শান্তি

জাতীয় স্টেডিয়াম সরিয়ে নেবার দাবি উঠেছে দেশে। কারণ সেখানে গানবাজনা ইত্যাদি অনৈসলামিক কাজকর্ম হয় যা বায়তুল মোকাররমের বিশুদ্ধতা নষ্ট করে। সেখানে সরকারি অফিস আদালত হতে পারে বলে মতামত জানিয়েছে বক্তা। কিন্তু সেই অফিস আদালতে যে ঘুষ দুর্নীতি হবে সেটা কতটুকু ইসলামিক সে সম্পর্কে বক্তা নীরব। 

পৃথিবীতে দুটো মানুষ এক রকম নয়। প্রতিটি মানুষ ইউনিক, কোন না কোন পয়েন্টে একজন অন্যজনের চেয়ে ভিন্ন হবেই। তাই ইচ্ছা অনিচ্ছায় আমাদের সহাবস্থান করতে হয় আর শান্তিকামী মানুষ চেষ্টা করে সেই সহাবস্থান যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণ করতে। সেই বিবেচনায় জাতীয় স্টেডিয়াম সরানোর ডাক আসলে অশান্তির পূর্বাভাস। আজ যারা বিভিন্ন অজুহাতে এই আহ্বান সমর্থন করছে কাল তাদের অনেকের অনেক অধিকার খর্ব করার ডাক আসবে। 

চব্বিশের একটি স্লোগান ছিল দেশটা কারোও বাপের না (এই কারো কি শুধুই শেখ হাসিনা নাকি তারেক জিয়াও হাসিনার কলিগ সেটা অবশ্য উহ্য থেকে গেছে বারবার), তবে ক্ষমতায় যারাই যায় তাদের হাবভাব দেখে মনে হয় তাদের বেশির ভাগ জমিদার নন্দন/নন্দিনী আর দেশটা তাদের বাপের জমিদারি। ক্ষমতায় গেলে সবার মনে হয় পুনর্জন্ম ঘটে আর সবাই গণতন্ত্রের মানস নাতিপুতি থেকে স্বৈরাচারের ছেলেমেয়ে রূপে নতুন করে জন্ম নেয়। আর এদের জন্ম দিতে গিয়ে প্রসব বেদনায় বারবার কাতরায় দেশ।

এক হাসিনার স্বৈরাচারের বদলে আমরা পাই কালেক্টিভ হাসিনার স্বৈরাচার যা শতগুণ ভয়ঙ্কর ও পশ্চাৎপদ। আমরা কি তা চাই? নাকি স্বৈরাচারকে চিরতরে না বলার জন্যই এত ত্যাগ, এত আত্মাহুতি? মনে রাখতে হবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধও স্বৈরাচারী শাসন, শোষণ থেকে মুক্তির সংগ্রাম ছিল।

মস্কো, ১৩ অক্টোবর ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

প্রশ্ন

সিপিবি কংগ্রেস

রিংকু