Posts

Showing posts from June, 2024

বাছাই

Image
গর্বাচেভকে একটি চুটকি আছে এদেশে। একবার তিনি তরমুজ কিনতে গেলে বিক্রেতা বলে বেছে নিন। যেহেতু দোকানে একটি মাত্র তরমুজ ছিল তাই গর্বাচেভ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন সেটা কীভাবে সম্ভব? যেভাবে আমরা এক জনের মধ্য থেকে আপনাকে বেছে নিয়েছি। - উত্তর দেয় বিক্রেতা। এদিক থেকে আমেরিকা এগিয়ে আছে। সেখানে দুই জনের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিতে হয়। সেটা গণতন্ত্রের জ্বলন্ত উদাহরণ। কিন্তু সমস্যা হল এরা দুজন মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। তাই বেছে নেবার সুযোগ থাকলেও ফল সেই একই। অনেকটা এরকম - গর্বাচেভ যদি অর্ধেক তরমুজ কিনতেন। তিনি হয়তো যে অর্ধেক খুশি সেটাই নিতে পারতেন কিন্তু তরমুজ সেই একটাই থাকত। দুবনা, ৩০ জুন ২০২৪

প্রশ্ন

Image
দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর বিতর্ক দেখে এক বন্ধু নিজেকে প্রশ্ন করল "কি করব"? দুই প্রেসিডেন্টের বিতর্ক দেখলাম। দুই বৃদ্ধের বিতর্ক দেখলাম। দুই ভণ্ডের বিতর্ক দেখলাম। একজন অপরাধী এবং যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত আরেকজনের বিতর্ক দেখলাম। একজন মিথ্যাবাদীকে একজন দাঁড়িয়ে থাকা মৃত ব্যক্তিকে নক আউট করতে দেখলাম। একজন আমেরিকার জন্য ক্ষতিকর, আরেকজন বিশ্ব শান্তির জন্য ক্ষতিকর। একজন ৪-৮-১২ বছরের জন্য ক্ষতিকর অন্যজন ৪০-৮০-১২০ বছরের জন্য ক্ষতিকর। একজন আমেরিকাকে ৫০ বছর পিছিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অন্যজন বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এই স্ট্যাটাস পড়ে বন্ধুকে একটা প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হল অর্থনৈতিক, সামরিক, তথ্যপ্রযুক্তি সব দিক থেকেই আমেরিকা বিশ্বের সেরা দেশ। এখনও সারা বিশ্বের মানুষ আমেরিকায় যায় নতুন জীবনের খোঁজে। কি এমন ঘটল যে সেই দেশের সর্বোচ্চ পদের জন্য এরকম দুই জন মানুষ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন? কেন ৩৩০ মিলিয়নের বেশি মানুষের মধ্য থেকে দুই জন মানুষ বের করা গেল না? অনেক আগে মানুষ ইউরোপ থেকে আমেরিকা গিয়েছিল নতুন জীবনের খোঁজে। স্থানীয় ইন্ডিয়ান আমেরিকানদের নির্মূল করে, তাদের দীর্ঘদিনের সভ্যত

সাব দীর্ঘজীবী হোক!

Image
সাবের নির্বাচন প্রচারণা শেষের পথে। আর মাত্র এক দিন। এরপর নতুন কমিটি নির্বাচিত হবে। সবাই বসবে হিসেব নিকেশে কী পেলাম আর কী পেলাম না সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে। তাই আমিও ভাবছি – মন্দ কী যদি এখনই একটি প্রাথমিক হিসেব করি একান্তই নিজের জন্য। আসলে এসব কিছু শুরু হয় হঠাৎ করেই। সাবের কাজকর্ম চলছিল গতানুগতিক ভাবে। পিকনিক শেষ। আয়োজন চলছে ০৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালনের। এরপর আয়োজিত হবে পিঠা উৎসব। চলছে কয়েকটি ট্যুরের আয়োজন – সুন্দরবন, নেপাল, মস্কো। অনেকেই নাম লেখাচ্ছেন সেখানে। আমি দূর থেকে দেখছি। যেহেতু এসব গ্রুপই ছিল বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রাখার প্রায় একমাত্র মাধ্যম, তাই নিজের লেখা এখানে প্রকাশ করি। আমার লেখায় বিভিন্ন বিষয় থাকে – থাকে রাজনীতি, ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক প্রসঙ্গ, কৌতুক। এ নিয়ে অ্যাডমিনের সাথে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়। এমনকি বহিষ্কার পর্যন্ত। আবার যোগ দেয়া। সাবের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। বিভিন্ন কারণে গত কয়েক বছর নতুন কমিটি হয়নি, তবে বিভিন্ন সময়ে মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৩ সালের ৩১ সে ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছিল। তাই কথা উঠে সাবের নির্বাচন নিয়ে। আসলে ফোরামে কথা বলার বাধানিষেধে

খেলা

Image
কল্পনা করুন শিক্ষক আর ছাত্রদের মধ্যে ফুটবল খেলা চলছে। খেলার এক পর্যায়ে শিক্ষকের পায়ে ছাত্রের পা লেগে গেছে। কী করনীয়? শিক্ষকের কাছে মাফ চেয়ে প্রনাম করা নাকি খেলার সময় খেলার নিয়ম মেনেই খেলা? নির্বাচনও একটি খেলা যা কয়েক দিন পরে শেষ হবে। কিন্তু মাঠে নেমে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত নিয়ম মেনে জয়ের জন্য চেষ্টা করতে হবে। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন নিজের ভক্তদের গুণগানের পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মুখে নিজের কাল্পনিক ও বাস্তব সব দুর্বলতার ফিরিস্তি শুনতে হবে। আজকের এই জয়গান আর মুন্ডুপাত সবই সাময়িক ও ইস্যু ভিত্তিক। নির্বাচন শেষে সব আগের মতই চলবে। অন্তত আমার দিক থেকে। সাবের বাইরেও একটি বিশাল জীবন আছে সেটা ভুলে গেলে চলবে না। সবাই নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। আর যারা আমাকে পছন্দ করেন তারা আমার পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিন। জীবন মানেই খেলা। জয়ের পাশাপাশি পরাজয়কেও বরণ করতে শিখুন। দেখবেন জীবনটা কেমন সহজ হয়ে গেছে। দুবনা, ২৫ জুন ২০২৪

কবি

Image
আজ ০৬ জুন আলেক্সান্দর সেরগিয়েভিচ পুশকিনের জন্মদিন - ২২৫ বছর পূর্ণ হল আজ তাঁর। ছাত্রজীবনে ভবিষ্যৎ রুশ সম্রাট প্রথম আলেক্সান্দরের বন্ধুভাজন হলেও পরবর্তীতে রাজ বংশের সাথে তাঁর সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় দেকাব্রিস্তদের পক্ষাবলম্বনের কারণে। কিন্তু মানুষের কাছে, বিশেষ করে রাশিয়ায় শিক্ষিত মানুষের কাছে তিনি ছিলেন নিজেদের লোক। যদিও অর্থের বিনিময়ে লেখার জন্য সে সময় অনেকেই তাঁকে পছন্দ করত না, তবে তাঁর প্রতিভাকে কেউ অস্বীকার করত না। পুশকিনের আগেও রুশ ভাষায় অনেকেই লিখেছেন, তবে পুশকিন এখানে এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেছেন যেখানে লেখার বিষয়বস্তুর পাশাপাশি ভাষাটাও এক সুন্দর রূপ পেয়েছে। সোভিয়েত আমলে পুশকিন ছিলেন জনপ্রিয় কবি। দস্তইয়েফস্কি সহ অনেকেই একটা সময় পর্যন্ত অনাদৃত থাকলেও পুশকিন সব সময়ই ছিলেন লাইম লাইটে। তখনও ঘটা করে তাঁর জন্মদিন পালন করা হত, এখনও হয়। সোভিয়েত আমলে যে লেনিন ছিলেন প্রায় ঈশ্বরের মত তিনিও নিজের সম্পর্কে এতটা প্রশংসাবাণী শুনেননি যতটা শুনেছেন পুশকিন। এখনও নির্দ্বিধায় এরা বলে - পুশকিন নাশে ভসিও - পুশকিন আমাদের সব। দুই শ পঁচিশ বছর আগে জন্ম, ১৭৯৯ থেকে ১৮৩৭ পর্যন্ত মাত্র ৩৮ বছরের জীবন, এরপর এফতুশেঙ্

সাম্য

Image
আমরা প্রায়ই যুক্তিসঙ্গত কারণেই ব্রাহ্মণ্যবাদের সমালোচনা করি। ধর্মীয় বর্ণাশ্রমের শ্রাদ্ধ করি। এসব অবশ্যই ঠিক। কিন্তু এসব সামাজিক অসাম্যের সমালোচনা করে নিজেদের জীবনে সেটার প্রতিফলন ঘটাই কি? এসব হিন্দু ধর্মের সাথে জড়িত হলেও প্রথাটা হিন্দু ধর্মের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এই প্রথার মূলে আছে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ যার আধুনিক পরিভাষা শ্রেণী বিভক্ত সমাজ। শূদ্রদের মতই পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষ আজও উপর তলার কিছু মানুষের সেবা করে দিন কাটাচ্ছে। তারা আক্ষরিক অর্থে অস্পৃশ্য না হলেও খুব একটা দূরে নেই। রাজা ও সেনাদের কাঁধে ভর করে কিছু ব্রাহ্মণ যেমন পেছন থেকে সমস্ত রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালনা করত, তেমনি তথাকথিত ছায়া প্রশাসন বিশ্বের সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যক্তি জীবনে আমরাও উঁচু তলার মানুষের পদ লেহন করি, পিছিয়ে পড়া মানুষের স্পর্শ এড়িয়ে চলি।‌ সমস্ত অন্যায়ের মূলে আছে অসাম্য। ধর্ম, তন্ত্র এসব এই অসাম্যকে যুক্তি দিয়ে উপস্থাপন করার পথ মাত্র। ‌সত্যিকার সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য সাম্যের কোন বিকল্প নেই। দুবাই, ০৫ জুন ২০২৪

পিঠে চোখ

Image
সেদিন বাসে উঠেছি অফিস যাব বলে। ড্রাইভার বার বার দরোজা খুলছে আর বন্ধ করছে। মনে হয় কেউ যেন ড্রাইভারকে সিগন্যাল দিচ্ছে নামবে বলে, অথচ কেউ নামছে না। মুস্কিল। আমার সামনে গেটে এক মহিলা দাঁড়িয়ে। বললাম  আপনি মনে হয় বাটনে চাপ দিচ্ছেন। তাই উনি বারবার দরোজা খুলছেন।  না তো। আমার হাত তো বাটন থেকে দূরে। এমন সময় অন্য এক মহিলা আমাকে বললেন আমার বান্ধবী নয়, আপনিই বারবার চাপ দিচ্ছেন। আপনি যেখানে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সেখানে বাটন আছে। আপনার পিঠের চাপে ড্রাইভারের কাছে সিগন্যাল যাচ্ছে।  আমি স্যরি বলে সরে দাঁড়ালাম আর ভাবলাম দোষটা কী আমার নাকি যাত্রীদের সুবিধার্থে যত্রতত্র পুশ বাটন লাগানোর বুদ্ধি যার মাথা থেকে বেরিয়েছে তার। তবে দোষ যারই হোক এরপর কোথাও দাঁড়ানোর আগে পিঠের চোখ দুটোও খোলা রাখতে হবে। দুবনা, ০৪ জুন ২০২৪