ডিজিটালাইজেশন

সোভিয়েত আমলে শুধু রেডিও টেলিভিশন নয়, প্রতিটি ইস্ত্রি পর্যন্ত সুযোগ পেলেই লেনিনের নাম নিত। এখন সেই জায়গা দখল করেছে ডিজিটালাইজেশন। এর যে পজিটিভ দিক নেই সেটা বলব না, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই জীবন সহজ হয়ে গেছে। ডকুমেন্টের জন্য কোথাও যেতে হয় না, অনলাইনে দরখাস্ত করে ঘরে বসেই পাওয়া যায়। তবে সব কিছুর মত কোন কিছু মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে হিতে বিপরীত হয়। এর আগে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হিসাব রাখত ক্লাস ক্যাপ্টেন। গত বছর থেকে এর ডিজিটালাইজেশন হল। ছাত্ররা ক্লাসে এসে কিউআর কোড ব্যবহার করে নিজেদের হাজিরা প্রমাণ করত। এ নিয়ে আমার কখনই কোন মাথাব্যথা ছিল না। যাদের ইচ্ছা ক্লাসে আসত না হলে না। তবে এই সুযোগটা অনেকেই ব্যবহার করে। কেউ এসে কোডের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দিত। অন্যরা ঘরে বসেই উপস্থিত থাকত। এটা হয়তো কর্তৃপক্ষ টের পেয়েছে। তাই নতুন নিয়ম। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার অনলাইন ক্লাস হয়েছে।আমি উপস্থিত ছিলাম না। গতকাল গিয়ে শুনলাম এখন শুধু ছাত্ররা নয় শিক্ষকদেরও ঐ কোডের ছবি নিতে হবে ক্লাসের শুরুতে যা কাজ শুরুর হিসাব রাখবে। আবার ক্লাস শেষে কোডের ছবি তুলে শেষের ঘন্টা বাজাতে হবে। এটা অনেকটা ইন্টারসিটি বাসের মত। বাসে ঢুকে কার্ড পাঞ্চ করে যাত্রা শুরু করতে হয়, নামার সময় আবার পাঞ্চ করে শেষ করতে হয়। নাহলে টাকা কাটতেই থাকবে বা কার্ড ব্লক করবে। এতে করে ছাত্রদের হয়তো ক্লাসে ঢোকানো যাবে কিন্তু পড়াশুনার মান উন্নত করা যাবে কিনা সন্দেহ। বিশেষ করে আমাদের মত তত্ত্বীয় বিষয়ে। আমার সমস্যা হল আমি এসব করতে ভুলে যাই। মাসের শেষে দেখা যাবে আমি উপস্থিত ছিলাম না। বেতন কাটবে।

দুবনা, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

প্রশ্ন

রিংকু