Posts

লিগেসি

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে ইউক্রেন ছিল সবচেয়ে উন্নত প্রজাতন্ত্র গুলোর একটি যা বিদ্যুতায়নে ছিল অন্য যেকোনো রিপাবলিকের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর। লেনিন বলেছিলেন কমিউনিজম হল সোভিয়েত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও বিদ্যুতায়ন। ইউক্রেন নিজে ধারাবাহিকভাবে সোভিয়েত উত্তরাধিকার ধ্বংস করেছে। কমিউনিস্ট ও সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্তি পাওয়া ছিল তাদের মূল মন্ত্র। সোভিয়েত ব্যবস্থা, লেনিনের স্ট্যাচু এসব ভাঙলেও সোভিয়েত আমলে সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও শ্রমে তৈরি করা কারখানা ও স্থাপনা ভাঙেনি। অস্থাবর জিনিস জলের দামে বিদেশীদের কাছে বিক্রি করেছে। স্থাবর সম্পত্তি নিজেরাই ব্যবহার করেছে। হয়তো ভাঙার সামর্থ্য ছিল না বলে। এখন রাশিয়া তাদের বেসামরিক ও আবাসিক এলাকা আক্রমণের পাল্টা জবাবে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করে ইউক্রেনকে সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্ত করছে। উল্লেখ্য যে ইউক্রেনের সমস্ত শিল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, শহর বন্দর গড়ে উঠেছিল রুশ ও সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও কায়িক পরিশ্রমে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এসব জিনিস প্রচন্ড শক্ত ভিত্তির উপর গড়ে তুলেছিল বলেই রাশিয়াকে আজ এত শক্তি ক্ষয় করতে হচ্ছে এসব ধ্বংস করতে। ইউক্রেন বরাবরই চেয...

প্রশ্ন

Image
পদার্থবিদ্যায় আমরা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে তার বিবর্তনের নিয়ম সূত্র বদ্ধ করি এবং সেই সূত্র ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে প্রকৃতির গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করি। তবে তত্ত্ব ও পর্যবেক্ষণের এই যুগলবন্দীতে শেষ হাসি হাসে পর্যবেক্ষণ। তাই বলা হয় তত্ত্ব প্রমাণ করা যায় না, তাকে ভুল প্রমাণ করা যায়। তাই যদি কোন তত্ত্ব নতুন পর্যবেক্ষণের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাহলে পর্যবেক্ষণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন কর হয়। সামাজিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে সেটা কম দেখা যায়। হয় ডগমা না হয় সুবিধাবাদ। ধর্ম ডগমার উপর ভর করে চলে। এমনকি নিজেদের বৈজ্ঞানিক ধারার অনুসারী বলে দাবি করলেও বামপন্থীরা প্রায়ই মার্ক্সবাদকে ধর্মের মতই ডগমায় পরিণত করে। নতুন বাস্তবতার সাথে নিজেদের বদলাতে গিয়ে অনেকেই সুবিধাবাদী হয়। সেই অর্থে গোল্ডেন রেশিও প্রায় অনুপস্থিত বর্তমান সামাজিক বিজ্ঞানে। আগে দার্শনিকরা সমাজকে ব্যাখ্যা করত, এখন সময় এসেছে সমাজ পরিবর্তনের - এই রণকৌশলই কি মার্ক্সবাদীদের মার্ক্সবাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী করে তোলে? এ বিষয়ে দেশের মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিকদের মতামত জানতে ইচ্ছে করছে। মস্কোর পথে, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ...

ন্যায় অন্যায়

Image
বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের কান্ডকারখানা দেখে মনে হয় তাদের ধারণা মানুষ সবচেয়ে সুস্থ থাকে জেলে। কারণ তাদের কাজকর্ম অনেকটা রুগীকে ওষুধ না দিয়ে তার চারিদিকে প্রাচীর তুলে দেবার মত।   এবার জার্মানির বিভিন্ন শহরে ক্রিসমাস মেলা বন্ধ কারণ সেটা অনেক শরণার্থীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে আর সবচেয়ে বড় কথা মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পয়সা নেই। যদিও যাদের কারণে মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হয় তাদের খাওয়ানো পড়ানোর পয়সা বা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হাত দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার পয়সার অভাব হয়না। আচ্ছা একদল মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিতে গিয়ে আরেক দল মানুষের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুন্ন করা কি কোন এক ধর্মকে পোষণ করা নয়? তাছাড়া এসব মেলা এখন যতটা না ধর্মীয় তারচেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। আজ যাদের অনুভুতিকে সম্মান করে ক্রিস্টমাস মেলা বন্ধ করা হচ্ছে কাল যদি তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে বার্লিন বিয়ারফেস্ট বা গেই প্যারেড বন্ধ করার দাবি জানায় তখন কি এরা সেটা মানবে? ঐতিহ্য মানেই সেকেলে নয়, নতুন সবকিছু আধুনিক নয়। আমার ধারণা যারা সত্যিকার অর্থেই ইউরোপকে ভালবেসে সেখানে যায় তারা ...

অক্টোবর বিপ্লব

Image
০৭ নভেম্বর এলেই মনে পড়ে শীতের সকালে রেড স্কয়ারে মিছিলে যাবার কথা। এদিন সামরিক মহড়া থাকত না। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, শিক্ষক আর সাধারণ মানুষ মিছিল করে চলে যেত। সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ লেনিনের সমাধিসৌধে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াতেন জনতার উদ্দেশ্যে।  সেই সময়ের অনেক কিছু সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে। সেটা অবশ্য আদর্শের ভিত্তি নাড়ায়নি বরং পরবর্তী ঘটনাবলী একটি সংশোধিত ও গণতান্ত্রিক সোভিয়েত ব্যবস্থার প্রতি আস্থা তৈরি করেছে যেখানে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি থাকবে গণতান্ত্রিক ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা।  সবাইকে অক্টোবর বিপ্লবের শুভেচ্ছা! দুবনা, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

ভবিষ্যত?

Image
মামদানি নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও অনেকেই তাঁর ধর্মীয় পরিচয় সামনে আনার চেষ্টা করছে তবে আমার ধারণা তিনি জিতেছেন তার রাজনীতির কারণে। সেই রাজনীতি যা সাধারণ মানুষের স্বার্থে লড়াই করার কথা বলে। এটা ঠিক একদল লোক তার মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করবে নিজেরা ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হবার জন্য আবার আরেক দল লোক মুসলিম পরিচয় সামনে এনে তাঁর বিরোধিতা করবে। হয়তো দুই দলের কাছেই এর পেছনে যুক্তি আছে। তবে দ্বিতীয় দলের উচিত হবে তাঁকে মুসলিম হিসেবে না দেখে একজন ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে গড়ে উথতে সাহায্য করা। কেননা একমাত্র এভাবেই তারা তাঁকে মৌলবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে। আমি অস্বীকার করব না যে তিনি শুধু মুসলিম পরিচয়ের জন্যেও অনেকের ভোট পেয়েছেন (এবং অনেকের ভোট পাননি)। এখন তিনি নির্বাচিত মেয়র - দলমত নির্বিশেষে সবার। এতদিন তাঁর দায়িত্ব ছিল আপনাদের ভোট পাবার, এ জন্যে তিনি অন্যান্য পরিচয়ের সাথে মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করলে করতেও পারেন। এখন আপনাদের দায়িত্ব তাঁকে নিজের করে নেবার যাতে তিনি সত্যিকার অর্থেই দলমত ধর্ম নির্বিশেষে সবার হতে পারেন। বারাক ওবামা যখন প্রেসিডে...

উপলব্ধি

Image
গত ২৩ অক্টোবর লিখেছিলাম "যদি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বিশাল কোন প্রাণীর সাথে ও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম জোটের মুক্তিযোদ্ধাদের বাঘের সাথে তুলনা করি তাহলে দেখব বিজয়ের পর থেকেই তারা ট্রফি দখলের লড়াইয়ে ব্যস্ত আর এই সুযোগে জামায়াত শিবির ও অন্যান্য স্বাধীনতা বিরোধী হায়েনার দল শিকার নিয়ে অনেক আগেই ভেগে পড়েছে - প্রথমে দখল করেছে অর্থনীতি, এরপর শিক্ষাঙ্গন ও সমাজ বিশেষ করে মহিলাদের এবং সবশেষে রাজনীতির মাঠ।"  এক সপ্তাহের বেশি ফেসবুকে প্রবেশাধিকার না থাকায় তখন পোস্ট করতে পারিনি। আজ ভোরে আবার এখানে আসতে পেরে অনেক নতুন খবর পেলাম। যেমন ২৪ এর পটপরিবর্তনের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জুলাই সনদ নিয়ে দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। এতে কিছু জিনিস নতুন করে উপলব্ধি করলাম।  বাংলাদেশে কোন দলই দেশকে জননী জন্মভূমি মনে করে না আর তাই সন্তানের মত দেশের মঙ্গলের জন্য নিজেকে বা নিজেদের উৎসর্গ করে না।  লড়াই করেই হোক আর ষড়যন্ত্র বা ছলচাতুরি করেই হোক ক্ষমতায় একবার যেতে পারলে দেশটাকে শত্রুর হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া ট্রফি বলে মনে করে আর দেশকে গণিমতের মালের মত ব্যবহার করে। গণি...

নব্য সর্বহারা

Image
ইউরোপ আজ উন্মাদের মত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে। কি হতে পারে সে চিন্তা না করেই রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই মুহূর্তে সে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের হাত দিয়ে তবে আগামী বছর তিন চারের মধ্যে যে নিজেরাও যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে সেটা আর গোপন করছে না। আমরা যারা ইউরোপকে সভ্যতার কেন্দ্র বলে মনে করি তারা ভুলে যাই যে ইউরোপ আসলে সারা বিশ্বের জন্য বারবার বিপদ ডেকে এনেছে। বিগত প্রায় ৫০০ বছর এশিয়া, আফ্রিকা আর ল্যাটিন আমেরিকা ছিল তাদের কলোনি। তারা শুধু সেসব দেশের সম্পদ নিয়েই সুখী হয়নি, প্রায় সমস্ত উপনিবেশে চালিয়েছে নির্মম গণ হত্যা, ধ্বংস করেছে এসব দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি। এছাড়াও বারবার বিশ্বকে ধ্বংসের মুখে দাড় করিয়েছে। ১৮১২-১৮১৫ সালে নেপোলিয়ন, ১৯১৪-১৯১৯ সালের প্রথম মহাযুদ্ধ, ১৯৩৯-১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এ সব ইউরোপের সৃষ্টি। বর্তমানে আবার সে পথেই চলছে। এর কারণ হতে পারে রাশিয়ার প্রতি ক্ষোভ। কারণ রাশিয়াই তাদের উপনিবেশ থেকে পাত্তারি গুটাতে বাধ্য করেছে। আর লোভ। হ্যাঁ, রাশিয়ার অঢেল সম্পদের প্রতি লোভ। লোভের কাছে ভয় হার মানে। তাই এমনকি আসন্ন পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তাদের নেই। আচ্ছ...