Posts

Showing posts from 2025

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

Image
আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। ১৯৭১ সালে নয় মাস ধরে পাকবাহিনী ও তাদের দোসররা দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে আর ১৪ ডিসেম্বর ছিল তার চূড়ান্ত পরিণতি। পাক শাসকরা জানত বাঙালি জাতির বিদ্রোহের মূলে রয়েছে তার শিক্ষিত জনগণ। মনে রাখতে হবে যে ভাষা আন্দোলন শুরুই হয়েছিল মূলতঃ ছাত্রদের হাত ধরে। তাই শিক্ষিত বাঙালির প্রতি তাদের ক্রোধ ছিল স্বাভাবিক। সাথে ছিল সংখ্যালঘু হিন্দু, আওয়ামী লীগ আর কমিউনিস্ট।‌ তবে ডিসেম্বরে যখন পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় তখন মরণ কামড় হিসেবে তারা নতুন উদ্যমে বুদ্ধিজীবীদের উপর শেষ আঘাত হানে যাতে বাঙালি জাতি সহজে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর আসলে ছিল জামায়াত শিবিরের প্রতিশোধ নেবার প্রথম পদক্ষেপ। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ইতিহাস বাঙালি ভুলে গেলেও পরাজয়ের ইতিহাস ওরা ভুলেনি। ওরা বিজয়ের উৎসব শুরু করেছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি মুছে দেবার মধ্য দিয়ে, যদি এখনই বাঙালি এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ায় তাহলে এর শেষ হবে বাঙালি জাতির ধ্বংসের মধ্যে দিয়ে। ওরা দৈহিক ভাবে আমাদের ধ্বংস করবে না, করবে সাংস্কৃতিক ভাবে। ভেবে দেখুন তো য...

জন্ম মৃত্যু

Image
গত কয়েকদিন থেকেই ফেসবুকে বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু নিয়ে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি কি সত্যিই মারা গেছেন? তিনি কি বেঁচে আছেন? নাকি নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য এক নোংরা খেলায় নেমেছে ইউনূস গং। সাধারণ মানুষ তো বটেই দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মৃত্যুও কি গ্রামীণ ব্যাংকের লকারে তুলে রাখা হয়েছে? অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে যদি বেগম জিয়া নিজে জনসমক্ষে এসে জীবিত থাকার প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হন তবে যে দিনই সরকারি ভাবে বলা হোক না কেন তাঁর মৃত্যু দিবস নিয়ে সন্দেহ বা জল্পনা থেকে যাবে। অনেক আগে ফেসবুকেই তার জন্মদিন নিয়েও বিভিন্ন জল্পনা কল্পনা হয়েছে। ১৫ আগস্ট তিনি জন্মদিন পালন করলেও অনেকের ধারণা সেটা শেখ মুজিবের মৃত্যু দিবসকে কলঙ্কিত করার জন্যই। পাসপোর্ট ও সার্টিফিকেট অনুযায়ী তাঁর জন্মদিন একাধিক। এভাবেই আধুনিক বাংলাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়া সত্ত্বেও বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন ও মৃত্যু দিবস নিয়ে বিতর্ক থেকে যেতে পারে যদি সরকার রাজনৈতিক লাভ লোকসানের হিসেব করে জন্ম মৃত্যুর দায়দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়। দুবনা, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

ভালুক

Image
খবরে দেখলাম আমাদের পাশের শহর কিমরিতে এক মেয়ে বনে বেড়াতে গিয়ে ভালুকের দেখা পেয়েছে। ওরা দু' জন একে অন্যের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিল। সেই সুযোগে মেয়েটি ভালুকের তিনটে ছবিও নিয়েছে। ওর দুর্ভাগ্য যে ভালুকের সাথে সেলফি তুলতে পারেনি।  আজকাল প্রায়ই বনে বাদারে ভালুকের দেখা পাওয়া যায় বলে খবর পাই। মানে দুবনার আশেপাশেও। আগে মুলত শেয়াল, বন্য শুকর, হরিণ জাতীয় প্রাণীর দেখা এমনকি শহরেও মিলত, এখন ভালুকের আনাগোনা। সে দিন এ নিয়ে গল্প উঠলে বললাম, - আমি হাল্কা পাতলা মানুষ, মাংস একেবারেই নেই। তাই ভালুক হাতের কাছে পেয়েও অখাদ্য বলে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে কোন ভালো খাদ্যের সন্ধানে।  - কোন কোন ভালুক কিন্তু হাড্ডি চিবুতে পছন্দ করে ঠিক যেমন কিছু কিছু মানুষ শুধু চিপস খেতে ভালোবাসে। তাই নিজের চিকনত্ব নিয়ে খুব বেশি খুশি হবার দরকার নেই।  - হুম, ঝামেলা। আসলে ক্ষুধার্ত ভালুকের কাছে পূর্ণিমার চাঁদও ঝলসানো রুটি আর হাড্ডিসার মানুষও সুস্বাদু খাবার। শান্তি নাই কোথাও। চিকন হও, মোটা হও ভালুকের থাবা থেকে মুক্তি নাই। দুবনা, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
মানুষ বিভিন্ন রকমের হয়। কেউ একান্তই নিজের জন্য বেঁচে থাকে। জীবনযাপনের জন্য কাজ কর্ম করে সমাজের সেবা করলেও সেটা সে করে প্রচ্ছন্ন ভাবে, নিজের উদ্যোগে নয়। আবার একদল মানুষ সচেতন ভাবেই সমাজ সেবা করে শুধুমাত্র নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার মধ্য দিয়ে এবং যারা সমাজ উন্নয়নে কাজ করছে তাদের সাধ্যমত সহযোগিতা করে। সেই অর্থে রাজনৈতিক দল যার কর্মকান্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ সমাজ সেবা, সমাজ সংস্কার তারা শুধু দলের কর্মীদের নয়, দলের সমর্থকদের কাছেও দায়বদ্ধ। দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আছে। দেশে বিদেশে তাদের সমর্থক আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেই সমর্থন কোন নেতার প্রতি হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেটা আদর্শিক। আর এই আদর্শের কারণেই অনেকেই বাইরে থেকেও বিভিন্ন ভাবে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। সিপিবির মত দলের যারা সমর্থক তাদের কাছে যে বিশেষ গুরুত্ব পায় বাহাত্তরের সংবিধানের প্রতি দলের নেতৃত্বের মনোভাব এবং দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য। সেখানে প্রশ্ন দেখা দিলে প্রবাসী সমর্থকরা ভাবতে বাধ্য হয় এমতাবস্থায় সিপিবির প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত থাকা উচিৎ কি উচিৎ নয়। মস্কোর পথে, ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ...

ভাবনা

Image
গতকাল ঘুম ভাঙতেই লেনিনগ্রাদের পার্থের মেসেজ পেলাম। দেশে ভূমিকম্প হয়েছে। লেনিনগ্রাদ ৩৫ বছর আগে সাঙ্কত পিতেরবুর্গ হলেও সেই সময়ের বন্ধুরা লেনিনগ্রাদের রয়ে গেছে। যেকোনো দুর্ঘটনার পজিটিভ দিক হল এরপর পুরানো পরিচিতদের খোঁজখবর নেয়া হয়। এই সুযোগে দেশে অনেকের সাথেই যোগাযোগ হল। ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দেখলাম। এর একটা গ্যাসলাইন নিয়ে। মানে ভূমিকম্পের কারণে গ্যাসের পাইপ থেকে বিপদ আসতে পারে। এটা আসলে আমাদের সার্বিক শহর পরিকল্পনার দীনতা থেকে।  আমাদের দেশে আধুনিক তথ্য, প্রযুক্তি ও অন্যান্য সবকিছুর ব্যবহার খুবই অদ্ভুত। আমরা এসবের শুধু ব্যবহারিক দিকটার দিকে নজর দেই কিন্তু নিজেরা চিন্তা ভাবনায় আধুনিক হই না। ফলে আমাদের বাড়িঘর থেকে শুরু করে সবকিছু আধুনিক হলেও সবই দাঁড়িয়ে আছে বারুদের উপর। সবাই ভালো থাকার জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করে বাড়িঘর তৈরি করে অথচ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় যে স্পেসটুকু দরকার সেটা রাখে না। ফলে জরুরি অবস্থায় সব অর্থহীন হয়ে যায়।  আধুনিক প্রযুক্তি আমরা ব্যবহার করি পশ্চাৎপদ আদর্শ প্রচারে, সমাজে উত্তেজনা আর অস্থিরতা বাড়াতে। অথচ নিজেরাও যদি চিন্তা ভাবনা, মন মানসিকতায় আধ...

বকের প্রশ্ন

Image
অনেকের ধারণা মুহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের নেলসন ম্যান্ডেলা হতে পারতেন। আমার এটা কখনোই মনে হয়নি। একমাত্র শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ছাড়া তাদের আর কিছুই কমন নেই। ম্যান্ডেলার জেল জীবনের বিপরীতে ইউনূসের ছিল পশ্চিমা ও পরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। ম্যান্ডেলা ক্ষমাশীল - ইউনূস প্রতিহিংসার জ্বলন্ত শিখা। ম্যান্ডেলা নির্লোভ - ইউনূস শুধু লোভী নয়, প্রচন্ড লোভী। ম্যান্ডেলা ক্ষমতার প্রতি নির্লিপ্ত - ইউনূস ক্ষমতা পাগল। ম্যান্ডেলার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছিল না, ইউনূসের স্বজনপ্রীতি একসময় লোককথার রূপ নেবে। ম্যান্ডেলা দেশের অর্থ অপব্যয় করতেন না, সদলবলে ইউনূসের প্রতিটি সফর দেশের অর্থনীতির গলায় একেকটি ফাঁসির রজ্জু। বর্ণবাদী শাসনে বিভক্ত দেশকে ম্যান্ডেলা চেষ্টা করেছেন এক করতে, পক্ষান্তরে ইউনূস দেশকে যত বেশি সম্ভব বিভক্ত করেছেন বিভিন্ন ইস্যুতে। ম্যান্ডেলা ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, ইউনূসের লয়ালিটি তার পশ্চিমা প্রভূদের প্রতি। তাই ইউনূসের ম্যান্ডেলা হবার সম্ভাবনা ছিল না। ইউনূস ম্যান্ডেলার এন্টিপোড। ম্যান্ডেলা দেবতা হলে ইউনূস দানব। আমার ধারণা আজ যদি বক যুধিষ্ঠিরকে প্রশ্ন করত - আশ্চর্য কী? যুধিষ...

লিগেসি

Image
সোভিয়েত ইউনিয়নে ইউক্রেন ছিল সবচেয়ে উন্নত প্রজাতন্ত্র গুলোর একটি যা বিদ্যুতায়নে ছিল অন্য যেকোনো রিপাবলিকের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর। লেনিন বলেছিলেন কমিউনিজম হল সোভিয়েত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও বিদ্যুতায়ন। ইউক্রেন নিজে ধারাবাহিকভাবে সোভিয়েত উত্তরাধিকার ধ্বংস করেছে। কমিউনিস্ট ও সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্তি পাওয়া ছিল তাদের মূল মন্ত্র। সোভিয়েত ব্যবস্থা, লেনিনের স্ট্যাচু এসব ভাঙলেও সোভিয়েত আমলে সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও শ্রমে তৈরি করা কারখানা ও স্থাপনা ভাঙেনি। অস্থাবর জিনিস জলের দামে বিদেশীদের কাছে বিক্রি করেছে। স্থাবর সম্পত্তি নিজেরাই ব্যবহার করেছে। হয়তো ভাঙার সামর্থ্য ছিল না বলে। এখন রাশিয়া তাদের বেসামরিক ও আবাসিক এলাকা আক্রমণের পাল্টা জবাবে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করে ইউক্রেনকে সোভিয়েত লিগেসি থেকে মুক্ত করছে। উল্লেখ্য যে ইউক্রেনের সমস্ত শিল্প, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রাস্তাঘাট, শহর বন্দর গড়ে উঠেছিল রুশ ও সোভিয়েত জনগণের অর্থ ও কায়িক পরিশ্রমে। সোভিয়েত ইউনিয়ন এসব জিনিস প্রচন্ড শক্ত ভিত্তির উপর গড়ে তুলেছিল বলেই রাশিয়াকে আজ এত শক্তি ক্ষয় করতে হচ্ছে এসব ধ্বংস করতে। ইউক্রেন বরাবরই চেয...

প্রশ্ন

Image
পদার্থবিদ্যায় আমরা প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করে তার বিবর্তনের নিয়ম সূত্র বদ্ধ করি এবং সেই সূত্র ব্যবহার করে পরবর্তী সময়ে প্রকৃতির গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যতবাণী করি। তবে তত্ত্ব ও পর্যবেক্ষণের এই যুগলবন্দীতে শেষ হাসি হাসে পর্যবেক্ষণ। তাই বলা হয় তত্ত্ব প্রমাণ করা যায় না, তাকে ভুল প্রমাণ করা যায়। তাই যদি কোন তত্ত্ব নতুন পর্যবেক্ষণের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় তাহলে পর্যবেক্ষণের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন কর হয়। সামাজিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে সেটা কম দেখা যায়। হয় ডগমা না হয় সুবিধাবাদ। ধর্ম ডগমার উপর ভর করে চলে। এমনকি নিজেদের বৈজ্ঞানিক ধারার অনুসারী বলে দাবি করলেও বামপন্থীরা প্রায়ই মার্ক্সবাদকে ধর্মের মতই ডগমায় পরিণত করে। নতুন বাস্তবতার সাথে নিজেদের বদলাতে গিয়ে অনেকেই সুবিধাবাদী হয়। সেই অর্থে গোল্ডেন রেশিও প্রায় অনুপস্থিত বর্তমান সামাজিক বিজ্ঞানে। আগে দার্শনিকরা সমাজকে ব্যাখ্যা করত, এখন সময় এসেছে সমাজ পরিবর্তনের - এই রণকৌশলই কি মার্ক্সবাদীদের মার্ক্সবাদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী করে তোলে? এ বিষয়ে দেশের মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিকদের মতামত জানতে ইচ্ছে করছে। মস্কোর পথে, ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ...

ন্যায় অন্যায়

Image
বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের কান্ডকারখানা দেখে মনে হয় তাদের ধারণা মানুষ সবচেয়ে সুস্থ থাকে জেলে। কারণ তাদের কাজকর্ম অনেকটা রুগীকে ওষুধ না দিয়ে তার চারিদিকে প্রাচীর তুলে দেবার মত।   এবার জার্মানির বিভিন্ন শহরে ক্রিসমাস মেলা বন্ধ কারণ সেটা অনেক শরণার্থীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে আর সবচেয়ে বড় কথা মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পয়সা নেই। যদিও যাদের কারণে মেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হয় তাদের খাওয়ানো পড়ানোর পয়সা বা রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের হাত দিয়ে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার পয়সার অভাব হয়না। আচ্ছা একদল মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দিতে গিয়ে আরেক দল মানুষের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুন্ন করা কি কোন এক ধর্মকে পোষণ করা নয়? তাছাড়া এসব মেলা এখন যতটা না ধর্মীয় তারচেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। আজ যাদের অনুভুতিকে সম্মান করে ক্রিস্টমাস মেলা বন্ধ করা হচ্ছে কাল যদি তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে বার্লিন বিয়ারফেস্ট বা গেই প্যারেড বন্ধ করার দাবি জানায় তখন কি এরা সেটা মানবে? ঐতিহ্য মানেই সেকেলে নয়, নতুন সবকিছু আধুনিক নয়। আমার ধারণা যারা সত্যিকার অর্থেই ইউরোপকে ভালবেসে সেখানে যায় তারা ...

অক্টোবর বিপ্লব

Image
০৭ নভেম্বর এলেই মনে পড়ে শীতের সকালে রেড স্কয়ারে মিছিলে যাবার কথা। এদিন সামরিক মহড়া থাকত না। শ্রমিক, কৃষক, ছাত্র, শিক্ষক আর সাধারণ মানুষ মিছিল করে চলে যেত। সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ লেনিনের সমাধিসৌধে দাঁড়িয়ে হাত নাড়াতেন জনতার উদ্দেশ্যে।  সেই সময়ের অনেক কিছু সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে। সেটা অবশ্য আদর্শের ভিত্তি নাড়ায়নি বরং পরবর্তী ঘটনাবলী একটি সংশোধিত ও গণতান্ত্রিক সোভিয়েত ব্যবস্থার প্রতি আস্থা তৈরি করেছে যেখানে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি থাকবে গণতান্ত্রিক ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতা।  সবাইকে অক্টোবর বিপ্লবের শুভেচ্ছা! দুবনা, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

ভবিষ্যত?

Image
মামদানি নিউ ইয়র্কের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও অনেকেই তাঁর ধর্মীয় পরিচয় সামনে আনার চেষ্টা করছে তবে আমার ধারণা তিনি জিতেছেন তার রাজনীতির কারণে। সেই রাজনীতি যা সাধারণ মানুষের স্বার্থে লড়াই করার কথা বলে। এটা ঠিক একদল লোক তার মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করবে নিজেরা ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হবার জন্য আবার আরেক দল লোক মুসলিম পরিচয় সামনে এনে তাঁর বিরোধিতা করবে। হয়তো দুই দলের কাছেই এর পেছনে যুক্তি আছে। তবে দ্বিতীয় দলের উচিত হবে তাঁকে মুসলিম হিসেবে না দেখে একজন ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে গড়ে উথতে সাহায্য করা। কেননা একমাত্র এভাবেই তারা তাঁকে মৌলবাদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে। আমি অস্বীকার করব না যে তিনি শুধু মুসলিম পরিচয়ের জন্যেও অনেকের ভোট পেয়েছেন (এবং অনেকের ভোট পাননি)। এখন তিনি নির্বাচিত মেয়র - দলমত নির্বিশেষে সবার। এতদিন তাঁর দায়িত্ব ছিল আপনাদের ভোট পাবার, এ জন্যে তিনি অন্যান্য পরিচয়ের সাথে মুসলিম পরিচয় ব্যবহার করলে করতেও পারেন। এখন আপনাদের দায়িত্ব তাঁকে নিজের করে নেবার যাতে তিনি সত্যিকার অর্থেই দলমত ধর্ম নির্বিশেষে সবার হতে পারেন। বারাক ওবামা যখন প্রেসিডে...

উপলব্ধি

Image
গত ২৩ অক্টোবর লিখেছিলাম "যদি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বিশাল কোন প্রাণীর সাথে ও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বাম জোটের মুক্তিযোদ্ধাদের বাঘের সাথে তুলনা করি তাহলে দেখব বিজয়ের পর থেকেই তারা ট্রফি দখলের লড়াইয়ে ব্যস্ত আর এই সুযোগে জামায়াত শিবির ও অন্যান্য স্বাধীনতা বিরোধী হায়েনার দল শিকার নিয়ে অনেক আগেই ভেগে পড়েছে - প্রথমে দখল করেছে অর্থনীতি, এরপর শিক্ষাঙ্গন ও সমাজ বিশেষ করে মহিলাদের এবং সবশেষে রাজনীতির মাঠ।"  এক সপ্তাহের বেশি ফেসবুকে প্রবেশাধিকার না থাকায় তখন পোস্ট করতে পারিনি। আজ ভোরে আবার এখানে আসতে পেরে অনেক নতুন খবর পেলাম। যেমন ২৪ এর পটপরিবর্তনের স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে জুলাই সনদ নিয়ে দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। এতে কিছু জিনিস নতুন করে উপলব্ধি করলাম।  বাংলাদেশে কোন দলই দেশকে জননী জন্মভূমি মনে করে না আর তাই সন্তানের মত দেশের মঙ্গলের জন্য নিজেকে বা নিজেদের উৎসর্গ করে না।  লড়াই করেই হোক আর ষড়যন্ত্র বা ছলচাতুরি করেই হোক ক্ষমতায় একবার যেতে পারলে দেশটাকে শত্রুর হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়া ট্রফি বলে মনে করে আর দেশকে গণিমতের মালের মত ব্যবহার করে। গণি...

নব্য সর্বহারা

Image
ইউরোপ আজ উন্মাদের মত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে। কি হতে পারে সে চিন্তা না করেই রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই মুহূর্তে সে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের হাত দিয়ে তবে আগামী বছর তিন চারের মধ্যে যে নিজেরাও যুদ্ধের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হবে সেটা আর গোপন করছে না। আমরা যারা ইউরোপকে সভ্যতার কেন্দ্র বলে মনে করি তারা ভুলে যাই যে ইউরোপ আসলে সারা বিশ্বের জন্য বারবার বিপদ ডেকে এনেছে। বিগত প্রায় ৫০০ বছর এশিয়া, আফ্রিকা আর ল্যাটিন আমেরিকা ছিল তাদের কলোনি। তারা শুধু সেসব দেশের সম্পদ নিয়েই সুখী হয়নি, প্রায় সমস্ত উপনিবেশে চালিয়েছে নির্মম গণ হত্যা, ধ্বংস করেছে এসব দেশের সভ্যতা, সংস্কৃতি। এছাড়াও বারবার বিশ্বকে ধ্বংসের মুখে দাড় করিয়েছে। ১৮১২-১৮১৫ সালে নেপোলিয়ন, ১৯১৪-১৯১৯ সালের প্রথম মহাযুদ্ধ, ১৯৩৯-১৯৪৫ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এ সব ইউরোপের সৃষ্টি। বর্তমানে আবার সে পথেই চলছে। এর কারণ হতে পারে রাশিয়ার প্রতি ক্ষোভ। কারণ রাশিয়াই তাদের উপনিবেশ থেকে পাত্তারি গুটাতে বাধ্য করেছে। আর লোভ। হ্যাঁ, রাশিয়ার অঢেল সম্পদের প্রতি লোভ। লোভের কাছে ভয় হার মানে। তাই এমনকি আসন্ন পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় তাদের নেই। আচ্ছ...

শংকা

Image
বিভিন্ন কলকারখানায় আগুন লাগাকে সাবোটাজ বলার চেষ্টা করা হচ্ছে। হতেই পারে। প্রশ্ন হল কারা করছে? বিগত পঞ্চাশ বছরের বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা কি ঘটেছে? গাড়ি ভাঙচুর, রাস্তা বন্ধ এসব হয়েছে প্রকাশ্যে মূলতঃ হরতাল পালনের সময়। অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটে ২০২৪ এ অনেকটা হিটলারের রাইখস্টাগে আগুন লাগানোর কায়দায়। এর আগে বিরোধী দল বা ছাত্র জনতার মিছিল মিটিং এ পুলিশ গুলি চালালেও চব্বিশেই প্রথম সরকার বিরোধীরাও গুলি চালিয়েছে বলে অনেকেই দাবি করেছে। থানায় পুলিশ হত্যার ঘটনা তো প্রকাশ্যেই ঘটেছে। এমতাবস্থায় নির্বাচন বাতিল ও বিনা নির্বাচনে দীর্ঘ দিন ক্ষমতায় থাকার কৌশল হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেই যে এই অগ্নিকাণ্ডের সাথে জড়িত নয় তা কে বলবে। কারণ এর ফলে বেনিফিট পাচ্ছে কিছু দেশী বিদেশী অধ্যাপক ও তাদের গুণমুগ্ধ কিছু ছাত্র জনতা। তাই নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে পাল্লা দিয়ে যদি অগ্নিকাণ্ডের প্রকোপ বাড়ে তাহলে অবাক হবার কিছু থাকবে না। মস্কো, ২০ অক্টোবর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
সিঙ্গাপুর অনেক ভাবেই হওয়া যায় - অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটিয়ে, জনসংখ্যা কমিয়ে, দেশের আয়তন কমিয়ে, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে - উপায়ের তো শেষ নেই।  ১৯৯০ এর দশকে সিঙ্গাপুর গিয়ে যে স্লোগান আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে তা হল - One nation, one people, one Singapore. এটা চাইনিজ, মালয় আর ভারতীয় (তামিল) এই তিন জনগোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির পরে। আর আমরা? হিন্দু - মুসলমান, আওয়ামী লীগ - বিএনপি, পাকিস্তান প্রেমী - ভারতপ্রেমী কত ভাগে যে দেশটাকে ভাগ করি - শুধু বাংলাদেশ পন্থী হতে চাই না। অর্থনীতিতে গত এক বছরে যে ডিগবাজি খেয়েছি তাতে সিঙ্গাপুর কেন পাকিস্তানের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারব কিনা সেটাই প্রশ্ন।‌ বন্দর, করিডোর ইত্যাদি যেভাবে বিদেশীদের দখলে যাচ্ছে তাতে একসময় আয়তনে সিঙ্গাপুর মুখী হলে অবাক হব কি? দেশের জনগণের এক বিশাল অংশ নিজেদের বাংলাদেশী ভাবতে দ্বিধা করে। একদল একাত্তরের বাংলাদেশকে আরেক দল জুলাই সনদের বাংলাদেশকে নিজের দেশ মনে করে না। সেই অর্থে জনসংখ্যার দিক দিয়ে সিঙ্গাপুর হলে হতেও পারি। সিঙ্গাপুর স্বনির্ভর, নিজের অতীত ঐতিহ্যে বিশ্বাসী। আমরা পরনির্ভরশীল। আমাদের নেতৃত্বের এক পা সব সময় ব...

