে তাইতো? পশ্চিমারা আগে হয়তো এসব নেহায়েৎ প্রোপ্যাগান্ডা ভাবত, এখন মনে হয় বিশ্বাস করে। অনেকটা এরকম। তুমি একজনকে ভয় দেখানোর জন্য ভূত ভূত বলে চিৎকার করলে আর একসময় নিজে নিজের কাল্পনিক ভূতে বিশ্বাস করে ভয় পেয়ে গেলে। এখন ওদের অবস্থা অনেকটা এরকম। সে অর্থে আপনি যা বলছেন সেটা সত্য।

কেন? কিভাবে কল্পনা সত্য হয়?

দেখুন আগে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা ছিল - জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, জনগণের জন্য, জনগণের সরকার। এখন আমরা বাস্তবে কি দেখছি? জনগণের দ্বারা নির্বাচিত, এলিটদের জন্য গণ বিরোধী সরকার। এটাই বর্তমান গণতন্ত্র। এসব দেশে বাস্তবে সেটাই ঘটছে আর এরা নিজেদের গণতন্ত্রী মনে করছে। সেটা ইউরোপের যেকোনো দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে। যেহেতু আমেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের পৃথিবীর শাসক বলে মনে করে আর রাশিয়া তথা অন্যান্য দেশকে তারা নিজেদের প্রজা বা জনগণ বলে মনে করে তাই গণতন্ত্রের আধুনিক সংজ্ঞা অনুযায়ী যেহেতু জনগণ নিজেদের বিরোধী সরকার নির্বাচন করে সেহেতু রাশিয়া কেন নিজের পায়ে নিজে কুড়ুল মারবে না বা মারতে পারবে না - এই যুক্তিতে তারা সব করে। এটা তারা বিশ্বাস করে আর তাই নিজেরা পাইপ লাইন ধ্বংস করে বা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রকেট হামলা করে অনায়াসে সেটা রাশিয়া করছে বলে প্রচার শুধু নয়, বিশ্বাস করতে পারে। তবে ছাগলে সব খায়, আর পাগলে সবই বিশ্বাস করে - এরকম একটা জনশ্রুতি আছে আমাদের দেশে। সাধারণ মানুষ খুব কমই ভুল করে। আর তাই তো তারা এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে এসব নেতাদের ঘাড় থেকে ভূত তাড়াতে রাস্তায় নামছে।

বিঃ দ্রঃ আজ নাকি ভূত চতূর্দশী। সবাইকে ভূতুড়ে শুভেচ্ছা।

দুবনা, ২৩ অক্টোবর ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি