Posts

ব্যুমেরাং

Image
বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্বের পছন্দের প্রার্থী হেরে গেলে তারা এসব প্রার্থীকে উৎসাহিত করেছে নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নিতে। সেটা সারা বিশ্বেই। ইউক্রেনে এভাবেই ইউশেঙ্কো ক্ষমতায় আসে। রাশিয়ায় চেষ্টা হয়েছিল। এখন জর্জিয়ায় সেই চেষ্টা হচ্ছে। সব দেখে মনে হয় এমনকি খোদ আমেরিকায় গণতন্ত্র মানে ডেমোক্র্যাটিক (গণতান্ত্রিক) পার্টির শাসন। তবে চারিদিকে ঢিল ছুঁড়লে এক সময় সেই ঢিল নিজের গায়েও লাগতে পারে। বাজারে গুজব ৫ তারিখের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী পরাজয় স্বীকার নাও করতে পারে। জেতার জন্য এক বার সিস্টেমকে করাপ্ট করলে একদিন সেই সিস্টেম প্রতিপক্ষের হাতেও অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। দুবনা, ০১ নভেম্বর ২০২৪

মালিক

Image
বৃটেনে লেবার সরকার বর্তমানের অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য দায়ী করছে কনজারভেটিভ পার্টিকে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উৎসবের আয়োজন করার জন্য অর্থ দানের পাশাপাশি কিয়েভের ফ্যাসিবাদী সরকারকে (যা কিয়েভ নিজেও লুকায় না) বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে। বাইডেন ও হ্যারিস বর্তমান প্রশাসনের সব ব্যর্থতার দায় ট্রাম্পের ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন। মানবতার বাণী জপে দেশে দেশে সরকার উৎখাতের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করে এই মানুষকেই আবার আমেরিকা অসীম দুর্দশায় ফেলছে। হাসিনা সরকার একদিকে ইসলামী জঙ্গিবাদের সাথে লড়াই করে অন্যদিকে হেফাজতের হেফাজত করেছে। ইউনূস সরকার তাদের ব্যর্থতা হাসিনার কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করে ক্ষমতা দখল করে নিজেরাই এখন স্বৈরাচারী আচরণ করছে। এক কথায় সবাই তাদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করছে পূর্বপুরুষদের আর একই সাথে পরস্পরবিরোধী বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হচ্ছে। কেউ কেউ রিসেট বাটন চাপছে, অন্যেরা তাদের সেই ইচ্ছেটা বহু কষ্টে চেপে রাখছে। মানুষের মত এত পরস্পরবিরোধী জীব কি আর আছে? যতদূর জানি দলবদ্ধ যেকোনো জীব দলের সবচেয়ে শক্ত

দেউলিয়াপনা

Image
আজকাল পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত গণতন্ত্রের একটিই অর্থ - ভোটের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থীর বিজয়। ভোটের স্বচ্ছতা, অস্বচ্ছতা কোন বিষয় নয়। ইউক্রেনে নিজেদের প্রার্থী ইউশেঙ্কোকে বিজয়ী করে আনতে সমস্ত রীতিনীতি লঙ্ঘন করে তৃতীয় বার ভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। ইনুকোভিচকে প্রতিবাদ মিছিলের উপর পুলিশের হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রেখে অগণতান্ত্রিক ভাবে প্রতিপক্ষকে ক্ষমতায় আনলেও পরে তাদের দ্বারাই দনবাসে সাধারণ মানুষের উপর কামান ও বিমান হামলা করা হয়েছিল। জর্জিয়ায় এভাবেই সাকাশভিলি প্রতিপক্ষকে দমন করেছিল। এবারের জর্জিয়ায় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ভাবে হয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সেই রায় দিলেও পশ্চিমা বিশ্ব ভোটের ফলাফলকে স্বীকৃতি না দেবার সু্যোগ খুঁজছে যদিও সবাই জানত যেকোন নিরপেক্ষ নির্বাচনে সরকারি দল জিতবে। তাই জনমত নয়, নিজেদের স্বার্থ - এটাই পশ্চিমা বিশ্বের গণতন্ত্র স্বীকার করা না করার একমাত্র ক্রাইটেরিয়া। জনগণ বিপক্ষে ভোট দিলে তারা ভাবে জনগণ যথাযথ গণতন্ত্রীমনা নয়। আমাদের দেশ ব্যতিক্রম নয়। বিগত কয়েক দশকের ঘটনাবলী একটাই শিক্ষা দেয় - যারা যত বেশি গণতন্ত্রের কথা বলে অগণতান্ত্রিক পথে ক্ষমতায

স্বাধীনতা

Image
ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, মিশর যেসব দেশই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে তারাই পশ্চিমা বিশ্বের বিরাগভাজন হয়েছে। বাংলাদেশও বাদ যায়নি। স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, মানবতা ইত্যাদি গাল ভরা বুলি যতই আওড়াক না কেন অন্যদের স্বাধীনতায় এরা বিশ্বাস করে না। এক সময় এরাই খৃষ্টান ধর্মের বাণী দিয়ে সারা বিশ্বকে পদানত করেছিল, আজ ঠিক সেটাই করছে মানবতার ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়ে। শুধু বোতল বদল হয়েছে, মদ আগেরটাই আছে। এটা ঠিক তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই স্বৈরাচারী ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে কিন্তু সমস্যা এসব দেশের নেতাদের স্বৈরাচারী আচরণ নয়, সমস্যা এদের পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নত না হওয়া। ইতিহাস বলে এরা হাজার গুণ স্বৈরাচারী কিন্তু অনুগত যে কাউকে সাদরে গ্রহণ করে এমনকি প্রয়োজনে আল কায়েদা, ইসলামিক স্টেটস এর মত প্রচন্ড অমানবিক সংগঠন গড়ে তুলে। তাই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই যদি করতেই হয় নিজেদের শক্তিতে করুন, এদের সাহায্য নিয়ে নয়। তাতে এক স্বৈরাচারের পরিবর্তে আরেক স্বৈরাচার আসবে। সত্যিকারের জনপ্রিয় সরকার এদের দরকার নেই, কারণ এসব সরকার দেশের স্বার্থে কাজ করে, তাকে ম্যানিপুলেট করা যায় না। মস্কো, ২৮ অক্টোব

আইন

Image
একসময় অনেকেই ভোল্টেয়ারের উদ্ধৃতি দিয়ে ফেসবুকে লিখত "তোমার সাথে আমি একমত না হতে পারি, কিন্তু তোমার কথা বলার অধিকার রক্ষায় আমি জীবন দিতেও পিছপা হব না।" এখন অবশ্য কেউ সেসব বলে না। এই যে ছাত্র লীগ নিষিদ্ধ হল তার পরেও সবাই নীরব। ছাত্র লীগ অনেক অপরাধে অপরাধী সে ব্যাপারে কোন দ্বিধা নেই কিন্তু এভাবে একটা সংগঠন নিষিদ্ধ করা আসলে অন্যান্য সংগঠন নিষিদ্ধ করার স্টেজ রিহার্সাল। দেশে যদি জরুরি অবস্থা জারি না থাকে তাহলে কোন সংগঠন নিষিদ্ধ করার আইনি পদ্ধতি আছে। চাইলাম আর নিষিদ্ধ করলাম এটা তো স্বৈরাচার। আজ আপনারা যারা এটা নীরবে সয়ে গেলেন সেই বিএনপি, সিপিবি, ছাত্র দল, ছাত্র ইউনিয়ন ইত্যাদি কিন্তু তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী, পরবর্তী টার্গেট। যখন আপনাদের উপর নিষেধাজ্ঞা নেমে আসবে তখন কিন্তু আর আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকবে না। অনেক সময় তেতো ওষুধ খেতে হয়। সেটা ভেবেই না হয় এভাবে কোন সংগঠন নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদ করুন। এতে অন্তত বিবেকের কাছে সৎ থাকতে পারবেন আর কেন আপনাকে নিষিদ্ধ করা হল এই দাবি তুলে আইনি লড়াইয়ের চেষ্টা করতে পারবেন। একবার বেআইনি ভাবে কোন কিছু করার সুযোগ সৃষ্টি হলে তা বারবার ব্যবহৃত

প্রায়োরিটি

Image
 আমি বরাবরই ভালো বিশেষজ্ঞদের পছন্দ করি তা সে যে বিষয়েই হোক না কেন। একজন ভালো ছাত্র, একজন ভালো শিক্ষক, এক জন ভালো বিজ্ঞানী বা একজন ভালো কৃষক, মাঝি, গায়ক - যেই হোক। যদিও সব ক্ষেত্রে সত্য নয়, তারপরেও আমার ধারণা ভালো বিশেষজ্ঞ মানেই তিনি নিজের কাজের প্রতি যত্নশীল, কর্তব্যপরায়ণ। আর যিনি যত্নশীল তাঁর পক্ষে ভালো মানুষ হবার সম্ভাবনা বেশি। সেই হিসেবে ডঃ ইউনুসের উপর এই বিশ্বাস ছিল যে তিনি শুধু আইনের শাসন নয়, সামাজিক ন্যায়পরায়ণতার কথা মাথায় রেখে দেশ চালানোর চেষ্টা করবেন। স্বাভাবিক অবস্থায় আমি চাইতাম দায়িত্ব নেবার আগে তিনি তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা কর ফাঁকির মামলা আইনের পথে মোকাবেলা করবেন। কারণ তিনি যদি সত্যিই অপরাধী না হন তাহলে এখন তাঁর ভয়ের কারণ ছিল না। কিন্তু তিনি মনে হয় এখানে রাজনীতির আশ্রয় নিয়েছেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় সেটা উপেক্ষা করা যায় কেননা শেখ হাসিনা তাঁর প্রতি সব সময়ই বিরূপ ছিলেন বিধায় মামলা রাজনৈতিক কারণেও হতে পারে। আগস্টের আন্দোলনের একটা বড় কারণ ছিল দুর্নীতি, অর্থ পাচার ইত্যাদি। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে গ্রামীন ব্যাংককে ৫ বছরের জন্য কর দান থেকে অ

স্বৈরাচার

Image
রাজনৈতিক, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তৎপর ও সফল প্রগতিশীল অনেক মানুষের ২০২৪ এর বিপ্লবে ভূমিকা আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছিল যে অন্ধ বিশ্বাসের মত অন্ধ ঘৃণাও ধ্বংসের পথ সুগম করতে পারে। তারপরেও আশা ছিল ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেবে। সোভিয়েত ইউনিয়নে মানুষ ছিল অনেক বেশি শিক্ষিত, দেশ শিল্পে, শিক্ষা দীক্ষায় অনেক বেশি উন্নত। কিন্তু অল্প কিছু মানুষ অল্প কিছু সময়ের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়নের সব অর্জনকে নাই করে দিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বার বার বাংলাদেশ সম্পর্কে আশংকার কথা লিখেছিলাম। এখন যে বিভিন্ন দিবস বাতিল হচ্ছে এটা ১৯৯১ পরবর্তী সময়ে সোভিয়েত ইতিহাস মুছে দেবার মত - শুধু ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। সেখানেও অর্থনীতিবিদরা ছিল প্রধান ভূমিকায় আর এসব হয়েছিল আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে। ১৭ বছর লেগেছিল ঘুরে দাঁড়াতে। এখনও সেটা সম্পন্ন হয়নি। তখন এদেশের মানুষ পাছে কমিউনিস্ট বলে গালি দেয় এই ভয়ে মুখ খোলে নাই। দেশে ভয় পায় পাছে স্বৈরাচারের দোসর বলে। কিন্তু না দেশে, না এখানে কোথাও জনগণ এদের ইতিহাস পরিবর্তনের ম্যান্ডেট দেয়নি, দিয়েছিল দুর্নীতি দমন ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্ট