টেস্ট


গতকাল ছিল টেস্ট পরীক্ষা। হলে যেতে যেতে একটা বুদ্ধি মাথায় এল। ভাবলাম সেটাই কাজে লাগাব। এখন এখানে পরীক্ষা আমাদের দেশের মতই - ফুল মার্কস ১০০। আমি ২৫ মার্কস করে দুটো টেস্ট নিই আর পরীক্ষা ৫০। এই তিন মিলিয়ে যে নম্বর পায় সেটাই ফাইনাল। তবে পরীক্ষায় পাশ মার্ক ৫১ পেতে হলে পরীক্ষায় বসার পাশাপাশি কম করে হলেও একটা টেস্টে বসতে হবে। আমি পরীক্ষা বা টেস্ট নিই সোভিয়েত স্টাইলে, মানে যাই লিখুক না কেন, আসল পরীক্ষা হবে মুখে মুখে, যা লিখেছে সেটা আমাকে বুঝিয়ে বলার মধ্য দিয়ে।

গতকাল পরীক্ষার হলে গিয়ে বললাম - যে ৫৫ টি প্রশ্ন ছিল তার থেকে যেকোনো দুটো বেছে নিয়ে উত্তর দাও। তবে মনে রেখো কি লিখলে সেটা আসল কথা নয়। যত সহজ প্রশ্ন বেছে নেবে তত কঠিন প্রশ্ন থাকবে এক্সট্রা কোশ্চেন হিসেবে।

অব্জারভেশনঃ অধিকাংশ ছেলেমেয়েই সব চেয়ে সোজা প্রশ্ন বেছে নিয়েছে। গানিতিক জটিলতা এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেছে অনেকেই। মানে ছাত্রছাত্রীরা সব সময়ই সোজা প্রশ্ন পেতে চায়। আমি নিজেও সেটা চাইতাম। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি লিখেছে। আমি কম লিখতাম। আসলে নিজেই শিক্ষককে প্রভোক করতাম এটা জিজ্ঞেস করতে। ফলে এক্সট্রা কোশ্চেন কমবেশি নিজেই তৈরি করে দিতাম। যারা ক্লাসের ভাল ছাত্রছাত্রী, ওরা একটা সহজ আর একটা কঠিন প্রশ্ন বেছে নিয়েছে। এটা ভাল দিক, সহজ প্রশ্নের ভাল উত্তর দিয়ে একটা সম্মানজনক মার্ক নিশ্চিত করা। কঠিন প্রশ্নের উত্তর ভাল দিলে ভাল মার্ক গ্যারান্টেড। আমি নিজে প্রশ্ন করলেও ফলাফল যা হত এই পদ্ধতিতেও তাই হয়েছে, মানে যারা সাধারণত ভাল করে ওরা ভাল করেছে, যারা সবসময় কোন রকমে উৎরে যায় এবারও সেটাই হয়েছে।

লাভক্ষতি - আমাকে কষ্ট করে প্রশ্ন তৈরি করতে হয়নি। যারা পরীক্ষায় ভাল করল না তারা হাত কামড়াবে এত সুন্দর একটা সুযোগ নষ্ট করার জন্য। আসলে স্বাধীনতা পেলেই হয় না, তাকে ব্যবহার করতে জানতে হয়। আমারও জানা হল সমস্যাটা প্রশ্নে নয়, সমস্যা পড়াশুনা না করায়।

দুবনা, ০৫ এপ্রিল ২০২২





 

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

প্রায়োরিটি

ছোট্ট সমস্যা