Posts

Showing posts from September, 2025

প্রশ্ন

Image
গতকাল সিপিবির কংগ্রেস শেষ হল। সেই আশির দশকের শুরুতে যখন রাজনীতির সাথে জড়িত হই তখন থেকেই সিপিবির কংগ্রেস নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠি। তবে সবসময়ই যতটা না কমিটি তারচেয়ে বেশি করে আগ্রহের কেন্দ্রে থাকত পার্টির রণনীতি রণকৌশল। এই প্রথমবারের মত সামনে চলে আসে অন্য ভয় - পার্টি ভাঙবে না তো? পার্টি ঐক্যবদ্ধ থাকবে তো? ফেসবুকে ও বিভিন্ন গ্রূপ পোস্টে দেখলাম নতুন কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, চলছে ভোট গণনা। এরপর একসময় বিজয়ী প্রার্থীদের নাম এল। কোথাও কোথাও কোন গ্রূপের কতজন নির্বাচিত হয়েছে সেটাও জানলাম। দেখলাম কারোও কারোও বিজয় মিছিলের খবর। মনে পড়ল ছাত্রজীবনের কথা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সম্মেলন। নির্বাচন শেষে সবাই মিলে প্রসেশন করে শহরের রাস্তায় ঘুরি। কোন বিজয় মিছিল নয়। কেউ বিজয়ী নয়, কেউ পরাজিত নয়। একমাত্র বিজয়ী ছাত্র ইউনিয়ন। তাই গতকালের বিজয় মিছিল মানে একদল লোক পরাজিত হয়েছে। সিপিবির কিছু সদস্য যখন পরাজিত হয় তখন সিপিবি কি জয়ী হয়? নাক, কান, আঙ্গুল দেহের তুলনায় যত নগণ্যই হোক না কেন কোন অঙ্গ অসুস্থ হলে শরীর কি সুস্থ থাকে? দুবনা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কারণ

Image
দেশে দেখলাম স্কুলের পাঠ্যসূচি থেকে নাচ-গান তুলে দেবার দাবি জানানো হচ্ছে। কারণ? এসব ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ। মানুষের সংস্কৃতি তার জন্মস্থানের ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ধ্বনি, ভাষা, পোশাক পরিচ্ছদ। নাম যাই হোক না কেন এই উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ এক অদৃশ্য সূতায় গাথা। আচ্ছা যদি আরবের সংস্কৃতিকে ইসলামিক সংস্কৃতি (যা আসলে নয়, কারণ আরবের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার অনেক অনেক আগে) ধরেই নেই তাহলে তো সেখানে কখনোই ভাত মাছের সংস্কৃতি ছিল না, ছিল না নদী কেন্দ্রিক জীবন, ছিল না চাষাবাদ। আমাদের অঞ্চলের এসব কিছু ভারতীয় (উপমহাদেশের) জীবনযাত্রার অংশ। তাহলে কি আমরা ভাষা (সংস্কৃত বা পালি বা প্রাকৃত যেটাই হোক সবই ভারতীয় বা ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা, সেমিটিক নয়), খাদ্যাভ্যাস, পোশাক পরিচ্ছদ সবই ত্যাগ করব ভারতীয় বলে? পারব কি? আর যদি নাই পারি তাহলে তাহলে নিজেদের হাস্যকর করার কারণ কি? অজ্ঞতা? দুবনার পথে, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিপিবি কংগ্রেস

Image
সিপিবির কংগ্রেসে মঞ্জুরুল আহসান খান মঞ্জু ভাইকে দেখলাম। মস্কোয় পড়াশুনা করার সুবাদে সেই সময়ের সিপিবির অনেক কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে পরিচয় হয়, অনেকের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই এখনও সেই সময়ের নেতাদের রাজনৈতিক গতিবিধি সম্পর্কে খবর রাখার চেষ্টা করি। মঞ্জু ভাইয়ের বিগত কয়েক বছরের অনেক কাজ খুব ভালো ভাবে নিতে পারিনি। একজন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর স্বাধীনতা আছে বিভিন্ন বিষয়ে নিজস্ব মত পোষণ করার। তবে যেহেতু তিনি ছিলেন অনেকের কাছেই পথপ্রদর্শক স্বরূপ, যেহেতু তাঁকে দেখে অনেকেই সিপিবির রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে, তাই কিছু কিছু প্রশ্নে তাঁর ইউ-টার্ন অনেককে ব্যথিত করেছে। অনেক দিন পরে তাঁকে দেখে মনে হল সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসার মত শারীরিক অবস্থা ওনার নেই। যতদূর জানি তিনি পার্টি থেকে বহিষ্কৃত এবং সেটা সঙ্গত কারণেই। তবে তাঁর বয়স, অতীতে পার্টি ও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অবদান এসব বিবেচনা করে পার্টি যদি এই কংগ্রেসে তাঁর সদস্য পদ পুনর্বহাল করে সেটা শুধু পার্টির জন্যই নয়, এর আগে বিভিন্ন কারণে পার্টি থেকে বহিষ্কৃত বা স্বেচ্ছায় বেরিয়ে যাওয়া অনেকের জন্যই হবে সবুজ সংকেত‌। এটা পার্টির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ক...

বনেদি

Image
অনেক দিন আগে কালেভদ্রে বেতিলার জমিদার বাড়ির পানু (?) বাবু আসতেন আমাদের বাড়িতে। পাজামা পাঞ্জাবি পরে ঘোড়ায় চেপে তিনি আসতেন। আগের সেই জৌলুষ ছিল না, তবে বনেদি ভাব ছিল।  পোল্যান্ডে রাশিয়ার ড্রোন আক্রমণ নিয়ে ইউরোপ যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালতে চাইছে। মজার ব্যাপার হল একটি ড্রোনেও বারুদ ছিল না, সেগুলো যে রাশিয়ান তার কোন চিহ্ন ছিল না দুটো কিরিলিক অক্ষর ছাড়া তাও আবার অনেকটা ঋ বা লি (৯) এর মত অক্ষর যা একা একা ব্যবহৃত হয় না। তাছাড়া ড্রোনগুলো পোলিশ সীমান্তে ঢোকার মুখে বেলারুশ তাদের সতর্ক করে দিয়েছে। আর দুই পয়সার ড্রোন ঠেকাতে আকাশে উঠেছে কয়েক দেশের যুদ্ধ বিমান - যাকে বলে মশা মারতে কামান দাগা। এরা কি বুঝে না, এমনকি আমেরিকা যদি তাদের ডাকে সাড়া দেয়ও যুদ্ধ হবে ইউরোপের মাটিতে আর তাতে করে ধ্বংস হবে ইউরোপ। এই যে তারা ইউক্রেনকে সামনে রেখে যুদ্ধ করছে আর ধ্বংস হচ্ছে ইউক্রেন, মরছে সে দেশের মানুষ - ইউরোপ কি সেটাই চায়? চায় লাখ লাখ ইউরোপিয়ানদের মৃত্যু? ইউক্রেনের ক্ষেত্রে রাশিয়া সিভিলিয়ানদের উপর আক্রমণ করে না, কিন্তু ইউরোপিয়ানদের উপর করবে না সেই গ্যারান্টি নেই। আর সেই যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা ...

ফ্রী ল্যান্সার

Image
স্মার্টফোন বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে তরুণ প্রজন্ম এমনকি শিশুদের মনোজগতে বিরাট প্রভাব বিস্তার করেছে এ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়। কিন্তু যেটা লেখা হয় না তা হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কীভাবে রাজনীতিকে ধ্বংস করছে। দেশে দেশে রঙিন বিপ্লবে সামাজিক মাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমনকি শাহবাগ আন্দোলনের শুরু এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই। অথবা পরবর্তী কালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা আন্দোলন আর সবশেষে ২০২৪ এর জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থান। একই চিত্র আমরা দেখতে পাই শ্রীলঙ্কা আর নেপালে। সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলো এসব আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকে না, ফলে প্রথম দিকে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখছে। পরবর্তীতে যোগ দিলেও আন্দোলনের নেতৃত্ব তাদের হাতে থাকছে না। আর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনুপস্থিত থাকে তখন সরকার ফেলা গেলেও পছন্দের নতুন সরকার গড়া যাচ্ছে না, ফলে কারো কারো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জিত হলেও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না, জাতির বৃহত্তর রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। দেশে দেশে সৃষ্টি হচ্ছে অরাজকতা। আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পাল্লায় রাজনৈতিক দলগুলো ক্র...

ডিজিটালাইজেশন

Image
সোভিয়েত আমলে শুধু রেডিও টেলিভিশন নয়, প্রতিটি ইস্ত্রি পর্যন্ত সুযোগ পেলেই লেনিনের নাম নিত। এখন সেই জায়গা দখল করেছে ডিজিটালাইজেশন। এর যে পজিটিভ দিক নেই সেটা বলব না, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই জীবন সহজ হয়ে গেছে। ডকুমেন্টের জন্য কোথাও যেতে হয় না, অনলাইনে দরখাস্ত করে ঘরে বসেই পাওয়া যায়। তবে সব কিছুর মত কোন কিছু মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে হিতে বিপরীত হয়। এর আগে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হিসাব রাখত ক্লাস ক্যাপ্টেন। গত বছর থেকে এর ডিজিটালাইজেশন হল। ছাত্ররা ক্লাসে এসে কিউআর কোড ব্যবহার করে নিজেদের হাজিরা প্রমাণ করত। এ নিয়ে আমার কখনই কোন মাথাব্যথা ছিল না। যাদের ইচ্ছা ক্লাসে আসত না হলে না। তবে এই সুযোগটা অনেকেই ব্যবহার করে। কেউ এসে কোডের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দিত। অন্যরা ঘরে বসেই উপস্থিত থাকত। এটা হয়তো কর্তৃপক্ষ টের পেয়েছে। তাই নতুন নিয়ম। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার অনলাইন ক্লাস হয়েছে।আমি উপস্থিত ছিলাম না। গতকাল গিয়ে শুনলাম এখন শুধু ছাত্ররা নয় শিক্ষকদেরও ঐ কোডের ছবি নিতে হবে ক্লাসের শুরুতে যা কাজ শুরুর হিসাব রাখবে। আবার ক্লাস শেষে কোডের ছবি তুলে শেষের ঘন্টা বাজাতে হবে। এটা...