২৫০০

ঘন কালো আকাশ। শুধু দূরে, অনেক দূরে মিটি মিটি তারারা জ্বলছে। সেই গভীর রাতে পৃথিবীর বায়ুমন্ডল ভেদ করে এগিয়ে আসছে একটা মাহাকাশ যান। খুব সন্তর্পণে। পাছে কারও ঘুম ভেঙ্গে যায় তাই সামান্যতম শব্দ পর্যন্ত করছে না।

পৃথিবী যখন দৃষ্টিসীমার মধ্যে আসবে, তারা ধীর গতিতে ঘুরতে শুরু করবে তার চারিদিকে, ঠিক যেন স্পুটনিক। নীচে কোথাও কোন আলো নেই। অন্ধকার আর অন্ধকার। ঘন কালো অন্ধকারে ডুবে গেছে সব। বিজলী বাতি যেন অদৃশ্য হয়ে গেছে পৃথিবী থেকে।

মহাকাশ যানটি আলোর খোঁজে ঘুরতে শুরু করবে। একসময় এসে পৌঁছুবে সূর্যের আলোয় আলোকিত অংশে। কিন্তু সেখানেও সব স্তব্ধ। চারিদকে বন আর বন। মাঝেমধ্যে শহরের ধ্বংসাবশেষ। সেটাও বন প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে। 

পাপা, এ তুমি আমায় কোথায় নিয়ে এলে? 

এ গ্রহের নাম পৃথিবী। অন্তত একসময় আমরা একে এ নামেই ডাকতাম।

তারপর? 

মানুষ প্রকৃতিকে জানল, প্রকৃতির রহস্য জানল আর সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে তারা তৈরি করল বিভিন্ন রকমের যন্ত্রপাতি। তখন আর একে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে ঘর থেকে বেরুতে পর্যন্ত হত না। পৃথিবীর এক প্রান্তে বসে অন্য প্রান্তের বন্ধুদের সাথে তারা কথা বলত, আড্ডা দিত। চারিদিকে বিজ্ঞানের জয়জয়কার। কিন্তু টেকনোলোজিতে উন্নত হলে কী হবে, মানুষ নিজেকে বদলাতে পারল না। ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ আর ধর্ম ব্যবসায়ীদের হাতে পড়ে মানব সভ্যতা বিপন্ন হল। যে বিজ্ঞান তাদের জীবনযাত্রাকে সহজ করে দিল, কুপমুন্ডক মানুষ সেই বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে নামলো তাদের নাস্তিক আখ্যা দিয়ে। জীবন বাঁচানোর জন্য পৃথিবীর মুক্তচিন্তার আর বিজ্ঞানমনস্ক মানুষরা  এক এক করে একদিন পৃথিবী ত্যাগ করল ভিন গ্রহের উদ্দেশ্যে।  

তুমিও কি এদের দলে ছিলে? 

হ্যাঁ। আমি তখন ছোট ছিলাম। তবে বাবা মার মুখে পৃথিবীর গল্প অনেক শুনেছি। নিজেরও কিছু কিছু স্মৃতি মনে আছে। সময়টা ছিল খুব কঠিন। একদিকে বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে মানুষ উন্নতির শিখরে উঠছিল, অন্যদিকে ধর্মীয় কুসংস্কারে অন্ধবিশ্বাস অধিকাংশ মানুষকে করে তুলেছিল পরমতের প্রতি অসহিষ্ণু। ফলে চাদিকে বাজছিল যুদ্ধের দামামা। শুধু দেশে দেশেই নয়, যুদ্ধ চলছিল মানুষে মানুষে। ধর্মের নামে কত নিরীহ মানুষ যে  মান-সম্মান, ঘর-বাড়ি, সহায়-সম্পদ এমনকি প্রাণ পর্যন্ত হারাচ্ছিল সে হিসাব রাখে কে? আর এ সবে ইন্ধন যোগাচ্ছিল ক্ষমতালিপ্সু রাজনৈতিক দল। শুধু ধর্মীয় নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী মানুষও নেমেছিল পরস্পরের নিধন যজ্ঞে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে পৃথিবী থেকে পালিয়ে যাওয়াই হয় মানব জাতির না হলেও মুক্তচিন্তার মানুষের টিকে থাকার একমাত্র  উপায়। 

এই যে তুমি বলছ পৃথিবী ছিল বিজ্ঞান আর প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত, কিন্তু এখন পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে তো সেটা মনে হয় না। চারিদিকে শুধু বন আর বন। পৃথিবী যেন সবুজ সমুদ্রে ঢাকা পড়ে গেছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক কালে এখানে কোন যুদ্ধ হয়েছে বলেও তো মনে হয় না। সব কেমন শান্ত। কোথাও কোন মানুষজনও তো চোখে পড়ছে না। 

আমারও সেই একই প্রশ্ন। ভিন্ন গ্রহে আমরা অবশ্য প্রায় অমরত্ব লাভ করেছি। অনায়াসে কয়েক শ বছর বেঁচে থাকতে পারি। কিন্তু পৃথিবীর মানুষ তো এক শ বছরও বাঁচত না। তাই বলে এত তাড়াতাড়ি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবারও কোন কারণ নেই। এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আমাদের পৃথিবীতে অবতরণ করতে হবে।  

কোথায়  নামব আমরা? 

ভারতীয় উপমহাদেশে। 

তুমি জান সেটা কোথায়? 

হিমালয়ের এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ। তাই সেটা খুঁজে বের করা খুব একটা সমস্যা হবে বলে মনে হয় না। তাছাড়া এখানে শুধু আমার জন্মভূমিই নয়, কী ধর্মীয়, কী রাজনৈতিক - সব দিক থেকে উপমহাদেশ ছিল বারুদের উপর বসা। তাই ওখানে গেলেই সারা বিশ্বের খবর কমবেশি পাওয়া যাবে। 

যখন ওরা গঙ্গার উপত্যকায় এসে পৌঁছুল সূর্য তার লাল আভা ছড়িয়ে দিয়েছে পূব আকাশে। একসময় এই বাংলাদেশ ছিল পৃথিবীর সব চেয়ে ঘনবসতি পূর্ণ দেশ। আজ সেখানে শুধুই গাছ আর গাছ। কোথায় হারিয়ে গেছে কংক্রিটের অরণ্য। তা দেখে অভির মনে হল মানুষের তৈরি প্রাসাদ নয়, প্রকৃতির সন্তানেরাই অক্ষয়, অমর। অনেক খুঁজে খুঁজে ও ফিরে এলো প্রিয় কালীগঙ্গার তীরে। কোন এক কালে এখানে ছিল ওর গ্রাম, ওর বাড়ি। এখন আর গ্রাম বলতে কিছু নেই। গাছে গাছে পাখিরা গাইছে। ও যখন পুরনো স্মৃতিচারণে ব্যস্ত, বনের ভেতর থেকে বেরিয়ে এল এক দল লোক। মানুষের মতই, তবে দেখতে অনেকটা ছবিতে দেখা আদিম মানুষের মত। অনাদরে অবহেলায় আদিম মানুষের মত লাগলেও তারা ভাষা হারায় নি, আগের মতই এখনও দিব্যি কথা বলে যাচ্ছে। একটু ভয়, একটু সঙ্কোচ - এসব কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত ওরা এগিয়ে এল অভিদের কাছে। 

আপনারা কে?

অনেক আগে আমি এখানকারই বাসিন্দা ছিলাম। এখানে ছিল অনেক মানুষ, বড় বড় সব বাড়িঘর। কিন্তু সব কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। সব কেমন যেন অপরিচিত মনে হচ্ছে।

আমাদের বাপ দাদারাও তাই বলতেন। তারা শুনেছে তাদের বাপ দাদার কাছে। এক সময় এই দেশটা নাকি অনেক উন্নত ছিল। রাস্তাঘাট, গাড়ি-বাড়ি কী ছিল না মানুষের। শুনেছি এদেশের মানুষেরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। বিজ্ঞান নামে কি একটা জিনিস নাকি ঈশ্বরকেও চ্যালেঞ্জ করেছিলো। তাই বিশ্বাসীরা তাদের পৃথিবী থেকে তাড়িয়ে দেয়। চলে যাবার সময় তারা সাথে নিয়ে যায় সব বিদ্যাবুদ্ধি, সব জ্ঞান। যা কিছু রেখে গেছিল তাও পুড়িয়ে ফেলে বিশ্বাসীরা। যারা বিধর্মী তাদেরও হয় মেরে ফেলে, নয়তো দেশ ছাড়া করে। একটা সময় পর্যন্ত ওদের ছাড়া  বিশ্বাসীদের ভালই চলছিল। তারপর এক সময় রাস্তাঘাট, গাড়ি-বাড়ি, রেডিও টিভি, ইন্টারনেট - এক কথায় বিজ্ঞানের সব আবিষ্কার নষ্ট হতে শুরু করল। কিন্তু কোথাও কাউকে পাওয়া গেল না সেসব ঠিক করার। প্রথমে গেল ইন্টারনেট, তারপর এরোপ্লেন, বাস, ট্রেন। গেল রাস্তাঘাট। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার আগেই চলে গেছিল। এক সময় কবিরাজ পর্যন্ত পাওয়া গেল না। উপাসনালয়ে হাজার বার মাথা ঠুকেও ঈশ্বরের মন গলাতে পারল না এসব বিশ্বাসীরা। নীরব, নিথর ঈশ্বর মানুষের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল না। শুরু হল মহামারী। তারপর দুর্ভিক্ষ। মানুষ যখন বুঝতে পারল আকাশের ঈশ্বর নয়, মাটির বিজ্ঞানীরাই ছিল তাদের ত্রাণকর্তা, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। যে ধর্ম একদিন পৃথিবী থেকে বিজ্ঞানমনস্ক মানুষদের ঝেটিয়ে বিদায় করেছিলো, একদিন সে ধর্মও বিদায় নিল।     

তারপর?

তারপর আর কি? মন্দিরে ঘণ্টা বাজে না, মসজিদে আজানের আওয়াজ শোনা যায় না। যে ধর্ম নিয়ে একদিন এত মারামারি, এত খুনোখুনি, ধার্মিকদের হাতে একদিন সেই ধর্মই পারতপক্ষে খুন হল। পৃথিবী থেকে বিদায় নিল ধর্ম। শুধু কী ধর্ম? বিদায় নিল পুঁজিবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জঙ্গিবাদ, নারীবাদ - সব।  এখন আর ভোট হয় না। রাজনৈতিক দলগুলো মারামারি করে না। হবেই বা কি করে? যখন চারিদিকে মহামারী আর দুর্ভিক্ষ কে নেবে মানুষের দায়িত্ব। দেখতে দেখতে শাসক শ্রেনীই উঠে গেল। শাসন করবে কাকে? শোষণই বা কাকে করবে? যার কিছুই নেই কী নেবে তার কাছ থেকে। শহরের পর শহর, গ্রামের পর গ্রাম উজার হয়ে গেল। আবাদী জমি পরিণত হল বনে। হাতে গণা যে দু চারজন বেঁচে ছিল তারা চলে গেল খাবারের সন্ধানে বনে। সারা দেশ জুড়ে একই অবস্থা। সারা পৃথিবীই তো এই দোষে দোষী ছিল। এখানে ধর্ম নিয়ে মানুষ মানুষকে মেরেছে, অন্য দেশে মেরেছে অন্য আদর্শের কারণে। আজ যদি সারা বিশ্বই অন্ধকারে ডুবে যায়, সারা পৃথিবীর মানুষই যদি আদিম যুগে ফিরে যায় - একটুও অবাক হব না। অন্যদের বোকা বানাতে গিয়ে সবাই নিজেরাই বোকা বনে গেছে। 

এত সব কথা আপনি জানলেন কোত্থেকে?

বললাম না, বাবা, দাদারা বলেছেন। কোন এক পূর্বপুরুষের ডাইরিতে নাকি এসব ছিল। তবে স্কুল, কলেজ না থাকায় আমরা তো আর পড়াশুনা করতে শিখিনি। তাই ডাইরির সব কথা জানা হয়নি। বড়দের মুখে যা শুনেছি শুধু তাই বলছি। 

আছে আপনার কাছে সেই ডাইরি? 

আছে। ওটাই সভ্য মানুষদের কাছ থেকে পাওয়া আমার, আমাদের একমাত্র উত্তরাধিকার। 

দেখতে পারি? 

অবশ্যই। তবে নিতে পারবেন না। ওটাই তো আমাদের একমাত্র সম্বল। 

সমস্যা নেই। ছবি তুলে নিয়ে যাব। কে জানে, ওখানে আমার পরিচিত মানুষজনের খবরাখবরও থাকতে পারে।  

বেশ কিছুদিন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে অভি আর সেভা ফিরে গেল নিজ গ্রহে। সমস্ত পৃথিবীতে একই অবস্থা। কংক্রিটের অরণ্য হারিয়ে গেছে সবুজের ভিড়ে। বায়ু দূষণের সমস্যা নেই, বৈশ্বিক উষ্ণতার সমস্যা নেই, সমস্যা নেই ধর্মের, রাজনীতির। অভির মনে পড়বে এক সময় পরিবেশবাদীরা এমন এক পৃথিবীর জন্যই আন্দোলন করেছিল। যে রকম পৃথিবীর জন্য এত আন্দোলন, এত ইকো-ফ্রেন্ডলি টেকনোলোজির আবিষ্কার আজ তা জনশূন্য। চারিদিকে শুধু বন্য জীব-জন্তুর নির্ভয় পদচারণা।  মানুষের সাথে সাথে গৃহপালিত পশু পাখিরাও যেন হারিয়ে গেছে পৃথিবী থেকে। 

বারান্দায় বসে একদিন যখন  অভি পৃথিবীর কথা ভাবতে ভাবতে নিজেদের গ্রহের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছিল ছেলে পাশে এসে জিজ্ঞেস করল 

পাপা, তুমি যে ডাইরিটা  এনেছিলে সেটা পড়েছ? 

ওই যা, ভুলেই গেছি। এক্ষুনি দেখছি। 

আরও কিছু লোক আজ পৃথিবী ছেঁড়ে চলে গেল। এদের কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ বা শিক্ষক। সবাই মুক্তমনা মানুষ। মনে পড়ছে বাবার কথা। উনি বলেছিলেন দেশভাগের পরেও ঠিক এমনটাই নাকি ঘটেছিল। এলাকার শিক্ষিত মানুষেরা ধীরে ধীরে দেশ ত্যাগ করছিল। অল্প দিনের মধ্যে দেশে উপযুক্ত পরিমাণ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক - এক কথায় শিক্ষিত মানুষের অভাব দেখা দেয়। কিন্তু তখন সামনে ছিল নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন। মানুষের মধ্যে ছিল উদ্দীপনা। মানুষ বিশ্বাস করত যে একমাত্র শিক্ষাই তাদের এ বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে সমাজের সর্বস্তর থেকে শিক্ষাটাকেই উঠিয়ে দেবার পায়তারা চলছে। শিক্ষাকে এরা ধর্মের শত্রু হিসেবে নিয়েছে। কয়েকটা প্রজন্ম এই শিক্ষা নিয়েই বেড়ে উঠেছে। তাই প্রতিটি শিক্ষিত মানুষের পৃথিবী ত্যাগ এক একটা বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি করছে যা সহজে দূর হবার নয়। আজ যারা ভিন গ্রহের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে তাদের অনেকেই এক সময় বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, ধর্মের হয়ে জিহাদ করেছে। কিন্তু যাদের তারা নেতা মনে করেছিল, তারা ধর্ম রাজ্য কায়েম করতে চায়নি, তারা চেয়েছিল ক্ষমতা, চেয়েছিল দেশের সবাই যেন বিনা প্রতিবাদে তাদের হুকুম তামিল করে। ক্ষমতা  তারা পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু মানুষকে ধোঁকা দিয়ে, হুমকি দিয়ে, ভয় দেখিয়ে নিজেদের কথা শোনানো ছাড়া অন্য কোন যোগ্যতাই তাদের ছিল না। তারা না ছিল ধার্মিক, না ছিল রাজনীতিবিদ। অযোগ্য শাসকের হাতে পড়ে মহামারী আর দুর্ভিক্ষে সোনার দেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। যারা পারছে, তারা পালাচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়? যারা কিছুটা হলেও সমাজকে পরিবর্তন করতে পারত তাদের পলায়নপর নীতি একদিন মানব জাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে। জানি না এরা তখন নিজেদের ক্ষমা করতে পারবে কিনা। ...........................


৩১ মে ২০৫০



অভির ক্যালেন্ডারে ২৫০০ সাল। এই ৪৫০ বছরে মানব জাতি নিশ্চিহ্ন না হলেও প্রায় ধ্বংসের পথে। অভির চোখের সামনে পড়ে থাকবে ছোট ছোট অক্ষরে লেখা বিশাল ডাইরি। বোঝা যায় লেখক এই আকালের দিনে যতদূর সম্ভব কাগজ আর কালি বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। ওর চোখের সামনে ভেসে উঠবে ফেলে আসা গ্রামের ছবি। সেই নদী। সেই দক্ষিণ চক - শীতের সময় সর্ষে ফুলে ঢাকা। ও আর পড়তে পারবে না।  চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে অভি ভাববে সত্যিই, পৃথিবী থেকে মানব জাতি যে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল তার দায় সে নিজেও এড়াতে পারবে না।  

দুবনা, ২১ এপ্রিল ২০২১ 







Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি