Posts

Showing posts from October, 2025

উপলব্ধি

Image
গত ২৩ অক্টোবর লিখেছিলাম "যদি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বিশাল কোন প্রাণীর সাথে ও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম জোটের মুক্তিযোদ্ধাদের বাঘের সাথে তুলনা করি তাহলে দেখব বিজয়ের পর থেকেই তারা ট্রফি দখলের লড়াইয়ে ব্যস্ত আর এই সুযোগে জামায়াত শিবির ও অন্যান্য স্বাধীনতা বিরোধী হায়েনার দল শিকার নিয়ে অনেক আগেই ভেগে পড়েছে - প্রথমে দখল করেছে অর্থনীতি, এরপর শিক্ষাঙ্গন ও সমাজ বিশেষ করে মহিলাদের এবং সবশেষে রাজনীতির মাঠ।"  এক সপ্তাহের বেশি ফেসবুকে প্রবেশাধিকার না থাকায় তখন পোস্ট করতে পারিনি। আজ ভোরে আবার এখানে আসতে পেরে অনেক নতুন খবর পেলাম। যেমন ২৪ এর পটপরিবর্তনের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জুলাই সনদ নিয়ে দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। এতে কিছু জিনিস নতুন করে উপলব্ধি করলাম।  বাংলাদেশে কোন দলই দেশকে জননী জন্মভূমি মনে করে না আর তাই সন্তানের মত দেশের মঙ্গলের জন্য নিজেকে বা নিজেদের উৎসর্গ করে না।  লড়াই করেই হোক আর ষড়যন্ত্র বা ছলচাতুরি করেই হোক ক্ষমতায় একবার যেতে পারলে দেশটাকে শত্রুর হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া ট্রফি বলে মনে করে আর দেশকে গণিমতের মালের মত ব্যবহার করে। গণি...

নব্য সর্বহারা

Image
ইউরোপ আজ উন্মাদের মত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে। কি হতে পারে সে চিন্তা না করেই রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই মুহূর্তে সে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের হাত দিয়ে তবে আগামী বছর তিন চারের মধ্যে যে নিজেরাও যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে সেটা আর গোপন করছে না। আমরা যারা ইউরোপকে সভ্যতার কেন্দ্র বলে মনে করি তারা ভুলে যাই যে ইউরোপ আসলে সারা বিশ্বের জন্য বারবার বিপদ ডেকে এনেছে। বিগত প্রায় ৫০০ বছর এশিয়া, আফ্রিকা আর ল্যাটিন আমেরিকা ছিল তাদের কলোনি। তারা শুধু সেসব দেশের সম্পদ নিয়েই সুখী হয়নি, প্রায় সমস্ত উপনিবেশে চালিয়েছে নির্মম গণ হত্যা, ধ্বংস করেছে এসব দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি। এছাড়াও বারবার বিশ্বকে ধ্বংসের মুখে দাড় করিয়েছে। ১৮১২-১৮১৫ সালে নেপোলিয়ন, ১৯১৪-১৯১৯ সালের প্রথম মহাযুদ্ধ, ১৯৩৯-১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এ সব ইউরোপের সৃষ্টি। বর্তমানে আবার সে পথেই চলছে। এর কারণ হতে পারে রাশিয়ার প্রতি ক্ষোভ। কারণ রাশিয়াই তাদের উপনিবেশ থেকে পাত্তারি গুটাতে বাধ্য করেছে। আর লোভ। হ্যাঁ, রাশিয়ার অঢেল সম্পদের প্রতি লোভ। লোভের কাছে ভয় হার মানে। তাই এমনকি আসন্ন পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তাদের নেই। আচ্ছ...

শংকা

Image
বিভিন্ন কলকারখানায় আগুন লাগাকে সাবোটাজ বলার চেষ্টা করা হচ্ছে। হতেই পারে। প্রশ্ন হল কারা করছে? বিগত পঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা কি ঘটেছে? গাড়ি ভাঙচুর, রাস্তা বন্ধ এসব হয়েছে প্রকাশ্যে মূলতঃ হরতাল পালনের সময়। অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে ২০২৪ এ অনেকটা হিটলারের রাইখস্টাগে আগুন লাগানোর কায়দায়। এর আগে বিরোধী দল বা ছাত্র জনতার মিছিল মিটিং এ পুলিশ গুলি চালালেও চব্বিশেই প্রথম সরকার বিরোধীরাও গুলি চালিয়েছে বলে অনেকেই দাবি করেছে। থানায় পুলিশ হত্যার ঘটনা তো প্রকাশ্যেই ঘটেছে। এমতাবস্থায় নির্বাচন বাতিল ও বিনা নির্বাচনে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার কৌশল হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেই যে এই অগ্নিকাণ্ডের সাথে জড়িত নয় তা কে বলবে। কারণ এর ফলে বেনিফিট পাচ্ছে কিছু দেশী বিদেশী অধ্যাপক ও তাদের গুণমুগ্ধ কিছু ছাত্র জনতা। তাই নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে পাল্লা দিয়ে যদি অগ্নিকাণ্ডের প্রকোপ বাড়ে তাহলে অবাক হবার কিছু থাকবে না। মস্কো, ২০ অক্টোবর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
সিঙ্গাপুর অনেক ভাবেই হওয়া যায় - অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটিয়ে, জনসংখ্যা কমিয়ে, দেশের আয়তন কমিয়ে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে - উপায়ের তো শেষ নেই।  ১৯৯০ এর দশকে সিঙ্গাপুর গিয়ে যে স্লোগান আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে তা হল - One nation, one people, one Singapore. এটা চাইনিজ, মালয় আর ভারতীয় (তামিল) এই তিন জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির পরে। আর আমরা? হিন্দু - মুসলমান, আওয়ামী লীগ - বিএনপি, পাকিস্তান প্রেমী - ভারতপ্রেমী কত ভাগে যে দেশটাকে ভাগ করি - শুধু বাংলাদেশ পন্থী হতে চাই না। অর্থনীতিতে গত এক বছরে যে ডিগবাজি খেয়েছি তাতে সিঙ্গাপুর কেন পাকিস্তানের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারব কিনা সেটাই প্রশ্ন।‌ বন্দর, করিডোর ইত্যাদি যেভাবে বিদেশীদের দখলে যাচ্ছে তাতে একসময় আয়তনে সিঙ্গাপুর মুখী হলে অবাক হব কি? দেশের জনগণের এক বিশাল অংশ নিজেদের বাংলাদেশী ভাবতে দ্বিধা করে। একদল একাত্তরের বাংলাদেশকে আরেক দল জুলাই সনদের বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করে না। সেই অর্থে জনসংখ্যার দিক দিয়ে সিঙ্গাপুর হলে হতেও পারি। সিঙ্গাপুর স্বনির্ভর, নিজের অতীত ঐতিহ্যে বিশ্বাসী। আমরা পরনির্ভরশীল। আমাদের নেতৃত্বের এক পা সব সময় ব...

মিলিয়নিয়ার

Image
আজ আবার আরেকজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হাসপাতালে এলাম। এটা প্রসপেক্ট মিরায়। মেট্রো থেকে বেরুলেই একটি গির্জা, রাস্তার ওপারে অলিম্পিক স্টেডিয়াম আর কেন্দ্রীয় মসজিদ।‌ পথে গির্জার ওখানে দাঁড়ানো এক লোক বলল মিলিয়ন দাও (দাই মিলিয়ন)।‌ উপাসনালয়ের পাশে দাঁড়িয়ে যারা মানুষের কাছে সাহায্য চায় তারা মনে হয় নাস্তিক। না হলে ঈশ্বরের চোখের সামনে তাঁকে উপেক্ষা করে মানুষের সাহায্য নেবে কেন? যাহোক আমি আমার স্বভাবসুলভ মুচকি হেসে এগিয়ে গেলাম। পেছনে ও বলল - মিলিয়নের জন্য এত মন খারাপ? (তিবিয়ে মিলিয়ন ঝালকা শ্তোলি?) আমি মনে মনে ভাবি যা নেই তা নিয়ে ভেবে কি লাভ। তবে খুশি হলাম এই ভেবে কেউ আমাকে মিলিয়নিয়ার ভাবছে।‌ বাঘ কাগজের হলেও বাঘ। দুবনার পথে, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

শান্তি

Image
জাতীয় স্টেডিয়াম সরিয়ে নেবার দাবি উঠেছে দেশে। কারণ সেখানে গানবাজনা ইত্যাদি অনৈসলামিক কাজকর্ম হয় যা বায়তুল মোকাররমের বিশুদ্ধতা নষ্ট করে। সেখানে সরকারি অফিস আদালত হতে পারে বলে মতামত জানিয়েছে বক্তা। কিন্তু সেই অফিস আদালতে যে ঘুষ দুর্নীতি হবে সেটা কতটুকু ইসলামিক সে সম্পর্কে বক্তা নীরব।  পৃথিবীতে দুটো মানুষ এক রকম নয়। প্রতিটি মানুষ ইউনিক, কোন না কোন পয়েন্টে একজন অন্যজনের চেয়ে ভিন্ন হবেই। তাই ইচ্ছা অনিচ্ছায় আমাদের সহাবস্থান করতে হয় আর শান্তিকামী মানুষ চেষ্টা করে সেই সহাবস্থান যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণ করতে। সেই বিবেচনায় জাতীয় স্টেডিয়াম সরানোর ডাক আসলে অশান্তির পূর্বাভাস। আজ যারা বিভিন্ন অজুহাতে এই আহ্বান সমর্থন করছে কাল তাদের অনেকের অনেক অধিকার খর্ব করার ডাক আসবে।  চব্বিশের একটি স্লোগান ছিল দেশটা কারোও বাপের না (এই কারো কি শুধুই শেখ হাসিনা নাকি তারেক জিয়াও হাসিনার কলিগ সেটা অবশ্য উহ্য থেকে গেছে বারবার), তবে ক্ষমতায় যারাই যায় তাদের হাবভাব দেখে মনে হয় তাদের বেশির ভাগ জমিদার নন্দন/নন্দিনী আর দেশটা তাদের বাপের জমিদারি। ক্ষমতায় গেলে সবার মনে হয় পুনর্জন্ম ঘটে আর সবাই গণতন্ত্...

সংবাদ না হেডলাইন?

Image
ট্রাম্পকে নোবেল না দেয়ায় পুরস্কারের সম্মান কমে গেছে - পুতিন।  এই শিরোনামে ইত্তেফাকে খবর বেরিয়েছে। এসব খবর এরা কোথায় পায়? দুশানবে শহরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ট্রাম্পের পুরস্কার না পাবার ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে চান না। তবে বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ট্রাম্প কাজ করছেন। মধ্যপ্রাচ্য তার উদাহরণ। তিনি আরও বলেন এর আগে অনেককেই নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে যা পুরস্কারের সম্মান হানির কারণ হয়েছে। সরাসরি কারোও নাম উল্লেখ না করলেও সেটা যে বারাক ওবামাকে উদ্দেশ্য করে বলা তাতে সন্দেহ নেই। দুবনা, ১১ অক্টোবর ২০২৫

অবিশ্বাসীর বিশ্বাস

Image
মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। নিলে আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মিয়ানমারের সু চির অবদান প্রত্যক্ষ করার পরে কেউ কি নিজ দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আরেক নোবেল শান্তি পদক প্রাপ্ত ডঃ ইউনুসকে এই দায়িত্বে নিয়োগ করত? ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে ইতিহাস শিক্ষা দেয়।  অচেনা অজানা বনে মানুষ সবসময় সেই পথেই যায় যে পথে তার আগে কেউ গেছে যদি সে নাও জানে তার আগের পথিকের ভাগ্যে কী ঘটেছিল। কারণ সে নিজেকে সবসময় সৌভাগ্যবান মনে করে আর ভাবে বিপদ তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে। বিশ্বাস অবিশ্বাসের এই লুকোচুরি খেলায় হেরে যায় দুই পক্ষই। জেতে তারা যারা দুই পক্ষকেই ধোঁকা দিতে পারে মানে বিশ্বাসঘাতকরা। মস্কো, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
মালদোভায় নির্বাচন হল। রোমানিয়ায় যেমন মিথ্যা অভিযোগে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে ইউরোপ তার পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছিল এখানেও শুধু একের পর এক জনপ্রিয় প্রার্থীদের জেলে ঢুকিয়ে ও পার্টিগুলোকে মিথ্যা অজুহাতে নির্বাচন থেকে বিরত রেখেই নয় যে সব জায়গায় বিরোধীদের জনপ্রিয়তা বেশি সেখানে যান্ত্রিক ত্রুটি ইত্যাদি দেখিয়েও যখন সান্দোর দলের বিজয় নিশ্চিত নয় তখন ভোট ফলাফল বাতিল করার পাঁয়তারা চলছে। গণতন্ত্রকে আর কতভাবে ধর্ষণ করলে মানুষের হুঁশ হবে যে ইউরোপ এখন একনায়কতন্ত্রের উর্বর ভূমি। জাতীয় সরকার নয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আমলারা এখন বিভিন্ন অজুহাতে এখানকার গণতন্ত্রকে লাঞ্ছিত করছে, ইউরোপকে সাজাচ্ছে যুদ্ধের সজ্জায়? মস্কো, ০৬ অক্টোবর ২০২৫