Posts

পতাকা

Image
পতাকা নিজে কথা বলে না, কাউকে কোথাও ডাকে না। কিন্তু এই পতাকা হাতে নিয়ে, পতাকার সম্মান রক্ষার জন্য মানুষ যুদ্ধে যায়, শত্রুকে পরাজিত করে। শেখ মুজিব স্বাধীনতা চেয়েছিলেন কি না, তিনি স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্ন তুলে আজ বিভ্রান্তির সৃষ্টি করা তাই অবান্তর। কারণ একাত্তরে তিনি ছিলেন সেই পতাকা যাকে ঘিরে, যাকে বাঁচাতে আপামর বাঙালি যুদ্ধ করেছিল। এটা যারা বুঝতে চায় না তাদের দেশপ্রেম সন্দেহাতীত নয়। মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি এটা তখন ছিল বাঙালির মনের কথা। আর স্বাধীনতার জন্য সেই লড়াইয়ে জয় বাংলা ছিল মানুষের প্রাণের স্লোগান, তার প্রাণশক্তি তার বাঁচার মন্ত্র। দুবনা, ০৭ মার্চ ২০২৫

নস্যি

Image
ইদানীং কালে রাশিয়ান টিভি প্রায়ই সেই সমস্ত লোকদের খবর দেখায় যারা অনলাইন চিটারদের হাতে ধরা খেয়েছে। এই চিটাররা সাধারণত ইউক্রেন ভিত্তিক। তারা বিভিন্ন ভাবে বিশেষ করে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের বোঝাতে সক্ষম হয় যে তাদের টাকা গায়েব হয়ে যেতে পারে, তাই দ্রুত সেটা সাময়িক ভাবে অন্য একাউন্টে সরিয়ে নেয়া দরকার। এরা সাধারণত নিজেদের ব্যাংকের প্রতিনিধি বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দেয়। দীর্ঘ দিন যাবত টিভিতে এসব ব্যাপারে সতর্ক করা সত্ত্বেও অনেকেই ফাঁদে পা দিচ্ছে, কেউ কেউ এদের কথায় অসামাজিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে। এসব কমাতে সরকার ইতিমধ্যে এমনকি ভুক্তভোগী অনেককেই শাস্তি দিয়েছেন, কেননা তারা পারতপক্ষে ইউক্রেন বাহিনীকে অর্থ সাহায্য করছে। এইতো কিছুদিন আগে এক বিখ্যাত গায়িকা এভাবে ৫ কোটি রুবল চিটারদের হাতে তুলে দিয়েছে। এক স্কুলের ছাত্রকে বলা হয়েছে যে তার বাবা মা আসলে ইউক্রেনের সেনাদের টাকা দিচ্ছে, তাই সেই টাকা সরিয়ে ফেলা দরকার। সেই ছেলে বাবা মার অনুপস্থিতিতে সেফ ভেঙে ২০ কোটি রুবল এদের হাতে তুলে দিয়েছে আর যখন ভুল বুঝতে পেরেছে তখন আত্মহত্যা করছে। গতকাল বন্ধুরা জিজ্ঞেস করল - তোমাদের দেশে নিশ্চয়ই এমনটা হয়...

নাটক

Image
লেরমন্তভের কবিতার দুটো লাইন এরকম  এসবই ছিল হাস্যকর যদি তা না হত এত কষ্টকর  ওভাল অফিসে ট্রাম্প-ভেন্স-জেলেনস্কি পথ নাটকে ভরে গেছে গতকালের ফেসবুকের পাতা। আসলে প্রথম দৃষ্টিতে এটা একটা কমেডি মনে হলেও বাস্তবে কি তাই? প্রথমেই যেটা মনে আসে তা হল জো বাইডেন থাকলে এমন নাটকীয় পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটত না। তবে সেটা ইউক্রেনের যুদ্ধে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির লয়্যালিটির কারণে নয়, জো বাইডেন হান্টার বাইডেনের অবাধ্যতা দেখে এতটাই অভ্যস্ত যে জেলেনস্কির এই আচরণ গায়ে মাখতেন না। তবে আমার মনে হয় আসল বিপদটা অন্য জায়গায়। ভালো মন্দ যাই হোক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধ বন্ধের কিছু বাস্তব পদক্ষেপ নিচ্ছেন। অন্যদিকে ইউরোপ যুদ্ধ চালিয়ে যাবার পক্ষে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ট্রাম্পকে তাঁর শান্তির ট্র্যাক থেকে বিচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। জেলেনস্কির এই আচরণ আসলে প্রায় সম্মিলিত ইউরোপের মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। তাই ছোট্ট এই কমেডির ফলাফল সারা বিশ্বের জন্য প্রচন্ড ট্র্যাজিক হবার সম্ভাবনা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি। দুবনা, ০১ মার্চ ২০২৫

উপলব্ধি

Image
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গনের পর থেকে গত দশকের শুরু পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া রাশিয়ায় সম্মানজনক ছিল না। সবাই চেষ্টা করত কোন না কোন অজুহাতে বাধ্যতামূলক ভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়া থেকে বিরত থাকতে। যোগ না দেবার বিভিন্ন আইনি ও বেআইনি উপায় ছিল। বেআইনি উপায়ের একটি ছিল মিথ্যা মেডিক্যাল সার্টিফিকেট কেনা। আইনির মধ্যে পড়ত ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া। সেক্ষেত্রে আর্মি থেকে পুরোপুরি মুক্তি না পাওয়া গেলেও কয়েক বছর সময় পাওয়া যেত। এই সময়ের মধ্যে যদি কেউ দুটো বাচ্চার বাবা হত তাহলে আর আর্মিতে যাওয়া বাধ্যতামূলক ছিল না। আমি তখন দুবনা ইউনিভার্সিটিতে কিছুদিন পড়িয়েছিলাম। কেউ ছাত্রদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে অভিজ্ঞতার আলোকে বলতাম - ছেলেরা পড়াশুনা করতে চায় না, তবে আরও বেশি করে চায় না আর্মিতে যেতে। আজকাল কেউ সরকারের সঠিক সমালোচনা করলেও অনেকেই তাকে স্বৈরাচারের দোসর বলার চেষ্টা করে। আমার ধারণা এরা কেউই স্বৈরাচার চায় না তবে আরও বেশি চায় না বর্তমানের অরাজকতা, আইনহীনতা আর বাংলাদেশের পাকিস্তানিকরণ। দুবনা, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নরক

Image
গত ২২ ফেব্রুয়ারি আমরা অনলাইনে একুশের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করলাম। অনেকেই এসেছিলেন, আবার অনেকেই আসতে পারেননি। যারা আসতে পারেননি তাদেরই একজন ফোন করল - আসলে সারা রাত কাজে ছিলাম, তাই আর যোগ দেয়া হয়নি। - কোন সমস্যা নেই। এর পরে যোগ দিলেই হবে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলাপ। কথা হল সংগঠন সম্পর্কে। এক সময় বলল - প্রায়ই ভাবি সংগঠন করা ছেঁড়ে দেই। তবে কেন যেন হয়ে ওঠে না। - এমনিতেই কি আর বলে ঢেঁকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। - তা যা বলেছেন। তাও আজকাল প্রায়ই এসব বাদ দিতে ইচ্ছে করে। - কয়েক দিন পরে নরকে যাবে। যে কয়দিন আছ এখানেই আনন্দ করে যাও না হয়। - কেন? নরকে এসব নেই? - সারা দিন যদি গরম তেলে ডুবে থাকতে হয় সংগঠন করার সময় কোথায়? - আর যদি স্বর্গে যাই? - তাহলে এসব করতে দেবে না। সংগঠন করা মানেই তো কারো না কারো আদেশ অমান্য করা। আদমের কথা ভুলে গেলে? - কিন্তু আমি নরকে যাব সেটা আপনাকে কে বলল? - কেউ না। আমি এমনিতেই বললাম। তবে দুই ধরণের মানুষ যে নরকে যাবে সেটা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি। - তারা আবার কারা? - সমকামী আর ডায়াবেটিকসের রোগী। - কেন, তারা কি এতটাই পাপী? - প্রশ্ন পাপে পুন্যে নয়। প্রশ...

যার শেষ ভালো না

Image
ছোটবেলায় বাবা কাকাদের মুখে শুনতাম ব্রিটিশ আমলেই ভালো ছিল। না না, তাঁরা ব্রিটিশদের ভক্ত ছিলেন না। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা সেই সময়ের আইন শৃঙ্খলা আর নিরাপত্তার কথা বলতেন। মানুষ সব সময়ই চায় নিশ্চয়তা - তার কাজের নিশ্চয়তা, ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা, ঘরে ফেরার নিশ্চয়তা, নিরাপদে ঘুমানোর নিশ্চয়তা। আমার প্রায়ই মনে হয় সোভিয়েত আমলের কথা যখন রাস্তাঘাটে, ট্রেনে বাসে সবাইকে দেখেছি নিশ্চিন্ত মনে বই বা খবরের কাগজ পড়তে। এখন বুঝি - এর কারণ ছিল আগামী দিনের নিশ্চয়তা। সবাই জানত আগামী কাল সে কাজে যাবে, তার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে, আগামীকালও রুটির দাম আজকের মতই থাকবে, মাংসের দাম বাড়বে না, অসুখ হলে হাসপাতালে চিকিৎসা পাবে। অনেক না থাকার মধ্যেও এই যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর নিশ্চয়তা - সেটাই বা কম কিসে? গত জুলাই আগস্টে দেশের মানুষ নিশ্চয়ই একটি উন্নততর বাংলাদেশ চেয়েছিল। তারা দুর্নীতিমুক্ত ও স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছিল। কিন্তু সেটা কোন মতেই নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলার বিনিময়ে নয়। ফেসবুকে মাঝে মধ্যে ভিডিও দেখি - অল্পবয়সী ছেলেরা কিরিচ হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে আর যাত্রীরা অসহায় ভাবে বসে আছে। মানুষ কি এজন্যেই রাস্তায় নেমেছিল? যারা ...

প্রশ্ন

Image
ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাসে দেখলাম প্রধান উপদেষ্টা ডঃ ইউনুস বলেছেন "কথায় কথায় বিশ্ববিদ্যালয় করে ফেলি আমরা। এর সাথে একটি করে নার্সিং কলেজ করে দিলেই আমরা অনেক নার্স পেতে পারি। বিশ্বে নার্সের চাহিদা কোনদিন শেষ হবে না।" সব ঠিক আছে। নার্সের দরকার আছে। কিন্তু বিশ্বে কোনদিন নার্সের অভাব হবে না এর মানে কি মানে আমরা দেশে হাসপাতাল তৈরি করব না? মানুষকে দেশের খরচে লেখাপড়া শিখিয়ে বিদেশে পাঠাবো? উনি উদ্যোগী হতে বলেন কিন্তু চাকরি করতে উৎসাহিত করেন না। তার মানে কি সরকার চাকরি সৃষ্টিতে আগ্রহী নয়। আগ্রহী শ্রমিক রপ্তানিতে। আমার কেন যেন মনে হয় আমাদের উন্নয়নের ধারণায় কোথাও একটা ভুল আছে। দেশের মধ্যে যদি বাজার তৈরি না হয়, দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যদি বাড়ানো না যায় তাহলে আমরা শুধু খড়কুটো হয়ে জ্বলে বিদেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারব। এতে দেশের কী লাভ হবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। দুবনা, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