Posts

জন্ম মৃত্যু

Image
গত কয়েকদিন থেকেই ফেসবুকে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি কি সত্যিই মারা গেছেন? তিনি কি বেঁচে আছেন? নাকি নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য এক নোংরা খেলায় নেমেছে ইউনূস গং। সাধারণ মানুষ তো বটেই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মৃত্যুও কি গ্রামীণ ব্যাংকের লকারে তুলে রাখা হয়েছে? অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে যদি বেগম জিয়া নিজে জনসমক্ষে এসে জীবিত থাকার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হন তবে যে দিনই সরকারি ভাবে বলা হোক না কেন তাঁর মৃত্যু দিবস নিয়ে সন্দেহ বা জল্পনা থেকে যাবে। অনেক আগে ফেসবুকেই তার জন্মদিন নিয়েও বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা হয়েছে। ১৫ আগস্ট তিনি জন্মদিন পালন করলেও অনেকের ধারণা সেটা শেখ মুজিবের মৃত্যু দিবসকে কলঙ্কিত করার জন্যই। পাসপোর্ট ও সার্টিফিকেট অনুযায়ী তাঁর জন্মদিন একাধিক। এভাবেই আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়া সত্ত্বেও বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ও মৃত্যু দিবস নিয়ে বিতর্ক থেকে যেতে পারে যদি সরকার রাজনৈতিক লাভ লোকসানের হিসেব করে জন্ম মৃত্যুর দায়দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়। দুবনা, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ভালুক

Image
খবরে দেখলাম আমাদের পাশের শহর কিমরিতে এক মেয়ে বনে বেড়াতে গিয়ে ভালুকের দেখা পেয়েছে। ওরা দু' জন একে অন্যের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল। সেই সুযোগে মেয়েটি ভালুকের তিনটে ছবিও নিয়েছে। ওর দুর্ভাগ্য যে ভালুকের সাথে সেলফি তুলতে পারেনি।  আজকাল প্রায়ই বনে বাদারে ভালুকের দেখা পাওয়া যায় বলে খবর পাই। মানে দুবনার আশেপাশেও। আগে মুলত শেয়াল, বন্য শুকর, হরিণ জাতীয় প্রাণীর দেখা এমনকি শহরেও মিলত, এখন ভালুকের আনাগোনা। সে দিন এ নিয়ে গল্প উঠলে বললাম, - আমি হাল্কা পাতলা মানুষ, মাংস একেবারেই নেই। তাই ভালুক হাতের কাছে পেয়েও অখাদ্য বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে কোন ভালো খাদ্যের সন্ধানে।  - কোন কোন ভালুক কিন্তু হাড্ডি চিবুতে পছন্দ করে ঠিক যেমন কিছু কিছু মানুষ শুধু চিপস খেতে ভালোবাসে। তাই নিজের চিকনত্ব নিয়ে খুব বেশি খুশি হবার দরকার নেই।  - হুম, ঝামেলা। আসলে ক্ষুধার্ত ভালুকের কাছে পূর্ণিমার চাঁদও ঝলসানো রুটি আর হাড্ডিসার মানুষও সুস্বাদু খাবার। শান্তি নাই কোথাও। চিকন হও, মোটা হও ভালুকের থাবা থেকে মুক্তি নাই। দুবনা, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
মানুষ বিভিন্ন রকমের হয়। কেউ একান্তই নিজের জন্য বেঁচে থাকে। জীবনযাপনের জন্য কাজ কর্ম করে সমাজের সেবা করলেও সেটা সে করে প্রচ্ছন্ন ভাবে, নিজের উদ্যোগে নয়। আবার একদল মানুষ সচেতন ভাবেই সমাজ সেবা করে শুধুমাত্র নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে এবং যারা সমাজ উন্নয়নে কাজ করছে তাদের সাধ্যমত সহযোগিতা করে। সেই অর্থে রাজনৈতিক দল যার কর্মকান্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ সমাজ সেবা, সমাজ সংস্কার তারা শুধু দলের কর্মীদের নয়, দলের সমর্থকদের কাছেও দায়বদ্ধ। দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আছে। দেশে বিদেশে তাদের সমর্থক আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেই সমর্থন কোন নেতার প্রতি হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেটা আদর্শিক। আর এই আদর্শের কারণেই অনেকেই বাইরে থেকেও বিভিন্ন ভাবে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। সিপিবির মত দলের যারা সমর্থক তাদের কাছে যে বিশেষ গুরুত্ব পায় বাহাত্তরের সংবিধানের প্রতি দলের নেতৃত্বের মনোভাব এবং দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য। সেখানে প্রশ্ন দেখা দিলে প্রবাসী সমর্থকরা ভাবতে বাধ্য হয় এমতাবস্থায় সিপিবির প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত থাকা উচিৎ কি উচিৎ নয়। মস্কোর পথে, ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ...

ভাবনা

Image
গতকাল ঘুম ভাঙতেই লেনিনগ্রাদের পার্থের মেসেজ পেলাম। দেশে ভূমিকম্প হয়েছে। লেনিনগ্রাদ ৩৫ বছর আগে সাঙ্কত পিতেরবুর্গ হলেও সেই সময়ের বন্ধুরা লেনিনগ্রাদের রয়ে গেছে। যেকোনো দুর্ঘটনার পজিটিভ দিক হল এরপর পুরানো পরিচিতদের খোঁজখবর নেয়া হয়। এই সুযোগে দেশে অনেকের সাথেই যোগাযোগ হল। ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দেখলাম। এর একটা গ্যাসলাইন নিয়ে। মানে ভূমিকম্পের কারণে গ্যাসের পাইপ থেকে বিপদ আসতে পারে। এটা আসলে আমাদের সার্বিক শহর পরিকল্পনার দীনতা থেকে।  আমাদের দেশে আধুনিক তথ্য, প্রযুক্তি ও অন্যান্য সবকিছুর ব্যবহার খুবই অদ্ভুত। আমরা এসবের শুধু ব্যবহারিক দিকটার দিকে নজর দেই কিন্তু নিজেরা চিন্তা ভাবনায় আধুনিক হই না। ফলে আমাদের বাড়িঘর থেকে শুরু করে সবকিছু আধুনিক হলেও সবই দাঁড়িয়ে আছে বারুদের উপর। সবাই ভালো থাকার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে বাড়িঘর তৈরি করে অথচ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় যে স্পেসটুকু দরকার সেটা রাখে না। ফলে জরুরি অবস্থায় সব অর্থহীন হয়ে যায়।  আধুনিক প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করি পশ্চাৎপদ আদর্শ প্রচারে, সমাজে উত্তেজনা আর অস্থিরতা বাড়াতে। অথচ নিজেরাও যদি চিন্তা ভাবনা, মন মানসিকতায় আধ...

বকের প্রশ্ন

Image
অনেকের ধারণা মুহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের নেলসন ম্যান্ডেলা হতে পারতেন। আমার এটা কখনোই মনে হয়নি। একমাত্র শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ছাড়া তাদের আর কিছুই কমন নেই। ম্যান্ডেলার জেল জীবনের বিপরীতে ইউনূসের ছিল পশ্চিমা ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। ম্যান্ডেলা ক্ষমাশীল - ইউনূস প্রতিহিংসার জ্বলন্ত শিখা। ম্যান্ডেলা নির্লোভ - ইউনূস শুধু লোভী নয়, প্রচন্ড লোভী। ম্যান্ডেলা ক্ষমতার প্রতি নির্লিপ্ত - ইউনূস ক্ষমতা পাগল। ম্যান্ডেলার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল না, ইউনূসের স্বজনপ্রীতি একসময় লোককথার রূপ নেবে। ম্যান্ডেলা দেশের অর্থ অপব্যয় করতেন না, সদলবলে ইউনূসের প্রতিটি সফর দেশের অর্থনীতির গলায় একেকটি ফাঁসির রজ্জু। বর্ণবাদী শাসনে বিভক্ত দেশকে ম্যান্ডেলা চেষ্টা করেছেন এক করতে, পক্ষান্তরে ইউনূস দেশকে যত বেশি সম্ভব বিভক্ত করেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে। ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, ইউনূসের লয়ালিটি তার পশ্চিমা প্রভূদের প্রতি। তাই ইউনূসের ম্যান্ডেলা হবার সম্ভাবনা ছিল না। ইউনূস ম্যান্ডেলার এন্টিপোড। ম্যান্ডেলা দেবতা হলে ইউনূস দানব। আমার ধারণা আজ যদি বক যুধিষ্ঠিরকে প্রশ্ন করত - আশ্চর্য কী? যুধিষ...

লিগেসি

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে ইউক্রেন ছিল সবচেয়ে উন্নত প্রজাতন্ত্র গুলোর একটি যা বিদ্যুতায়নে ছিল অন্য যেকোনো রিপাবলিকের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর। লেনিন বলেছিলেন কমিউনিজম হল সোভিয়েত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও বিদ্যুতায়ন। ইউক্রেন নিজে ধারাবাহিকভাবে সোভিয়েত উত্তরাধিকার ধ্বংস করেছে। কমিউনিস্ট ও সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্তি পাওয়া ছিল তাদের মূল মন্ত্র। সোভিয়েত ব্যবস্থা, লেনিনের স্ট্যাচু এসব ভাঙলেও সোভিয়েত আমলে সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও শ্রমে তৈরি করা কারখানা ও স্থাপনা ভাঙেনি। অস্থাবর জিনিস জলের দামে বিদেশীদের কাছে বিক্রি করেছে। স্থাবর সম্পত্তি নিজেরাই ব্যবহার করেছে। হয়তো ভাঙার সামর্থ্য ছিল না বলে। এখন রাশিয়া তাদের বেসামরিক ও আবাসিক এলাকা আক্রমণের পাল্টা জবাবে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করে ইউক্রেনকে সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্ত করছে। উল্লেখ্য যে ইউক্রেনের সমস্ত শিল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, শহর বন্দর গড়ে উঠেছিল রুশ ও সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও কায়িক পরিশ্রমে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এসব জিনিস প্রচন্ড শক্ত ভিত্তির উপর গড়ে তুলেছিল বলেই রাশিয়াকে আজ এত শক্তি ক্ষয় করতে হচ্ছে এসব ধ্বংস করতে। ইউক্রেন বরাবরই চেয...

প্রশ্ন

Image
পদার্থবিদ্যায় আমরা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে তার বিবর্তনের নিয়ম সূত্র বদ্ধ করি এবং সেই সূত্র ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে প্রকৃতির গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করি। তবে তত্ত্ব ও পর্যবেক্ষণের এই যুগলবন্দীতে শেষ হাসি হাসে পর্যবেক্ষণ। তাই বলা হয় তত্ত্ব প্রমাণ করা যায় না, তাকে ভুল প্রমাণ করা যায়। তাই যদি কোন তত্ত্ব নতুন পর্যবেক্ষণের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাহলে পর্যবেক্ষণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন কর হয়। সামাজিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে সেটা কম দেখা যায়। হয় ডগমা না হয় সুবিধাবাদ। ধর্ম ডগমার উপর ভর করে চলে। এমনকি নিজেদের বৈজ্ঞানিক ধারার অনুসারী বলে দাবি করলেও বামপন্থীরা প্রায়ই মার্ক্সবাদকে ধর্মের মতই ডগমায় পরিণত করে। নতুন বাস্তবতার সাথে নিজেদের বদলাতে গিয়ে অনেকেই সুবিধাবাদী হয়। সেই অর্থে গোল্ডেন রেশিও প্রায় অনুপস্থিত বর্তমান সামাজিক বিজ্ঞানে। আগে দার্শনিকরা সমাজকে ব্যাখ্যা করত, এখন সময় এসেছে সমাজ পরিবর্তনের - এই রণকৌশলই কি মার্ক্সবাদীদের মার্ক্সবাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী করে তোলে? এ বিষয়ে দেশের মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিকদের মতামত জানতে ইচ্ছে করছে। মস্কোর পথে, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ...