হাড্ডি কাহিনী
ঢাকা ভার্সিটির এক রসায়ন শিক্ষক নাকি মানুষের হাড়ে আরবি হরফ দেখতে পান। রসায়ন শিক্ষক তাই রসের অভাব যে নেই সেটা বোঝাই যাচ্ছে। মানুষের কল্পনা সীমাহীন। তাই হাড়ে শব্দ আবিষ্কার সেটা তার সমস্যা। সোভিয়েত ইউনিয়নে অনেকেই সব কিছুতেই মার্ক্সবাদী ব্যাখ্যা খুঁজতেন। তবে অধিকাংশ শিক্ষক সাবজেক্টটা ঠিকঠাক পড়াতেন। ঝামেলা হত যখন কোন কোন তত্ত্বের মার্ক্সবাদী ব্যাখ্যা সেটাকে প্রতিক্রিয়াশীল বললে সেই তত্ত্বের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি হত। জেনেটিক্স এই নিষেধাজ্ঞায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বিষয়ের একটি। আমাদের দেশের সরকারি হৃদয় হাড়ের আরবি গঠনে কতটুকু উত্তেজিত, কতটুকু আবেগ তাড়িত সেটাই দেখার বিষয়। তবে শিক্ষক যদি নিজের বিষয়ের পরিবর্তে আরবি ক্লাস নিতে শুরু করেন তাহলে তাকে মাদ্রাসায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা করা একান্ত প্রয়োজন। দুষ্ট লোকেরা বলে ঢাকা ভার্সিটি এখন আসলে বৃহৎ মাদ্রাসা। সেটা হলে তিনি স্বস্থানে আছেন। আরও দুটি কথা। আলিফ, বে এসব শব্দের সাথে গ্রিক আলফা, বেটা এসবের মিল দেখে আর আরব বিশ্বের প্রাচীন গ্রিক, চীন, ভারত থেকে অনেক কিছু গ্রহণ করার ইতিহাস থেকে অনেকের ধারণা আরবি বর্ণমালা গ্রিক থেকে নেয়া। তাছাড়া যদি ডিম আর মুরগির মধ্যে কে আগে সেই প্রশ্ন এখনও অমীমাংসিত, মানুষ যে ভাষার আগে জন্ম নিয়েছে এ নিয়ে বিতর্ক আছে বলে জানা নেই। আর তা হলে কোন শব্দের অনুকরণে মানুষ তৈরীর চেয়ে মানুষের আকারে শব্দ লেখা অনেক বেশি যুক্তিযুক্ত। একজন বিজ্ঞানের শিক্ষক কোন সিদ্ধান্তে আসার আগে এসব যুক্তি বিবেচনায় নেবেন সেটা আশা করাই যায়। তা না হলে এই শিক্ষক বিজ্ঞান পড়ানোর জন্য কতটুকু যোগ্য সেটাও ভাবার বিষয়।
দুবনা, ২৫ অক্টোবর ২০২২
Comments
Post a Comment