মায়ের আঁচল

অনেক দিন পরে এক বন্ধুর সাথে কথা হল টেলিফোনে। প্রথমে কুশলাদি জিজ্ঞাসাবাদ, তারপর অনুযোগ এতদিন কোথায় ছিলাম, খোঁজখবর নেইনি কেন? আমি অবশ্য নিউটনের তৃতীয় সুত্র সম্পর্কে দু'কথা বলতে পারতাম, তবে আজকাল এসব আর কাজে দেয় না। আক্রমণ আত্মরক্ষার সর্বশ্রেষ্ঠ উপায় এটা এখন সবাই বুঝে গেছে। এরপর পুরনো বন্ধুদের পিণ্ডি চটকানোর পালা। তবে অনেকদিন চামচ দিয়ে খেয়ে অভ্যেস, তাই আমার ওইসব চটকানো ফটকানো আজকাল আর তেমন আসে না। সবশেষে বাচ্চাদের খবরাখবর।

তোমার ছেলের খবর কি?
ঈশ্বরের কৃপায় ভালই আছে। তোমার ছেলেমেয়েরা ভালো?
টেলিফোন যখন করছে না, ভালো আছে নিশ্চয়ই। সমস্যা হলে ঠিক জানাত।
কি যে বল? নিজে ফোন কর না?
দেখ, বাচ্চাদের যত ফোন করবে, ওরা তত বিরক্ত হবে। কোন দরকার হলে অবশ্যই করি। ওরা যথেষ্ট স্বাবলম্বী। তাছাড়া আমিও সাহায্য করি।
বাচ্চাদের বা নিজেদের ভালমন্দের কথা কেউ জিজ্ঞেস করলে বলতে হয় ঈশ্বরের কৃপায় ভালো আছে। কে জানে কে কখন চোখ লাগায়।
তাই? সবচেয়ে ভালো সন্তান কে জান?
কে?
যে স্বাবলম্বী আর দরকারে বাবা মাকে সাহায্য করে। তোমার ঈশ্বরের বয়েস তো কম হল না। চৌদ্দ বিলিয়ন ছুঁই ছুঁই। ওনাকে বিরক্ত করার লোকের অভাব নেই। আমি চেষ্টা করি আমার ছোটোখাটো সমস্যা ওনার ঘাড়ে না চাপিয়ে নিজেই সমাধান করতে, ছেলেমেয়েদেরও সেটাই শিখাই।
তুমি সেই আগের মতই রয়ে গেছ।
না, একটু স্বাবলম্বী হতে শিখেছি। তবে তোমরা জীবনে এত উন্নতি করেও ঈশ্বর নামী মায়ের আঁচল থেকে বেরুতে পারনি। যাকগে, ভালো থেকো। পরে কথা হবে।

দুবনা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি