নতুন স্বাধীনতা
তৃতীয় বিশ্বের দেশে দেশে সমাজতন্ত্রের আদর্শে বিশ্বাসী সংগঠন গড়ে তুলতে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করত। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এসব সংগঠন সম্পূর্ণ ভাবে না হলেও সমাজ সেবায় উদ্বুদ্ধ কর্মীদের অনেকেই সরোস ফাউন্ডেশন, ইউএসএইড ও অন্যান্য পশ্চিমা সংগঠন থেকে সহযোগিতা লাভ করতে শুরু করে। বাহ্যিক ভাবে সোভিয়েত সমর্থন পুষ্ট সংগঠনের মত হলেও আদর্শের দিক থেকে এরা একেবারেই ভিন্ন। সোভিয়েত সমর্থন পুষ্ট সংগঠনগুলো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের কথা প্রকাশ্যে বলত ও সেই লক্ষ্যে রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাত। কিন্তু পশ্চিমা সমর্থন পুষ্ট এনজিও নিজেদের আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মানবতা ও গণতন্ত্র ইত্যাদি মুখোসের আড়ালে লুকিয়ে রাখে আর দেশে দেশে নব্য উপনিবেশবাদ কায়েম করতে সমাজকে ভেতর থেকে অচল করে দিয়ে লাল নীল সবুজ ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের বিপ্লব ঘটায়। আপাত দৃষ্টিতে এসব বিপ্লব দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য হলেও বাস্তবে এর মধ্য দিয়ে দেশে দেশে এনার্কি বা অরাজকতা সৃষ্টি হয় যার সুযোগে পশ্চিমা দেশগুলো এসব দেশে নিজেদের পছন্দের সরকার ক্ষমতায় বসিয়ে এসব এলাকায় দীর্ঘ মেয়াদি ভূরাজনৈতিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। ফলে এসব বিপ্লব মানুষের মুক্তির পরিবর্তে তাকে বরং নতুন নাগপাশে বন্দী করে। এটাই নিওলিবারেল স্বাধীনতা।
দুবনা, ১৩ জুন ২০২৫
Comments
Post a Comment