যদি আমি ভোট দিতাম

আর মাত্র ৩ দিন পরে SAAB এর নির্বাচন - প্রার্থীদের অনেককেই চিনি জানি ব্যক্তিগত ভাবে, তাছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ায় পড়াশুনা করেছেন বলে অনেককে না চিনলেও সবাই কেমন  যেন আপন হয়ে গেছেন। তাই ভোট দেয়াটা একটা বিরাট ঝামেলার ব্যাপার। কাউকে অখুশি করতে চাইনা, আবার সবাইকে খুশিও করা যাচ্ছে না বলে নিজের কাছেই কেমন যেন সংকোচ বোধ হচ্ছে। তার পরেও কাউকে তো বেছে নিতেই হবে।

এরই মধ্যে বেশ কিছু লোক, যাদের নির্দ্বিধায় ভোট দিতে পারতাম, প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাড়িয়েছেন। দুএক জন নির্বাচিত হলে কি করবেন, মানে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার  প্রকাশ করেছেন। এখানে দু একটা আপত্তিকর নির্বচনী প্রচারনাও দেখেছি যা কষ্ট দিয়েছে। আসলে নির্বাচন মানেই মনে হয় নোংরামি - যা দেখে হতাশ না হয়ে পারিনি। তার পরেও দেশে থাকলে আর ভোটের অধিকার থাকলে তো ভোটটা  দিতেই হত - তাই এত কথা।

আজ কাল আমি কাউকে কথা দেইনা - কথা দেই নিজেকে, মানে যদি কাউকে বলি এই কাজটা করব, ঠিক সেটা করি। অন্যকে ঠকানো যায়, তবে নিজেকে ঠকানো কঠিন। ভোটের ব্যাপারটাও আমার জন্য তাই। কাউকে ভোট দিলে আমি আসলে নিজেকেই ভোট দেই, কারণ ওই লোকের উপর নিজের আশা-আকাঙ্খা আর স্বপ্নগুলো 
বাস্তবায়নের দায়িত্ব তুলে দেই, আর সেই সাথে নিজেও নিজের মত করে তাকে সাহায্য করি আমার স্বপ্ন যাতে পূর্ণ হয়। তাই আমার জন্য ভোট বা আমার পছন্দ - এটা শুধু কাগজে সীল  মারা নয়, নিজেও নিজের কাধে দায়িত্ব তুলে নেয়া। আর সে আলোকেই এবার আমি কিছু লোককে ভোট দিতাম আর কিছু ক্ষেত্র শুন্য রাখতাম।

রাশিয়াতে একসময় এক প্রার্থীর নাম ছিল "সবার বিপক্ষে" (ПРОТИВ ВСЕХ), মানে পছন্দের কেউ না থাকলে শুধু ভোট যে না দেয়া যেত তাই নয়,  "সবার বিপক্ষে" ভোট দিতে সব প্রার্থীদের প্রতি নিজের মনোভাব জানিয়ে দেয়া যেত। যদি কোনো কারণে   "সবার বিপক্ষে" ভোট বেশি পরত, তবে একেবারে নতুন প্রার্থীদের নিয়ে ওই পদে নতুন করে ভোট হত। এর পজিটিভ আর নেগেটিভ দুটো দিকই  ছিল। তবে এবার সুযোগ থাকলে সভাপতি পদে আমি এভাবেই ভোট দিতাম। না, এখানে যে যোগ্য প্রার্থী নেই তা নয়, দুজনেই প্রতিষ্ঠিত, সাংগঠনিক কাজে পোক্ত, তবে SAAB  এর যে রূপ আমি দেখতে চাই, কেন যেন মনে হয় ওনারা সেভাবে দেখেন না, আর স্বপ্নের মিল না থাকলে কেমনে আমরা একসাথে পথ হাটবো?

সাধারণ সম্পাদক পদে দুজনকেই জানি খুব কাছে থেকে। টিটু তার নির্বাচনী ইশতেহারে সংগঠন সম্পর্কে ওর  ধারণা প্রকাশ করেছে। টেকনিক্যালি খুব সুন্দর। তবে কথায় বলে না, Умом Россию не понять... অনেকদিন এদেশে থেকে আমিও তেমন হয়ে গেছি, তাই অন্তত এই মুহুর্তে ছোটভাই টিটুর  পরিবর্তে আমি বন্ধু জয়নালকেই ভোটটা   দিতাম।

সহ-সভাপতি হিসেবে আমার এক নম্বর পছন্দ হামিদ ভাই - যিনি স্বপ্নে দেখতে আর দেখাতে জানেন। তিমির নন্দীদা তাকে সঙ্গ দেবেন। বলে না, যদি তাড়াতাড়ি   যেতে চাস - একা যা, অনেকদুর যেতে চাস - বন্ধুর সাথে যা। আমাদের পথ অনেক দুরের।

শিক্ষা আর সংস্কৃতির অঙ্গনে নাহিদ তো অনেক দিনই  কাজ করল, তবে দায়িত্বে না থেকেও যে বরাবর এই অঙ্গনে কাজ করে গেছে সেই জলিকেই না হয় আমি এবার ভোটটা   দেই।

প্রকাশনায় তানিয়া বরাবর ই অতুলনীয়।

প্রচার  আর জনসেবায় বিমান আমার পছন্দের, নামটার জন্যে হলেও - বিমানে চড়ে দেশে না আসলে ও আমাদের সেবা করবে কেমনে?

সদস্যদের মধ্যে আমি জগদীশ, সত্য, লিপিকে বেছে নিচ্ছি।

সুযোগ ছিল আরো কিছু ভোট দেবার, দিচ্ছি না, রেখে দিচ্ছি পকেটে। ক্যাপিটাল হিসেবে। অর্থনৈতিক ভাবে তো দেউলিয়া, অন্তত কিছু ভোট পকেটে থাকুক, যদি কাজে লাগে কোনো দিন।

সবশেষে যাদের ভোট দিচ্ছি আর যাদের দিচ্ছি না, সবার জন্য রইলো শুভ কামনা।

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি