.. কারণ ....
কয়েক দিন আগে এক চিঠিতে মাসুদা ভাট্টি দুটো প্রশ্ন করেছিল:
"তবে এই মুহূর্তে আমি বলতে চাইছি যে, আমরা প্রতিনিয়ত বলছি যে, আল-ক্বায়েদা, আইসিস, হয়তো জেএমবিও আমেরিকার সৃষ্টি, কিন্তু একটি সরল প্রশ্ন কেউ জিজ্ঞেস করে না যে, কেবলমাত্র ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসীদের মধ্যেই কেন এরকম ধংসাসী শয়তান জন্ম দেওয়া সম্ভবপর হয়? কেন অন্যত্র এটি ঘটে না?"
সঠিক উত্তরটা কেউ জানে কিনা, জানি না, তবে নিঃসন্দেহে অনেক ভার্সন আছে। এখানে আমার ভাবনার কথাই বলছি, যদিও আমি ব্যক্তিগত ভাবে ধর্ম সম্পর্কিত প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করি। কারণ?
২০১৫ এপ্রিলে আবু ধাবি গেছিলাম একটি সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করতে। যে মেয়েটি আমাকে ইনভাইট করেছিল, ওর সাথে আলাপ আলাপ ই-মেইল এ। আমি যে বিষয়ে কাজ করছিলাম, ও তার উপর পি এইচ ডি করছিলো। ওর কিছু প্রশ্ন ছিল, আমার সাহায্য চাইছিলো। পরে ও আমাকে ইনভাইট করে আবু ধাবি নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে। ওখানে গিয়েই জানতে পারি ও তুরস্কের মেয়ে। সেমিনারের পর ওদের নিয়ম অনুযায়ী ও আমাকে নিয়ে যায় ডিনারে। আমরা দুজনই ছিলাম। হঠাৎ ও আমাকে জিগ্যেস করলো, "তুমি মোসলেম?" আর উত্তরের অপেক্ষা না করেই বললো, "ও তুমি তো পদার্থবিদ।" আমি শুধু হেসে বললাম, "ধর্ম নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই, অন্ততঃ যতক্ষণ না তা আমার কাজে কর্মে সমস্যার সৃষ্টি করছে।" কথায় কথায় ঈশ্বরের প্রশ্ন এলো। আমি বললাম, "আচ্ছা, এই দেখো, আমার হাতে মোবাইল ফোন। তুমি জান কে এর আবিষ্কারক? আমি জানি না। চেষ্টা করি নি। যদি জানতাম তাতে হয়তো ক্ষতি হতো না, তবে লাভ কিছু হতো কিনা জানি না। আসল যেটা জানা দরকার, তা হলো, মোবাইলটা কেমনে কাজ করে। আবার ধরো তোমার অসুখ। একটা ওষুধ কিনলে, কে ওষুধ তৈরী করলো তা জানলে কিন্তু তোমার অসুখ সারবে না, অসুখ সারাতে হলে কিভাবে ওটা খেতে হবে তা জানতে হবে। আমিও তাই এখন চেষ্টা করছি বিশ্ব কিভাবে সৃষ্টি হলো, কিভাবে বিবর্তিত হচ্ছে আর কোথায় গিয়ে শেষ হবে সেটা জানার জন্য। এ সব জানার পর যদি সময় থাকে, তখন না হয় কে বিশ্ব সূষ্টি করলো তা নিয়ে ভাববো।" হ্যা, ধর্মের সাথে ওতপ্রোত ভাবে ঈশ্বরের প্রশ্ন জড়িত - এ নিয়ে আমি ভাবতে বা কথা বলতে চাই না, তাই ধর্ম নিয়ে কথা বলাটা প্রয়োজনীয় মনে করি না।
যাকগে, এবার আসল প্রশ্নে ফিরে আসা যাক। শুরু করি একটু দূর থেকে। আমার মনে হয় প্রায় প্রতিটি গ্ৰুপকেই কোনো না কোনো ভাবে ম্যানিপুলেট করা যায় - তা সে মুসলিম হোক, হিন্দু হোক বা আর যা কিছু। এর প্রমান ভুঁড়ি ভুঁড়ি। ফুটবল ফ্যানদের কথাই ধরা যাক। যদি ধর্মীয় গ্ৰুপের কথা বলি, ইন্ডিয়াতে তো গুরুদের অভাব নেই, যারা সাধারণ মানুষের সেন্টিমেন্ট ব্যবহার করে কোটি টাকার মালিক হয়। আর শুধু ইন্ডিয়া কেন, আমেরিকার মতো উন্নত দেশেও এই উদাহরণ প্রচুর। ওখানেতো অনেক সময় শিষ্যরা প্রাণ দিতে পর্যন্ত প্রস্তুত। বাংলাদেশেও পীর-দরবেশের ঘাটতি নেই। এই আশির দশকেও দেশে দেশে সমাজতন্ত্রের আন্দোলন তুঙ্গে ছিল। এটা বলার একটাই কারণ - মানুষকে, কোনো আদর্শের ভিত্তিতে একত্রিত কোনো দলকে ম্যানিপুলেট করা বেশ সহজ - এতে ধর্মের ভূমিকা আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। তারপরেও যেমন ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের নিয়ে ঘটনাগুলো ঘটছে, তার মানে ওদেরকে কেউ না কেউ ম্যানিপুলেট করছে।
সন্ত্রাসবাদ পৃথিবীতে নতুন কিছু নয়। জারের রাশিয়ায় এটা বেশ শক্তিশালী ছিল, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনেও সন্ত্রাস ব্যবহার করা হতো। এমনকি প্যালেস্টাইনের স্বাধীনতা আন্দোলনকেও অনেক সময়ই সন্ত্রাসবাদী আখ্যা দেয়া হতো। তবে ওটাকে কখনোই ইসলামী সন্ত্রাস বলা হতো না। বর্তমানে যাকে ইসলামী সন্ত্রাসবাদ বলা হয়, তার সৃষ্টি আমেরিকার - তালেবান আর মুজাহিদীনদের মাধ্যমে - ১৯৮০ র দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়নকে মোকাবিলা করতে। আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপ, সৌদি আরব, পাকিস্তান এ কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমার মনে হয়, সৌদি আরব আর পাকিস্তান জড়িত থাকার কারণেই মুসলিম বিশ্বের যুব সমাজ এতে কাতারে কাতারে যোগ দিয়েছে।
আগেই বলেছি, ধর্ম সম্পর্কে আমার লেখাপড়া খুবই কম। হিন্দু ধর্মের অনেক গ্রন্থ পড়া থাকলেও, ওল্ড আর নিউ টেস্টামেন্ট পড়া থাকলেও, কোরান বা ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা একেবারেই নেই। যা জনি, তা মূলতঃ অন্যদের কাছে শুনে বা গল্প উপন্যাস পড়ে। তাই পরবর্তী আলোচনা মাসুদার প্রশ্নের উত্তর না হয়ে বরং উত্তর খোঁজার পথে কিছু উপকরণ হবে বলেই মনে হয়। আগেই বলেছি, যে কোনো গোষ্ঠীই তা যত ছোটই হোক না কেন, বিভিন্ন ধরণের ম্যানিপুলেশনের শিকার হতে পারে। তবে এখানে আমরা ধর্ম ভিত্তিক কয়েকটি বড় গোষ্ঠী বিবেচনায় নেব।
বৌদ্ধ ধর্মে আসল কথা নির্বাণ, সমস্ত ইহলৌকিক বা পরলৌকিক বন্ধন থেকে মুক্তি লাভ। তাই ওই ধর্ম ব্যবহার করে মানুষকে সন্ত্রাসী করার সুযোগ খুব কম। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদ কাজে লাগানো হয়েছিল, তবে ধর্ম হিসেবে জুডাইসম আমার মনে হয় অনেকটা অন্তর্মুখী। সংখ্যাগত কারণেই হোক আর অন্য কারণেই হোক, ওরা শারীরিক বলের থেকে অর্থ আর কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে যুগ যুগ ধরে। বর্তমানে ইসরাইলের পেশীবল আমেরিকার উপর বেশি নির্ভরশীল। খ্রিস্ট ধর্মের মুলে রয়েছে প্রেম, ঈশ্বরকে ভক্তির চেয়ে ভালোবাসার কথা এসেছে বেশি করে। হ্যা, ওরাও এক সময়ে ধর্ম যুদ্ধে যেত। পৃথিবীর সব চেয়ে ভয়ঙ্কর যুদ্ধগুলো ওরাই করেছে আর করছে। তবে রাষ্ট্র থেকে ধর্ম আলাদা করার ফলে আর ক্রমাগত সংস্কারের ফলে খ্রিস্টান যুবসমাজের কাছে এই ধর্মের আবেদন কমছে দিন দিন। হিন্দু ধর্মে ধর্মযুদ্ধের ব্যাপারটা কোনো সময়ই তেমন ছিল না। যদিও কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে অনেক সময় ধর্মযুদ্ধ বলে উল্লেখ করা হয়। এখানেও পাপ-পুণ্যের ব্যাপারটা অন্যরকম। কর্ম্মই মানুষের পাপ-পুন্য নির্ধারণ করে। আর এই কর্ম্ম তার দৈনন্দিন জীবনযাপন ও কাজের উপর নির্ভরশীল। তাছাড়া এই ধর্মে কৃষ্ণ নিজে ধর্ম রক্ষার ভার নিয়েছে (যখন ভূভারত অধর্মে পরিপূর্ণ হয়, তখন সাধুদের রক্ষা, দুস্কৃতদের বিনাশ ও ধর্ম স্থাপনের জন্য আমি জন্মগ্রহণ করি), আর মানুষের দ্বায়িত্ব ধর্ম পালন করা। তাছাড়া হিন্দু ধর্মে স্বর্গ নরকের ব্যাপারটাও তেমন পরিষ্কার নয়। একদিকে স্বর্গ যেখানে দেবতারা থাকেন আর কিছু কিছু পুণ্যবানের যেখানে যাবার অধিকার থাকে, অন্যদিকে নরক যন্ত্রনা। পাশাপাশি পুনর্জন্মের ধারণা - কর্ম্ম অনুসারে মানুষ বিভিন্ন জীবকারে জন্ম নেবে, আর পুণ্যের বা ভালো কাজের পরিনাম বেশি হলে এই চক্র থেকে বের হয়ে মোক্ষ লাভ করবে।এ পর্যন্ত বর্ণিত ধর্মগুলোর প্রতিষ্ঠাতা বলি আর যাই বলি, যুদ্ধের মাধ্যমে ধর্ম প্রচার করেন নি। তাদের ধর্ম প্রসারের এক মাত্র উপায় ছিল প্রচার। এদিক থেকে দেখতে গেলে ইসলাম এক মাত্র ধর্ম যার প্রচারে নবীজি যুদ্ধ পর্যন্ত করেছেন। যেখানে অন্য ধর্মের প্রতিষ্ঠাতারা সংসার ত্যাগ করেছেন, নবীজি সংসার গড়েছেন। যতদূর জানি ইসলাম একমাত্র ধর্ম যেখানে বিধর্মীদের হত্যা ধর্মীয় কাজের অংশ, এই হত্যা হত্যাকারীকে পাপী করে না, বরং তাকে বেহেস্তে যেতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বেহেস্তের যে বর্ণনা, এই যে হুর-পরী , খাদ্য-পানীয় এ সবই মানুষের মনে লোভের উদ্রেক করে। আমি আবারো বলছি, আমি জানি না এটা কোরানের ভাষ্য কি না, তবে বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে এসব বলা হয়, মানুষকে বেহেস্তের লোভ দেখানো হয়। আর যেহেতু বিধর্মী কাউকে ইসলামে দীক্ষিত করা বা তাকে হত্যা করার মাধ্যমে বেহেস্তের এই অঢেল সম্পদ ভোগ করা যায়, অনেক কোমলমতি যুবক এই কাজে নামে। প্যালেস্টাইন, ইসলামিক রাষ্ট্র সহ আরো অনেক জায়গায় যেভাবে শিশুরা বেহেস্তের আশায় সন্ত্রাসী কাজ করে, তাতে আমার অন্ততঃ মনে হয় এই পরলৌকিক বেহেস্ত পাওয়ার লোভের মধ্যেই তথাকথিত ইসলামিক সন্ত্রাসের বীজ নিহিত। মৌলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছিলেন, ইসলামের বড় সমস্যা হলো কোরানে যা লেখা আছে অনেকে তার চেয়ে বেশি পড়ে। উনি আসলে কোরানের ব্যাখ্যা সম্পর্কে বলতে চেয়েছিলেন। মনে হয় যদি না ইসলামের ধর্মীয় নেতারা জিহাদসহ অন্যান্য বিষয়গুলো, যা বর্তমানে সন্ত্রাস ও পরমতের প্রতি অসহিষ্ণুতার জন্ম দেয়, নতুন করে নতুন বাস্তবতায় ব্যাখ্যা না করেন - এই অবস্থা থেকে বেরুনো মুশকিল।
আরো একটা কথা। ২০১৪ তে যখন ইন্ডিয়া গেছিলাম, কথা হচ্ছিলো পুরুষোত্তম দার (প্রফেসর পুরুষোত্তম রায়, চেন্নাই) সাথে। উনি বললেন, "আচ্ছা তোমার কি মনে হয়, আগে কেন মুনি-ঋষিরা তপোবনে থাকতেন, ওখানেই পড়াতেন?" উত্তরের অপেক্ষা না করেই বললেন, "আগে রাজারা বুদ্ধিজীবীদের আর ধর্মীয় গুরুদের রাজধানী আর রাজকার্য থেকে দূরে রাখতেন।" ইউরোপে এক সময় পোপ রাজা নিয়োগের অধিকারী ছিলেন, তবে তখনও ছিল, এখনও রাষ্ট্র থেকে ধর্ম আলাদা। তবে ইসলামে রাষ্ট্র আর ধর্ম হাতে হাত ধরে চলেছে। খলিফারা শুধু ধর্মীয় নেতাই ছিলেন না, এরা ছিলেন রাষ্ট্রের কান্ডারী। প্রায় সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্রে আলাদা ধর্মীয় নেতা থাকার পরও রাষ্ট্রপ্রধান ধর্ম রক্ষায় বিরাট ভূমিকা রাখে আর যেখানে না পারে সেখানে ধর্মীয় নেতাদের সাথে কনফ্লিক্টে জড়িয়ে পরে। সৌদি আরব থেকে শুরু করে অনেক আরব দেশ যেমন প্রথম দলে পরে, দ্বিতীয় দলে আমরা দেখি কামালের তুরস্ক বা নাসের ও নাসের পরবর্তী মিশরকে। আবার যে দেশে ইসলাম প্রধান ধর্ম নয়, যেমন ভারত, রাশিয়া - সেখানে ধর্মীয় নেতারা রাষ্ট্রের বাইরে থেকে স্বাধীনভাবে ধর্মীয় ব্যাপারগুলো দেখে। শেষ দুটো উদাহরণ এ কারণেই দেয়া - যে রাষ্ট্রের বাইরে থেকেও ধর্ম তার দ্বায়িত্ব পালন করতে পারে, আর সেটা আপাততঃ হচ্ছে শুধু অমুসলিম রাষ্ট্রেই। বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রেখে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করে মুসলিম বিশ্ব তো বটেই সারা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হতে পারতো - এটা শুধু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্যই নয়, ধর্ম হিসেবে ইসলামের জন্যও একটা মাইল ফলক হতে পারতো। তবে সুযোগটা আমরা দিন দিন হাতছাড়া করছি। ভারত যখন ভাগ হয়, জিন্নাহ্ দ্বিজাতি তত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান তৈরী করে পাকিস্তানকে মূলতঃ ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করে, অন্যদিকে ভারতীয় নেতারা সেই তত্ব মেনে নিয়ে সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ হওয়া সত্বেও পুরোপুরি ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারেননি অনেকের চোখেই। অন্ততঃ জনগণের একটা অংশ সেটা মেনে নেয়নি। বাংলাদেশের জন্ম ওই দ্বিজাতিতত্বকে পরিত্যাগ করে, ধর্মনিরপেক্ষতার স্লোগান দিয়ে। তাই এখানে ধর্মনিরপেক্ষতার গুরুত্বটা অন্য রকম। কিন্তু আমাদের রাজনীতিবিদরা সেটা ভুলে গেছে। তারা যদি সাময়িক লাভের চিন্তা না করে, ভোটের রাজনীতি বাদ দিয়ে ১৯৭২ এর সংবিধানের প্রতি আস্থা রেখে সামনে এগোন, আমার বিশ্বাস, তাতে শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই তথাকথিত ইসলামিক জঙ্গিবাদ কমবে, কারণ মুসলিম বিশ্বের যুবসমাজ তাদের সামনে একটা উদাহরণ দেখতে পাবে।
বর্তমানে সারাবিশ্বে জিহাদের পক্ষে ইসলামের নাম যে প্রোপাগান্ডা চলছে, ধর্মের নাম বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও কর্মকান্ডকে যেভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, তাকে রুখতে হলে পাল্টা প্রোপাগান্ডা দরকার - এই প্রোপাগান্ডা ইসলাম বিরোধী নয়, সেটা হবে ইসলামকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের বিরুদ্ধে। বলতে হবে ১৯৪৭ এর দেশ ভাগ ভারতের মুসলিম বা অন্য কোনো সম্প্রদায়ের কোনো সমস্যা সমাধান করে নি, বরং তাকে তীব্র করেছে। এই সত্য এতা বুঝতে স্বীকার করা দরকার যে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থে ধর্ম ব্যবহার করলে তার পরিনাম মন্দ বই ভালো হয় না। এতে লাখ-লাখ সাধারণ মানুষ নির্মম কষ্টের শিকার হয়। দেশে যাতে ওয়াজ বা ওই সমস্ত অনুষ্ঠান ধর্মীয় বিষ বাষ্প ছড়াতে না পারে, তার জন্য প্রচলিত আইনের অধীনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর একি সাথে সরকারী প্রচার মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ইসলামিক চিন্তাবিদদের এই কাজের শরিক করতে হবে। এটা আসলে কমপ্লেক্স সমস্যা, সমাধানও হতে হবে বহুমুখী। সবই সম্ভব যদি তার পেছনে রাজনৈতিক বলিষ্ঠতা থাকে। বুঝতে হবে জঙ্গিবাদ ইসলামের তথা বাংলাদেশের শত্রু, জঙ্গিবাদ ইসলাম তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়াশীল ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হাতিযার, জঙ্গি ইসলামকে দমানো মানে ইসলাম বিরোধিতা নয়, এর মানে ইসলামকে তথা বাংলাদেশকে অশুভ শক্তির হাত থেকে মুক্ত করা।
দুবনা, ৬ আগস্ট ২০১৬
Comments
Post a Comment