Posts

Showing posts from 2025

ফ্রী ল্যান্সার

Image
স্মার্টফোন বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে তরুণ প্রজন্ম এমনকি শিশুদের মনোজগতে বিরাট প্রভাব বিস্তার করেছে এ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়। কিন্তু যেটা লেখা হয় না তা হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কীভাবে রাজনীতিকে ধ্বংস করছে। দেশে দেশে রঙিন বিপ্লবে সামাজিক মাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমনকি শাহবাগ আন্দোলনের শুরু এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই। অথবা পরবর্তী কালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা আন্দোলন আর সবশেষে ২০২৪ এর জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থান। একই চিত্র আমরা দেখতে পাই শ্রীলঙ্কা আর নেপালে। সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলো এসব আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকে না, ফলে প্রথম দিকে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখছে। পরবর্তীতে যোগ দিলেও আন্দোলনের নেতৃত্ব তাদের হাতে থাকছে না। আর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনুপস্থিত থাকে তখন সরকার ফেলা গেলেও পছন্দের নতুন সরকার গড়া যাচ্ছে না, ফলে কারো কারো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জিত হলেও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না, জাতির বৃহত্তর রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। দেশে দেশে সৃষ্টি হচ্ছে অরাজকতা। আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পাল্লায় রাজনৈতিক দলগুলো ক্র...

ডিজিটালাইজেশন

Image
সোভিয়েত আমলে শুধু রেডিও টেলিভিশন নয়, প্রতিটি ইস্ত্রি পর্যন্ত সুযোগ পেলেই লেনিনের নাম নিত। এখন সেই জায়গা দখল করেছে ডিজিটালাইজেশন। এর যে পজিটিভ দিক নেই সেটা বলব না, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই জীবন সহজ হয়ে গেছে। ডকুমেন্টের জন্য কোথাও যেতে হয় না, অনলাইনে দরখাস্ত করে ঘরে বসেই পাওয়া যায়। তবে সব কিছুর মত কোন কিছু মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে হিতে বিপরীত হয়। এর আগে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হিসাব রাখত ক্লাস ক্যাপ্টেন। গত বছর থেকে এর ডিজিটালাইজেশন হল। ছাত্ররা ক্লাসে এসে কিউআর কোড ব্যবহার করে নিজেদের হাজিরা প্রমাণ করত। এ নিয়ে আমার কখনই কোন মাথাব্যথা ছিল না। যাদের ইচ্ছা ক্লাসে আসত না হলে না। তবে এই সুযোগটা অনেকেই ব্যবহার করে। কেউ এসে কোডের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দিত। অন্যরা ঘরে বসেই উপস্থিত থাকত। এটা হয়তো কর্তৃপক্ষ টের পেয়েছে। তাই নতুন নিয়ম। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার অনলাইন ক্লাস হয়েছে।আমি উপস্থিত ছিলাম না। গতকাল গিয়ে শুনলাম এখন শুধু ছাত্ররা নয় শিক্ষকদেরও ঐ কোডের ছবি নিতে হবে ক্লাসের শুরুতে যা কাজ শুরুর হিসাব রাখবে। আবার ক্লাস শেষে কোডের ছবি তুলে শেষের ঘন্টা বাজাতে হবে। এটা...

অধঃপতন

Image
ফেসবুকে কিছু কিছু লেখায় দেখলাম নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রী নিয়ে কোর্টে আইনি লড়াই হচ্ছে। ডিগ্রি নিয়ে এই ছেলেমি নিঃসন্দেহে হাস্যকর। আচ্ছা ডিগ্রি থাকার সাথে প্রধানমন্ত্রী হওয়া না হওয়ার সম্পর্ক আছে কি? মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকা কি আবশ্যক? যদি সাংবিধানিক বাধা না থাকে তবে এটা নিয়ে জল ঘোলা করা আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অনেকটা বিগত টার্মে ট্রাম্পের জীবন দুর্বিষহ করার জন্য রাশাগেটের মত। মন্ত্রীর যোগ্যতা তার সাংগঠনিক শক্তির উপর নির্ভর করে। যদি সেটা ডিগ্রির উপর নির্ভর করত বাংলাদেশ আজ বিশ্ব রাজনীতিতে ভিন্ন অবস্থানে থাকত। রোগীর কাছে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার বিদেশী ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে বেশি উপযুক্ত। নরেন্দ্র মোদী যদি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, দেশ চালাতে না পারেন - তাহলে এই ডিগ্রি থাকা না থাকা সমান কথা। প্রায় সব রাজনীতিবিদরা যখন সব বিষয়ে উঠতে বসতে মিথ্যা বলে তখন শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে হৈচৈ আসলে সস্তা সার্কাস। এটা রাজনীতির মাঠে মকাবেলা করতে না পেরে ডিগ্রি নিয়ে খোঁটা দেওয়া। এতে নিজেদের দুর্বলতাই প্রকাশ পায়। রাজনীতির অধঃপতন অব্যাহত আছে সারা বিশ্বেই...

স্বাদহীন স্বাধীনতা

Image
বিশ্বখ্যাত আমেরিকান ফিল্ম ডাইরেক্টর উডি অ্যালেন মস্কো ফিল্ম উইক উপলক্ষ্যে ফিওদর বন্দরচুককে দেয়া এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে বলেছেন যদি অফার পান তাহলে মস্কো বা পিটারের উপর মুভি করবেন। তিনি আরো বলেন যে সংস্কৃতি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা উচিৎ। ইউক্রেন থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে আর তাঁকে ইউক্রেনের এক সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঠিক যেমনটি একসময় জামায়াত শিবির মুক্তমনা লেখকদের তালিকাভুক্ত করেছিল। আচ্ছা ইউরোপ, আমেরিকা এসব স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ। সেখানে মানুষ বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ইত্যাদি যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি উপভোগ করে। এসব দেশ এ নিয়ে গর্ব করে। তাই কেউ বা কোন দেশ যখন এসব দেশের মানুষের এই স্বাধীনতার উপর আঘাত হানে তখন তাদের মৌণতা সত্যিই অবাক করে। জার্মানি সেদেশের সংবিধানে ঘোষিত জনকল্যাণ রাষ্ট্র নীতি বাদ দিতে চাইছে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছা থেকে যদিও তার পেছনে জনসমর্থন নেই। একসময় ইউক্রেন ইউরোপ হতে চেয়েছিল, এখন ইউরোপ দ্বিগুণ বেগে ইউক্রেনে পরিণত হচ্ছে।‌ এর শেষ কোথায়? দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০২৫

নতজানু দেশ

Image
ছোট হোক আর বড় হোক রাষ্ট্র রাষ্ট্রই। কিছু কিছু বিচারে গ্রামের রাস্তার মোড়ের মুদি দোকানের মালিক গুগলের সিওর চেয়ে স্বাধীন। স্বাধীনতা মানেই দায়িত্ব। সেটা কখনোই সহজ নয়। তবে আত্মসম্মান বোধ সম্পন্ন যেকোনো রাষ্ট্র শত বাধা বিপত্তি এড়িয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করে। আচ্ছা একাত্তরে বিনা উস্কানিতে, বিনা ঘোষণায় বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের উপর আক্রমণের দায়িত্ব কি পাকিস্তান এড়াতে পারবে? আজ আমরা গতবছরের ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলি চালিয়ে হাজার খানেক মানুষের হত্যার বিচার করতে চাই, শুধু সরকার নয়, সরকারী দল, দলের যেকোনো কর্মীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাই। সেই বিচার যে করতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আবার এই আমরাই ত্রিশ লাখ মানুষ হত্যা ও তিন লাখ মা বোনকে ধর্ষণকারী পাকসেনা ও তার দেশীয় দোসরদের কাছে তাদের অপকর্মের হিস্যা চাইতে আজ দ্বিধা করি। উল্টা তারা আমাদের যখন মন পরিষ্কার করার উপদেশ দেয় বিনা প্রতিবাদে তা মেনে নেই। আর কত নতজানু হবে আমাদের সরকার। আর কত দাসত্ব বরণ করবে এরা? আমাদের শিক্ষা কি এতটাই মেরুদণ্ডহীন যে একজন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক এর প্রতিবাদ করতে সাহস পান না? বাংলাদেশের মানুষ ...

প্রশ্ন আর প্রশ্ন

Image
খোলা চিঠি ও পরবর্তীতে মেঘনায় মৃতদেহ উদ্ধারের পরও অনেকেই সাংবাদিক ও কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকারের আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।‌ তাহলে কি এটা হত্যা? হয়তো কেউ তাকে জীবিত অবস্থায় বা তার লাশ মেঘনার কালো জলে ফেলে দেয়নি কিন্তু সরকার এমন এক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যে তিনি বাধ্য হয়েছেন আত্মহনন করতে। আর বিভু দার পারিবারিক পদবী যেহেতু সরকার তাই সরকারের হাতে সরকারের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই প্রচার করা যায়। বিভু দার সুইসাইড নোট থেকে আরও জানতে পারি এই মৃত্যুর শুরু আজ নয়, এর শুরু দীর্ঘদিন আগে যখন থেকে দল দেশের ঊর্ধ্বে উঠে এসেছে, দলীয় স্বার্থ দেশপ্রেমকে হার মানিয়েছে। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি যে দল থেকে ব্যক্তি খুব বেশি দূরে নয়। বুঝতে পারিনি যে দেশপ্রেমের ভিত্তি যদি হয় আদর্শ তবে দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থ আদর্শ বর্জিত। তাই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে এসব লোকজন ব্যাপক হারে দলবদল করে, করছে। এই যে এক সর্বগ্রাসী আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে কয়েক যুগ ধরে সেখানে দেশপ্রেম আসলে উল্টো স্রোত। এই পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের সব সরকারই দায়ী। আমরা সত্যবাদী, সত্যসন্ধানী, দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য একটি নিরাপদ দেশ, নি...

২১ আগস্টের লিগেসি

Image
আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল মুসলিম লীগ থেকে, জাসদের আওয়ামী লীগ থেকে। যেহেতু মূল দলের রাজনীতির সাথে বিদ্রোহ করেই জন্ম তাই তাদের পারস্পরিক শত্রুতা ছিল শুরু থেকেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের পক্ষে থাকতেই পারত। তবে যখনই সে গণহত্যার সামিল হয়েছে তখনই সে গণশত্রু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই বাংলাদেশে জামায়াত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া অনৈতিক ছিল না। বিএনপির জন্ম জিয়ার হাতে যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে অনেকের বিশ্বাস। ফলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সম্পর্ক শুরু থেকেই সাপ বেজির। অন্যদিকে এরশাদ জিয়া হত্যার ফসল তোলায় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি একে অন্যকে কখনও গ্রহণ করেনি। কিন্তু এসব সমীকরণের মধ্যেও রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে ছিল, এক সাথে আন্দোলন করেছে, নির্বাচন করেছে, হেরেছে, জিতেছে, একে অন্যের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করেছে। তবে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার পরে বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নেয়। তখন থেকে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে জাতশত্রুতে পরিণত হয়। দেশের উন্নয়নের চেয়েও বিপক্ষ ধ্বংস ...

গণতন্ত্র

Image
গত পরশু রুশ গোয়েন্দা সংস্থা ক্রাস্নাদার এলাকায় একটি গাড়ি আটক করে। ইউক্রেন থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে জর্জিয়া হয়ে গাড়িটি রাশিয়ায় ঢোকে। গাড়ির ভেতরে ৩০০ কেজি বিস্ফোরক লুকানো ছিল। এর গন্তব্য ছিল ক্রিমিয়া। পথে ক্রিমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। বিভিন্ন হাত ঘুরে গাড়িটি ক্রিমিয়ার দিকে এগুচ্ছিল। শেষ যে চালক সে ইউক্রেনের সমর্থক হলেও জানত না যে তাকে আত্মঘাতী হিসেবে ব্যবহার করা হবে। গত বছর এভাবেই এই সেতুর উপর আক্রমণ করা হয়। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা গাড়িটি রাশিয়ায় ঢোকার পর থেকেই একে অনুসরণ করছিল ও এরসাথে জড়িত চক্র আবিস্কারের উদ্দেশ্যে দেশের ভেতরে ঢুকতে দেয়। গতকাল ধরা পড়েছে ছয় জনের এক দল। তিন জন সম্মুখ সমরে নিহত হয়, কমান্ডার সহ তিন জন আত্মসমর্পণ করে। এরা নরোওয়ে ও বাল্টিকের বিভিন্ন দেশে কানাডা ও ইংল্যান্ডের গোয়েন্দাদের দ্বারা প্রশিক্ষণ পেয়েছে রাশিয়ার ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর।  এক দিক ট্রাম্প যখন যুদ্ধ থামাতে চাইছে, ইউক্রেনের মানুষ শান্তির পক্ষে বলছে এসব শান্তির পায়রারা উঠেপড়ে লেগেছে শান্তির জীবন অশান্তিতে ভরিয়ে দিতে। কি চায় এরা? এই এক নতুন ফেনোমেনন ...

অধরা শান্তি

Image
ইরান এক সময় সালমান রুশদির মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল । এটা লেখকের স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ বিধায় নিন্দিত। কিন্তু মাথার মূল্য ঘোষণা করা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে একাজ করে। আমেরিকা বেন লাদেন সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদীদের মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল, এখন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাডুরোর মাথার মূল্য ঘোষণা করেছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। যদি অন্যান্য দেশ এসব করে আমরা এর বিরদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠি, কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব করলে আমরা ধরেই নেই সাহেবরা যখন বলেছেন তাহলে ঠিকই আছে। আসলে এভাবেই যুগে যুগে দেশে দেশে ব্রাহ্মণ্যবাদ গড়ে উঠেছে। ব্রাহ্মণ্যবাদ কী? এটা কারো বা কোন গোষ্ঠীর কাজকর্মকে অন্ধভাবে ন্যায্যতা দান করা। এই দেখুন ইউরোপ ও আমেরিকা বলতে গেলে রাশিয়াকে বাধ্য করল ইউক্রেন আক্রমণ করতে। কেন? তাহলে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক অজুহাত পাওয়া যায় আর সেটা দিয়ে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করে দেশটাকে নিজেদের বলয়ে আনা যায় যেমন হয়েছিল নব্বুইয়ের দশকে। এখন যখন যুদ্ধে ইউক্রেন পরাজয়ের দ্বারে, লাখ দশেক সেনা ভুপাতিত, ইউরোপের অর্থনীতির লালবাতি জ্বলার অবস্থা, যখন যুদ্ধ বন্ধ আশু কর্তব্য, তখনও তারা যুদ্ধ চালিয়ে...

অতিশিক্ষিত

Image
সত্য মিথ্যা বলতে পারব না, তবে শুনেছি পশ্চিমে নাকি অতিশিক্ষিত মানে ওভার কোয়ালিফাইড কাউকে সাধারণত কেউ চাকরিতে নিতে চায় না। রাশিয়ায় অবশ্য ওভার কোয়ালিফাইড কেউ কোন চাকরিতে ঢুকতে চাইলে সেখানে তার সেই কোয়ালিফিকেশন শুনেছি হিসেবে আনা হয় না। মানে যদি কেউ ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে সুইপার হতে চায় তাহলে সেখানে তার ডক্টরেট ডিগ্রি হিসেবে আনা হয় না, কারণ সে তো ঘর মোছার উপরে ডক্টোরেট ডিগ্রি পায়নি। বিশেষ করে নিয়োগকারী যদি বৌ বা বর হয়। খবরে দেখলাম শেখ হাসিনার ৫১ লাখের শেখ রাসেল স্টিডিয়াম এখন তৈরি হবে ১৪ কোটিতে। শুনে মনে কিছু উটকো প্রশ্ন জন্ম নিল। আচ্ছা স্টেডিয়ামের নাম কি শেখ রাসেল থাকবে নাকি কোন জুলাই বিপ্লবীর নামে তা হবে? যেকোনো দেশেই সিও যত দক্ষ তার বেতন তত বেশি। সন্দেহ নেই ডঃ ইউনুস আমাদের দেশের সবচেয়ে উচ্চ মূল্যের সিও। তাই দেশ যত গরীবই হক না কেন, এমন মানুষের বেতন বা এমন মানুষের ভরণপোষণের পেছনে খরচ যে বেশি হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর যাদের বেতন যত বেশি তারা তত বেশি অর্থ লামসাম করবে তাতেই বা অবাক হবার কি আছে? দেশ অতিশিক্ষিত ভৃত্য বা অবিডিয়েন্ট সারভ্যান্ট চাইবে আর বেতন দিতে কার্পণ্য করবে সেটা তো হয় ন...

ভয়

Image
শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে অনেকটা দেবতার পর্যায়ে চলে গেছেন যদিও দেবতা নন। আওয়ামী শাসনামলে তাঁর সমর্থকেরা তাঁকে দেবতার আসনে বসায়। সেটা অবশ্য দলীয় সমর্থকেরা এই মাপের প্রায় সব নেতাকে নিয়েই করে। কিন্তু শেখ মুজিবের ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিপক্ষ নিজেদের অজান্তেই সেটা করে চলছে। এটা অনেকটা মূর্তি ভাঙার মত। যারা মূর্তি পূজায় বিশ্বাস করে না, যারা প্রতিমা বা মূর্তিকে নেহায়েত পুতুল মনে করে তাদের জন্য স্বাভাবিক ছিল মূর্তিকে গুরুত্ব না দেয়া, মূর্তির প্রতি নির্লিপ্ত হওয়া। কিন্তু তারা মূর্তি ভাঙে। কেন? ভয় পায় যদি মূর্তি সত্যি সত্যি জাগ্রত হয়। একই ভাবে শেখ মুজিবের মূর্তি, তাঁর বাড়ি এসবের প্রতি নির্লিপ্ততা তাঁকে জনগণের চোখের আড়ালে নিয়ে যেত। কিন্তু যতই তাঁকে অপমান করার চেষ্টা করা হয় তিনি ততই মানুষের আলোচনায় ফিরে আসেন, তত বেশি করে মানুষের মন দখল করেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জীবিত শেখ মুজিবের উপর জেল জুলুম করে তাঁকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আজ মুজিব যখন ধরাছোঁয়ার বাইরে, মরেও যিনি অমর তাঁকে দাবিয়ে রাখতে চাইছে অর্বাচীন নপুংশক কিছু অমানুষ। মস্কো, ১৭ আগস্ট ২০২৫

আলাস্কা সামিট

Image
আলাস্কা সামিট নিয়ে বিভিন্ন জায়গার খবর দেখে বুঝলাম ট্রাম্প ও পুতিনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলেই বেশিরভাগ মানুষের ধারণা। এসব বলছে পশ্চিমা মাধ্যম। মনে প্রশ্ন জাগে এটা সত্য নাকি মনের ইচ্ছা কলমে প্রকাশ করা। কারণ এসব মাধ্যম ইউক্রেন ও ইউরোপের অনুপস্থিতিতে কোন চুক্তি হোক সেটা চায়নি।  আমার আরও মনে হয়েছে একদল মানুষ ধারনা করেছে আলোচনা মানেই আত্মসমর্পণ যেটা কিছুদিন আগে ফন ডের লায়েন করেছে ইউরোপের হয়ে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে একপক্ষ দুর্বল হলে সেটা হয় মাইর আর দুই পক্ষ সমান হলে হয় মারামারি। সেখানে সহজে সমঝোতা আসে না, অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রেস কনফারেন্সে পুতিন ও ট্রাম্পের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে এটা সাত দিনের প্রায় বিনা প্রস্তুতিতে আয়োজিত কোন সামিট নয়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার ফসল। ইউক্রেন নিমিত্ত মাত্র আর সেটা এদের সার্বিক যোগাযোগ থেকে দৃষ্টি এড়ানোর জন্য।  ইউক্রেন প্রশ্নে সমঝোতা হয়নি। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ পূর্ববর্তী ন্যাটোর কাছে তাদের নিরাপত্তার দাবিতে অটল সেটা নতুন করে ব্যক্ত করেছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা বাইপাস করে ইউরোপ ও ইউক্রেন নিরাপদ নয় এটা তারা বুঝিয়...

রিংকু

Image
হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রশান্তর মেসেজ থেকে রিংকুর মৃত্যু সংবাদ জানলাম। গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ছাড়াও রিংকুর আরেকটি পরিচয় ও রাশেদের ভাই। এছাড়া ও দীর্ঘ দিন আমার আরেক পরিচিতা উড়িষ্যার জুলির সাথে একই কোম্পানিতে কাজ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন তো আছেই। তাই আমার সাথে রিংকুর পরিচয় বহুমুখী যদিও দেখা বা কথা হত কালেভদ্রে। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ বছর পূর্তি উৎসবে দেশ থেকে অনেকেই যোগ দেয়। সেখানে আমাদের এক গেট টুগেদারে রিংকুর সাথে দেখা। তখন ও জানায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা। এরপর দেখা হয় ২৬ এপ্রিল মস্কো সফররত সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহুল হোসেন প্রিন্সের সাথে এক আলোচনা সভায়। আমি রিংকুকে বলতে ভুলে গেছিলাম। রাত এগারোটার দিকে সানু ফোন করে জিজ্ঞেস করে রিংকুকে বলেছি কিনা। সাথে সাথে ওকে ফোন করি। পাইনি। ২৬ তারিখ সকালে ও ফোন করলে বিকেলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাই। ওখানেই আমাদের শেষ দেখা। গত ১৯ তারিখে বাংলাদেশের রাশান গ্র্যাজুয়েটদের পিকনিকে রাশেদের সাথে দেখা। রিংকুর কথা জিজ্ঞেস করলে জানাল ও হাসপাতালে। আজকাল ক্যান্সার আর আগের মত দূরারোগ্য ব্য...

বোধোদয়?

Image
গতকাল ভিডিওতে একটি নতুন স্লোগান শুনলাম  "তুমিও জানো আমিও জানি  জামায়াত শিবির পাকিস্তানী।" ২০১৩ সালে শাহবাগের "তুই রাজাকার" এর পরে এটা মনে হয় বাংলাদেশের পক্ষের অন্যতম প্রধান স্লোগান। স্লোগান দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আমাদের এক সময়ের প্রাণপ্রিয় সংগঠন। এক সময়ের বলছি এ কারণে যে গত এক বছরে ছাত্র ইউনিয়ন তো বটেই সিপিবি সহ বিভিন্ন বাম দলের ভূমিকা অনেকের মনেই এই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে "সখী তুমি কার?" এই স্লোগান শুধুই সাময়িক আবেগ নাকি স্মৃতিভ্রষ্ট বামদের একাত্তরের স্মৃতি ফিরে পাওয়া এটা সময় বলবে। তবে সংবিধান সংস্কার প্রশ্নে তাদের শেষ পদক্ষেপ, জামায়াত শিবির বিরোধী স্লোগান - এসব দেখে মনে হয় অন্ধ আওয়ামী বিরোধী টনিকের নেশা দেরিতে হলেও তাদের ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে। বেটার লেট দ্যান নেভার।   দুবনা, ০৬ আগস্ট ২০২৫

ট্যারিফের তারিফ

Image
ট্রাম্পের ট্যারিফ রাজনীতির তারিফ করতেই হয়। সেই ডিভাইড এন্ড রুল - কারোও উপর বেশি করে শুল্ক আরোপ, কারোও উপর কম। সবাই রিসিভিং এন্ডে। তারপরেও সবার চেষ্টা ক্ষতি কীভাবে কমানো যায়। লাভ নিয়ে কেউ ভাবছে না। অথচ এর সাথে জড়িত বিশ্বের সব দেশ। সবাই আমেরিকার প্রতিপক্ষ। অথচ সবাই মিলে যে ঐক্যবদ্ধভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার কোন লক্ষণ নেই। ধরা যাক সব দেশ এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য এক সাথে কোথাও বসল। এমনকি তারা যদি কোন সিদ্ধান্ত নাও নেয় এই বসাটাই হবে গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল। অথবা বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলার ব্যবহার না করা, সাময়িক ভাবে সমস্ত ব্যবসা বাণিজ্য, লেনদেন বন্ধ করা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনাও আমেরিকাকে বাধ্য করত নতুন ভাবে ভাবতে, পরস্পর নির্ভরশীল এই বিশ্বে একা থাকা যায় না। এমনকি বাংলাদেশের কোন গ্রামের দরিদ্র মেয়েটি যে পোশাক শিল্পে কাজ করে সেও বিশ্ব অর্থনীতির একটি অংশ। আসলে বিভিন্ন দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীদের নপুংশকতা ট্রাম্প বা বড় বড় কোম্পানিকে বিশ্বের ভাগ্য নিয়ে খেলার সুযোগ করে দেয়। অথচ সম্মিলিত প্রতিরোধ এখন বিশ্বের অর্থনীতির গতিপথ আমূল বদলে দিতে পারত। দুবনা, ০২ আগস্ট ২০২৫

হুজুগ

Image
১৯৯৪ সালে যখন দুবনা আসি ধীরে ধীরে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়। এদের একজন ছিলেন আফানাসিয়েভ। আমার মত উনিও শুক্রবার মস্কো ফিরতেন। তাই প্রায় দুই বছর আমাদের অনেকটা পথ একসাথে চলা। বেশ হাসিখুশি ও রসিক। একদিন উনি আমাকে পেস্তভের সাথে আলাপ করিয়ে দিলেন। - এ সেই পেস্তভ যে কিনা তার ছাত্রীর সাথে প্রেম করেছিল। পেস্তভ খুব ভালো মানুষ। ভালো বিশেষজ্ঞ। এটা শুনে উনি লজ্জায় লাল হয়ে গেলে আফানাসিয়েভ বললেন - ভুল হয়ে গেছে। এ সেই পেস্তভ যে তার ছাত্রীর সাথে প্রেম করেনি। আসলে এখন যারা গণহারে মেটা বা ফেসবুককে নিজ তথ্য ব্যবহারের অধিকার দিচ্ছে বা দিচ্ছে না তারা আসলে মেটার প্রচার চালাচ্ছে। এখানে যেকোনো লেখা যখন ওনলি মি নয়, তা তৃতীয় পক্ষের, তা সে বন্ধু হোক আর পাবলিক হোক, জন্য উন্মুক্ত তা ব্যবহার করার অনুমতি ফেসবুক অটোমেটিক্যালি পেয়ে গেছে। আর ফেসবুকে একাউন্ট খোলার সময় চুক্তিতে স্বাক্ষর করে সবাই নিজের অধিকার সীমিত করেছি। হুজুগে কান না দিয়ে আগের মত ফেসবুকিং করে যান। তবে এটাও হতে পারে যে আমার মত এখানে কেউ সর্বহারা নয়, তাই হারানোর অনেক কিছু থাকতেই পারে। আমার হারানোর কিছু নেই, ফেসবুক যে নিজের কথা অন্যদের ...

কথোপকথন

Image
আমাদের দেশের সমস্যা সমাধানের কি কোন পথই নেই? পথ নেই তা বলব না, সব কিছুরই সম্ভাবনা থাকে - বেশি আর কম। আমাদের সেই সম্ভাবনাটা কি? নির্বাচন! নির্বাচন বর্তমান সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে যৌক্তিক ও প্রায় একমাত্র সমাধান, যদিও নির্বাচন দেবার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু সংস্কার না করে নির্বাচনে কি কোন লাভ হবে? আমাদের সমস্যা কিন্তু নির্বাচনের জন্য হয়নি, হয়েছে নির্বাচন না হবার জন্য। তার মানে বর্তমানের নির্বাচনী বিধির আওতায় নির্বাচন হলেও সমস্যা নেই? আমার মনে হয় উপদেষ্টা শব্দটির মধ্যেই যত সমস্যা। উপদেষ্টার ঠিক ততটা দায়বদ্ধতা নেই যতটা আছে এমনকি ভারপ্রাপ্ত সরকার প্রধান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা ঐ জাতীয় কিছুর মধ্যে। বলা হয় সবার আগে ছিল শব্দ। তাই কি নামে কাউকে ডাকা হচ্ছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে টেনে তুলতে হলে দরকার দায়বদ্ধতা সম্পন্ন পদ আর সেটা উপদেষ্টা নয়। উপদেশ নিঃসন্দেহে ভালো জিনিস, কিন্তু ইতিহাস বলে বাঙালি ও বাংলাদেশী মধ্যবিত্ত সাধারণত অন্যের ক্ষতি করার জন্য উপদেশ দেয়, অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার জন্য উপদেশ ফেরি করে বেড়ায়। নির্বাচিত সরকারই এদেশে জবাবদিহ...

লাভ ভার্সেস love

Image
লাভটাই যদি জীবনের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয় তবে সে জীবনে আর যাই থাকুক অন্যের জন্য দরদ বা ভালোবাসা থাকে না। আজকাল রাজনীতিতে টাকার খেলা চলে, অনেকেই রাজনীতি ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে, তবে এরাও রাজনীতিটাই প্রথমে রাখে, পরে ব্যবসা। রাজনীতি এদের জীবনে প্রথম প্রেম। কিন্তু আমাদের প্রধান উপদেষ্টা মনে হয় রাজনীতি ব্যবহার করছেন ব্যবসায়িক টুল হিসেবে, উপার্জনের একটি উপায় হিসেবে। শিক্ষক হিসেবে শুরু করলেও পরবর্তীতে ওনার সব কাজ প্রমাণ করে যে উনি জন্মগত ভাবে ব্যাংকার যার মূল উদ্দেশ্য লাভ করা। তাই ক্ষমতায় এসে প্রথমেই নিজেকে করমুক্ত বা সত্যিকার অর্থে দায়মুক্ত করেছেন। কারণ কাছে তার দায়? দেশের ও দেশের মানুষের কাছে। কিন্তু তিনি ও তারা আক্ষরিক অর্থেই আজ দায়মুক্ত। তার সরকারের বন্যার সময়ে ত্রাণ তহবিলে জমানো অর্থ উপযুক্ত খাতে ব্যয় করেনি বলে অভিযোগ আছে। এখন তিনি দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিমান ধ্বংসের ফলে অগ্নিদগ্ধ মানুষের জন্য আর্থিক সাহায্যের। সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যেই রক্ত দিয়ে সাধ্যমত নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে। বছরব্যাপী অরাজকতা ও মব সংস্কৃতির কারণে মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই মানুষ...

মনস্তত্ত্ব

Image
পাশের বাড়ির বাচ্চাকে কাঁদতে দেখে একটা লজেন্স হাতে ধরিয়ে দিলে হাজারটা কথা শুনতে হবে যদি না প্রতিবেশী কেউকেটা কেউ হয়। একই ঘটনা ঘটবে কাউকে কিছু না ভেবেই সাহায্য করলে। মানে একজনের ছোটখাটো কোন সমস্যা হল, কেউ সাতপাঁচ না ভেবে সাহায্য করল। আর যাবে কোথায়? এটাকে বলা হবে অন্যের ব্যাপারে নাক গলানো। যাদের সাহায্য করা হল তাদের প্রেস্টিজ হ্যাম্পার। অবশ্য সাহায্যকারী যদি যদু মধু না হয়ে এলাকার কোন ধনাঢ্য ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতা হয় তাহলে অন্য কথা। এটা ফলাও করে প্রচার করা হবে সমাজে নিজেদের অবস্থান দেখাতে। অবশ্য হতেই পারে যে সাধারণ মানুষটি কোন দূরাভিসন্ধি ছাড়া একটু সাহায্য করেছিল আর কেউকেটা লোকজন ভাবছিল তার ভোট অথবা ভিটা বাগিয়ে নেবার কথা। এটা সবক্ষেত্রেই। তাই বিশ্বনন্দিত শান্তির ফেরিওয়ালা বা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক যখন সাহায্যের নামে দেশের খোলনলচে বদলে দেয় সেটা আমরা সহজেই হজম করি। মেইড ইন ইউএসএ বলে কথা! দুবনা, ২১ জুলাই ২০২৫

রাব পিকনিক ২০২৫

Image
গতকাল ১৯ জুলাই ২০২৫ দীর্ঘ বিরতির পরে রাশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়েটদের সংগঠন রাবের উদ্যোগে খ্লেবনিকোভা রিসোর্টে এক পিকনিকের আয়োজন করা হয়। শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মস্কো নদীর তীর। ১৯৭৪ থেকে শুরু করে সদ্যজাত ভিপুস্কনিকদের অনেকেই সপরিবারে অংশগ্রহণ করে এই বন প্লাস নদী ভোজনে। একাধিক পরিবারের তিন প্রজন্মের (বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়েট, তার সন্তান ও নাতি নাতনি) উপস্থিতি পিকনিককে আরও অর্থময় করে তোলে। অনেক দিন পরে বন্ধুদের সাথে সরাসরি মেলামেশা করার এই যে সুযোগ করে দেয় রাব সেটা সকলের প্রশংসা কুড়ায়। ফলে প্রায় রাত দশটায় সমাপনী অনুষ্ঠানে সবাই রাবকে শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে এবং রাবকে আরো গতিময় করার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে সকাল ১১ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত চলমান এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করে। মস্কো, ২০ জুলাই ২০২৫

ভুল

Image
মানুষ ভেবেছিল শেখ হাসিনা সহজে পড়বে না। ভুল ভেবেছিল। মানুষ ভেবেছিল রাজনৈতিক ভিত্তিহীন ইউনুস সরকার শক্ত হাতে দেশ চালাতে পারবে না। এত রক্ত মনে হয় এর আগে কোন আমলেই ঝরেনি। আর কত শক্ত হতে হবে হাত! মানুষ আবার ভুল করল। অনেকেই ভাবে সেনাবাহিনী দেশকে এই অরাজকতা থেকে রক্ষা করতে পারবে। গোপালগঞ্জ কি সেই বিশ্বাসে চিড় ধরায় না?শুনি দেশের ৩০ না ৪০ ভাগ মানুষ আওয়ামী সমর্থক। আরও ৩০ ভাগ বিএনপি। তাহলে কীভাবে কয়েক জন সমন্বয়ক দেশে এরকম তান্ডব লীলা চালায়? নাকি এখানেও মানুষ ভুল করছে? বাইরে বাইরে পরস্পরের বিরুদ্ধে কথা বললেও কেন যেন মনে হয় সেনাবাহিনী, মৌলবাদী শক্তি আর পশ্চিমা শক্তিগুলো স্বাধীন সার্বভৌম একাত্তরের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। এই সম্মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে বাকিদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছানোর কোন বিকল্প নেই। নাকি বাকিরাও ভেতরে ভেতরে বর্তমানে যা ঘটছে সেটা সমর্থন করে? কিছু দিন আগে বাংলাদেশকে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য সমাধান ভাবা হত। কিন্তু আজ সে অন্য দেশ তো বটেই নিজের জন্যেও বিশাল সমস্যা। আর এর নেপথ্যে রয়েছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দেশকে অপরাজনীতির পথে ঠেলে দেবার দীর্ঘ ইতিহা...

পর

Image
আশির দশকে আমাদের ছাত্রজীবনে অনেকেই গ্রীষ্মের ছুটিতে লন্ডন যেত ইন্ডিয়ান (সিলেটী) রেস্টুরেন্টে কাজ করে কিছু পয়সা কামানোর জন্য। আমার এক পরিচিত ছুটি নিয়ে প্রায় এক বছর ওখানে কাজ করে আর বেশ ভালো অংকের টাকা (পাউন্ড) নিয়ে মস্কো ফেরে। ফিরে সে তাদের ইনস্টিটিউটের এক বড় ভাইকে সেই টাকা ধার দেয়। শুনেছি সেই বড় ভাই তাকে অল্প অল্প করে টাকা ফেরত দিত আর দিত রুবলে। যেহেতু ইনফ্লাশন তখন সেই বিগ ব্যাং -এর ঠিক পরবর্তী অবস্থার মতই, তাই বলা চলে সে কোন টাকা আর ফেরত পায়নি। এজন্যেই মা বলতেন পুঁথিগত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন আমাদের দেশের অবস্থা এখন সেই বন্ধুর মত। আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নিজেদের স্বার্থ (দেশ) বন্ধক রেখে গণতন্ত্র লাভের স্বপ্নে বিভোর দেশের নেতারা কিছু দিন পরে যা পাবে তখন তাকে দেশ বা রাষ্ট্র বলা যাবে কি না সেটাই সন্দেহ। অনেকেই আশা করেছিল ট্রাম্পের আগমনে একটা হিল্লে হবে। কিন্তু এখানে তো ট্রাম্প বাইডেনের প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন আমেরিকার স্বার্থের। এতে দেশের কি হল না হল তাতে তাদের কি এসে যায়? বেচারা জেলেনস্কি, এতো ভালো অভিনয় করেও আমাদের দেশের নেতাদের এই সহজ সত্যটা বোঝাতে স...

অফ লাইন

Image
আজ মানে ০৭ জুলাই ২০২৫ মস্কোর বাউমান ইউনিভার্সিটিতে শুরু হল দ্বিবার্ষিক সম্মেলন - ফিজিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশন অফ রিলেটিভিটি থিওরি । আমি গত ২০২৩ সালে প্রথমবারের মত এতে অংশগ্রহণ করি। সেবার প্রফেসর বিভূদুত্য মিশ্র আর প্রফেসর সুনীল ত্রিপাঠীর সাথে আলাপ। বিভূ আসছে জানতাম। ভেবেছিলাম সুনীলের সাথেও দেখা হবে। ওরা দু'জনেই উড়িষ্যা থেকে। সকালে বাউমান ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে বিভূর সাথে দেখা। আরও জনা দুয়েক ভারতীয় দেখে বুঝলাম ওর ছাত্র। এমন সময় হঠাৎ একজন এসেছে জিজ্ঞেস করলেন  - কেমন আছেন? বাংলায় কথা শুনে প্রচন্ড অবাক হলাম। - ভালো। কিন্তু আপনাকে তো চিনতে পারলাম না। - আমি রঞ্জন শর্মা। - ও, তাই বলুন। ফেসবুকে আলাপ। আমার ধারণা ছিল উনি সোভিয়েত ফেরৎ। ভুল ধারণা। উনি ইন্ডিয়ায় লেখাপড়া করেছেন। সাউথ আফ্রিকায় অনেক দিন কাজ করেছেন। দুই দেশেই আমাদের অনেক কমন পরিচিত। মাত্র কয়েক দিন আগেও আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন অথচ বলেননি যে মস্কো আসছেন। জানালেন আমরা লেখা প্রায়ই পড়েন আর ছবি দেখেন। রোগাপাতলা হবার এই এক সমস্যা - গর্বে বুকের ছাতি ফুলে ওঠে না। এখন শিলিগুড়ি আছেন। আরও দুজন প্রফেসরের সাথে আলাপ করিয়ে দিল...

প্রশ্ন

Image
দেশের ক্রান্তিকালে মানুষ রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ভিন দেশের শান্তি রক্ষার অজুহাতে নিজ দেশের মানুষকে অশান্তির আগুনে জ্বলতে দেখেও নিশ্চিন্তে বাঁশি বাজাচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দেখছে কীভাবে দেশটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জয় নাকি মৌলবাদের কাছে পরাজয় ঠিক কোনটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক সেই বিষয়ে নিশ্চিত না হতে পারা এখন তথাকথিত একাত্তরের পক্ষের অবশিষ্ট শক্তির প্রধান সমস্যা। কী সামরিক, কী রাজনৈতিক, কী বুদ্ধিবৃত্তিক - সব সেক্টরে এমন নপুংশক, দিশেহারা ও অদক্ষ নেতৃত্ব বাঙালি জাতির জীবনে কখনো এসেছে বলে মনে হয় না। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুবর্ণ সুযোগ এরা পেয়েছিল মবের কাছে সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলার নজির বিশ্বের কোথাও আছে কি? দুবনা, ০৫ জুলাই ২০২৫

স্বার্থ

Image
রাশিয়ার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া ও ভিয়েতনামের আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে কিছু স্ট্যাটাস দেখলাম। হ্যাঁ, মস্কোর আফগান দূতাবাসে আগের তিনরঙা পতাকার পরিবর্তে নতুন পতাকা উড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন কথা হবে। তবে আমার মনে হয় বিভিন্ন দেশ যদি অন্যান্য দেশের গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করে তাহলে পৃথিবীর অনেক সমস্যারই সমাধান হয়। গ্রাউন্ড রিয়ালিটি একেক দেশে একেক রকম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা স্থানীয় জনগণের দ্বারা সমর্থিত। অন্য দেশ সেটা না মানলে একটাই উপায় থাকে - সরকার পরিবর্তন। কিন্তু প্রায়ই সেটা হয় রক্তক্ষয়ী। অন্যদিকে সেই সরকারকে স্বীকৃতি না দিলে কূটনৈতিক কাজকর্ম চলে না, তাতে আর যাই হোক সে দেশের সাধারণ মানুষের কোন লাভ হয় না। কুটনীতিও চাপ সৃষ্টি করার একটি মাধ্যম। কিন্তু কথাই যদি না বলি কথা শুনাব কীভাবে? তালিবানের কাজকর্ম সমর্থনযোগ্য নয়, কিন্তু তার সংশোধনের জন্য হলেও যোগাযোগ দরকার। এই স্বীকৃতি আফগান জনগণের জন্য কোন উপকার বয়ে আনবে কিনা সেটা বলা কষ্ট, তবে চেষ্টা তো করা যাবে। হামাজকে স্বীকৃতি দিয়েছিল বলেই রাশিয়া সেখান থেকে নিজেদের লোকদের বের করে আনতে পেরেছে, ...

ক্ষমতা

Image
গতকাল "তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি" নামে আনোয়ার ভাইয়ের (সাবেক ছাত্র নেতা আনোয়ারুল হক) একটি লেখা পড়লাম। তিনি সেখানে যথার্থ ভাবেই বৃহত্তর বাম ঐক্যের জন্য ডাক দিয়েছেন। সেই লেখা পড়ে আমার প্রতিক্রিয়া এরকম ঘর ভাঙে যখন ঘরের মানুষের মধ্যে বোঝাপড়া থাকে না। দলও একই কারণে ভাঙে। যেখানে এক দলের মানুষই নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না সেখানে বিভিন্ন দলের লোক পারবে কিভাবে? হ্যাঁ, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক হয়েছিল কারণ শেখ হাসিনাকে সবাই শত্রু মনে করত। আর শত্রুর শত্রু বন্ধু এ তত্ত্ব তো বাজারে নতুন নয়। তাই এক্ষেত্রে এমনকি শয়তানের সাথেও আঁতাত করা যায়, করে। এটা রাজনীতিতে যেমন সত্য, তেমনি সত্য সমাজে। মানে শত্রুকে যেকোনো ভাবে পরাজিত করা জায়েজ। শত্রু নিশ্চিহ্ন করার জন্য, সেখানে পাবার কিছু নেই। কিন্তু যখন গড়ার প্রশ্ন আসে তখন সামনে কোন না কোন লক্ষ্য থাকে। লক্ষ্য কোন বিমূর্ত বিষয় নয়। এখানে থাকে ক্ষমতা ও সম্পদের হাতছানি। তখন কোন পথে এই লক্ষ্য অর্জন করব, কে এর নেতৃত্ব দেবে ইত্যাদি প্রশ্ন সামনে চলে আসে। তাই অবজেক্টিভ রিজন ও রিয়ালিটি থাকা সত্ত্বেও বাম ঐক্য অধরাই থেকে গেছে। তাছাড়া এই ঐক্যের জন্...

কয়লা

Image
একটা কথা আছে - কয়লা ধুলে ময়লা যায় না। আমাদের তাই যত পরীক্ষা নিরীক্ষা, যত বিপ্লবের মধ্য দিয়েই নিয়ে যাওয়া হোক নে কেন - দিন শেষে আমরা বাংলাদেশিই থেকে যাই। শুধু নাম বদলায়, গালি বদলায়। আগে সরকারের সমালোচনা করলে বলত রাজাকার, এখন বলে স্বৈরাচারের দোসর। কিন্তু এসব বলে যে আসল সমস্যার সমাধান হয় না সেটা কেউ বোঝে না বা বুঝতে চায় না। কেউ যদি বলে আগেই ভালো ছিলাম তার অর্থ এই নয় যে সে স্বৈরাচারের সমর্থক। এর অর্থ এখন যারা ক্ষমতায় তারা মানুষের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই মানুষকে ট্যাগ করে নয়, তাদের সমস্যা সমাধান, যে স্বপ্ন নিয়ে তারা অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল সেই স্বপ্ন পূরণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়েই শুধু জনগণের আস্থা অর্জন করা যায়। মনে রাখা দরকার উপদেষ্টা বা কিছু উচ্চাভিলাষী রাজনৈতিক নেতা কর্মীর ক্ষমতার খায়েস মেটানোর জন্য মানুষ রাস্তায় নামেনি, তারা রাস্তায় নেমেছিল নিজেদের জন্য ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে। আজকাল উন্নত বিশ্বে বসবাসরত ও নিজেদের উচ্চ শিক্ষিত বলে দাবিদার অনেককেই দেখি দেশে কাউকে জুতার মালা গলায় পরিয়ে ঘোরানো সহ বিভিন্ন বিচার বহির্ভূত কারকলাপের সাফাই গাইতে। কেউ অপর...

স্বাবলম্বী

Image
একান্নবর্তী পরিবার ভিন্ন হওয়া সবসময়ই ট্র্যাজেডি, তারপরেও পরিবার ভেঙে যায়। ভাঙে ভবিষ্যত নিয়ে বিভিন্ন সদস্যের বিভিন্ন ধারণা থেকে। আগে অধিকাংশ মানুষ নিজ নিজ এলাকার বাইরে নিজেকে নিয়ে তেমন ভাবতে পারত না, ফলে ভিন্ন হওয়ার প্রক্রিয়া ছিল বেশ বেদনাদায়ক। এখন অধিকাংশ মানুষ কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় থাকে তাই ফর্মালি ভিন্ন হবার আগেই ভিন্ন হয়ে যায়। তারপরেও সম্পত্তি নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বিতর্ক বা মনোমালিন্য হয়। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমনকি নিজে উদ্যোগী হয়ে ভিন্ন হলেও যে পৈত্রিক ভিটা ছেড়ে চলে যায় সে নিজেকে বঞ্চিত মনে করে। দেশ ভাগের ক্ষেত্রেও মনে হয় এটাই ঘটে। ভারত বিভক্ত হয়েছিল ধর্মীয় কারণে। যারা পাকিস্তান চেয়েছিল তারা সব জেনেই দিল্লির মসনদ ত্যাগ করেছিল। কিন্তু যে স্বপ্ন নিয়ে নতুন দেশ গড়েছিল অধিকাংশ মানুষের কাছে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে। ফল স্বরূপ নিজেদের ব্যর্থতার জন্য সব দায় তারা চাপাতে চাইছে ভারতের ঘাড়ে। ভারতের মানুষ যে দুধে ভাতে আছে তাও না। সেখানেও নিজেদের ব্যর্থতার দায় আংশিক ভাবে চাপাচ্ছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের উপর। মজার ব্যাপার হল স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশের মানুষ নিজেদে...

তোতা ও হাঁস

Image
অনেক আগে একসময় আমার খুব থুথু ফেলার বদভ্যাস ছিল। একদিন গ্রামের হাটখোলায় বসে বসে তোতার চাটাই বানানো দেখছি আর থুথু ফেলছি। - বিজন, তোমার মুখ তো দেখি হাঁসের পাছার মত। হাঁস যেমন একটু পর পর হাগে তুমি ঠিক সেভাবেই থুথু ফেলে যাচ্ছ। তোতার ঐ কথা ছিল ধন্বন্তরী ওষুধের মত। এরপর থুথু ফেলতে গেলেই তোতার মুখ আর হংসের পশ্চাৎদেশ চোখের সামনে ভেসে উঠতে।ওতেই আমার থুথু ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। নির্বাচন ও আওয়ামী নিষিদ্ধ প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা দেখছি দুই দিন পর পর কথা বদলাচ্ছেন। তাই কেন যেন তোতার কথা আর হাঁসের পশ্চাৎদেশের কথা মনে পড়ল। উনিও হয়তোবা একই রোগের রুগী। মস্কো, ২৩ জুন ২০২৫

প্রশ্ন?

Image
ইরানের ভেতরে ইসরাইল যেভাবে নিজেদের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে তাতে আবারও প্রমাণিত হয় সেখান সরকার বিরোধী শক্তি যথেষ্ট শক্তিশালী। ইরানের শাসনব্যবস্থা যে পরিবর্তিত হওয়া উচিত এ বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। সেখানে সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান চর্চা এগিয়ে গেলেও ধর্মীয় শাসন মানবাধিকারের সাথে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাংঘর্ষিক। আধুনিক বিশ্বে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু কথা হল এই অবস্থা থেকে মু্ক্তির উপায় কি? ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের সহযোগিতায় মুক্তি আসে না, আসে পরাধীনতা। এদের হাতে ইরান ইসলামী শাসন থেকে মুক্তি পেলেও নব্য ঔপনিবেশিক শাসনের কবল থেকে রক্ষা পাবে কিনা সে প্রশ্ন থেকেই যাবে। আর মুক্তি যদি পায় তাহলে ইরান তার বর্তমান ভৌগলিক সীমারেখা রক্ষা করতে পারবে নাকি বহুজাতিক এই অঞ্চলে একাধিক নতুন দেশ জন্ম নেবে সেই প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যায় না। মহাবিশ্বে এন্ট্রোপি শুধু বাড়তেই পারে তাই কোন দেশে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা যে সার্বিক ভাবে বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি করবে না সে গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না। আসলে ইরানের উপর আক্রমণ শুধু ইরানকে শিক্ষা দেবার জন্য নয় ইউনিপোলার বিশ্ব ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখা...

চরিত্র

Image
শীত প্রধান দেশ হওয়ায় রাশিয়ার অধিকাংশ স্থাপনায় দুটো করে দরোজা থাকে। ফলে স্থাপনায় ঢোকার সময় কেউ একজন আপনার জন্য দরোজা খুলে দিলে আপনি প্রায় সাথে সাথে দ্বিতীয় দোরোজায় তার ঋণ শোধ করতে পারেন। এটা আসসালামুয়ালাইকুম ও ওয়ালাইকুম সালামের ১০ ও ৫ ছোঁয়াবের কথা মনে করিয়ে দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙনের পরে একদল নেতাকর্মী সিপিবি থেকে বেরিয়ে যায়, আরেক দল নতুন করে পার্টি গুছিয়ে অন্যদের সংশোধনবাদী ট্যাগ দেয়। এখন সেই গোষ্ঠীর মূল নেতারা সিপিবি ভাঙন যজ্ঞে ঘি ঢালছে বলে খবরে প্রকাশ। রোল চেজ্ঞের পালা। রোলের বাংলা চরিত্র। চরিত্র বদল। ছোটবেলায় পড়েছিলাম সমাজতন্ত্র হল পুঁজিবাদকে বাইপাস করে সাম্যবাদে পৌঁছুনর পথ। এ নিয়ে রিগ্যান গরবাচভকে নাকি বলেছিলেন যে সমাজতন্ত্র হল পুঁজিবাদে পৌঁছুনর প্রচণ্ড কঠিন ও ঘোরা পথ। আমাদের অনেক কমরেডদের(?) লেখা পড়লে মনে হয় তারা সিপিবির সংকুল পথে বেয়ে মৌলবাদে উত্তীর্ণ হবার বৃথা চেষ্টা করছে। বৃথা - কারণ এরা কখনোই বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না। আর বিশ্বাসীরা বিশ্বাস না করলে সেখানে অবস্থান জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দুবনা, ২০ জুন ২০২৫

গলা

Image
আমি কখনোই না সাদ্দাম হোসেনের, না মুয়াম্মার গাদ্দাফীর, না বাশার আল আসাদের, না শেখ হাসিনার - কারো ফ্যান ছিলাম না। বরং বিভিন্ন সময়ে শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেছি। অনেকেই ইরান আর ইসরাইলের যুদ্ধে ইরানের মোল্লাতন্ত্রের পতনের আভাস পেয়ে উচ্ছ্বসিত। আমি উল্টো ভীত। না, এ জন্যে নয় যে আমি এই মোলাতন্ত্রের সমর্থক। কিন্তু ঘরপোড়া গরু যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায় আমারও সেই অবস্থা। সাদ্দামের পতনে অনেককেই খুশি হতে দেখেছি এক অত্যাচারী বিদায় নিল বলে। কিন্তু অত্যাচারীর সাথে সাথে কি অত্যাচার বিদায় নিয়েছে? নেয়নি। বরং ইসলামিক স্টেটের মত আরও ভয়ঙ্কর অত্যাচারী জন্ম নিয়েছে। গাদ্দাফীর বিদায়ে কি সেদেশের মানুষের অবস্থার এতটুকু উন্নতি ঘটেছে? মনে হয় না। বরং দেশটি আজ ধ্বংসের সম্মুখীন। একই অবস্থা সিরিয়ায়। আফগানিস্তানের কথা বাদই দিলাম। আমাদের দেশের দিকেই তাকালে কি দেখব? আবার সেই স্বৈরাচার। আগে ছিল এক জনের এখন একদল মানুষের। মবের স্বৈরাচার কিন্তু সর্বহারার একনায়কত্ব নয়। বর্তমানের শাসকদের দেশের প্রতি সামান্যতম মায়া আছে বলে মনে হয় না। এরা দেশের ইতিহাসের প্রতি নিজেদের দায়বদ্ধ বলে মনে করে না। যদি আগে তবুও দুই এক...

সন্ধি

Image
দেবতা আর দানবের মধ্যে সন্ধি হয় না। এমনকি দু'দল মিলে সমুদ্র মন্থন করে অমৃত আহরণ করলেও সেই অমৃতই হয় নতুন কলহের কারণ। সব সমস্যার মূলে তাই এক দলের নিজেদের দেবতা বলে ঘোষণা করে অন্যদের দৈত্য বলে ট্যাগ করা। ইউরোপ, আমেরিকা, ইসরাইল বা তাদের দোসররা যখন বেসামরিক লোক হত্যা করে সেটা হয় গণতন্ত্র দেবতার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি কিন্তু ইরান, রাশিয়া, চীন বা অন্য কোন দেশ সেটা করলে তা হয় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, হয় দানবীয় কাজ। যতদিন না তথাকথিত সভ্য সমাজ অন্যদের সভ্যতাকে শ্রদ্ধা করার মত সভ্য হবে ততদিন সভ্যতার এই দ্বন্দ্ব চলতেই থাকবে আর আমরা একটু একটু করে পারমানবিক আর্মাগেডনের দিকে অগ্রসর হব। আর যদি তেমনটা ঘটে তবে তার সিংহভাগ দায় সভ্য বিশ্বের। একই কথা বলা চলে মানুষকে মানুষ হিসেবে না দেখে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান স্বৈরাচারী লালবদরি ট্যাগ দিয়ে সমাজকে বিভক্ত করলে। দুবনার পথে, ১৬ জুন ২০২৫

ঋণ

Image
আজ গেলাম তাগানস্কায়া। সেখানে কয়েক দিন আগে স্তালিনের প্রতিকৃতি স্থাপনের পর পরই যাব বলে ভেবেছিলাম। আজ মনিকার সাথে গেছিলাম ৎসারিৎসিনো মিউজিয়ামে। ফেরার পথে তাই তাগানস্কায়া হয়ে আসা। স্তালিন সম্পর্কে বিভিন্ন লোকের বিভিন্ন মতামত আছে। আমি তাঁর অন্ধ ভক্ত যেমন নই, তেমনি নই তাঁর অন্ধ শত্রু। আমার অভিজ্ঞতা বলে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিশাল সংখ্যক মানুষের লেনিনের প্রতি অন্ধ ভক্তি আর স্তালিনের প্রতি অন্ধ ঘৃণা সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কারণ এতে করে তারা লেনিনের ভুলগুলো যেমন দেখতে পায়নি তেমনি এড়িয়ে গেছে রাষ্ট্র গঠনে স্তালিনের গঠনমূলক কাজ। আজ ভিন্ন পরিস্থিতিতে বসে আমরা তাদের সম্পর্কে যাই ভাবি না কেন, শুধু রাশিয়া বা সোভিয়েত ইউনিয়ন নয়, বিশ্ব ইতিহাসে তাঁরা নিজেদের নাম খোদাই করে রেখে গেছেন। তাদের ভুলের সমালোচনা করার পাশাপাশি দেশ গঠনে সাফল্য ও কৃতিত্বের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েই আমরা উপযুক্ত উত্তরসূরী হতে পারব। এমনকি আমরা যদি তাদের আদর্শ ধারণ নাও করি শুধুমাত্র কালের পরিক্রমায় আমরা আমাদের বর্তমানের জন্য তাদের কাছে ঋণী। সব দেশেই, সব কালেই। মস্কো, ১৫ জুন ২০২৫

উপলব্ধি

Image
আজ সোভিয়েত ইউনিয়নের উপর এক বন্ধুর লেখা পড়ে কয়েকটি প্রশ্ন মাথায় এল।‌ শুধু মাত্র সোভিয়েত ইউনিয়ন নয় বিশ্বের বহু দেশই এভাবে হারিয়ে ফেলেছে তার পথ, তার স্বপ্ন। যে সমস্ত মানুষের ত্যাগ তিতিক্ষায় একটি দেশ অর্জিত হয় যে স্বপ্ন নিয়ে একটি নতুন দেশ জন্ম নেয় - তা প্রায়ই অধরা থেকে যায়। সোভিয়েত ইউনিয়নে অনেক কারণের একটি ছিল এক দলীয় শাসন। কিন্তু তাই যদি হয় তবে আমাদের দেশের মত বহু দলীয় শাসনের দেশে আমরা কেন একাত্তরের সব অর্জন হারিয়ে ফেললাম? সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির ভেতরে বিভিন্ন স্রোত ছিল। সমাজতন্ত্র বা সাম্যবাদ কিভাবে গড়তে হবে এ নিয়ে ছিল বিভিন্ন মতামত। কিন্তু পার্টির ভেতরে গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকায় ক্ষমতার রদবদল হত প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ও পার্টির ভেতরে নিজ নিজ ক্লান তৈরি করার মধ্য দিয়ে। যেহেতু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হতেন প্রায় আজীবনের জন্য তাই অন্যান্য ক্লানের ফিরে আসার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধীদের নিষ্ক্রিয় করা হত। আমাদের দেশেও প্রায় একই ঘটনা ঘটে। ক্ষমতাসীন দল সর্বোতভাবে চায় বিরোধী দলকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে। তাই তারা আই...

নতুন স্বাধীনতা

Image
তৃতীয় বিশ্বের দেশে দেশে সমাজতন্ত্রের আদর্শে বিশ্বাসী সংগঠন গড়ে তুলতে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করত। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এসব সংগঠন সম্পূর্ণ ভাবে না হলেও সমাজ সেবায় উদ্বুদ্ধ কর্মীদের অনেকেই সরোস ফাউন্ডেশন, ইউএসএইড ও অন্যান্য পশ্চিমা সংগঠন থেকে সহযোগিতা লাভ করতে শুরু করে। বাহ্যিক ভাবে সোভিয়েত সমর্থন পুষ্ট সংগঠনের মত হলেও আদর্শের দিক থেকে এরা একেবারেই ভিন্ন। সোভিয়েত সমর্থন পুষ্ট সংগঠনগুলো সমাজতান্ত্রিক আদর্শের কথা প্রকাশ্যে বলত ও সেই লক্ষ্যে রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাত। কিন্তু পশ্চিমা সমর্থন পুষ্ট এনজিও নিজেদের আসল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মানবতা ও গণতন্ত্র ইত্যাদি মুখোসের আড়ালে লুকিয়ে রাখে আর দেশে দেশে নব্য উপনিবেশবাদ কায়েম করতে সমাজকে ভেতর থেকে অচল করে দিয়ে লাল নীল সবুজ ইত্যাদি বিভিন্ন রকমের বিপ্লব ঘটায়। আপাত দৃষ্টিতে এসব বিপ্লব দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য হলেও বাস্তবে এর মধ্য দিয়ে দেশে দেশে এনার্কি বা অরাজকতা সৃষ্টি হয় যার সুযোগে পশ্চিমা দেশগুলো এসব দেশে নিজেদের পছন্দের সরকার ক্ষমতায় বসিয়ে এসব এলাকা...

বাল্য ব্যাধি

Image
২০১০ সালে বাংলাদেশ প্রবাসী পরিষদ রাশিয়া নামে আমরা এক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি। নির্দলীয় এই সামাজিক সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল মস্কোস্থ বাংলাদেশীদের একটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানোর সুযোগ তৈরি করে দেয়া। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা মস্কোর বিভিন্ন সংগঠনের লোকজনকে আমন্ত্রণ জানাতাম। তখনই প্রথম খেয়াল করলাম কে কখন বক্তব্য রাখবে সেটার উপর বক্তা ও তার সংগঠনের মর্যাদা নির্ভর করে। আরও যে বিষয়টি খুবই অবাক করত তা হল অনুষ্ঠান যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন তাতে দেশনেত্রী, জননেত্রী, জাতির পিতা, স্বাধীনতার ঘোষক সবাই এসব সংগঠনের বক্তাদের কল্যাণে অবলীলায় প্রবেশ করতেন। এটাকে আমার মনে হত বক্তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার ঘাটতি কারণ অপ্রাসঙ্গিক সব কিছুই সাধারণত হাসির উদ্রেক করে। এটা যে সমস্ত ব্যক্তিদের কথা বক্তব্যে এসেছে তাদের প্রতি অবজ্ঞা নয়, বক্তার পরিমিতিবোধ নিয়ে প্রশ্ন। আজকাল বাম প্রগতিশীল বলে পরিচিত অনেকেই ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টেনে আনছেন। এরা হয়তো বর্তমান রাজনৈতিক স্রোতে নিজেদের প্রাসঙ্গিক করার জন্য অপ্রাসঙ্গিক ভাবে এটা করছেন , তবে এটাকে আমার তাদের রাজনৈতিক দীনতা বলেই মনে হয়। এমনকি যদি এট...

আশা

Image
সফল ব্যবসায়ী প্রচুর জন্মায়, কিন্তু রতন টাটা লাখে দশ লাখে একজন। তাই কোন সফল ব্যবসায়ীর হাতে সমাজ সংস্কারের দায়িত্ব দিলে সেই লোক যে অভ্যাস বশত নিজের লাভ লোকসানের বিষয়টি সর্বাগ্রে দেখবে সেই সম্ভাবনাই বেশি। বিষয়টি ঐ লোকের অর্থনৈতিক অবস্থার উপর নির্ভর করে না। এটাই তার জীবন দর্শন - যেকোনো উপায়েই হোক লাভ করা। বিলিয়নিয়াররা অর্থাভাব থেকে অর্থ উপার্জন করে না, এটা তাদের জীবনের অংশ হয়ে যায়, উপার্জন না করলে তারা দিনটা মাটি হয়ে গেল বলে মনে করে। স্বার্থের সংঘাত বলে একটা ধারণা আছে। একজন করদাতা আর একজন কর আদায়কারীর স্বার্থ পরস্পর বিরোধী। এজন্যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। তাই ডঃ ইউনুসের কাছ থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের আশা করা আর শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দিয়ে তাকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পাবার আশা করা একই কথা। দুবনা, ০১ জুন ২০২৫

অনুভূতি

Image
আন্তোয়ান দে এক্সুপেরি তাঁর ছোট্ট রাজপুত্রকে দিয়েছিলেন - যাদের তুমি বশ করেছ তাদের কাছে তুমি দায়বদ্ধ। বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণ তরুণী মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের ডাকে রাজনীতিতে এসেছে। তিনি এতদিন সবাইকে কমিউনিজমের ওয়াজ শুনিয়েছেন। গতকাল তাঁকে দেখলাম প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে গিয়ে মৌলবাদী ও স্বাধীনতা বিরোধীদের ভীড়ে হারিয়ে যেতে। অথচ বন্দুক হাতে তরুণ মুক্তিযোদ্ধা - সেই ছবি শুধু তাঁকেই নয় মুক্তিযুদ্ধকেও ধারণ করেছে এতকাল। এই যাওয়া পার্টির অনুমোদনে হয়েছিল নাকি ব্যক্তিগত উদ্যোগে - সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। তবে বিগত দিনগুলোয় সরকার ও তার চ্যালা চামুন্ডারা যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের সব অর্জনকে ধুলিস্যাত করেছে তাতে এই যাওয়াটা বিভিন্ন মহলে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পার্টি ভাঙার পর পার্টি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতাদের প্রতি আপনাদের একটাই বয়ান ছিল - সংশোধনবাদী। তবে এটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে তারা পার্টির নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলেননি। যখন দেখেছেন আগের বিশ্বাস নিয়ে পার্টি করতে পারবেন না তখন হয় রাজনীতি থেকে অবসর নিয়েছেন অথবা ভিন্ন নামে রাজনীতি করেছেন। কাউকে ধোঁকা দেননি। এটাই ছিল পার্টির প্রতি তাদের সততার প্রকাশ...

বাইপাস

Image
দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে একটি বিষয় খেয়াল করেছি - বাংলাদেশী যেখানেই থাকুক না কেন, সে আজীবন বাংলাদেশী থেকে যায়, বিশেষ করে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে। ব্যতিক্রম যে নেই তা কিন্তু নয়, তবে সেটা ধর্তব্যের মধ্যে নয়।  আমাদের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়রা শুধু দেশের বাইরেই আন্তর্জাতিক‌। দেশের ভেতরে আবার যে লাউ সেই কঁদু। ক্ষমতালোভী, অর্থলোভী, ধান্দাবাজ। এটা আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য।  ডঃ ইউনুসকে নিয়ে অনেকেই স্বপ্ন দেখে, অনেকেই তাঁকে দেশের ত্রাণকর্তা মনে করে, একজন সহজ, সরল, কর্মঠ ও সৎ লোক মনে করেন যার নিজের কিছু নেবার নেই দেবার জন্য আছে সব - সর্বহারার ঠিক উল্টো রূপ। অবাক লাগে ভেবে যে তিনি জীবনে কখনোই নিজেকে ক্ষমতা বা অর্থের প্রতি নির্লোভ প্রমাণ করতে পারেননি। গ্রামীণ ব্যাংকের প্রধানের পদ আঁকড়ে রাখার, ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে মানুষের অবস্থা পরিবর্তনের কথা থাকলেও হাজার হাজার সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কারণ হওয়া, এমনকি ক্ষমতায় এসে তড়িঘড়ি করে নিজের প্রতিষ্ঠানের শত শত কোটি টাকা ঋণ মওকুফ, নিজের ব্যাংকের জন্য বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করা - এসব আর যাই করুক না করুক তাঁর সততা নিয়ে, তাঁর নির্লোভ চরিত্র নি...

সামঞ্জস্য

Image
কোন আইন কখনোই পারফেক্ট বা নিখুঁত নয়, কেননা সময়ের সাথে নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হয় মানুষ আর সেই সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য নতুন সমাধান খোঁজে। এটা যেমন সমাজে, তেমনি বিজ্ঞানে, চিকিৎসায়, চলনে বলনে জীবনের সর্বক্ষেত্রে সত্য। জীবনকে পারিপার্শ্বিকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হলে এদের অবিরাম পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কোনটা আগে বা কোনটা পরে প্রশ্ন সেখানে নয়, আসল কথা নিজেদের এই পরিবর্তনের জন্য খোলা রাখা এবং সেটা গ্রহণ করা। কোন ভালো আইনও কোন কাজে আসে না যদি সেই আইনের পক্ষপাতদুষ্ট ব্যবহার হয় আর কোন আইন ভালো হতে পারে না যদি না তা সবার জন্য সমান হয়। আজ সংস্কার আগে না নির্বাচন আগে এ নিয়ে অনেক বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। সংস্কার প্রয়োজন এটা যেমন সত্য তেমনি সত্য যে এমনকি বর্তমান ব্যবস্থার নিরপেক্ষ প্রয়োগ দেশকে একটি গ্রহণযোগ্য সংসদ উপহার দিতে পারে। আর জনগণের রায়ে নির্বাচিত সরকার যদি জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কার প্রণয়ন করে তাহলে আর ডিম আগে না মুরগি আগে এই নিয়ে বিতর্ক করে চায়ের টেবিলে ঝড় ওঠাতে হবে না। মস্কোর পথে, ২৫ মে ২০২৫

শেকড়

Image
বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে নিয়ে গুজবের অন্ত নেই। বিভিন্ন দেশে সাংবিধানিক সরকারের পাশাপাশি ছায়া সরকার বা শ্যাডো গভর্ণমেন্ট, ডীপ স্টেট ইত্যাদির নাম শোনা যায়। বাংলাদেশে এদের উপস্থিতি নিয়ে তেমন কিছু শোনা যায় না। তবে অন্যান্য যেকোন সরকারের চেয়ে বর্তমান সরকারের একটি পার্থক্য স্পষ্ট  - সামরিক হোক আর বেসামরিক হোক আগের সরকারগুলো জনগণকে আস্থায় আনার চেষ্টা করত, বর্তমান সরকার বিদেশী শেয়ার হোল্ডারদের বিশ্বাসের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়। আগের সরকারগুলোর প্রায় সবটাই জনসম্মুখে ছিল, তারা জনগণের কাছে নিজেদের পাতে তোলার মত একটি ভাবমূর্তি তৈরি করতে সচেতন ছিল। এই সরকার বা সরকারের সাথে জড়িত অনেকেই কীভাবে তারা জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে, কীভাবে তথ্য ম্যানিপুলেট করেছে, পুলিশ হত্যার মত ফৌজদারী অপরাধ করেছে সেটা বুক ফুলিয়ে জোর গলায় বলে। বর্তমান সরকার আইসবার্গের চূড়া, এর নীচে কী আছে এবং কোথায় আছে সেটা সাধারণ মানুষ তো বটেই এমনকি সরকারের সাথে জড়িত অনেকের দৃষ্টির আড়ালে। যতদিন পর্যন্ত এই শেকড়ের সন্ধান না পাওয়া যায় ততদিন পর্যন্ত জাতি পুরোপুরি মুক্তি পাবে বলে মনে না। দুবনা, ২৪ মে ২০২৫

সংস্কার?

Image
বাংলাদেশে গত প্রায় এক বছর যাবৎ সংস্কার চলছে। এটা মনে হয় ভবিষ্যতে প্রেজেন্ট পারফেক্ট কন্টিনিউয়াস টেন্সের উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করবে শিক্ষার্থীরা অবশ্য যদি ততদিনে শিক্ষার্থী নামক প্রজাতি টিকে থাকে। সারভাইব্যাল অফ দি ফিটেস্ট তত্ত্ব অনুযায়ী ছাত্র প্রজাতি এই মূহুর্তে সবচেয়ে শক্তিশালী হলেও তারা দিন দিন শিক্ষা থেকে দূরে চলে যাচ্ছে। জ্ঞান নয় ক্ষমতা অর্জন হয়ে উঠেছে তাদের জীবনের লক্ষ্য। তাই এদের শিক্ষার্থী না বলে ক্ষমতার কাঙ্গাল বলাই ভালো। তবে এতে ছেলে বুড়ো সবাই এককাট্টা। বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই সংস্কারের চেয়ে কুসংস্কারে বেশি বিশ্বাসী। এবারেও ব্যতিক্রম ঘটবে বলে মনে হয় না। যেসব কালা কানুন সবার আগে বাতিল করার কথা ছিল সেগুলোই আজ বেশি বেশি করে প্রয়োগ করা হচ্ছে। সংবিধান থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার প্রস্তাব করা হচ্ছে তা দেশকে সামগ্রিক ভাবে যতটা না এগিয়ে নিয়ে যাবে পিছিয়ে নেবে তার থেকে শতগুণ বেশি। সংস্কার হচ্ছে সংস্কারের জন্য। দেশের ও জনগণের স্বার্থে নয়, ব্যক্তি বা দলীয় পছন্দ অনুযায়ী বদলে যাচ্ছে ভালো মন্দের সংজ্ঞা। তাই চলমান পরিবর্তনকে সংস্কার না বলে কুসংস্কার বলাই শ্রেয়। ...

চুটকি নয়

Image
বরিস ইয়েলৎসিনের প্রধানমন্ত্রী ভিক্তর চেরনোমীরদিন তাঁর ছোট ছোট বাক্যের জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। এসব বাক্যের একাধিক অর্থ সেই দুঃসময়েও মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। এর দুটো ছিল  চেয়েছিলাম ভালো কিছু করতে কিন্তু ফল পেলাম বরাবরের মতই। জুলাই অভ্যুত্থানের একটা মূল লক্ষ্য ছিল অর্থ পাচার বন্ধ করা। কিন্তু বিগত নয় মাসে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের সংবাদ শুনে মনে হয় আমাদের চাওয়াটা যাই হোক না কেন পাওয়াটা ঠিক বরাবরের মতই। তাঁর আরেক বিখ্যাত উক্তি ছিল  বাঁচব খুব কষ্টে তবে অল্প কয়েক দিন।  যদিও তিনি কষ্ট দ্রুত কাটবে সেটা বোঝাতে চেয়েছিলেন তবে অল্প দিন বাঁচবে এই অর্থে নিয়ে মানুষ আবার মস্করা শুরু করে। দেশে যেভাবে গণপিটুনি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে লোক মারা যাবার খবর দেখা ও শোনা যায় তাতে মনে হয় চেরনোমীরদিনের বাণী রাশিয়ায় সত্য হলেও দেশে সত্য হচ্ছে জনগণের আশঙ্কা বা সেসব বাণী নিয়ে জনতার মস্করা। দুবনা, ১৮ মে ২০২৫

সাবধানতা

Image
কেউ যখন ভালো কথা বলে সেই কথাকে প্রচার করে আমরা শুধু সেই ধারণা নয় যে বলে তার পক্ষেও প্রচার করি। দেশের এক নামকরা লেখক ও সাংবাদিককে সেটাই করতে দেখলাম। এমনকি জীবনে যে কখনোই সত্য কথা বলেনি সেও আদালতে দাঁড়িয়ে বলে "যাহা বলিব সত্য বলিব"। যদিও সে নিজেও জানে তার এই প্রতিজ্ঞা ডাহা মিথ্যা তারপরও আদালত এটাকে সত্য বলেই গণ্য করে। এভাবেই ন্যায় ও অন্যায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দুই জন নিজ নিজ অবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে।  "ভুল হলে শিক্ষা নিয়ে এগুতে চাই" - এটা নিঃসন্দেহে মুক্ত মনের বাণী। তবে এই কথা যারা উচ্চারণ করে তারা সবাই যে মুক্তমনা এটা ভাবা ভুল। এক্ষেত্রে কথা নয়, কাজকে প্রাধান্য দেয়াই শ্রেয়। জুলাই অভ্যুত্থানের নায়কদের কথা ও কাজের অসামঞ্জস্য বৈষম্য বিরোধিতা, সাম্য, ন্যায় বিচার ইত্যাদি ধারণার বিষয়ে তাদের আসল মনোভাব সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তাই শুধু মাত্র কথার উপর নির্ভর করে তাদের নতুন করে বিশ্বাস করলে সেটা জনমনে নতুন হতাশার জন্ম দিতে পারে। দুবনা, ১৭ মে ২০২৫

লেখকের সততা

Image
ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের লেখা পড়ি। তবে চেষ্টা করি সেই সব লোকদের লেখা পড়তে যা পরে কিছু জানা যায়। কখনো কখনো দেশ বিদেশের বিভিন্ন ঘটনা জানার জন্যেও পড়ি। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন লেখা পড়ি যাতে একটা ধারণা হয় পরিস্থিতি সম্পর্কে। কয়েক দিন আগে একটা লেখায় পড়লাম কীভাবে বিগত জুলাই আগস্টের আন্দোলন সেক্যুলার পোশাকে শুরু হয়ে পরে তা ধর্মীয় বয়ান পেয়েছে অথবা সেক্যুলার ছদ্মবেশে এসে সবাইকে নিয়ে আন্দোলন করে পরে আন্দোলনের ফসল হাইজ্যাক করে ইসলামী শিবিরে নিয়ে গেছে। এখানে দ্বিমত প্রকাশের তেমন সুযোগ নেই। তবে সেখানেই শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র জনতার সংখ্যা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে পুতিনের ১০ হাজার ছাত্র হত্যার উল্লেখ করা হয়েছে। এটা ঠিক যে আন্দোলনে ঠিক কত লোক মারা গেছে এবং কাদের হাতে মারা গেছে সেটা নিয়ে দ্বিমত আছে। বিশেষ করে যখন অনেক সমন্বয়ক নিজে থেকেই বলেছে যে যত মারা গেছে তার চেয়ে বেশি বলা হয়েছে জন সমর্থন আদায় করার জন্য। এছাড়া অনেক শহীদ ইতিমধ্যে ফিরেও এসেছে। কিন্তু শেখ হাসিনা একা এত লোক হত্যা করেনি বা অন্যদের তুলনায় সেটা নগণ্য এটা প্রমাণ করতে গিয়ে কি পুতিন বা অন্যদের টেনে আনা এতই দরকার? এটা শুধু সত...

গণতন্ত্র

Image
আওয়ামী লীগ সহ তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন নিষিদ্ধ করা হল। যমুনার সামনে গত কয়েকদিন যে নাটক ঘটল তাতে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে যে সেটা মেটাকুলাসলি ডিজাইন্ড। জনতার চাপের মুখে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই ন্যারেটিভ তৈরি করতে এই নাটক। আওয়ামী লীগ যে বিভিন্ন অপরাধে অপরাধী তাতে সন্দেহ নেই। তবে তাকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করলে দেশে আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকেও নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনা উচিত। বিচারের আওতায় আনা উচিত তাদের যারা আগে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের হয়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে। যারা আজ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ হওয়ায় উল্লাস করছে তাদের আওয়ামী লীগের নিকট অতীত থেকে শিক্ষা নিতে বলব। কারণ এভাবে কোন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করলে তা দেশের রাজনীতিতে দীর্ঘকালীন প্রভাব ফেলবে। যারা ইউরোপ আমেরিকায় বসে দীর্ঘদিন আওয়ামী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তাদের উচিৎ হবে এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। অবশ্য তারা যদি আওয়ামী বিরোধিতা করার জন্য গণতন্ত্রকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তাহলে করার কিছু নেই। কিন্তু তারা যদি সত্যিকার অর্থেই গণতন্ত্রের সৈনিক হয়, স্ব...

যুদ্ধ

Image
অনেক আগে এক পরিচিত লোক বলেছিল - মস্কোর বাংলাদেশীরা লাশ দেশে ফেরৎ পাঠানোর জন্য চাঁদা দেয়, অথচ এরচেয়ে অনেক কম টাকায় হয়তো তাঁকে বাঁচিয়ে তোলা যেত।  ফেলানীদের মৃত্যু হলে সারা দেশ উত্তাল, অথচ আগে এই দরদ দেখালে ফেলানিদের হয়তো সীমান্তেই যেতে হত না, কাঁটাতারের বেড়া পার হবার চেষ্টা করতে হত না।  যদি মানুষের প্রতি এতই দরদ তাহলে সীমান্ত সমস্যা কেন সমাধান করা হয় না? আসলে সমস্যা জিইয়ে রাখাই অনেকের জন্য সমাধান - এতে ভোট ভোট খেলা যায়। মানুষের প্রকৃত ও মৌলিক সমস্যার সমাধান না করে এসব সমস্যা সামনে এনে তাদের ভুলিয়ে রাখা যায়।  বার বার যখন সীমান্তে এসব ঘটনা ঘটে তখন শান্তিপ্রিয় মানুষের নিজ নিজ দেশের সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা উচিৎ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার জন্য। এসব যুদ্ধে সবাই হারে, জিতে শুধু সাগর পারের বনিক। দুবনা, ১০ মে ২০২৫

উপলব্ধি

Image
হঠাৎ করেই বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন উপলব্ধি জাগে মনে। ইদানিং দেশে যা ঘটছে আর যা ঘটার কথা ছিল তার মধ্যে যোজন ফারাক দেখে আজ এরকম এক ভাবনার উদ্রেক হল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে সিরাজের স্বেচ্ছাচারিতা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য ইংরেজদের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয় তার প্রধান সেনাপতি মীর জাফর এই বিশ্বাসে যে মসনদ এরপর তার হবে। ফলাফল - ১৯০ বছরের ইংরেজ গোলামী।  ২০২৪ সালে বিদেশি শক্তির সাথে চুক্তি করে হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিল অনেকেই। আপাত ক্ষমতাসীন হলেও ক্ষমতার চাবিকাঠি বিদেশে।  আগে বিদেশে অর্থপাচার হত, এখন সেখানে ক্ষমতা পাচার হয়। আগে এক মীর জাফর ছিল এখন এরা দলে দলে। তাই যারা ভাবছে ২০২৪ তাদের ১৯৪৭এ ফিরিয়ে নিয়ে গেছে তারা ভুল করছে, তারা আসলে ১৭৫৭ সালের পলাশীর প্রান্তরে ফিরে গেছে আরও কয়েক শ' বছর বিদেশি শাসনের ঘানি টানার জন্য। প্রশ্ন হল সব মীর জাফর কি বুঝছে যে সে মীর জাফর? দুবনা, ১০ মে ২০২৫

আইভী

Image
নারায়নগঞ্জের মেয়র আইভীকে গ্রেফতার করা হল। আইভী পারিবারিক ভাবে আওয়ামী লীগের সাথে জড়িত হলেও বিভিন্ন বিষয়ে স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করত। ওর আরেকটি পরিচয় - ও সোভিয়েত গ্র্যাজুয়েট। সেই সূত্রে আমাদের পরিচিতি ও কাছের মানুষ। বিগত বছরগুলোতে ও এমনকি আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের বিরোধিতা করতে দ্বিধা করেনি। দেশে যখন ছোট বড় সব ধরণের রাজনীতিবিদদের সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেখানে ও ছিল সৎ, স্বচ্ছ, জনতার কাছের মানুষ। জয় বাংলা স্লোগান দেবার ফলে ওকে গ্রেফতার করে সরকার নিজের দুর্বলতা নতুন করে প্রকাশ করল। আর ওর বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে সরকার প্রমাণ করল যে স্বৈরাচার, কর্তৃত্ববাদ এসব দিকে সে শেখ হাসিনার সরকারকে ছাড়িয়ে গেছে। যেখানে স্বঘোষিত খুনিরা সরকারের আশেপাশে মুক্ত বিহঙ্গের মত ঘুরছে সেখানে মিথ্যা মামলায় আইভীর গ্রেফতার বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রকেই হাস্যকর করে তুলেছে। দুবনা, ০৯ মে ২০২৫