Posts

Showing posts from September, 2017

পুজো

Image
দেখতে দেখতে বছরটা পার হয়ে গেল আর বছর ঘুরতেই বেড়াতে এলো দেবী দুর্গা । ছোটবেলায়, যখন নববর্ষ ছিল শুধুই হালখাতা, ইংরেজি নববর্ষ পশ্চিমের হাঙ্গর সংস্কৃতি – তখন এই দুর্গা পুজোই ছিল বছর গড়ানোর সবচেয়ে শক্তিশালী ইনডিকেটর । তবে সে অনেক আগের কথা, যখন বাঙ্গালী এক ধর্মনিরপেক্ষ দেশের স্বপ্ন দেখতো, যখন সৃষ্টির আগেই মূর্তি ধ্বংসের প্রতিযোগিতা শুরু হতো না আমাদের দেশে । বড় খাল জলে টইটুম্বুর, কাজের লোকেরা ব্যস্ত খালের উপর কাঠের সাঁকো মেরামতে । রামার ভিটায় ফিরে এসেছে প্রান । বাঁশ ঝাড়ের সব চেয়ে বড় বাঁশটা কাটা হয়েছে কাঠামো বানানোর জন্যে । এসেছে পাট, শন আর এঁটেল মাটি । কুমুরের দক্ষ হাতে তিল তিল করে গড়ে উঠছে দুর্গা তার বিশাল সংসার নিয়ে । আমরা বাচ্চারা ঘুর ঘুর করছি প্রতিমার চারিদিকে আর একে অন্যের সাথে তর্ক করছি লক্ষ্মী বড় না স্বরস্বতী বড়, কার্ত্তিক ভালো না গনেশ ভালো এসব নিয়ে । এই দেবতারা কি ভাবছে তাতে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই – আমরাই কাউকে বড় করছি তো কাউকে করছি ছোট । দেখতে দেখতে চলে আসে মহালয়া । বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্র সেই ভোর সকালে মাকে ডাকছেন ”যা দেবী সর্ব ভুতেশু মাতৃ রুপেন সংস্থিতা ...”, মানবে...

সিগারেট

Image
বেশ কিছুদিন আগেই মনিকা বলেছিলো ক্রিস্তিনা নাকি সিগারেট খায়। তবে এটা ক্রিস্টিনার প্রতি আক্রোশ থেকে নয়। যখন আমাদের বাসায় একটা কুকুর ছিল সে ছিল সবার চোখেরমনি, পরে যখন আরও একটা এলো – সেটাও কোন সমস্যার সৃষ্টি করেনি। তবে ইনফ্লাশনের মত যখন কুকুরের সংখ্যা বাড়তে লাগলো সেই ভালবাসা উবে বিরক্তিতে পরিণত হল। এখন মনিকার ধারনা এই কুকুরের যন্ত্রণায় ওদের বাসায় থাকতে ইচ্ছে করে না, আর ক্রিস্টিনার সিগারেট খাওয়া এর সাথেই জড়িত। তাই আমি যেন মামার সাথে কথা বলি। মাস খানেক আগে যখন বনে হাটছিলাম, গুলিয়া বললো -    ক্রিস্টিনার ব্যাগে সিগারেট দেখলাম। -    অন্যের ব্যাগ হাতড়ানো ভালো নয়। হেসে হেসে বললাম আমি। -    না, আমি ওর ব্যাগ পরিষ্কার করতে চেয়েছিলাম। যাই হোক তুমি এ ব্যাপারে ওর সাথে কথা বলো। সুযোগ পেয়ে আমি বললাম -    বাসায় এতগুলো কুকুরের জন্য মনিকা ক্রিস্তিনা প্রায়ই বান্ধবীদের ওখানে চলে যায়। হয়ত এজন্যেই ও সিগারেট খায়? বাসায় কুকুরের সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে আনলে কেমন হয়? -    ওসব অজুহাত। -    অজুহাতের কি আছে? আমারও এতোগুলো কূকূর বাসায় দেখতে ভালো ...

আমার কাকু

Image
সকালে ঘুম ভাঙলে ফেসবুক অন করতেই দেখি চঞ্চল আমাকে ট্যাগ করে একটা পোষ্ট দিয়েছে আর অনেকেই তাতে লাইক দিয়েছে । লিঙ্কটা খুলতেই দেখলাম দ্বিজেন কাকুকে নিয়ে ওর লেখা – ওর কাছ থেকেই পেলাম কাকুর অচিনপুরী চলে যাওয়ার খবর, যদিও ইভান ভাইবারে খবরটা আগেই পাঠিয়েছিল, দেখা হয়নি । কাকু অসুস্থ বেশ আগে থেকেই । আমার ভাইপো নিলয়ের কাছে প্রথম শুনি । আমি ওকে বলেছিলাম কাকুকে আমার পাণ্ডুলিপির ফাইনাল ভার্সন পৌঁছে দিতে, তখন ফোন করলে কাকু বলেন শরীরটা খারাপ, পরে যেন যোগাযোগ করে । এরপর কাকু ভর্তি হন বারডেমে । তারপর থেকে কমবেশি নিয়মিত কাকুর খবর পেতাম ফেসবুকের পাতায় আর অনেকের মতই আশায় বুক বাধতাম, এইতো কাকু আবার ভালো হয়ে উঠবেন, আবার গল্প করবো একসাথে বসে । হঠাৎ মনে পড়লো কত কথা এখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি, কত বিষয়ে এখনো মত বিনিময় করা হয়নি । দুদিন আগে ফেসবুকে ববির এক পোষ্ট দেখে অবশ্য সে আশা বাদ দিয়েছি । যে মানুষ সারা জীবন লড়াই করে গেছেন, মাথা উঁচু করে মোকাবেলা করেছেন সব চ্যালেঞ্জ, তাঁকে এভাবে অসহায় অবস্থায় দেখতে মন চায়নি । যতই আমাদের খারাপ লাগুক, আমাদের আশার জায়গাটা যতই ছোট হয়ে যাক না কেন, ভালোবাসার মানুষগুলোকে মা...