বেলারুশ

কয়েকদিন আগে আলেক্সান্দর লুকাশেঙ্কো শপথ নিলেন বেলারুশের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে। নির্বাচনের পর থেকেই সেখানে চলছে প্রতিবাদ। ইদানীং অনেকটা কমে এলেও আগুন এখনও নেভেনি। কবে সেটা নিভবে বা আদৌ নিভবে কি না সেটা একমাত্র ভবিষ্যতই বলতে পারে। এখানে নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা চলছেপক্ষে বিপক্ষে দু দিকেই। তবে যেহেতু রাশিয়া বেলারুশের নতুন ইউক্রাইন হতে আগ্রহী নয়, তাই লুকাশেঙ্কোর সমালোচকরাও কথা বলছে লাগাম টেনে। কিন্তু এভাবে কতদিন?

লুকাশেঙ্কো ক্ষমতায় আসেন ১৯৯৪ সালে জুলাই মাসে, আমি দুবনায় কাজে জয়েন করার দুমাস পরে। আমি যেহেতু কাজ করে এখনও ক্লান্ত হইনি, লুকাশেঙ্কোরও হওয়ার কথা নয়। তবে বিগত ২৬ বছরে তাঁর শাসনে অনেকেই যে ক্লান্ত, শ্রান্তসেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।  

তাঁর শাসনের একটা বড় ফ্যাক্টর হচ্ছে অন্তর্ঘাত। বিশেষ করে বেলারুশের অবস্থানগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে তিনি বার বার রাশিয়ার কাছ থেকে সুযোগ নিয়েছেন, নিচ্ছেন। অনেকেই, যারা বেলারুশকে সোভিয়েত ব্যবস্থার শেষ দুর্গ বলে মনে করেন তারা ভুলে যান, এই দুর্গ টিকে আছে পুঁজিবাদী রাশিয়ার কাঁধে পা ঝুলিয়ে বসে থেকে। এটা আমাকে ছাত্র জীবনের কথা মনে করিয়ে দেয়। তখন ব্যবসা করা নিষেধ ছিল বিধায় অনেকেই, বিশেষ করে সিপিবির সাথে জড়িত ছেলেমেয়েরা এসব করত না। তবে কেউ কেউ নিজেরা ব্যবসা না করলেও যারা ব্যবসা করত তাদের টাকায় রেস্টুরেন্টে  ঘুরে বেড়াতে দ্বিধা করত না। নিজে ভালো মানুষ থেকে অন্যের বেআইনি ভাবে উপার্জিত  টাকায় পোদ্দারি করতে অনেকেই আপত্তি করে না। এসব লোক আসলে মানসিক ও নৈতিক দুদিক থেকেই অধম। রাজনীতিতে এমন উদাহরণ হরহামেশা দেখা যায়। লুকাশেঙ্কো অনেকটা সেভাবেই তাঁর দেশে সোভিয়েত ব্যবস্থা টিকিয়ে রেখেছেন। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি বেলারুশকে ট্রয়ের ঘোড়ার মত ব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন সময় ইউরোপ যখন রাশিয়ার উপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে,  আর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে রাশিয়া ইউরোপের কৃষিজাত পণ্য আমদানি বন্ধ করেছে – ইউরোপকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন লুকাশাঙ্কো। যে পোল্যান্ড সব সময় রুশ বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব দিচ্ছে, লুকাশেঙ্কোর বেলারুশ সেই পোল্যান্ড থেকে কৃষিজাত পণ্য অল্প দামে কিনে সেটা নিজেদের ফসল বলে রাশিয়ায় সরবরাহ করছে। এতে এক দিকে যেমন পোল্যান্ডের উপর কার্যকরী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যায়নি, অন্য দিকে এই নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে চাঙ্গা হয়ে ওঠা রুশ কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

বিগত বছরগুলোতে বেলা
রুশের শিল্প হয়েছে মূলত রাশিয়া নির্ভর। বলতে একমাত্র রাশিয়াই কিনেছে সে দেশের শিল্পজাত পণ্য। পশ্চিমা দেশগুলোর টোপ গিলে ইউক্রাইন যেমন শিল্পোন্নত দেশ থেকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে, লুকাশেঙ্কো নিজে সে পথেই পা বাড়িয়েছেন। কিন্তু নিজেদের ভুল নীতির ফলে রাশিয়া নিজেও এর দায়ভাগী। তোষণের রাজনীতি এখন আর ফ্যাশনেবল নয়। দরকার চাপ সৃষ্টি করা। আর সেজন্যে শুধু মাঝে মধ্যে গ্যাস্পপ্রমের হাত দিয়ে গ্যাস বা তেলের দাম বাড়ালেই হয় না, দরকার বিরোধী দলগুলোর সাথে যোগাযোগ রাখা। বুঝতে দেওয়া তুমিই বেলারুসে রাশিয়ার একমাত্র লাইসেন্সধারী রাজনীতিবিদ নও। সেটা হলে একদিকে যেমন বিরোধী দলের মধ্যেও প্রোরাশিয়ান শক্তি থাকত, লুকাশেঙ্কোকেও নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত। কিন্তু রাশিয়া কী কারণে যেন কখনই এটা করে না। এমন কী ইউক্রাইনে ইনুকভিচের পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টিকে সমর্থন দেওয়ার কথা রাশিয়া ভাবেনি। কমিউনিস্ট পার্টি আর যাই করুক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস অস্বীকার করেনি, বান্দেরাসহ   হিটলারের অন্য সব দোসরদের বীর বলে স্বীকৃতি দেয়নি। কয়েক দিন আগে ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন রাশিয়া সব সময় সব দেশে ক্ষমতাসীন দলকে সমর্থন করে সে দেশের উন্নয়নে সাহায্য করে। এটা অন্য দেশের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর নীতি। এটা প্রশংসাযোগ্য। কিন্তু সারা পৃথিবী যেখানে সেটা করছে, আর তাছাড়া বিরোধী দলের সাথে যোগাযোগ না রাখলে যেখানে বিরোধী দল তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ জনগণ যেখানে রুশ বিরোধী শিবিরে নাম লেখাচ্ছে, সেখানে এই নীতিটা নতুন বাস্তবতায় কতটুকু যুগোপযোগী এ নিয়ে প্রশ্ন করা দরকার। যেখানে সারা বিশ্ব নতুন বাস্তবাতায় নতুন কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে, রাশিয়ার সেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ডক্ট্রিন আঁকড়ে ধরে বসে থাকা তাকে দিন দিন নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন করছে।   

বিগত বছরগুলোতে লুকাশেঙ্কো দেশের রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন তো করেনই নাই বরং নিজের ক্ষমতা সত্য মিথ্যা দিয়ে নিরঙ্কুশ করার পায়তারা করেছেন। চোখের সামনে দিয়ে একটার পর একটা দেশে রংবেরঙের বিপ্লব হয়ে গেছে, দেশের শাসকেরা তো ক্ষমতাচ্যুত হয়েছেই, কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনকি হেগের জেলে পর্যন্ত দিন কাটিয়েছে। রাজনৈতিক চাপে কাজ না হলে এসেছে অর্থনৈতিক চাপ, নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করা, যেটা ঘটেছে ২০০৪ সালে ইউক্রাইনে। এখন ইউরোপ ও আমেরিকা লুকাশেঙ্কোকে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করছে। রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের সাথে ইঁদুর বিড়াল খেলতে গিয়ে লুকাশেঙ্কো নিজেই বেলারুসে রুশ বিরোধী মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করেছেন। এখন যা দেখছি সেটা লুকাশেঙ্কোর রাজনীতির ফল।


অনেক আগেই বেলারু
ও রাশিয়া ইউনিয়ন স্টেট গঠন করেছে, কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেটা কার্যকরী হয়নি। হয়নি মূলত লুকাশেঙ্কোর কারণে। ফর্মালি দুটো দেশ হলেও তাদের ওজন বিভিন্ন ক্যাটাগরির, ফলে ভরকেন্দ্র যে মস্কোর কাছাকাছি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে ভ্লাদিমির পুতিন অনেক আগেই বলেছিলেন “কাটলেট এক জায়গায় আর মাছি আরেক জায়গায়।” শুনতে খারাপ লাগলেও আর ডিপ্লোম্যাটিক না হলেও কথাটা সত্য সে ব্যাপারে তো কারও সন্দেহ নেই। রাশিয়ার সাথে এফেক্টিভ ইউনিয়ন বেলারুশকে  আর একই সাথে লুকাশেঙ্কোকে একটা শক্ত শেলটার দিত। কয়েক বছর আগে যে প্রক্রিয়াটা হত মসৃণ, এখন সেটা হবে কঠিন আর প্রশ্নসাপেক্ষ। দেশের ভোটারদের একটা বড় অংশ রাশিয়ার সাথে গাঁটছড়া মেনে নেবে না বলেই মনে হয়, আর সবচেয়ে বড় কথা ইউরোপ আর আমেরিকা সেটা মানবে না।

 

যে শুধু বিপদে পড়লে সাহায্যের জন্য হাত পাতে সে আর যাই হোক বন্ধু হয় না। তবে লুকাশেঙ্কো দেরিতে হলেও তাঁর ভুল হয়তো বুঝতে পারছেন, ইউরোপ-আমেরিকার সাথে তাঁর ভাগ্য যে মিলশেভিচ, গাদ্দাফীর মতই হবে সেটা মনে হয় টের পেতে শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রিবাল্টিকের সমুদ্র বন্দরগুলো ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রাশিয়ার বিভিন্ন এলাকার সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার কথা বলছেন। বেলারুশের বিভিন্ন কল-কারখানায় শিল্পজাত দ্রব্যের এক বিরাট অংশ রাশিয়ায় তৈরি হলেও ফাইলান টাচ ওখানেই হত। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী এখন অনেক কিছুই রাশিয়াতেই তৈরি হবে, মানে রাশিয়ার সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে। তবে এগুলো সবই হবে কস্মেটিক যদি না বেলারুশ তার অর্থনৈতিক অবকাঠামো ঢেলে সাজায়। কারণ সেটা না হলে রুশ পুঁজি বেলারুসে ততটা এফেক্টিভ হতে পারবে না।

বক রূপী ধর্মের এক প্রশ্নের উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেছিলেন, এই যে অনবরত চোখের এত মানুষ মারা যাচ্ছে সেটা দেখেও মানুষ নিজের মৃত্যুর কথা ভাবে না – এটাই সবচেয়ে বড় আশ্চর্য। সবাই জানে ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়, তারপরেও দেশে দেশে নেতারা ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখছে, সময় থাকতে ভবিষ্যতের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব গড়ার পরিবর্তে নিজেকে আর সেই সাথে দেশ ও সমাজকে ক্রমাগত ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে – এটাই মহা আশ্চর্য। বিশেষ করে চারিদিকে যেখানে উদাহরণের ঘাটতি নেই। কথায় বলে সময় সব অসুখ থেকে মুক্তি দেয়। এটা ঠিক, ওষুধ না হলে মৃত্যু নামে এক মোক্ষম অস্ত্র আছে সময়ের হাতে। শুধু সময়ই বলতে পারবে বেলারু
কোন পথে চলবে।

প্রশ্ন উঠতেই পারে প্রাকৃতিক সম্পদে ধনী ইউক্রাইন বা বেলারুশ কেন নিজেদের  পায়ে দাঁড়াতে পারছে না। এর উত্তর দিতে হলে ফিরে যেতে হবে মার্ক্স আর এঙ্গেলসের কাছে। ১৯৮২ – ৮৩ সাল। আমি তখনও মস্কো আসিনি। ছাত্র ইউনিয়ন থেকে আমাদের কয়েক জনকে নিয়ে গঠিত হল পার্টির গ্রুপ। হতে পারে লতিফ সিদ্দিকী, আবুবকর সিদ্দিকী, পরেশ রায় – এরা আগেই সেখানে ছিল। জিএম বা গ্রুপ মেম্বার দিয়ে শুরু করে সিপিবির সিএম বা ক্যান্ডিডেট মেম্বার হলাম। এরপর মস্কো। তাই পিএম, ভুল বুঝবেন না, এটা নেহায়েত পার্টি মেম্বারের সংক্ষিপ্ত রূপ, প্রধানন্ত্রীর সাথে কোন রকম সম্পর্ক নেই, আর হওয়া হল না। যাহোক, আজাহার ভাই, প্রমথ স্যার আমাদের ক্লাস নিতেন। বলতেন ক্যাপিটাল বা পুঁজি নিজে নিজে কোন উদ্বৃত্ত মূল্য বা সারপ্লাস ভ্যালু তৈরি করতে পারে না। সেটা করে একমাত্র শ্রমিকের শ্রম। এঙ্গেলসের ভাষায় শ্রমই মানুষকে তৈরি করেছে। মানুষের শারীরিক সৌন্দর্য তাকে নায়ক বা নায়িকা হওয়ার পথে শুধু প্রবেশপত্র দিতে পারে কিন্তু সে সফল নায়ক বা নায়িকা হবে কিনা সেটা নির্ভর করে নিজের শ্রম আর অধ্যাবসায় দিয়ে সে নিজেকে যোগ্য করে তুলতে পারবে কি না। সেটা না করলে তাকে শরীর বিক্রি করেই দিন কাটাতে হবে। সেটা হতে পারে অন্যের বাড়ি কামলা খেঁটে বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে। দেশও এর বাইরে কিছু নয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ভাঙ্গে ইউক্রাইন ছিল অন্যতম ধনী শিল্পে উন্নত রাষ্ট্র। সেই সম্পদ আর ভৌগলিক অবস্থান ব্যবহার করে সে হতে পারত ইউরোপের অন্যতম ধনী আর উন্নত দেশ। সে জন্যে দরকার ছিল রাশিয়া আর পশ্চিমা বিশ্বের খেলায় কোন পক্ষ না নিয়ে দু দলের সাথেই সুসম্পর্ক  বজায় রাখা। ২০১৪ সালে ইউক্রাইনকে যখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয় রাশিয়া বলে সেক্ষেত্রে ইউক্রাইন রাশিয়ার কাছ থেকে যেসব অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা পায় সেটা বন্ধ হবে, কেননা সেই সুযোগ থাকলে রাশিয়ার বাজারে ইউরোপের পণ্য বিনা শুল্কে প্রবেশ করবে। রাশিয়া প্রস্তাব দেয় ইউক্রাইন যেন নিরপেক্ষ থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আর ইউরাজেস মানে ইউরোপ-এশিয়া ইকনমিক ইউনিয়নের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করে। সেই প্রস্তাব গ্রহণ না করার ফল এখন আমরা দেখছি। আসলে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক প্রজাতন্ত্র মুখে স্বাধীনতার কথা বললেও মুহূর্তের মধ্যে ন্যাটো বা অন্য সব ব্লকে ঢুকে নিজেদের রুশ বিরোধী আর একই সাথে আমেরিকার উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল করে তোলে। শক্তিশালী সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে প্রতিযোগিতায় নেমে আমেরিকা জার্মানি বা জাপানে যত অর্থ ব্যয় করতে রাজী ছিল, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সে পোল্যান্ড, প্রিবাল্টিক, বুলগেরিয়া এসব দেশে তত ব্যয় করতে রাজী নয়। এমন কী পূর্ব জার্মানি, যে ছিল ইউরোপের ষষ্ঠ অর্থনীতি, মিলনের তিরিশ বছর পরেও আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারেনি। সেখানকার জনগণের এক বিরাট অংশ আজও দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক হিসেবে গণ্য। সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর কেউ কেউ কেন নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছে না তার উত্তর এখানেই। দীর্ঘ দিন একত্রে থাকার ফলে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন জাতির মধ্যে জটিল সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেখানে ভালো আর মন্দ দুই ছিল। সবচেয়ে বড় কথা ছিল পরস্পর নির্ভরতা। এসব দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি সব ছিল ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। আমাদের মত দেশ যা দীর্ঘ দিন ছিল ব্রিটিশ বা ফ্রান্সের কলোনি এখনও শিক্ষা আর বিচার ব্যবস্থায় ওদের অনুসরণ করি। একান্নবর্তী পরিবার থেকে বেরিয়ে গিয়ে যারা এই সম্পর্ক পুরোপুরি ছিন্ন না করে ধরে রেখেছে, নিজেদের রাশিয়ার ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে তারা কমবেশি ভালো করছে আর যারা রাশিয়ার সাথে শত্রুতা নিজেদের জাতীয় আদর্শ হিসেবে দাড় করিয়েছে তারা নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ রুশ বিরোধিতা একমাত্র পণ্য যা তারা বিক্রি করতে পারে। অন্য পণ্য উৎপাদন করতে শ্রমের দরকার। রাজনীতিতে সুস্থ বুদ্ধির অভাবই আমার মতে  এসব দেশকে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে দিচ্ছে না।       

 

দুবনা, ০৬ অক্টোবর ২০২০      

    


 

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি