Posts

Showing posts from 2025

মঙ্গলানন্দ

Image
সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ায় যারা নিজেদের ইহুদি মনে করে এবং রাশিয়ানরা যাদের ইহুদি মনে করে তারাই যখন ইসরাইলে যায় তখন স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের পরিচয় হয় রাশিয়ান বলে আর তারাও নিজেদের রাশিয়ান ভেবেই ইসরাইলের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশের একদল মুসলমানের অবস্থাও অনেকটা সেরকম। তারা নিজেদের যতটা না বাঙালি তারচেয়ে বেশি মুসলমান মনে করে আর মুসলিম দেশে, বিশেষ করে আরব দেশে তাদের পরিচয় হয় ভারতীয় আর ভাগ্য ভালো হলে বাংলাদেশী। এই যে মঙ্গলকে আনন্দে ভাসিয়ে দেয়া এটাও অস্তিত্বের শেকড় সংকটের আরও একটা বহিঃপ্রকাশ। দুবনা, ১২ এপ্রিল ২০২৫

মানুষের পৃথিবী

Image
একসময় ধারণা ছিল শুধু মাত্র বিশ্বব্যাপী বিপ্লবের মধ্য দিয়েই শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা যাবে। অন্যথায় পুঁজিবাদী ও সামন্ত তান্ত্রিক ব্যবস্থা যাদের মূলে রয়েছে শোষণ তারা নতুন ব্যবস্থা টিকতে দেবে না। লেনিন অনেকটা পরীক্ষামূলক ভাবেই রুশ বিপ্লব করেন। একাত্তর বছর পরে তার পতন ঘটে। এর পেছনে পুঁজিবাদের হাত যেমন ছিল তেমনি ছিল সমাজতান্ত্রিক সমাজের অন্তর্নিহিত দুর্বলতা, সময়ের সাথে পরিবর্তিত হবার ক্ষেত্রে অনমনীয়তা। আজ বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দরকার সহমর্মিতা, ন্যায় বিচার। সম্পদের সুষম বন্টন না হলেও কমবেশি ন্যায্য বন্টন ও আইনের সুষম প্রয়োগ। আর এসব সম্ভব যদি সহমর্মিতা, সমবেদনা এসব ক্ষেত্রে মানুষ সিলেকটিভ না হয়। যেকোনো মানুষের মৃত্যু, শিশুর মৃত্যু তা সে প্যালেস্টাইনের হোক, দনবাসের হোক, ইউরোপিয়ান, এশিয়ান, আফ্রিকান, ল্যাটিন বা ইসরাইলি হোক, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান, ইহুদি বা নাস্তিক যেই হোক, যদি সবার মন স্পর্শ করে, মানুষকে ব্যথিত করে। একমাত্র সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই - এই মন্ত্রে দীক্ষিত হলেই আমরা একদিন মানুষের পৃথিবী গড়ে তুলতে পারব। দুবনা, ০৮ এপ্রিল ২০২৫

প্যালেস্টাইন

Image
ইসরাইল প্যালেস্টাইনে যে গণহত্যা চালাচ্ছে তার বিরুদ্ধে অসহায় মানুষ প্রতিবাদ করলেও দুনিয়ার মোড়লরা কমবেশি নিশ্চুপ। বিশেষ করে চোখে পড়ে আরব বিশ্বের মৌনতা। রাজনীতির হিসেব নিকেশে ধর্ম হেরে যায়, হেরে যায় তথাকথিত মুসলিম ভ্রাতৃত্ব। আসলে মানুষ সাধারণত ঐক্যবদ্ধ হয় দুর্বলের বিরুদ্ধে। সবলের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সহজ নয় বিশেষ করে সবলদের হাতে যদি নিজেদের ক্ষমতার চাবিকাঠি থাকে। আচ্ছা ইসরাইল ছোট্ট একটা দেশ, ক্ষুদ্র তার জনসংখ্যা। ধর্মের ভিত্তিতে গঠিত হলেও সিনাগগ নয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পেছনে ব্যয় করেছে অঢেল অর্থ। আজ তাদের শক্তির উৎস শুধু আমেরিকার সমর্থন  নয়, মূল উৎস দেশের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত জনসম্পদ।  কয়েকদিন আগে সৌদি যুবরাজের এক সাক্ষাৎকারে দেখলাম সোভিয়েত ইউনিয়নের মোকাবেলা করতে আমেরিকার অনুরোধে তারা দেশে দেশে হাজার হাজার মসজিদ তৈরি করেছে, প্রচার করেছে ওয়াহিবী ইসলাম। কিন্তু এই অর্থ যদি তারা মুসলিম বিশ্বের দেশে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির জন্য দিত, আজ যদি প্যালেস্টাইনে তাদের অর্থে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল এসব তৈরি হত, তাহলে সেখানকার মানুষদের বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হত না। তর...

ট্রাম্পের শুল্ক

ট্রাম্পের শুল্ক নিয়ে বাজার গরম। শুল্ক আর পাল্টা শুল্কে এটা অনেকটা পারস্পরিক নিষেধাজ্ঞার রূপ নিয়েছে। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর যখন সার্বিক নিষেধাজ্ঞা ছিল তখন এদেশ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়। বিগত কয়েক বছরে রাশিয়ার উপর যখন ২৩ হাজারের মত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তখন নব্বইয়ের দশকে ভেঙে পড়া তাদের শিল্প নিজের পায়ে দাঁড়ায়। এখন তাদের প্রবৃদ্ধি যেকোনো পশ্চিমা দেশের চেয়ে বেশি। লোকে বলে আমেরিকায় বিপ্লব না হবার অন্যতম প্রধান কারণ সেখানে আমেরিকার দূতাবাস নেই। আমেরিকা তো নিজের উপর নিজে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না তাই বিদেশি পণ্যের উপর চড়া শুল্ক আরোপ করে মূলতঃ সেটাই করছে। হিসেব মনে হয় যদি সে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়া নিজেদের শিল্প ঘরে ফেরাতে পারে, নিজের লোকদের জন্য কর্মসংস্থান করতে পারে এবং এর মাধ্যমে রাশিয়ার মত দেশের শিল্প চাঙ্গা করতে পারে। যেন ডলার, রঙিন বিপ্লব আর অস্ত্রের বাইরেও বিভিন্ন জিনিস বাইরে রপ্তানি করা যায়। সত্য মিথ্যা জানি না, তবে চড়া শুল্ক আরোপের পেছনে এমন কারণ থাকলে অবাক হব না। মস্কো, ০৭ এপ্রিল ২০২৫