অমানবিক মানবতা

কথায় বলে যেমন জনগণ তেমন তার সরকার। আমি বরাবর জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস রেখে এসেছি। কিন্তু বর্তমানে বাইডেন, জনসনসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন নেতাদের দেখে আমি এসব দেশের জনগণের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলছি। আধুনিক প্রযুক্তি মনে হয় মানুষকে অভাবনীয় রকম ভাবনাহীন করে তোলে। মনে আছে কুইজের কথা? হ্যাঁ, চারটে সম্ভাব্য উত্তর থেকে সঠিক উত্তর খুঁজতে হয় এমনকি সেখানে যদি সঠিক উত্তর নাও থাকে। তার মানে আপনার নিজের অভিমতের কোন মূল্য নেই, বেঁছে নিতে হবে অন্যের দেয়া উত্তর। যেমন? ধরুন বর্তমান যুগে যা কিছু রুশ সেটাই বর্জনীয়। যদি প্রশ্ন আসে প্রথম নভোচারী কে (আর উত্তরে যদি ইউরি গাগারিনের নাম না থাকে) সঠিক উত্তর জানা থাকা সত্ত্বেও আপনাকে অন্য একটা উত্তর বেঁছে নিতে হবে। এটাকে কি আমরা চয়েজ বলব? স্বাধীনতা বলব? ১৯৯৬ সালে রাশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ইয়েলৎসিন আর জুগানভ মুখোমুখি হন। ইয়েলৎসিন তখন ব্যর্থতার প্রতিশব্দ, জুগানভ কমিউনিস্ট। কি স্লোগান হল - দুই খারাপের মধ্যে কম খারাপকে বেঁছে নাও। এরপর থেকে বিশ্ব জুড়ে এই একই স্লোগান। নষ্টদের হাতে চলে গেছে সব। বেঁছে নিতে হবে দুই নষ্টের থেকে কম নষ্টটাকে। তাতেই কি শেষ রক্ষা হচ্ছে? বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত, সবচেয়ে গণতান্ত্রিক বলে পরিচিত ইউরোপ, আমেরিকায় এভিলদের মাঝ থেকে ডেভিল বর্জন যদি আমাদের একমাত্র চয়েজ হয় তাহলে এটা কিসের স্বাধীনতা, কিসের গণতন্ত্র? আমরা লেখাপড়া শিখে বার বার কেন এই ফাঁদে পা দেব, কেন গণতন্ত্রের নামে, মানবতার নামে যুদ্ধবাজদের ব্যবসাকে রমরমা হতে দেব? গণতন্ত্রের নামে কেন আমরা নিজেদের হাত নির্দোষ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হতে দেব? মনে রাখবেন ইউরোপ, আমেরিকা, ইউক্রেনের শিশুর মত আফগানিস্তান, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন, দনবাসের শিশুদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। আপনার, আমার গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের যূপকাষ্ঠে বলি হবার জন্য তারা জন্মায়নি।


দুবনা, ২২ এপ্রিল ২০২২




Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা