বিদ্যুৎ বিভ্রাট

অনেক দিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে তোলপাড় চলছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্ত্র নিয়ে। পক্ষে বিপক্ষে নানা ভাবে লিখছেন লোকজন। পক্ষের যুক্তি বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বিদ্যুতের বিকল্প নেই, এ ব্যাপারে অবশ্য কারো কোনো দ্বিধা নেই। বিপক্ষে যারা বলছেন, তারা সুন্দর বনের অনন্যতা নিয়ে কথা বলছেন, বলছেন পরিবেশের কথা। বাংলাদেশের মানুষের এ ধরণের পরিবেশ প্রীতি খুবই আশাজনক। তবুও অনেক সময় অনেক লেখা পড়ে মনে হয় একদল যেমন সরকারকারকে সমর্থন করার জন্য এই প্রকল্পকে সমর্থন করছে, আরেক দল বিরোধীতা করার জন্যই বিরোধীতা করছে।

আমি এই প্রকল্পের উপকারিতা-অনুপকারিতা নিয়ে কথা বলার আগে কিছু সাধারণ ব্যাপার নিয়ে লিখতে চাই। যেকোন প্রকল্প হাতে নেবার আগে বেশ কিছু প্রশ্ন সবাই নিজেকে করে যে প্রশ্নগুলোর উত্তর না পেলে মানুষ সেটা নিয়ে এগোয় না। আসুন চেষ্টা করি প্রশ্নগুলো করতে।

আমি দেশের বাইরে প্রায় ৩৩ বছর। গত ২০১১ ও ২০১৪ সালে দেশে গিয়ে দেখে দেশ সত্যি অনেক এগিয়ে গেছে আর তার মূল কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি। মনে আছে, এমন কি বছর কুড়ি আগেও বাড়ীর সাথে যোগাযোগ ছিল একমাত্র চিঠিপত্রের মাধ্যমে। প্রায় এক মাস অপেক্ষা করতে হতো বাড়ির খবর পেতে। আমার বাড়ি তরা, মানিকগঞ্জ থেকে দুই মাইল দূরে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে, কোনো অজপাড়াগাঁও নয়। এখানে অনেক কিছুর সাথেই তাঁত শিল্প উন্নত ছিল, তার পরেও গ্রামে কোনো টেলিফোন ছিল না। গ্রামের ভেতরে হাটা পায়ে চলার রাস্তা থাকলেও ভালো রাস্তা ওটাকে বলা যায়না কখনোই। আশেপাশের অনেক গ্রামে যেতে হতো পায়ে হেটে বা বর্ষায় নৌকা করে। কিন্তু আজ এলাকার প্রায় প্রতি গ্রামে গাড়িতে করে যাওয়া যায়। কারণ রাস্তা ঘাটের উন্নতি হয়েছে, মোবাইল ফোন ঘরে ঘরে। কেউ কি কল্পনা করতে পারেন বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে ঘরে ঘরে মোবাইল ফোন? আর বিদ্যুতের সাথে আসছে কলকারখানা, মানুষের জন্য কাজ। জনসংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে কমছে জমি, গ্রামের কৃষক হচ্ছে কারখানার কর্মী। তাই প্রথম যে প্রশ্নটা - আমাদের কি বিদ্যুতের দরকার আছে, এর উত্তর শুধু একটাই - উন্নতির জন্য বিদ্যুতের কোনো বিকল্প নেই। এখানে লেনিনের সেই উক্তি মনে পরে যাচ্ছে - "কম্যুনিজম - এটা বিদ্যুতায়ন ও সোভিয়েতের শাষন।"

এর পর যেটা জানা দরকার, এই বিদ্যুৎ আমরা কোত্থেকে পাবো। কিনতে পারলে ভালো, তবে এই যে আমরা স্বনির্ভর বাংলাদেশের কথা বলি, সেই স্বনির্ভরতার জন্য আরো ভালো যদি আমরা নিজেরাই এই বিদ্যুৎ উৎপাদন করি। তাছাড়া কিনবো কার কাছ থেকে? ভারতের? এমনিতেই ভারত চারিদিকে আমাদের ঘিরে আছে, তার উপর আবার বিদ্যুৎ সেক্টর তার হাতে গেলে বাংলার মানুষ সেটা গিলবে বলে ময়ে হয় না। ইউক্রেইন যেমন হাঙ্গেরির কাছ থেকে বেশি দামে রাশান গ্যাস কিনে আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক তেমনি যেকোন দেশ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনতে রাজি হবে, কিন্তু ভারতের কাছে থেকে বিদ্যুৎ - কখনোই না। বিদ্যুৎ তো গরু না.... যাকগে, এবার ভাবা দরকার কি কি উপায়ে বিদ্যুৎ পাওয়া যায়? জল বিদ্যুৎ, কয়লা ব্যবহার করে, ডিজেল এ, আণবিক শক্তি ব্যবহার করে......অনেকে সৌর শক্তির কথা বলেন, অনেকে বায়ু শক্তির। উদাহরণ দেন ইউরোপের উন্নত দেশগুলোর। বিভিন্ন গবেষণামূলক তো বটেই, এমনকি অনেক গল্পের বই পড়লেও মাত্র শ' দেড়েক বছর আগে হল্যান্ড বা ইউরোপের অন্যান্য দেশে ওই সময়কার কয়লা খনিসহ বিভিন্ন শিল্পের চিত্র আমরা পাই। ওরা কিন্তু এখানে আসতে অনেক চোরাই উৎরাই পার হয়েছে। ওই সময় কিন্তু পরিবেশের কথা কেউ ভাবে নি বা বলে নি। আমার মনে হয় কলোনিগুলো শোষণ করে ওরা যদি আজ অর্থনৈতিক উন্নতির এই পর্যায়ে না পৌঁছুতো পরিবেশ আন্দোলন এখনো ক্লাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। তার মানে এই না, আমরা পরিবেশ আন্দোলন করবো না। করবো। তবে হুবহু নকল করবে না, যাতে আমরা পরিবেশ রক্ষা করতে পারি আবার দেশকে বিদ্যুৎ সেক্টরে স্বনির্ভর করতে পারি, দুটো দিক দেখেই আমাদের অগ্রসর হতে হবে।

তাই এখন আমাদের বাছতে হবে ঠিক কোন ধরণের উৎস থেকে আমরা বিদ্যুৎ চাই। লেখাগুলো পড়ে মনে হয় কয়লার ব্যাপারে লোকজনের খুব যে আপত্তি তা নয়। তাহলে পরবর্তীতে যেটা দেখতে হবে তা হল কয়লা নির্ভর হলে কয়লা কম দামে কোথা থেকে আসবে আর যেহেতু কয়লা আনার জন্য সবথেকে সোজা রাস্তা সমুদ্র ও নদী, জায়গাটা হতে হবে দক্ষিণ বঙ্গের কোথাও। অনেকের লেখায় দেখি তারা লিখছেন, তাদের উদেশ্য সুন্দর বন বাঁচানো, রামপালের পরিবর্তে কোথায় বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে, সেটা তাদের ভাবনার বিষয় নয়। কথা হলো, আপনি কি বাংলাদেশকে বাদ দিয়ে সুন্দর বন দেখতে চান? তাতো হয় না। এটা কমপ্লেক্স প্রব্লেম, সমাধানও তাই আপনাকে একই ভাবে দিতে হবে, নইলে বলতে হবে বাংলাদেশের বিদ্যুতের দরকার নেই। আর তা হলে তো আপনার সাথে এ ব্যাপারে কথাও বলা যাবে না। কারণ এ নিয়ে কথা বলা যায় তাদের সাথে, যারা শুধু না বলার জন্য না করেন না, সাথে সাথে বিকল্প সমাধান দেখান। অনেকের বলছেন বিদ্যুৎ চাই, সুন্দর বনও চাই - এটা মনে হয় সঠিক পদক্ষেপ। এদের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার একটা কমিশন তৈরী করে ব্যাপারটা নতুন করে পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। কেননা দেশটা সবার। তাই এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ যতবেশি ঐক্যমতের ভিত্তিতে হয়, তত ভালো।

তবে আরো একটা কথা। আমি এর আগেও কোথায় যেন লিখেছিলাম। যদি কিছু কিছু প্রোজেক্ট আমাদের বাস্তবায়ন করতেই হয়, তবে সেক্ষত্রে চেষ্টা করা দরকার যাতে ক্ষতি কিভাবে কমিয়ে আনা যায়। আর তার জন্য সরকার বা যে সব কোম্পানী কাজটা নিচ্ছে তারা যেন নিরাপত্তা তথা পরিবেশ সংরক্ষণ খাতে কোনো রকম ইকোনোমি না করে সেই দিকটায় জোর দেয়া। ইতিহাস বলে বিভিন্ন দেশে যে সব দুর্ঘটনা ঘটে, তা হয় মূলতঃ এই নিরাপত্তা খাতে ব্যয় কমানোর কারণে। তাই সরকারের উপর শুধু রামপাল নয়, অন্যান্য যেসব শিল্প পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে সঠিক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তাদেরকে সেটা করতে বাধ্য করার জন্যও আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি রাশিয়ার গ্যাস লাইনের কথা যা বৈকাল হ্রদের খুব কাছ দিয়ে চীনে যাচ্ছিলো। এ সংক্রান্ত এক মিটিংএ প্রেসিডেন্ট পুতিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উনি সাথে সাথে আদেশ দেন কাজটা স্থগিত রাখতে ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নতুন রুট ঠিক করতে। পরবর্তীতে বৈকাল হ্রদের অনন্যতা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সেটা দেখেই নতুন রুট ঠিক করা হয়।

হ্যা, ভারতীয় এক কোম্পানী কাজটা নেয়ায় অনেক কথা হচ্ছে। হোক, ক্ষতি নেই। তবে শুধু ভারত বিরোধিতার জন্য হলেই মুসকিল। কে যেন বলেছিলো, প্রতিপক্ষ কিভাবে খেলছে সেটা বড় নয়, আমরা যদি নিজেদের খেলাটা খেলতে পারি, তাহলেই সব ঠিক থাকবে। চাই বা না চাই, ভারত আমাদের প্রতিবেশী, এই বাস্তবতা মেনে নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। যদি ভারতীয় কোম্পানী অন্যদের থেকে ভালো শর্তে কাজ করে সমস্যা কোথায়? তাছাড়া প্রতিবেশী দেশ হবার ফলে তারা যতটা এই এলাকার পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন হবে, ইউরোপ আমেরিকার কোম্পানীগুলো কি তা হবে? সুন্দর বন শুধু বাংলাদেশের নয়, ভারতেরও একটা অংশ। আমার মনে হয় সব কিছুর মতো এক্ষেত্রেও আমাদের নিজেদের স্বার্থ দেখা উচিত, ভারত কত লাভবান হলো না হলো, সেটা আমাদের চিন্তা না করলেও হবে। পরের পকেটের টাকা গোনা ভদ্রলোকের কাজ নয়। সমস্যাটা হলো, আমরা সব জায়গায়ই - সে ক্রিকেট হোক আর বিদ্যুৎ হোক - আবেগের উর্দ্ধে উঠে, রাজনীতির উর্দ্ধে উঠে শুধু খেলাধুলা বা অর্থনৈতিক দিকটা দেখে কোনো কাজ করতে পারি না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই আবেগ ইতিবাচক বলেও বর্তমান পরস্পর নির্ভরশীল বিশ্বে এটা ক্ষতিই বেশি করে।
এখানেও রাশিয়ার উদাহরণ দেয়া যায়। তুরস্ক রাশিয়ান বিমান ধ্বংস করলে রাশিয়া বলতে গেলে সমস্ত ধরণের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। কিছুদিন আগে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান এ ব্যাপারে ক্ষমা চাওয়ার পর দুটো দেশ ধীরে ধীরে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে। কেননা তারা বোঝে প্রতিবেশী দেশ হবার ফলে ইচ্ছা থাক আর নাই থাক, একসাথে না চলে উপায় নেই। এসব আন্তর্জাতিক রাজনীতি থেকে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণ যদি শিক্ষা নেয় তবে সেটা দেশের জন্য খুবই মঙ্গলজনক।
এর মধ্যে আরো দু’ একটা লেখা পড়লাম, তাই ভাবলাম দু’ কথা লেখা দরকার। আমি ১৯৮৩ তে রাশিয়ায় আসার আগে আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে তরা আর বানিয়াজুরীর মাঝে একটা ইট খোলা ছিল, এখন তরা থেকে ঢাকা আসতে হলে কত যে ইটের ভাটি পেরিয়ে আসতে হয়, গুনে শেষ করা যাবে না। তাই কয়লার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামলে সেটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় বলা মুশকিল।
আমার মনে হয় আমাদের দেশে একটা ধারণা চালু হয়ে গেছে যে সরকার কোনো জায়গায় ছাড় দিলে কি সরকার, কি বিরোধী দল, কি সাধারণ মানুষ, সবাই এটাকে মনে করে দুর্বলতা। সমঝোতায় আসা যে কোনো মতেই দুর্বলতা নয়, বরং তা সকল পক্ষের সবলতা আর সদিচ্ছা প্রকাশ করে এই সাধারণ বোধটা যে কবে আমাদের রাজনীতিতে আসবে? পাকিস্তান সৃষ্টি থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি যুগান্তকারী ঘটনার মুলে ছিল একটাই - দেশ বা দেশের মানুষের স্বার্থ না দেখে জোট বা গোষ্ঠী স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়া, কোন রকম সমঝোতায় না আসা। আমার মনে হয় বর্তমান অবস্থা নিরসনের জন্য সরকার রামপালের পরিবর্তে সুন্দরবন থেকে নিরাপদ দূরত্বে প্রজেক্টটি স্থানান্তরের কথা ভাবতে পারে।
ভারত সরকার বা যে কোম্পানী কাজটা করছে, তাদেরও ব্যাপারটা গুরত্ব দিয়ে দেখা দরকার। যে দেশের জনসংখ্যার একটা বিরাট অংশ সুন্দর বন রক্ষার জন্য এই প্রকল্পের বিরোধীতা করছে, সেখানে এর বাস্তবায়ন যে বাংলাদেশের ভারত বিরোধী মনোভাব বাড়াবে তাই নয়, ভবিষ্যতে কোনো সরকার এটাকে বাতিল করলেও করতে পারে। তাছাড়া আধুনিক টেকনোলজি সত্বেও যদি সুন্দর বনের ক্ষতি হয়ই তার নৈতিক দায়িত্ব কিন্তু ভারত সরকারকেও বহন করতে হবে। তাই “মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্রজেক্ট নিয়ে একটি মহল ও কতিপয় ব্যক্তি বা সংগঠন বিভ্রন্তিমূলক তথ্য প্রচার ও কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে; যা ভিত্তিহীন, দেশের স্বার্থবিরোধী ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস ছাড়া কিছু নয়।” বলে এক চেটিয়া বাংলার মানুষকে দোষারোপ না করে মন্ত্রীবাহাদুর যদি দেশ, মানুষ, প্রকৃতি এই সবের স্বার্থে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজেন সেটা বরং তার বা সরকারের রাজনৈতিক পরিপক্কতারই প্রমান দেবে।
পশ্চিমা দেশ ও তাদের নেতাদের মতো আমাদেরও বলতে শিখতে হবে "আমাদের বন্ধু বা শত্রু নেই, আমাদের আছে জাতীয় স্বার্থ। যা আমাদের জাতীয় স্বার্থের পক্ষে, আমরা তার সমর্থন করবো। এই জন্য ভারত সহ অন্য যে কোন দেশের সাথে আমাদের যদি হাতে হাত রেখে চলতে হয় চলবো, আবার কোনো প্রশ্নে যদি তাদের বিরোধীতা করতে হয়, সেটাও করবো।" কোনো দেশের সাথে বন্ধুত্ব মানে সেই দেশের দাস হওয়া নয়, বন্ধুত্ব মানে এক সাথে চলা, কোনো প্রশ্নে একমত হওয়া , কোনো প্রশ্নে দ্বিমত প্রকাশ করা। এটাই যে কোন স্বাধীন দেশের রাষ্ট্র নীতির মূল হওয়া দরকার। মুক্তিযুদ্ধের অতি অল্প সময়ে দেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যহার বা আমেরিকার হুমকি অগ্রাহ্য করে কিউবার সাথে বাণিজ্য - এ সবের মধ্যে দিয়ে বঙ্গবন্ধু সেটি দেখিয়ে গেছেন। এখন যারা নিজেদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক বলে মনে করেন বা বলেন, তাদের পালা কাজের মধ্যে দিয়ে এই কথাটা প্রমান করা।

দুবনা, ১০ - ১২ আগস্ট ২০১৬ 

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি