Posts

ভাবনা

Image
গতকাল ঘুম ভাঙতেই লেনিনগ্রাদের পার্থের মেসেজ পেলাম। দেশে ভূমিকম্প হয়েছে। লেনিনগ্রাদ ৩৫ বছর আগে সাঙ্কত পিতেরবুর্গ হলেও সেই সময়ের বন্ধুরা লেনিনগ্রাদের রয়ে গেছে। যেকোনো দুর্ঘটনার পজিটিভ দিক হল এরপর পুরানো পরিচিতদের খোঁজখবর নেয়া হয়। এই সুযোগে দেশে অনেকের সাথেই যোগাযোগ হল। ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দেখলাম। এর একটা গ্যাসলাইন নিয়ে। মানে ভূমিকম্পের কারণে গ্যাসের পাইপ থেকে বিপদ আসতে পারে। এটা আসলে আমাদের সার্বিক শহর পরিকল্পনার দীনতা থেকে।  আমাদের দেশে আধুনিক তথ্য, প্রযুক্তি ও অন্যান্য সবকিছুর ব্যবহার খুবই অদ্ভুত। আমরা এসবের শুধু ব্যবহারিক দিকটার দিকে নজর দেই কিন্তু নিজেরা চিন্তা ভাবনায় আধুনিক হই না। ফলে আমাদের বাড়িঘর থেকে শুরু করে সবকিছু আধুনিক হলেও সবই দাঁড়িয়ে আছে বারুদের উপর। সবাই ভালো থাকার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে বাড়িঘর তৈরি করে অথচ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় যে স্পেসটুকু দরকার সেটা রাখে না। ফলে জরুরি অবস্থায় সব অর্থহীন হয়ে যায়।  আধুনিক প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করি পশ্চাৎপদ আদর্শ প্রচারে, সমাজে উত্তেজনা আর অস্থিরতা বাড়াতে। অথচ নিজেরাও যদি চিন্তা ভাবনা, মন মানসিকতায় আধ...

বকের প্রশ্ন

Image
অনেকের ধারণা মুহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের নেলসন ম্যান্ডেলা হতে পারতেন। আমার এটা কখনোই মনে হয়নি। একমাত্র শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ছাড়া তাদের আর কিছুই কমন নেই। ম্যান্ডেলার জেল জীবনের বিপরীতে ইউনূসের ছিল পশ্চিমা ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। ম্যান্ডেলা ক্ষমাশীল - ইউনূস প্রতিহিংসার জ্বলন্ত শিখা। ম্যান্ডেলা নির্লোভ - ইউনূস শুধু লোভী নয়, প্রচন্ড লোভী। ম্যান্ডেলা ক্ষমতার প্রতি নির্লিপ্ত - ইউনূস ক্ষমতা পাগল। ম্যান্ডেলার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল না, ইউনূসের স্বজনপ্রীতি একসময় লোককথার রূপ নেবে। ম্যান্ডেলা দেশের অর্থ অপব্যয় করতেন না, সদলবলে ইউনূসের প্রতিটি সফর দেশের অর্থনীতির গলায় একেকটি ফাঁসির রজ্জু। বর্ণবাদী শাসনে বিভক্ত দেশকে ম্যান্ডেলা চেষ্টা করেছেন এক করতে, পক্ষান্তরে ইউনূস দেশকে যত বেশি সম্ভব বিভক্ত করেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে। ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, ইউনূসের লয়ালিটি তার পশ্চিমা প্রভূদের প্রতি। তাই ইউনূসের ম্যান্ডেলা হবার সম্ভাবনা ছিল না। ইউনূস ম্যান্ডেলার এন্টিপোড। ম্যান্ডেলা দেবতা হলে ইউনূস দানব। আমার ধারণা আজ যদি বক যুধিষ্ঠিরকে প্রশ্ন করত - আশ্চর্য কী? যুধিষ...

লিগেসি

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে ইউক্রেন ছিল সবচেয়ে উন্নত প্রজাতন্ত্র গুলোর একটি যা বিদ্যুতায়নে ছিল অন্য যেকোনো রিপাবলিকের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর। লেনিন বলেছিলেন কমিউনিজম হল সোভিয়েত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও বিদ্যুতায়ন। ইউক্রেন নিজে ধারাবাহিকভাবে সোভিয়েত উত্তরাধিকার ধ্বংস করেছে। কমিউনিস্ট ও সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্তি পাওয়া ছিল তাদের মূল মন্ত্র। সোভিয়েত ব্যবস্থা, লেনিনের স্ট্যাচু এসব ভাঙলেও সোভিয়েত আমলে সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও শ্রমে তৈরি করা কারখানা ও স্থাপনা ভাঙেনি। অস্থাবর জিনিস জলের দামে বিদেশীদের কাছে বিক্রি করেছে। স্থাবর সম্পত্তি নিজেরাই ব্যবহার করেছে। হয়তো ভাঙার সামর্থ্য ছিল না বলে। এখন রাশিয়া তাদের বেসামরিক ও আবাসিক এলাকা আক্রমণের পাল্টা জবাবে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করে ইউক্রেনকে সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্ত করছে। উল্লেখ্য যে ইউক্রেনের সমস্ত শিল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, শহর বন্দর গড়ে উঠেছিল রুশ ও সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও কায়িক পরিশ্রমে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এসব জিনিস প্রচন্ড শক্ত ভিত্তির উপর গড়ে তুলেছিল বলেই রাশিয়াকে আজ এত শক্তি ক্ষয় করতে হচ্ছে এসব ধ্বংস করতে। ইউক্রেন বরাবরই চেয...

প্রশ্ন

Image
পদার্থবিদ্যায় আমরা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে তার বিবর্তনের নিয়ম সূত্র বদ্ধ করি এবং সেই সূত্র ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে প্রকৃতির গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করি। তবে তত্ত্ব ও পর্যবেক্ষণের এই যুগলবন্দীতে শেষ হাসি হাসে পর্যবেক্ষণ। তাই বলা হয় তত্ত্ব প্রমাণ করা যায় না, তাকে ভুল প্রমাণ করা যায়। তাই যদি কোন তত্ত্ব নতুন পর্যবেক্ষণের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাহলে পর্যবেক্ষণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন কর হয়। সামাজিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে সেটা কম দেখা যায়। হয় ডগমা না হয় সুবিধাবাদ। ধর্ম ডগমার উপর ভর করে চলে। এমনকি নিজেদের বৈজ্ঞানিক ধারার অনুসারী বলে দাবি করলেও বামপন্থীরা প্রায়ই মার্ক্সবাদকে ধর্মের মতই ডগমায় পরিণত করে। নতুন বাস্তবতার সাথে নিজেদের বদলাতে গিয়ে অনেকেই সুবিধাবাদী হয়। সেই অর্থে গোল্ডেন রেশিও প্রায় অনুপস্থিত বর্তমান সামাজিক বিজ্ঞানে। আগে দার্শনিকরা সমাজকে ব্যাখ্যা করত, এখন সময় এসেছে সমাজ পরিবর্তনের - এই রণকৌশলই কি মার্ক্সবাদীদের মার্ক্সবাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী করে তোলে? এ বিষয়ে দেশের মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিকদের মতামত জানতে ইচ্ছে করছে। মস্কোর পথে, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ...

ন্যায় অন্যায়

Image
বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের কান্ডকারখানা দেখে মনে হয় তাদের ধারণা মানুষ সবচেয়ে সুস্থ থাকে জেলে। কারণ তাদের কাজকর্ম অনেকটা রুগীকে ওষুধ না দিয়ে তার চারিদিকে প্রাচীর তুলে দেবার মত।   এবার জার্মানির বিভিন্ন শহরে ক্রিসমাস মেলা বন্ধ কারণ সেটা অনেক শরণার্থীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে আর সবচেয়ে বড় কথা মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পয়সা নেই। যদিও যাদের কারণে মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হয় তাদের খাওয়ানো পড়ানোর পয়সা বা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হাত দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার পয়সার অভাব হয়না। আচ্ছা একদল মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিতে গিয়ে আরেক দল মানুষের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুন্ন করা কি কোন এক ধর্মকে পোষণ করা নয়? তাছাড়া এসব মেলা এখন যতটা না ধর্মীয় তারচেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। আজ যাদের অনুভুতিকে সম্মান করে ক্রিস্টমাস মেলা বন্ধ করা হচ্ছে কাল যদি তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে বার্লিন বিয়ারফেস্ট বা গেই প্যারেড বন্ধ করার দাবি জানায় তখন কি এরা সেটা মানবে? ঐতিহ্য মানেই সেকেলে নয়, নতুন সবকিছু আধুনিক নয়। আমার ধারণা যারা সত্যিকার অর্থেই ইউরোপকে ভালবেসে সেখানে যায় তারা ...

অক্টোবর বিপ্লব

Image
০৭ নভেম্বর এলেই মনে পড়ে শীতের সকালে রেড স্কয়ারে মিছিলে যাবার কথা। এদিন সামরিক মহড়া থাকত না। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, শিক্ষক আর সাধারণ মানুষ মিছিল করে চলে যেত। সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ লেনিনের সমাধিসৌধে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াতেন জনতার উদ্দেশ্যে।  সেই সময়ের অনেক কিছু সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে। সেটা অবশ্য আদর্শের ভিত্তি নাড়ায়নি বরং পরবর্তী ঘটনাবলী একটি সংশোধিত ও গণতান্ত্রিক সোভিয়েত ব্যবস্থার প্রতি আস্থা তৈরি করেছে যেখানে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি থাকবে গণতান্ত্রিক ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা।  সবাইকে অক্টোবর বিপ্লবের শুভেচ্ছা! দুবনা, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

ভবিষ্যত?

Image
মামদানি নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও অনেকেই তাঁর ধর্মীয় পরিচয় সামনে আনার চেষ্টা করছে তবে আমার ধারণা তিনি জিতেছেন তার রাজনীতির কারণে। সেই রাজনীতি যা সাধারণ মানুষের স্বার্থে লড়াই করার কথা বলে। এটা ঠিক একদল লোক তার মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করবে নিজেরা ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হবার জন্য আবার আরেক দল লোক মুসলিম পরিচয় সামনে এনে তাঁর বিরোধিতা করবে। হয়তো দুই দলের কাছেই এর পেছনে যুক্তি আছে। তবে দ্বিতীয় দলের উচিত হবে তাঁকে মুসলিম হিসেবে না দেখে একজন ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে গড়ে উথতে সাহায্য করা। কেননা একমাত্র এভাবেই তারা তাঁকে মৌলবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে। আমি অস্বীকার করব না যে তিনি শুধু মুসলিম পরিচয়ের জন্যেও অনেকের ভোট পেয়েছেন (এবং অনেকের ভোট পাননি)। এখন তিনি নির্বাচিত মেয়র - দলমত নির্বিশেষে সবার। এতদিন তাঁর দায়িত্ব ছিল আপনাদের ভোট পাবার, এ জন্যে তিনি অন্যান্য পরিচয়ের সাথে মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করলে করতেও পারেন। এখন আপনাদের দায়িত্ব তাঁকে নিজের করে নেবার যাতে তিনি সত্যিকার অর্থেই দলমত ধর্ম নির্বিশেষে সবার হতে পারেন। বারাক ওবামা যখন প্রেসিডে...