ন্যায় অন্যায়

বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের কান্ডকারখানা দেখে মনে হয় তাদের ধারণা মানুষ সবচেয়ে সুস্থ থাকে জেলে। কারণ তাদের কাজকর্ম অনেকটা রুগীকে ওষুধ না দিয়ে তার চারিদিকে প্রাচীর তুলে দেবার মত।  

এবার জার্মানির বিভিন্ন শহরে ক্রিসমাস মেলা বন্ধ কারণ সেটা অনেক শরণার্থীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে আর সবচেয়ে বড় কথা মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পয়সা নেই। যদিও যাদের কারণে মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হয় তাদের খাওয়ানো পড়ানোর পয়সা বা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হাত দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার পয়সার অভাব হয়না। আচ্ছা একদল মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিতে গিয়ে আরেক দল মানুষের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুন্ন করা কি কোন এক ধর্মকে পোষণ করা নয়? তাছাড়া এসব মেলা এখন যতটা না ধর্মীয় তারচেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক।

আজ যাদের অনুভুতিকে সম্মান করে ক্রিস্টমাস মেলা বন্ধ করা হচ্ছে কাল যদি তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে বার্লিন বিয়ারফেস্ট বা গেই প্যারেড বন্ধ করার দাবি জানায় তখন কি এরা সেটা মানবে? ঐতিহ্য মানেই সেকেলে নয়, নতুন সবকিছু আধুনিক নয়। আমার ধারণা যারা সত্যিকার অর্থেই ইউরোপকে ভালবেসে সেখানে যায় তারা ইউরোপের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য - এসব গ্রহণ করতেই যায়। আর এসব দেখে যাদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত লাগে তারা ইউরো ছাড়া ইউরোপের আর কিছুই গ্রহণ করতে রাজী না, বরং সুযোগ পেলে একদিন ইউরোপকেই শিক্ষা, সহিত্য, সংস্কৃতিতে শুধু তৃতীয় বিশ্বের দেশ নয় আফগানিস্তান, সোমালিয়ায় পরিনত করতে পিছপা হবে না।

একদল মানুষের প্রতি অন্যায় করে অন্যদলের প্রতি ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা যায় না বরং অন্যায় দ্বিগুণ হয়। 

দুবনা, ১১ নভেম্বর ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

প্রশ্ন

সিপিবি কংগ্রেস

রিংকু