ভ্যাক্সিন
১৯৮৩ সালে আমি যখন মস্কো আসি ওজন ছিল মাত্র ৪৩ কেজি। এ নিয়ে আমার একটু গর্বই ছিল। অনায়াসে বৃষ্টির ফোঁটার ফাঁক গলিয়ে হেঁটে যেতে পারতাম, কোন দিন আমার কারণে লিফটে ওভার ওয়েট হত না (তবে মাঝে মধ্যে কোন বেয়াড়া লিফট আমাকে একা লিফট দিতে চাইতো না)। এক কথায় ওজন কম থাকলে মনও হালকা থাকে। আজ গেলাম ভ্যাক্সিন নিতে। স্পুটনিক লাইট। একটাই ডোজ। তবে সুইটা দেখে ভড়কে গেলাম। ওর দৈর্ঘ্য আমার হাতের ব্যাসের চেয়ে বেশি। তাই সিস্টারকে বললাম
- ওটা পাছায় দেওয়া যায় না?
- তোমার পাছা দিয়ে আমি কী করব?
সত্যিই তো, আমার পাছা দিয়ে সে কী করবে? এর পরে আর কোন কথা থাকে না। অগত্যা হাতেই নিতে হল। অযথাই ভয় পেয়েছিলাম। অনেক সময় মশার কামড় এর চেয়ে বেদনাদায়ক।
আজ অবশ্য আমার সাথে গুলিয়ারও ভ্যাক্সিন নেবার কথা ছিল। গতকাল থেকেই টালবাহানা শুরু করেছে। সকালে রেডি হয়ে জিজ্ঞেস করলাম
- যাবে ভ্যাক্সিন নিতে?
- আমার যা মাথা ব্যথা করছে, ভ্যাক্সিন নিলে মরেই যাব।
- ভ্যাক্সিন না নিয়ে মরার চেয়ে নিয়ে মরাই ভাল।
- কেন?
- শুনলাম স্বর্গ আর নরকের দ্বারে নোটিশ ঝুলিয়েছে "যারা মৃত্যুপুরীতে আসার আগে ভ্যাক্সিন নেয়নি তাদের প্রবেশ নিষেধ।" দেখ আবার ঝুলে যেও না।
গুলিয়া এর উত্তর খুঁজে না পেয়ে ওর স্বভাবসুলভ প্রিয় বাক্য দুটোই প্রয়োগ করল
- আস্ত পাগল।
ভাগ্যিস এমন নোটিশ সত্যি সত্যি ঝুলছে কিনা সে তথ্য কেউ দিতে পারবে না। তাই আমি পাগল কি না সে ব্যাপারটাও আপাতত অমীমাংসিত রইলো।
Comments
Post a Comment