"কৃতজ্ঞঘ্ন"

আমার অনেক বন্ধু, যারা সোভিয়েত ইউনিয়নে পড়াশোনা করেছে, সুযোগ পেলেই বলে রাশিয়া সোভিয়েত ইউনিয়ন নয় তাই সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন অবদানের জন্য রাশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার কোন কারণ নেই। কথাটা মোটেই অযৌক্তিক নয়, অন্ততঃ ফর্মাল দিক থেকে। পুতিন বিরোধিতা করতে গিয়ে এরা প্রায়ই রুশ বিরোধিতা করে ঠিক যেমনটা রবীন্দ্র বিরোধিতা করতে গিয়ে অনেকেই বাংলা বিরোধিতা করে। একই সাথে নিজেরা যে কৃতঘ্ন নয় সেটা প্রকাশের জন্য এরা সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে ভুলে না। তবে ইউক্রেন বা বাল্টিকের দেশগুলোতে যখন তথাকথিত ডিসোভিয়েতিজেশন করতে গিয়ে নির্বিচারে অতীতের সব অস্বীকার করে তখন সেসব গণতন্ত্রের সস দিয়ে মাখিয়ে এরা দিব্যি গিলে ফেলে। রাজনীতি, অর্থনীতির খোলনলচে অনেক আগেই বদলে গেছে। তাই ডিসোভিয়েতিজেশনের নামে লেখক, কবি, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছে এদের স্ট্যাচু ভাঙা আসলে রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা। এদের জাস্টিফাই করা পক্ষান্তরে হিটলারকে জাস্টিফাই করা। আমাদের দেশে রাম রাজত্ব, মদিনা সনদ অনেকটা এরকমই। আমার প্রায়ই জানতে ইচ্ছে করে যদি কেউ বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানের স্মৃতি মুছে ফেলতে বাহান্ন, চুয়ান্ন, বাষট্টি, ঊনসত্তর, একাত্তর মানে যা কিছু পাকিস্তানের কথা মনে করিয়ে দেয় সব বাতিল করতে উদ্যোগী হবে এরা তখন কোন যুক্তি দিয়ে এসব কিছু জাস্টিফাই করবে?

দুবনা, ১৫ অক্টোবর ২০২২

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা