স্বাবলম্বী

একান্নবর্তী পরিবার ভিন্ন হওয়া সবসময়ই ট্র্যাজেডি, তারপরেও পরিবার ভেঙে যায়। ভাঙে ভবিষ্যত নিয়ে বিভিন্ন সদস্যের বিভিন্ন ধারণা থেকে। আগে অধিকাংশ মানুষ নিজ নিজ এলাকার বাইরে নিজেকে নিয়ে তেমন ভাবতে পারত না, ফলে ভিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া ছিল বেশ বেদনাদায়ক। এখন অধিকাংশ মানুষ কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় থাকে তাই ফর্মালি ভিন্ন হবার আগেই ভিন্ন হয়ে যায়। তারপরেও সম্পত্তি নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বিতর্ক বা মনোমালিন্য হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমনকি নিজে উদ্যোগী হয়ে ভিন্ন হলেও যে পৈত্রিক ভিটা ছেড়ে চলে যায় সে নিজেকে বঞ্চিত মনে করে। দেশ ভাগের ক্ষেত্রেও মনে হয় এটাই ঘটে। ভারত বিভক্ত হয়েছিল ধর্মীয় কারণে। যারা পাকিস্তান চেয়েছিল তারা সব জেনেই দিল্লির মসনদ ত্যাগ করেছিল। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে নতুন দেশ গড়েছিল অধিকাংশ মানুষের কাছে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে। ফল স্বরূপ নিজেদের ব্যর্থতার জন্য সব দায় তারা চাপাতে চাইছে ভারতের ঘাড়ে। ভারতের মানুষ যে দুধে ভাতে আছে তাও না। সেখানেও নিজেদের ব্যর্থতার দায় আংশিক ভাবে চাপাচ্ছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের উপর। মজার ব্যাপার হল স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের দুর্ভাগ্যের দায় চাপাত পশ্চিম পাকিস্তানের উপর। আমরা আমেরিকা, চীন, ভারত, রাশিয়া, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের উপর নিজেদের ব্যর্থতার দোষ চাপালেও আফ্রিকা বা ল্যাটিন আমেরিকার উপর সেই দায় চাপাই না। এটা ঠিক এসব দেশের তেমন প্রভাব আমাদের দেশে বা বিশ্ব রাজনীতিতে নেই। তবে আসল কথা হল আমরা এদের কাছ থেকে ততটা আশা করি না যতটা করি আমেরিকা, চীন বা ভারতের কাছ থেকে। আমরা যদি সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন, স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর হই, তাহলে এসব সমস্যা এমনিতেই উধাও হয়ে যাবে।

দুবনার পথে, ২৩ জুন ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

প্রশ্ন

সিপিবি কংগ্রেস

রিংকু