Posts

অফ লাইন

Image
আজ মানে ০৭ জুলাই ২০২৫ মস্কোর বাউমান ইউনিভার্সিটিতে শুরু হল দ্বিবার্ষিক সম্মেলন - ফিজিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশন অফ রিলেটিভিটি থিওরি । আমি গত ২০২৩ সালে প্রথমবারের মত এতে অংশগ্রহণ করি। সেবার প্রফেসর বিভূদুত্য মিশ্র আর প্রফেসর সুনীল ত্রিপাঠীর সাথে আলাপ। বিভূ আসছে জানতাম। ভেবেছিলাম সুনীলের সাথেও দেখা হবে। ওরা দু'জনেই উড়িষ্যা থেকে। সকালে বাউমান ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে বিভূর সাথে দেখা। আরও জনা দুয়েক ভারতীয় দেখে বুঝলাম ওর ছাত্র। এমন সময় হঠাৎ একজন এসেছে জিজ্ঞেস করলেন  - কেমন আছেন? বাংলায় কথা শুনে প্রচন্ড অবাক হলাম। - ভালো। কিন্তু আপনাকে তো চিনতে পারলাম না। - আমি রঞ্জন শর্মা। - ও, তাই বলুন। ফেসবুকে আলাপ। আমার ধারণা ছিল উনি সোভিয়েত ফেরৎ। ভুল ধারণা। উনি ইন্ডিয়ায় লেখাপড়া করেছেন। সাউথ আফ্রিকায় অনেক দিন কাজ করেছেন। দুই দেশেই আমাদের অনেক কমন পরিচিত। মাত্র কয়েক দিন আগেও আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন অথচ বলেননি যে মস্কো আসছেন। জানালেন আমরা লেখা প্রায়ই পড়েন আর ছবি দেখেন। রোগাপাতলা হবার এই এক সমস্যা - গর্বে বুকের ছাতি ফুলে ওঠে না। এখন শিলিগুড়ি আছেন। আরও দুজন প্রফেসরের সাথে আলাপ করিয়ে দিল...

প্রশ্ন

Image
দেশের ক্রান্তিকালে মানুষ রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ভিন দেশের শান্তি রক্ষার অজুহাতে নিজ দেশের মানুষকে অশান্তির আগুনে জ্বলতে দেখেও নিশ্চিন্তে বাঁশি বাজাচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দেখছে কীভাবে দেশটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জয় নাকি মৌলবাদের কাছে পরাজয় ঠিক কোনটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক সেই বিষয়ে নিশ্চিত না হতে পারা এখন তথাকথিত একাত্তরের পক্ষের অবশিষ্ট শক্তির প্রধান সমস্যা। কী সামরিক, কী রাজনৈতিক, কী বুদ্ধিবৃত্তিক - সব সেক্টরে এমন নপুংশক, দিশেহারা ও অদক্ষ নেতৃত্ব বাঙালি জাতির জীবনে কখনো এসেছে বলে মনে হয় না। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুবর্ণ সুযোগ এরা পেয়েছিল মবের কাছে সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলার নজির বিশ্বের কোথাও আছে কি? দুবনা, ০৫ জুলাই ২০২৫

স্বার্থ

Image
রাশিয়ার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া ও ভিয়েতনামের আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে কিছু স্ট্যাটাস দেখলাম। হ্যাঁ, মস্কোর আফগান দূতাবাসে আগের তিনরঙা পতাকার পরিবর্তে নতুন পতাকা উড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন কথা হবে। তবে আমার মনে হয় বিভিন্ন দেশ যদি অন্যান্য দেশের গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করে তাহলে পৃথিবীর অনেক সমস্যারই সমাধান হয়। গ্রাউন্ড রিয়ালিটি একেক দেশে একেক রকম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা স্থানীয় জনগণের দ্বারা সমর্থিত। অন্য দেশ সেটা না মানলে একটাই উপায় থাকে - সরকার পরিবর্তন। কিন্তু প্রায়ই সেটা হয় রক্তক্ষয়ী। অন্যদিকে সেই সরকারকে স্বীকৃতি না দিলে কূটনৈতিক কাজকর্ম চলে না, তাতে আর যাই হোক সে দেশের সাধারণ মানুষের কোন লাভ হয় না। কুটনীতিও চাপ সৃষ্টি করার একটি মাধ্যম। কিন্তু কথাই যদি না বলি কথা শুনাব কীভাবে? তালিবানের কাজকর্ম সমর্থনযোগ্য নয়, কিন্তু তার সংশোধনের জন্য হলেও যোগাযোগ দরকার। এই স্বীকৃতি আফগান জনগণের জন্য কোন উপকার বয়ে আনবে কিনা সেটা বলা কষ্ট, তবে চেষ্টা তো করা যাবে। হামাজকে স্বীকৃতি দিয়েছিল বলেই রাশিয়া সেখান থেকে নিজেদের লোকদের বের করে আনতে পেরেছে, ...

ক্ষমতা

Image
গতকাল "তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি" নামে আনোয়ার ভাইয়ের (সাবেক ছাত্র নেতা আনোয়ারুল হক) একটি লেখা পড়লাম। তিনি সেখানে যথার্থ ভাবেই বৃহত্তর বাম ঐক্যের জন্য ডাক দিয়েছেন। সেই লেখা পড়ে আমার প্রতিক্রিয়া এরকম ঘর ভাঙে যখন ঘরের মানুষের মধ্যে বোঝাপড়া থাকে না। দলও একই কারণে ভাঙে। যেখানে এক দলের মানুষই নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না সেখানে বিভিন্ন দলের লোক পারবে কিভাবে? হ্যাঁ, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক হয়েছিল কারণ শেখ হাসিনাকে সবাই শত্রু মনে করত। আর শত্রুর শত্রু বন্ধু এ তত্ত্ব তো বাজারে নতুন নয়। তাই এক্ষেত্রে এমনকি শয়তানের সাথেও আঁতাত করা যায়, করে। এটা রাজনীতিতে যেমন সত্য, তেমনি সত্য সমাজে। মানে শত্রুকে যেকোনো ভাবে পরাজিত করা জায়েজ। শত্রু নিশ্চিহ্ন করার জন্য, সেখানে পাবার কিছু নেই। কিন্তু যখন গড়ার প্রশ্ন আসে তখন সামনে কোন না কোন লক্ষ্য থাকে। লক্ষ্য কোন বিমূর্ত বিষয় নয়। এখানে থাকে ক্ষমতা ও সম্পদের হাতছানি। তখন কোন পথে এই লক্ষ্য অর্জন করব, কে এর নেতৃত্ব দেবে ইত্যাদি প্রশ্ন সামনে চলে আসে। তাই অবজেক্টিভ রিজন ও রিয়ালিটি থাকা সত্ত্বেও বাম ঐক্য অধরাই থেকে গেছে। তাছাড়া এই ঐক্যের জন্...

কয়লা

Image
একটা কথা আছে - কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। আমাদের তাই যত পরীক্ষা নিরীক্ষা, যত বিপ্লবের মধ্য দিয়েই নিয়ে যাওয়া হোক নে কেন - দিন শেষে আমরা বাংলাদেশিই থেকে যাই। শুধু নাম বদলায়, গালি বদলায়। আগে সরকারের সমালোচনা করলে বলত রাজাকার, এখন বলে স্বৈরাচারের দোসর। কিন্তু এসব বলে যে আসল সমস্যার সমাধান হয় না সেটা কেউ বোঝে না বা বুঝতে চায় না। কেউ যদি বলে আগেই ভালো ছিলাম তার অর্থ এই নয় যে সে স্বৈরাচারের সমর্থক। এর অর্থ এখন যারা ক্ষমতায় তারা মানুষের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই মানুষকে ট্যাগ করে নয়, তাদের সমস্যা সমাধান, যে স্বপ্ন নিয়ে তারা অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল সেই স্বপ্ন পূরণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়েই শুধু জনগণের আস্থা অর্জন করা যায়। মনে রাখা দরকার উপদেষ্টা বা কিছু উচ্চাভিলাষী রাজনৈতিক নেতা কর্মীর ক্ষমতার খায়েস মেটানোর জন্য মানুষ রাস্তায় নামেনি, তারা রাস্তায় নেমেছিল নিজেদের জন্য ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে। আজকাল উন্নত বিশ্বে বসবাসরত ও নিজেদের উচ্চ শিক্ষিত বলে দাবিদার অনেককেই দেখি দেশে কাউকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে ঘোরানো সহ বিভিন্ন বিচার বহির্ভূত কারকলাপের সাফাই গাইতে। কেউ অপর...

স্বাবলম্বী

Image
একান্নবর্তী পরিবার ভিন্ন হওয়া সবসময়ই ট্র্যাজেডি, তারপরেও পরিবার ভেঙে যায়। ভাঙে ভবিষ্যত নিয়ে বিভিন্ন সদস্যের বিভিন্ন ধারণা থেকে। আগে অধিকাংশ মানুষ নিজ নিজ এলাকার বাইরে নিজেকে নিয়ে তেমন ভাবতে পারত না, ফলে ভিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া ছিল বেশ বেদনাদায়ক। এখন অধিকাংশ মানুষ কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় থাকে তাই ফর্মালি ভিন্ন হবার আগেই ভিন্ন হয়ে যায়। তারপরেও সম্পত্তি নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বিতর্ক বা মনোমালিন্য হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমনকি নিজে উদ্যোগী হয়ে ভিন্ন হলেও যে পৈত্রিক ভিটা ছেড়ে চলে যায় সে নিজেকে বঞ্চিত মনে করে। দেশ ভাগের ক্ষেত্রেও মনে হয় এটাই ঘটে। ভারত বিভক্ত হয়েছিল ধর্মীয় কারণে। যারা পাকিস্তান চেয়েছিল তারা সব জেনেই দিল্লির মসনদ ত্যাগ করেছিল। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে নতুন দেশ গড়েছিল অধিকাংশ মানুষের কাছে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে। ফল স্বরূপ নিজেদের ব্যর্থতার জন্য সব দায় তারা চাপাতে চাইছে ভারতের ঘাড়ে। ভারতের মানুষ যে দুধে ভাতে আছে তাও না। সেখানেও নিজেদের ব্যর্থতার দায় আংশিক ভাবে চাপাচ্ছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের উপর। মজার ব্যাপার হল স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদে...

তোতা ও হাঁস

Image
অনেক আগে একসময় আমার খুব থুথু ফেলার বদভ্যাস ছিল। একদিন গ্রামের হাটখোলায় বসে বসে তোতার চাটাই বানানো দেখছি আর থুথু ফেলছি। - বিজন, তোমার মুখ তো দেখি হাঁসের পাছার মত। হাঁস যেমন একটু পর পর হাগে তুমি ঠিক সেভাবেই থুথু ফেলে যাচ্ছ। তোতার ঐ কথা ছিল ধন্বন্তরী ওষুধের মত। এরপর থুথু ফেলতে গেলেই তোতার মুখ আর হংসের পশ্চাৎদেশ চোখের সামনে ভেসে উঠতে।ওতেই আমার থুথু ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। নির্বাচন ও আওয়ামী নিষিদ্ধ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা দেখছি দুই দিন পর পর কথা বদলাচ্ছেন। তাই কেন যেন তোতার কথা আর হাঁসের পশ্চাৎদেশের কথা মনে পড়ল। উনিও হয়তোবা একই রোগের রুগী। মস্কো, ২৩ জুন ২০২৫