বনেদি

অনেক দিন আগে কালেভদ্রে বেতিলার জমিদার বাড়ির পানু (?) বাবু আসতেন আমাদের বাড়িতে। পাজামা পাঞ্জাবি পরে ঘোড়ায় চেপে তিনি আসতেন। আগের সেই জৌলুষ ছিল না, তবে বনেদি ভাব ছিল। 

পোল্যান্ডে রাশিয়ার ড্রোন আক্রমণ নিয়ে ইউরোপ যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালতে চাইছে। মজার ব্যাপার হল একটি ড্রোনেও বারুদ ছিল না, সেগুলো যে রাশিয়ান তার কোন চিহ্ন ছিল না দুটো কিরিলিক অক্ষর ছাড়া তাও আবার অনেকটা ঋ বা লি (৯) এর মত অক্ষর যা একা একা ব্যবহৃত হয় না। তাছাড়া ড্রোনগুলো পোলিশ সীমান্তে ঢোকার মুখে বেলারুশ তাদের সতর্ক করে দিয়েছে। আর দুই পয়সার ড্রোন ঠেকাতে আকাশে উঠেছে কয়েক দেশের যুদ্ধ বিমান - যাকে বলে মশা মারতে কামান দাগা। এরা কি বুঝে না, এমনকি আমেরিকা যদি তাদের ডাকে সাড়া দেয়ও যুদ্ধ হবে ইউরোপের মাটিতে আর তাতে করে ধ্বংস হবে ইউরোপ। এই যে তারা ইউক্রেনকে সামনে রেখে যুদ্ধ করছে আর ধ্বংস হচ্ছে ইউক্রেন, মরছে সে দেশের মানুষ - ইউরোপ কি সেটাই চায়? চায় লাখ লাখ ইউরোপিয়ানদের মৃত্যু? ইউক্রেনের ক্ষেত্রে রাশিয়া সিভিলিয়ানদের উপর আক্রমণ করে না, কিন্তু ইউরোপিয়ানদের উপর করবে না সেই গ্যারান্টি নেই। আর সেই যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা বেশি। তাহলে কি ইউরোপ পারবে নিজেদের বাঁচাতে, এমনকি আমেরিকা যদি তাদের সাহায্য করেও? ইতিমধ্যে পশ্চিমা বিশ্বে এরকম কথাও উঠছে যে ইউক্রেন নিজেই পোল্যান্ডে ড্রোন আক্রমণের অভিনয় করেছে ট্রাম্পকে যুদ্ধের ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে আর ইউরোপের পকেট থেকে বেশি করে অর্থ ও অস্ত্র খসাতে। প্রায় দুই বছর আগেও ইউক্রেন পোল্যান্ড আক্রমণ করেছিল আর পোল্যান্ডের তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে সেটাকে রাশিয়ার আক্রমণ বলে কনভিন্স করার চেষ্টা করেছিল। কারণ একমাত্র তখনই ন্যাটো রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে নামবে। এতে করে যদি রাশিয়াকে পরাজিত করা যায়!
আর যদি না করা যায় অন্তত সবাই মিলে কালেক্টিভ সুইসাইড করা যাবে। ইউক্রেনের হারানোর কিছু নেই। আবার একা একা মরাটাও লজ্জাজনক। জানি না ইউরোপের এলিট শ্রেণী কবে অনুধাবন করবে যে শত্রুতা নয় রাশিয়ার সাথে বন্ধুত্বই তাদের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে টেকসই গ্যারান্টি! সমস্যা হল আমাদের দেশে যেমন ভারত বিরোধিতা পশ্চিমা বিশ্বে তেমনি রুশ বিরোধিতা আজ রাজনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি।

আর যাই হোক আমরাই বিশ্বের ভাগ্য বিধাতা এই বনেদি ভাবটা ধরে রাখতে হবে তো!

মস্কো, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

প্রশ্ন

সিপিবি কংগ্রেস

রিংকু