কার মাথা কার কাঁঠাল
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ইরানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে আর এর পেছনে রয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের লম্বা হাত আছে। অনেকেই এটাকে আমার পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আমার বায়াস মনোভাব হিসেবে দেখতে পারেন, তবে বিগত কয়েক দশকের ঘটনাবলী সেই ইঙ্গিতই দেয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে স্যাঙ্কশন আরোপের পরে পশ্চিমা বিশ্ব উঠেপড়ে লেগেছিল যেখান থেকেই হোক জ্বালানি সংগ্রহ করতে। ভেনেজুয়েলা, ইরান – কোন নামই তখন বাদ পড়েনি। তাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইরানকে নামাতে না পেরে সমস্ত বিষয়টি বাইরে থেকে প্রোভোক করা হয়েছে কিনা সেটাও প্রশ্ন। নিঃসন্দেহে ইরানের মুক্তিকামী মানুষ, বিশেষ করে ইরানের নারীরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতিত, অধিকার বঞ্চিত। এবং যেকোনো স্বাধীন চিন্তার মানুষ তাদের এই লড়াইয়ে সমর্থন জানাবে সেটাই স্বাভাবিক। তবে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের সহযোগিতায় মুক্তির আন্দোলনে নামলে সেখানে নতুন ইরাক বা লিবিয়া জন্ম যে নেবে না সেটা কি কেউ হলফ করে বলতে পারে? আরব বসন্ত এভাবেই শুরু হয়েছিল আর যখন সেই বাসন্তী বাতাসে ভর করে কোন দেশে অপছন্দের সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখনই দেখা গেছে পশ্চিমাদের আসল রূপ। তাই ইরানের মানুষের প্রতি আমাদের নিঃশর্ত সমর্থন যেন নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা সাম্রাজ্যবাদীদের হাতকে শক্তিশালী না করে। ভুলে গেলে চলবে না যে যেভাবে বিভিন্ন সময় মানুষকে উপাসনা করতে ডেকে বিভিন্ন সমাজবিরোধী, সাম্প্রদায়িক কাজে লিপ্ত করা হয় ঠিক একই ভাবে এক স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়ে গোটা জাতিকে গণতান্ত্রিক দৈত্যের দুর্গে রাখা হয় সেই দুর্গ ত্যাগ করার কোন রকম পথ না রেখে। আর এতে পেছনে থাকা দৈত্যদের উদ্দেশ্য হাসিল হয় ঠিকই কিন্তু সাধারণ মানুষ যে অন্ধকারে ছিল সেখানেই থেকে যায়, এমনকি তার চেয়েও কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়। আফগানিস্তান সেটাই প্রমাণ করে।
Comments
Post a Comment