স্বার্থ
রাশিয়ার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া ও ভিয়েতনামের আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে কিছু স্ট্যাটাস দেখলাম। হ্যাঁ, মস্কোর আফগান দূতাবাসে আগের তিনরঙা পতাকার পরিবর্তে নতুন পতাকা উড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন কথা হবে। তবে আমার মনে হয় বিভিন্ন দেশ যদি অন্যান্য দেশের গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করে তাহলে পৃথিবীর অনেক সমস্যারই সমাধান হয়। গ্রাউন্ড রিয়ালিটি একেক দেশে একেক রকম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা স্থানীয় জনগণের দ্বারা সমর্থিত। অন্য দেশ সেটা না মানলে একটাই উপায় থাকে - সরকার পরিবর্তন। কিন্তু প্রায়ই সেটা হয় রক্তক্ষয়ী। অন্যদিকে সেই সরকারকে স্বীকৃতি না দিলে কূটনৈতিক কাজকর্ম চলে না, তাতে আর যাই হোক সে দেশের সাধারণ মানুষের কোন লাভ হয় না। কুটনীতিও চাপ সৃষ্টি করার একটি মাধ্যম। কিন্তু কথাই যদি না বলি কথা শুনাব কীভাবে? তালিবানের কাজকর্ম সমর্থনযোগ্য নয়, কিন্তু তার সংশোধনের জন্য হলেও যোগাযোগ দরকার। এই স্বীকৃতি আফগান জনগণের জন্য কোন উপকার বয়ে আনবে কিনা সেটা বলা কষ্ট, তবে চেষ্টা তো করা যাবে। হামাজকে স্বীকৃতি দিয়েছিল বলেই রাশিয়া সেখান থেকে নিজেদের লোকদের বের করে আনতে পেরেছে, সেখানে ত্রান সামগ্রী পাঠানোর চেষ্টা করতে পেরেছে। ভিয়েতনামের কথা যদি বলি, দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে ভিয়েতনাম আমেরিকার সাথে বাণিজ্য করছে। কে সেটা না করে? ভিয়েতনাম সরকার সেদেশের মানুষের কথা ভাবে বলেই ট্রাম্পের শর্ত মেনে নিয়েছে। কারণ, যতক্ষণ পর্যন্ত বিকল্প বাজার তৈরি না হচ্ছে তেঁতো হলেও এই ওষুধ তোমাকে গিলতেই হবে। আপাত দৃষ্টিতে দেশের স্বার্থ বিরোধী মনে হলেও বর্তমান অবস্থায় এটাই দেশের স্বার্থ রক্ষা করে। আমাদের মত সস্তা জনপ্রিয়তার কথা ভেবে তারা দেশের ক্ষতি করে না, এটাই মনে হয় দেশপ্রেম। দেশপ্রেম শুধু আবেগ নয়, এটা দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনে তেঁতো বড়ি গেলা।
দুবনা, ০৪ জুলাই ২০২৫
দুবনা, ০৪ জুলাই ২০২৫
Comments
Post a Comment