মিলিয়নিয়ার

Image
আজ আবার আরেকজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হাসপাতালে এলাম। এটা প্রসপেক্ট মিরায়। মেট্রো থেকে বেরুলেই একটি গির্জা, রাস্তার ওপারে অলিম্পিক স্টেডিয়াম আর কেন্দ্রীয় মসজিদ।‌ পথে গির্জার ওখানে দাঁড়ানো এক লোক বলল মিলিয়ন দাও (দাই মিলিয়ন)।‌ উপাসনালয়ের পাশে দাঁড়িয়ে যারা মানুষের কাছে সাহায্য চায় তারা মনে হয় নাস্তিক। না হলে ঈশ্বরের চোখের সামনে তাঁকে উপেক্ষা করে মানুষের সাহায্য নেবে কেন? যাহোক আমি আমার স্বভাবসুলভ মুচকি হেসে এগিয়ে গেলাম। পেছনে ও বলল - মিলিয়নের জন্য এত মন খারাপ? (তিবিয়ে মিলিয়ন ঝালকা শ্তোলি?) আমি মনে মনে ভাবি যা নেই তা নিয়ে ভেবে কি লাভ। তবে খুশি হলাম এই ভেবে কেউ আমাকে মিলিয়নিয়ার ভাবছে।‌ বাঘ কাগজের হলেও বাঘ। দুবনার পথে, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

শান্তি

Image
জাতীয় স্টেডিয়াম সরিয়ে নেবার দাবি উঠেছে দেশে। কারণ সেখানে গানবাজনা ইত্যাদি অনৈসলামিক কাজকর্ম হয় যা বায়তুল মোকাররমের বিশুদ্ধতা নষ্ট করে। সেখানে সরকারি অফিস আদালত হতে পারে বলে মতামত জানিয়েছে বক্তা। কিন্তু সেই অফিস আদালতে যে ঘুষ দুর্নীতি হবে সেটা কতটুকু ইসলামিক সে সম্পর্কে বক্তা নীরব।  পৃথিবীতে দুটো মানুষ এক রকম নয়। প্রতিটি মানুষ ইউনিক, কোন না কোন পয়েন্টে একজন অন্যজনের চেয়ে ভিন্ন হবেই। তাই ইচ্ছা অনিচ্ছায় আমাদের সহাবস্থান করতে হয় আর শান্তিকামী মানুষ চেষ্টা করে সেই সহাবস্থান যথাসম্ভব শান্তিপূর্ণ করতে। সেই বিবেচনায় জাতীয় স্টেডিয়াম সরানোর ডাক আসলে অশান্তির পূর্বাভাস। আজ যারা বিভিন্ন অজুহাতে এই আহ্বান সমর্থন করছে কাল তাদের অনেকের অনেক অধিকার খর্ব করার ডাক আসবে।  চব্বিশের একটি স্লোগান ছিল দেশটা কারোও বাপের না (এই কারো কি শুধুই শেখ হাসিনা নাকি তারেক জিয়াও হাসিনার কলিগ সেটা অবশ্য উহ্য থেকে গেছে বারবার), তবে ক্ষমতায় যারাই যায় তাদের হাবভাব দেখে মনে হয় তাদের বেশির ভাগ জমিদার নন্দন/নন্দিনী আর দেশটা তাদের বাপের জমিদারি। ক্ষমতায় গেলে সবার মনে হয় পুনর্জন্ম ঘটে আর সবাই গণতন্ত্...

সংবাদ না হেডলাইন?

Image
ট্রাম্পকে নোবেল না দেয়ায় পুরস্কারের সম্মান কমে গেছে - পুতিন।  এই শিরোনামে ইত্তেফাকে খবর বেরিয়েছে। এসব খবর এরা কোথায় পায়? দুশানবে শহরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ট্রাম্পের পুরস্কার না পাবার ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে চান না। তবে বিভিন্ন দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ট্রাম্প কাজ করছেন। মধ্যপ্রাচ্য তার উদাহরণ। তিনি আরও বলেন এর আগে অনেককেই নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে যা পুরস্কারের সম্মান হানির কারণ হয়েছে। সরাসরি কারোও নাম উল্লেখ না করলেও সেটা যে বারাক ওবামাকে উদ্দেশ্য করে বলা তাতে সন্দেহ নেই। দুবনা, ১১ অক্টোবর ২০২৫

অবিশ্বাসীর বিশ্বাস

Image
মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। নিলে আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মিয়ানমারের সু চির অবদান প্রত্যক্ষ করার পরে কেউ কি নিজ দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য আরেক নোবেল শান্তি পদক প্রাপ্ত ডঃ ইউনুসকে এই দায়িত্বে নিয়োগ করত? ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে ইতিহাস শিক্ষা দেয়।  অচেনা অজানা বনে মানুষ সবসময় সেই পথেই যায় যে পথে তার আগে কেউ গেছে যদি সে নাও জানে তার আগের পথিকের ভাগ্যে কী ঘটেছিল। কারণ সে নিজেকে সবসময় সৌভাগ্যবান মনে করে আর ভাবে বিপদ তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে। বিশ্বাস অবিশ্বাসের এই লুকোচুরি খেলায় হেরে যায় দুই পক্ষই। জেতে তারা যারা দুই পক্ষকেই ধোঁকা দিতে পারে মানে বিশ্বাসঘাতকরা। মস্কো, ০৭ অক্টোবর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
মালদোভায় নির্বাচন হল। রোমানিয়ায় যেমন মিথ্যা অভিযোগে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করে ইউরোপ তার পছন্দের প্রার্থীকে জিতিয়ে এনেছিল এখানেও শুধু একের পর এক জনপ্রিয় প্রার্থীদের জেলে ঢুকিয়ে ও পার্টিগুলোকে মিথ্যা অজুহাতে নির্বাচন থেকে বিরত রেখেই নয় যে সব জায়গায় বিরোধীদের জনপ্রিয়তা বেশি সেখানে যান্ত্রিক ত্রুটি ইত্যাদি দেখিয়েও যখন সান্দোর দলের বিজয় নিশ্চিত নয় তখন ভোট ফলাফল বাতিল করার পাঁয়তারা চলছে। গণতন্ত্রকে আর কতভাবে ধর্ষণ করলে মানুষের হুঁশ হবে যে ইউরোপ এখন একনায়কতন্ত্রের উর্বর ভূমি। জাতীয় সরকার নয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আমলারা এখন বিভিন্ন অজুহাতে এখানকার গণতন্ত্রকে লাঞ্ছিত করছে, ইউরোপকে সাজাচ্ছে যুদ্ধের সজ্জায়? মস্কো, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

প্রশ্ন

Image
গতকাল সিপিবির কংগ্রেস শেষ হল। সেই আশির দশকের শুরুতে যখন রাজনীতির সাথে জড়িত হই তখন থেকেই সিপিবির কংগ্রেস নিয়ে আগ্রহী হয়ে উঠি। তবে সবসময়ই যতটা না কমিটি তারচেয়ে বেশি করে আগ্রহের কেন্দ্রে থাকত পার্টির রণনীতি রণকৌশল। এই প্রথমবারের মত সামনে চলে আসে অন্য ভয় - পার্টি ভাঙবে না তো? পার্টি ঐক্যবদ্ধ থাকবে তো? ফেসবুকে ও বিভিন্ন গ্রূপ পোস্টে দেখলাম নতুন কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, চলছে ভোট গণনা। এরপর একসময় বিজয়ী প্রার্থীদের নাম এল। কোথাও কোথাও কোন গ্রূপের কতজন নির্বাচিত হয়েছে সেটাও জানলাম। দেখলাম কারোও কারোও বিজয় মিছিলের খবর। মনে পড়ল ছাত্রজীবনের কথা। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সম্মেলন। নির্বাচন শেষে সবাই মিলে প্রসেশন করে শহরের রাস্তায় ঘুরি। কোন বিজয় মিছিল নয়। কেউ বিজয়ী নয়, কেউ পরাজিত নয়। একমাত্র বিজয়ী ছাত্র ইউনিয়ন। তাই গতকালের বিজয় মিছিল মানে একদল লোক পরাজিত হয়েছে। সিপিবির কিছু সদস্য যখন পরাজিত হয় তখন সিপিবি কি জয়ী হয়? নাক, কান, আঙ্গুল দেহের তুলনায় যত নগণ্যই হোক না কেন কোন অঙ্গ অসুস্থ হলে শরীর কি সুস্থ থাকে? দুবনা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কারণ

Image
দেশে দেখলাম স্কুলের পাঠ্যসূচি থেকে নাচ-গান তুলে দেবার দাবি জানানো হচ্ছে। কারণ? এসব ভারতীয় সংস্কৃতির অংশ। মানুষের সংস্কৃতি তার জন্মস্থানের ভৌগলিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করেই তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ধ্বনি, ভাষা, পোশাক পরিচ্ছদ। নাম যাই হোক না কেন এই উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ এক অদৃশ্য সূতায় গাথা। আচ্ছা যদি আরবের সংস্কৃতিকে ইসলামিক সংস্কৃতি (যা আসলে নয়, কারণ আরবের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে ইসলাম প্রতিষ্ঠার অনেক অনেক আগে) ধরেই নেই তাহলে তো সেখানে কখনোই ভাত মাছের সংস্কৃতি ছিল না, ছিল না নদী কেন্দ্রিক জীবন, ছিল না চাষাবাদ। আমাদের অঞ্চলের এসব কিছু ভারতীয় (উপমহাদেশের) জীবনযাত্রার অংশ। তাহলে কি আমরা ভাষা (সংস্কৃত বা পালি বা প্রাকৃত যেটাই হোক সবই ভারতীয় বা ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা, সেমিটিক নয়), খাদ্যাভ্যাস, পোশাক পরিচ্ছদ সবই ত্যাগ করব ভারতীয় বলে? পারব কি? আর যদি নাই পারি তাহলে তাহলে নিজেদের হাস্যকর করার কারণ কি? অজ্ঞতা? দুবনার পথে, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সিপিবি কংগ্রেস

Image
সিপিবির কংগ্রেসে মঞ্জুরুল আহসান খান মঞ্জু ভাইকে দেখলাম। মস্কোয় পড়াশুনা করার সুবাদে সেই সময়ের সিপিবির অনেক কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে পরিচয় হয়, অনেকের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাই এখনও সেই সময়ের নেতাদের রাজনৈতিক গতিবিধি সম্পর্কে খবর রাখার চেষ্টা করি। মঞ্জু ভাইয়ের বিগত কয়েক বছরের অনেক কাজ খুব ভালো ভাবে নিতে পারিনি। একজন ব্যক্তি হিসেবে তাঁর স্বাধীনতা আছে বিভিন্ন বিষয়ে নিজস্ব মত পোষণ করার। তবে যেহেতু তিনি ছিলেন অনেকের কাছেই পথপ্রদর্শক স্বরূপ, যেহেতু তাঁকে দেখে অনেকেই সিপিবির রাজনীতিতে যোগ দিয়েছে, তাই কিছু কিছু প্রশ্নে তাঁর ইউ-টার্ন অনেককে ব্যথিত করেছে। অনেক দিন পরে তাঁকে দেখে মনে হল সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসার মত শারীরিক অবস্থা ওনার নেই। যতদূর জানি তিনি পার্টি থেকে বহিষ্কৃত এবং সেটা সঙ্গত কারণেই। তবে তাঁর বয়স, অতীতে পার্টি ও জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর অবদান এসব বিবেচনা করে পার্টি যদি এই কংগ্রেসে তাঁর সদস্য পদ পুনর্বহাল করে সেটা শুধু পার্টির জন্যই নয়, এর আগে বিভিন্ন কারণে পার্টি থেকে বহিষ্কৃত বা স্বেচ্ছায় বেরিয়ে যাওয়া অনেকের জন্যই হবে সবুজ সংকেত‌। এটা পার্টির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল ক...

বনেদি

Image
অনেক দিন আগে কালেভদ্রে বেতিলার জমিদার বাড়ির পানু (?) বাবু আসতেন আমাদের বাড়িতে। পাজামা পাঞ্জাবি পরে ঘোড়ায় চেপে তিনি আসতেন। আগের সেই জৌলুষ ছিল না, তবে বনেদি ভাব ছিল।  পোল্যান্ডে রাশিয়ার ড্রোন আক্রমণ নিয়ে ইউরোপ যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালতে চাইছে। মজার ব্যাপার হল একটি ড্রোনেও বারুদ ছিল না, সেগুলো যে রাশিয়ান তার কোন চিহ্ন ছিল না দুটো কিরিলিক অক্ষর ছাড়া তাও আবার অনেকটা ঋ বা লি (৯) এর মত অক্ষর যা একা একা ব্যবহৃত হয় না। তাছাড়া ড্রোনগুলো পোলিশ সীমান্তে ঢোকার মুখে বেলারুশ তাদের সতর্ক করে দিয়েছে। আর দুই পয়সার ড্রোন ঠেকাতে আকাশে উঠেছে কয়েক দেশের যুদ্ধ বিমান - যাকে বলে মশা মারতে কামান দাগা। এরা কি বুঝে না, এমনকি আমেরিকা যদি তাদের ডাকে সাড়া দেয়ও যুদ্ধ হবে ইউরোপের মাটিতে আর তাতে করে ধ্বংস হবে ইউরোপ। এই যে তারা ইউক্রেনকে সামনে রেখে যুদ্ধ করছে আর ধ্বংস হচ্ছে ইউক্রেন, মরছে সে দেশের মানুষ - ইউরোপ কি সেটাই চায়? চায় লাখ লাখ ইউরোপিয়ানদের মৃত্যু? ইউক্রেনের ক্ষেত্রে রাশিয়া সিভিলিয়ানদের উপর আক্রমণ করে না, কিন্তু ইউরোপিয়ানদের উপর করবে না সেই গ্যারান্টি নেই। আর সেই যুদ্ধ পারমাণবিক যুদ্ধে রূপান্তরিত হবার সম্ভাবনা ...

ফ্রী ল্যান্সার

Image
স্মার্টফোন বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে তরুণ প্রজন্ম এমনকি শিশুদের মনোজগতে বিরাট প্রভাব বিস্তার করেছে এ নিয়ে প্রচুর লেখালেখি হয়। কিন্তু যেটা লেখা হয় না তা হল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কীভাবে রাজনীতিকে ধ্বংস করছে। দেশে দেশে রঙিন বিপ্লবে সামাজিক মাধ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমনকি শাহবাগ আন্দোলনের শুরু এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই। অথবা পরবর্তী কালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, কোটা আন্দোলন আর সবশেষে ২০২৪ এর জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থান। একই চিত্র আমরা দেখতে পাই শ্রীলঙ্কা আর নেপালে। সমস্যা হচ্ছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক দলগুলো এসব আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকে না, ফলে প্রথম দিকে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন রাখছে। পরবর্তীতে যোগ দিলেও আন্দোলনের নেতৃত্ব তাদের হাতে থাকছে না। আর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্ব অনুপস্থিত থাকে তখন সরকার ফেলা গেলেও পছন্দের নতুন সরকার গড়া যাচ্ছে না, ফলে কারো কারো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য অর্জিত হলেও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না, জাতির বৃহত্তর রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। দেশে দেশে সৃষ্টি হচ্ছে অরাজকতা। আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পাল্লায় রাজনৈতিক দলগুলো ক্র...

ডিজিটালাইজেশন

Image
সোভিয়েত আমলে শুধু রেডিও টেলিভিশন নয়, প্রতিটি ইস্ত্রি পর্যন্ত সুযোগ পেলেই লেনিনের নাম নিত। এখন সেই জায়গা দখল করেছে ডিজিটালাইজেশন। এর যে পজিটিভ দিক নেই সেটা বলব না, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই জীবন সহজ হয়ে গেছে। ডকুমেন্টের জন্য কোথাও যেতে হয় না, অনলাইনে দরখাস্ত করে ঘরে বসেই পাওয়া যায়। তবে সব কিছুর মত কোন কিছু মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে হিতে বিপরীত হয়। এর আগে ক্লাসে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির হিসাব রাখত ক্লাস ক্যাপ্টেন। গত বছর থেকে এর ডিজিটালাইজেশন হল। ছাত্ররা ক্লাসে এসে কিউআর কোড ব্যবহার করে নিজেদের হাজিরা প্রমাণ করত। এ নিয়ে আমার কখনই কোন মাথাব্যথা ছিল না। যাদের ইচ্ছা ক্লাসে আসত না হলে না। তবে এই সুযোগটা অনেকেই ব্যবহার করে। কেউ এসে কোডের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পাঠিয়ে দিত। অন্যরা ঘরে বসেই উপস্থিত থাকত। এটা হয়তো কর্তৃপক্ষ টের পেয়েছে। তাই নতুন নিয়ম। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার অনলাইন ক্লাস হয়েছে।আমি উপস্থিত ছিলাম না। গতকাল গিয়ে শুনলাম এখন শুধু ছাত্ররা নয় শিক্ষকদেরও ঐ কোডের ছবি নিতে হবে ক্লাসের শুরুতে যা কাজ শুরুর হিসাব রাখবে। আবার ক্লাস শেষে কোডের ছবি তুলে শেষের ঘন্টা বাজাতে হবে। এটা...

অধঃপতন

Image
ফেসবুকে কিছু কিছু লেখায় দেখলাম নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রী নিয়ে কোর্টে আইনি লড়াই হচ্ছে। ডিগ্রি নিয়ে এই ছেলেমি নিঃসন্দেহে হাস্যকর। আচ্ছা ডিগ্রি থাকার সাথে প্রধানমন্ত্রী হওয়া না হওয়ার সম্পর্ক আছে কি? মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকা কি আবশ্যক? যদি সাংবিধানিক বাধা না থাকে তবে এটা নিয়ে জল ঘোলা করা আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অনেকটা বিগত টার্মে ট্রাম্পের জীবন দুর্বিষহ করার জন্য রাশাগেটের মত। মন্ত্রীর যোগ্যতা তার সাংগঠনিক শক্তির উপর নির্ভর করে। যদি সেটা ডিগ্রির উপর নির্ভর করত বাংলাদেশ আজ বিশ্ব রাজনীতিতে ভিন্ন অবস্থানে থাকত। রোগীর কাছে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার বিদেশী ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে বেশি উপযুক্ত। নরেন্দ্র মোদী যদি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, দেশ চালাতে না পারেন - তাহলে এই ডিগ্রি থাকা না থাকা সমান কথা। প্রায় সব রাজনীতিবিদরা যখন সব বিষয়ে উঠতে বসতে মিথ্যা বলে তখন শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে হৈচৈ আসলে সস্তা সার্কাস। এটা রাজনীতির মাঠে মকাবেলা করতে না পেরে ডিগ্রি নিয়ে খোঁটা দেওয়া। এতে নিজেদের দুর্বলতাই প্রকাশ পায়। রাজনীতির অধঃপতন অব্যাহত আছে সারা বিশ্বেই...

স্বাদহীন স্বাধীনতা

Image
বিশ্বখ্যাত আমেরিকান ফিল্ম ডাইরেক্টর উডি অ্যালেন মস্কো ফিল্ম উইক উপলক্ষ্যে ফিওদর বন্দরচুককে দেয়া এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে বলেছেন যদি অফার পান তাহলে মস্কো বা পিটারের উপর মুভি করবেন। তিনি আরো বলেন যে সংস্কৃতি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা উচিৎ। ইউক্রেন থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে আর তাঁকে ইউক্রেনের এক সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঠিক যেমনটি একসময় জামায়াত শিবির মুক্তমনা লেখকদের তালিকাভুক্ত করেছিল। আচ্ছা ইউরোপ, আমেরিকা এসব স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ। সেখানে মানুষ বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ইত্যাদি যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি উপভোগ করে। এসব দেশ এ নিয়ে গর্ব করে। তাই কেউ বা কোন দেশ যখন এসব দেশের মানুষের এই স্বাধীনতার উপর আঘাত হানে তখন তাদের মৌণতা সত্যিই অবাক করে। জার্মানি সেদেশের সংবিধানে ঘোষিত জনকল্যাণ রাষ্ট্র নীতি বাদ দিতে চাইছে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছা থেকে যদিও তার পেছনে জনসমর্থন নেই। একসময় ইউক্রেন ইউরোপ হতে চেয়েছিল, এখন ইউরোপ দ্বিগুণ বেগে ইউক্রেনে পরিণত হচ্ছে।‌ এর শেষ কোথায়? দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০২৫

নতজানু দেশ

Image
ছোট হোক আর বড় হোক রাষ্ট্র রাষ্ট্রই। কিছু কিছু বিচারে গ্রামের রাস্তার মোড়ের মুদি দোকানের মালিক গুগলের সিওর চেয়ে স্বাধীন। স্বাধীনতা মানেই দায়িত্ব। সেটা কখনোই সহজ নয়। তবে আত্মসম্মান বোধ সম্পন্ন যেকোনো রাষ্ট্র শত বাধা বিপত্তি এড়িয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করে। আচ্ছা একাত্তরে বিনা উস্কানিতে, বিনা ঘোষণায় বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের উপর আক্রমণের দায়িত্ব কি পাকিস্তান এড়াতে পারবে? আজ আমরা গতবছরের ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলি চালিয়ে হাজার খানেক মানুষের হত্যার বিচার করতে চাই, শুধু সরকার নয়, সরকারী দল, দলের যেকোনো কর্মীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাই। সেই বিচার যে করতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আবার এই আমরাই ত্রিশ লাখ মানুষ হত্যা ও তিন লাখ মা বোনকে ধর্ষণকারী পাকসেনা ও তার দেশীয় দোসরদের কাছে তাদের অপকর্মের হিস্যা চাইতে আজ দ্বিধা করি। উল্টা তারা আমাদের যখন মন পরিষ্কার করার উপদেশ দেয় বিনা প্রতিবাদে তা মেনে নেই। আর কত নতজানু হবে আমাদের সরকার। আর কত দাসত্ব বরণ করবে এরা? আমাদের শিক্ষা কি এতটাই মেরুদণ্ডহীন যে একজন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক এর প্রতিবাদ করতে সাহস পান না? বাংলাদেশের মানুষ ...

প্রশ্ন আর প্রশ্ন

Image
খোলা চিঠি ও পরবর্তীতে মেঘনায় মৃতদেহ উদ্ধারের পরও অনেকেই সাংবাদিক ও কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকারের আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।‌ তাহলে কি এটা হত্যা? হয়তো কেউ তাকে জীবিত অবস্থায় বা তার লাশ মেঘনার কালো জলে ফেলে দেয়নি কিন্তু সরকার এমন এক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যে তিনি বাধ্য হয়েছেন আত্মহনন করতে। আর বিভু দার পারিবারিক পদবী যেহেতু সরকার তাই সরকারের হাতে সরকারের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই প্রচার করা যায়। বিভু দার সুইসাইড নোট থেকে আরও জানতে পারি এই মৃত্যুর শুরু আজ নয়, এর শুরু দীর্ঘদিন আগে যখন থেকে দল দেশের ঊর্ধ্বে উঠে এসেছে, দলীয় স্বার্থ দেশপ্রেমকে হার মানিয়েছে। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি যে দল থেকে ব্যক্তি খুব বেশি দূরে নয়। বুঝতে পারিনি যে দেশপ্রেমের ভিত্তি যদি হয় আদর্শ তবে দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থ আদর্শ বর্জিত। তাই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে এসব লোকজন ব্যাপক হারে দলবদল করে, করছে। এই যে এক সর্বগ্রাসী আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে কয়েক যুগ ধরে সেখানে দেশপ্রেম আসলে উল্টো স্রোত। এই পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের সব সরকারই দায়ী। আমরা সত্যবাদী, সত্যসন্ধানী, দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য একটি নিরাপদ দেশ, নি...

২১ আগস্টের লিগেসি

Image
আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল মুসলিম লীগ থেকে, জাসদের আওয়ামী লীগ থেকে। যেহেতু মূল দলের রাজনীতির সাথে বিদ্রোহ করেই জন্ম তাই তাদের পারস্পরিক শত্রুতা ছিল শুরু থেকেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের পক্ষে থাকতেই পারত। তবে যখনই সে গণহত্যার সামিল হয়েছে তখনই সে গণশত্রু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই বাংলাদেশে জামায়াত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া অনৈতিক ছিল না। বিএনপির জন্ম জিয়ার হাতে যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে অনেকের বিশ্বাস। ফলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সম্পর্ক শুরু থেকেই সাপ বেজির। অন্যদিকে এরশাদ জিয়া হত্যার ফসল তোলায় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি একে অন্যকে কখনও গ্রহণ করেনি। কিন্তু এসব সমীকরণের মধ্যেও রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে ছিল, এক সাথে আন্দোলন করেছে, নির্বাচন করেছে, হেরেছে, জিতেছে, একে অন্যের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করেছে। তবে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার পরে বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নেয়। তখন থেকে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে জাতশত্রুতে পরিণত হয়। দেশের উন্নয়নের চেয়েও বিপক্ষ ধ্বংস ...

গণতন্ত্র

Image
গত পরশু রুশ গোয়েন্দা সংস্থা ক্রাস্নাদার এলাকায় একটি গাড়ি আটক করে। ইউক্রেন থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে জর্জিয়া হয়ে গাড়িটি রাশিয়ায় ঢোকে। গাড়ির ভেতরে ৩০০ কেজি বিস্ফোরক লুকানো ছিল। এর গন্তব্য ছিল ক্রিমিয়া। পথে ক্রিমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। বিভিন্ন হাত ঘুরে গাড়িটি ক্রিমিয়ার দিকে এগুচ্ছিল। শেষ যে চালক সে ইউক্রেনের সমর্থক হলেও জানত না যে তাকে আত্মঘাতী হিসেবে ব্যবহার করা হবে। গত বছর এভাবেই এই সেতুর উপর আক্রমণ করা হয়। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা গাড়িটি রাশিয়ায় ঢোকার পর থেকেই একে অনুসরণ করছিল ও এরসাথে জড়িত চক্র আবিস্কারের উদ্দেশ্যে দেশের ভেতরে ঢুকতে দেয়। গতকাল ধরা পড়েছে ছয় জনের এক দল। তিন জন সম্মুখ সমরে নিহত হয়, কমান্ডার সহ তিন জন আত্মসমর্পণ করে। এরা নরোওয়ে ও বাল্টিকের বিভিন্ন দেশে কানাডা ও ইংল্যান্ডের গোয়েন্দাদের দ্বারা প্রশিক্ষণ পেয়েছে রাশিয়ার ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর।  এক দিক ট্রাম্প যখন যুদ্ধ থামাতে চাইছে, ইউক্রেনের মানুষ শান্তির পক্ষে বলছে এসব শান্তির পায়রারা উঠেপড়ে লেগেছে শান্তির জীবন অশান্তিতে ভরিয়ে দিতে। কি চায় এরা? এই এক নতুন ফেনোমেনন ...

অধরা শান্তি

Image
ইরান এক সময় সালমান রুশদির মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল । এটা লেখকের স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ বিধায় নিন্দিত। কিন্তু মাথার মূল্য ঘোষণা করা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে একাজ করে। আমেরিকা বেন লাদেন সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদীদের মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল, এখন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাডুরোর মাথার মূল্য ঘোষণা করেছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। যদি অন্যান্য দেশ এসব করে আমরা এর বিরদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠি, কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব করলে আমরা ধরেই নেই সাহেবরা যখন বলেছেন তাহলে ঠিকই আছে। আসলে এভাবেই যুগে যুগে দেশে দেশে ব্রাহ্মণ্যবাদ গড়ে উঠেছে। ব্রাহ্মণ্যবাদ কী? এটা কারো বা কোন গোষ্ঠীর কাজকর্মকে অন্ধভাবে ন্যায্যতা দান করা। এই দেখুন ইউরোপ ও আমেরিকা বলতে গেলে রাশিয়াকে বাধ্য করল ইউক্রেন আক্রমণ করতে। কেন? তাহলে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক অজুহাত পাওয়া যায় আর সেটা দিয়ে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করে দেশটাকে নিজেদের বলয়ে আনা যায় যেমন হয়েছিল নব্বুইয়ের দশকে। এখন যখন যুদ্ধে ইউক্রেন পরাজয়ের দ্বারে, লাখ দশেক সেনা ভুপাতিত, ইউরোপের অর্থনীতির লালবাতি জ্বলার অবস্থা, যখন যুদ্ধ বন্ধ আশু কর্তব্য, তখনও তারা যুদ্ধ চালিয়ে...

অতিশিক্ষিত

Image
সত্য মিথ্যা বলতে পারব না, তবে শুনেছি পশ্চিমে নাকি অতিশিক্ষিত মানে ওভার কোয়ালিফাইড কাউকে সাধারণত কেউ চাকরিতে নিতে চায় না। রাশিয়ায় অবশ্য ওভার কোয়ালিফাইড কেউ কোন চাকরিতে ঢুকতে চাইলে সেখানে তার সেই কোয়ালিফিকেশন শুনেছি হিসেবে আনা হয় না। মানে যদি কেউ ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে সুইপার হতে চায় তাহলে সেখানে তার ডক্টরেট ডিগ্রি হিসেবে আনা হয় না, কারণ সে তো ঘর মোছার উপরে ডক্টোরেট ডিগ্রি পায়নি। বিশেষ করে নিয়োগকারী যদি বৌ বা বর হয়। খবরে দেখলাম শেখ হাসিনার ৫১ লাখের শেখ রাসেল স্টিডিয়াম এখন তৈরি হবে ১৪ কোটিতে। শুনে মনে কিছু উটকো প্রশ্ন জন্ম নিল। আচ্ছা স্টেডিয়ামের নাম কি শেখ রাসেল থাকবে নাকি কোন জুলাই বিপ্লবীর নামে তা হবে? যেকোনো দেশেই সিও যত দক্ষ তার বেতন তত বেশি। সন্দেহ নেই ডঃ ইউনুস আমাদের দেশের সবচেয়ে উচ্চ মূল্যের সিও। তাই দেশ যত গরীবই হক না কেন, এমন মানুষের বেতন বা এমন মানুষের ভরণপোষণের পেছনে খরচ যে বেশি হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর যাদের বেতন যত বেশি তারা তত বেশি অর্থ লামসাম করবে তাতেই বা অবাক হবার কি আছে? দেশ অতিশিক্ষিত ভৃত্য বা অবিডিয়েন্ট সারভ্যান্ট চাইবে আর বেতন দিতে কার্পণ্য করবে সেটা তো হয় ন...

ভয়

Image
শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে অনেকটা দেবতার পর্যায়ে চলে গেছেন যদিও দেবতা নন। আওয়ামী শাসনামলে তাঁর সমর্থকেরা তাঁকে দেবতার আসনে বসায়। সেটা অবশ্য দলীয় সমর্থকেরা এই মাপের প্রায় সব নেতাকে নিয়েই করে। কিন্তু শেখ মুজিবের ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিপক্ষ নিজেদের অজান্তেই সেটা করে চলছে। এটা অনেকটা মূর্তি ভাঙার মত। যারা মূর্তি পূজায় বিশ্বাস করে না, যারা প্রতিমা বা মূর্তিকে নেহায়েত পুতুল মনে করে তাদের জন্য স্বাভাবিক ছিল মূর্তিকে গুরুত্ব না দেয়া, মূর্তির প্রতি নির্লিপ্ত হওয়া। কিন্তু তারা মূর্তি ভাঙে। কেন? ভয় পায় যদি মূর্তি সত্যি সত্যি জাগ্রত হয়। একই ভাবে শেখ মুজিবের মূর্তি, তাঁর বাড়ি এসবের প্রতি নির্লিপ্ততা তাঁকে জনগণের চোখের আড়ালে নিয়ে যেত। কিন্তু যতই তাঁকে অপমান করার চেষ্টা করা হয় তিনি ততই মানুষের আলোচনায় ফিরে আসেন, তত বেশি করে মানুষের মন দখল করেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জীবিত শেখ মুজিবের উপর জেল জুলুম করে তাঁকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আজ মুজিব যখন ধরাছোঁয়ার বাইরে, মরেও যিনি অমর তাঁকে দাবিয়ে রাখতে চাইছে অর্বাচীন নপুংশক কিছু অমানুষ। মস্কো, ১৭ আগস্ট ২০২৫

আলাস্কা সামিট

Image
আলাস্কা সামিট নিয়ে বিভিন্ন জায়গার খবর দেখে বুঝলাম ট্রাম্প ও পুতিনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলেই বেশিরভাগ মানুষের ধারণা। এসব বলছে পশ্চিমা মাধ্যম। মনে প্রশ্ন জাগে এটা সত্য নাকি মনের ইচ্ছা কলমে প্রকাশ করা। কারণ এসব মাধ্যম ইউক্রেন ও ইউরোপের অনুপস্থিতিতে কোন চুক্তি হোক সেটা চায়নি।  আমার আরও মনে হয়েছে একদল মানুষ ধারনা করেছে আলোচনা মানেই আত্মসমর্পণ যেটা কিছুদিন আগে ফন ডের লায়েন করেছে ইউরোপের হয়ে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে একপক্ষ দুর্বল হলে সেটা হয় মাইর আর দুই পক্ষ সমান হলে হয় মারামারি। সেখানে সহজে সমঝোতা আসে না, অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রেস কনফারেন্সে পুতিন ও ট্রাম্পের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে এটা সাত দিনের প্রায় বিনা প্রস্তুতিতে আয়োজিত কোন সামিট নয়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার ফসল। ইউক্রেন নিমিত্ত মাত্র আর সেটা এদের সার্বিক যোগাযোগ থেকে দৃষ্টি এড়ানোর জন্য।  ইউক্রেন প্রশ্নে সমঝোতা হয়নি। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ পূর্ববর্তী ন্যাটোর কাছে তাদের নিরাপত্তার দাবিতে অটল সেটা নতুন করে ব্যক্ত করেছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা বাইপাস করে ইউরোপ ও ইউক্রেন নিরাপদ নয় এটা তারা বুঝিয়...

রিংকু

Image
হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রশান্তর মেসেজ থেকে রিংকুর মৃত্যু সংবাদ জানলাম। গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ছাড়াও রিংকুর আরেকটি পরিচয় ও রাশেদের ভাই। এছাড়া ও দীর্ঘ দিন আমার আরেক পরিচিতা উড়িষ্যার জুলির সাথে একই কোম্পানিতে কাজ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন তো আছেই। তাই আমার সাথে রিংকুর পরিচয় বহুমুখী যদিও দেখা বা কথা হত কালেভদ্রে। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ বছর পূর্তি উৎসবে দেশ থেকে অনেকেই যোগ দেয়। সেখানে আমাদের এক গেট টুগেদারে রিংকুর সাথে দেখা। তখন ও জানায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা। এরপর দেখা হয় ২৬ এপ্রিল মস্কো সফররত সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহুল হোসেন প্রিন্সের সাথে এক আলোচনা সভায়। আমি রিংকুকে বলতে ভুলে গেছিলাম। রাত এগারোটার দিকে সানু ফোন করে জিজ্ঞেস করে রিংকুকে বলেছি কিনা। সাথে সাথে ওকে ফোন করি। পাইনি। ২৬ তারিখ সকালে ও ফোন করলে বিকেলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাই। ওখানেই আমাদের শেষ দেখা। গত ১৯ তারিখে বাংলাদেশের রাশান গ্র্যাজুয়েটদের পিকনিকে রাশেদের সাথে দেখা। রিংকুর কথা জিজ্ঞেস করলে জানাল ও হাসপাতালে। আজকাল ক্যান্সার আর আগের মত দূরারোগ্য ব্য...

বোধোদয়?

Image
গতকাল ভিডিওতে একটি নতুন স্লোগান শুনলাম  "তুমিও জানো আমিও জানি  জামায়াত শিবির পাকিস্তানী।" ২০১৩ সালে শাহবাগের "তুই রাজাকার" এর পরে এটা মনে হয় বাংলাদেশের পক্ষের অন্যতম প্রধান স্লোগান। স্লোগান দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আমাদের এক সময়ের প্রাণপ্রিয় সংগঠন। এক সময়ের বলছি এ কারণে যে গত এক বছরে ছাত্র ইউনিয়ন তো বটেই সিপিবি সহ বিভিন্ন বাম দলের ভূমিকা অনেকের মনেই এই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে "সখী তুমি কার?" এই স্লোগান শুধুই সাময়িক আবেগ নাকি স্মৃতিভ্রষ্ট বামদের একাত্তরের স্মৃতি ফিরে পাওয়া এটা সময় বলবে। তবে সংবিধান সংস্কার প্রশ্নে তাদের শেষ পদক্ষেপ, জামায়াত শিবির বিরোধী স্লোগান - এসব দেখে মনে হয় অন্ধ আওয়ামী বিরোধী টনিকের নেশা দেরিতে হলেও তাদের ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে। বেটার লেট দ্যান নেভার।   দুবনা, ০৬ আগস্ট ২০২৫

ট্যারিফের তারিফ

Image
ট্রাম্পের ট্যারিফ রাজনীতির তারিফ করতেই হয়। সেই ডিভাইড এন্ড রুল - কারোও উপর বেশি করে শুল্ক আরোপ, কারোও উপর কম। সবাই রিসিভিং এন্ডে। তারপরেও সবার চেষ্টা ক্ষতি কীভাবে কমানো যায়। লাভ নিয়ে কেউ ভাবছে না। অথচ এর সাথে জড়িত বিশ্বের সব দেশ। সবাই আমেরিকার প্রতিপক্ষ। অথচ সবাই মিলে যে ঐক্যবদ্ধভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার কোন লক্ষণ নেই। ধরা যাক সব দেশ এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য এক সাথে কোথাও বসল। এমনকি তারা যদি কোন সিদ্ধান্ত নাও নেয় এই বসাটাই হবে গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল। অথবা বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলার ব্যবহার না করা, সাময়িক ভাবে সমস্ত ব্যবসা বাণিজ্য, লেনদেন বন্ধ করা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনাও আমেরিকাকে বাধ্য করত নতুন ভাবে ভাবতে, পরস্পর নির্ভরশীল এই বিশ্বে একা থাকা যায় না। এমনকি বাংলাদেশের কোন গ্রামের দরিদ্র মেয়েটি যে পোশাক শিল্পে কাজ করে সেও বিশ্ব অর্থনীতির একটি অংশ। আসলে বিভিন্ন দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীদের নপুংশকতা ট্রাম্প বা বড় বড় কোম্পানিকে বিশ্বের ভাগ্য নিয়ে খেলার সুযোগ করে দেয়। অথচ সম্মিলিত প্রতিরোধ এখন বিশ্বের অর্থনীতির গতিপথ আমূল বদলে দিতে পারত। দুবনা, ০২ আগস্ট ২০২৫

হুজুগ

Image
১৯৯৪ সালে যখন দুবনা আসি ধীরে ধীরে অনেক মানুষের সাথে পরিচয় হয়। এদের একজন ছিলেন আফানাসিয়েভ। আমার মত উনিও শুক্রবার মস্কো ফিরতেন। তাই প্রায় দুই বছর আমাদের অনেকটা পথ একসাথে চলা। বেশ হাসিখুশি ও রসিক। একদিন উনি আমাকে পেস্তভের সাথে আলাপ করিয়ে দিলেন। - এ সেই পেস্তভ যে কিনা তার ছাত্রীর সাথে প্রেম করেছিল। পেস্তভ খুব ভালো মানুষ। ভালো বিশেষজ্ঞ। এটা শুনে উনি লজ্জায় লাল হয়ে গেলে আফানাসিয়েভ বললেন - ভুল হয়ে গেছে। এ সেই পেস্তভ যে তার ছাত্রীর সাথে প্রেম করেনি। আসলে এখন যারা গণহারে মেটা বা ফেসবুককে নিজ তথ্য ব্যবহারের অধিকার দিচ্ছে বা দিচ্ছে না তারা আসলে মেটার প্রচার চালাচ্ছে। এখানে যেকোনো লেখা যখন ওনলি মি নয়, তা তৃতীয় পক্ষের, তা সে বন্ধু হোক আর পাবলিক হোক, জন্য উন্মুক্ত তা ব্যবহার করার অনুমতি ফেসবুক অটোমেটিক্যালি পেয়ে গেছে। আর ফেসবুকে একাউন্ট খোলার সময় চুক্তিতে স্বাক্ষর করে সবাই নিজের অধিকার সীমিত করেছি। হুজুগে কান না দিয়ে আগের মত ফেসবুকিং করে যান। তবে এটাও হতে পারে যে আমার মত এখানে কেউ সর্বহারা নয়, তাই হারানোর অনেক কিছু থাকতেই পারে। আমার হারানোর কিছু নেই, ফেসবুক যে নিজের কথা অন্যদের ...

কথোপকথন

Image
আমাদের দেশের সমস্যা সমাধানের কি কোন পথই নেই? পথ নেই তা বলব না, সব কিছুরই সম্ভাবনা থাকে - বেশি আর কম। আমাদের সেই সম্ভাবনাটা কি? নির্বাচন! নির্বাচন বর্তমান সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবচেয়ে যৌক্তিক ও প্রায় একমাত্র সমাধান, যদিও নির্বাচন দেবার সম্ভাবনা খুবই কম। কিন্তু সংস্কার না করে নির্বাচনে কি কোন লাভ হবে? আমাদের সমস্যা কিন্তু নির্বাচনের জন্য হয়নি, হয়েছে নির্বাচন না হবার জন্য। তার মানে বর্তমানের নির্বাচনী বিধির আওতায় নির্বাচন হলেও সমস্যা নেই? আমার মনে হয় উপদেষ্টা শব্দটির মধ্যেই যত সমস্যা। উপদেষ্টার ঠিক ততটা দায়বদ্ধতা নেই যতটা আছে এমনকি ভারপ্রাপ্ত সরকার প্রধান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা ঐ জাতীয় কিছুর মধ্যে। বলা হয় সবার আগে ছিল শব্দ। তাই কি নামে কাউকে ডাকা হচ্ছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। দেশকে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে টেনে তুলতে হলে দরকার দায়বদ্ধতা সম্পন্ন পদ আর সেটা উপদেষ্টা নয়। উপদেশ নিঃসন্দেহে ভালো জিনিস, কিন্তু ইতিহাস বলে বাঙালি ও বাংলাদেশী মধ্যবিত্ত সাধারণত অন্যের ক্ষতি করার জন্য উপদেশ দেয়, অন্যের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার জন্য উপদেশ ফেরি করে বেড়ায়। নির্বাচিত সরকারই এদেশে জবাবদিহ...

লাভ ভার্সেস love

Image
লাভটাই যদি জীবনের অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হয় তবে সে জীবনে আর যাই থাকুক অন্যের জন্য দরদ বা ভালোবাসা থাকে না। আজকাল রাজনীতিতে টাকার খেলা চলে, অনেকেই রাজনীতি ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে, তবে এরাও রাজনীতিটাই প্রথমে রাখে, পরে ব্যবসা। রাজনীতি এদের জীবনে প্রথম প্রেম। কিন্তু আমাদের প্রধান উপদেষ্টা মনে হয় রাজনীতি ব্যবহার করছেন ব্যবসায়িক টুল হিসেবে, উপার্জনের একটি উপায় হিসেবে। শিক্ষক হিসেবে শুরু করলেও পরবর্তীতে ওনার সব কাজ প্রমাণ করে যে উনি জন্মগত ভাবে ব্যাংকার যার মূল উদ্দেশ্য লাভ করা। তাই ক্ষমতায় এসে প্রথমেই নিজেকে করমুক্ত বা সত্যিকার অর্থে দায়মুক্ত করেছেন। কারণ কাছে তার দায়? দেশের ও দেশের মানুষের কাছে। কিন্তু তিনি ও তারা আক্ষরিক অর্থেই আজ দায়মুক্ত। তার সরকারের বন্যার সময়ে ত্রাণ তহবিলে জমানো অর্থ উপযুক্ত খাতে ব্যয় করেনি বলে অভিযোগ আছে। এখন তিনি দেশবাসীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন বিমান ধ্বংসের ফলে অগ্নিদগ্ধ মানুষের জন্য আর্থিক সাহায্যের। সাধারণ মানুষ ইতিমধ্যেই রক্ত দিয়ে সাধ্যমত নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে। বছরব্যাপী অরাজকতা ও মব সংস্কৃতির কারণে মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এই মানুষ...

মনস্তত্ত্ব

Image
পাশের বাড়ির বাচ্চাকে কাঁদতে দেখে একটা লজেন্স হাতে ধরিয়ে দিলে হাজারটা কথা শুনতে হবে যদি না প্রতিবেশী কেউকেটা কেউ হয়। একই ঘটনা ঘটবে কাউকে কিছু না ভেবেই সাহায্য করলে। মানে একজনের ছোটখাটো কোন সমস্যা হল, কেউ সাতপাঁচ না ভেবে সাহায্য করল। আর যাবে কোথায়? এটাকে বলা হবে অন্যের ব্যাপারে নাক গলানো। যাদের সাহায্য করা হল তাদের প্রেস্টিজ হ্যাম্পার। অবশ্য সাহায্যকারী যদি যদু মধু না হয়ে এলাকার কোন ধনাঢ্য ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতা হয় তাহলে অন্য কথা। এটা ফলাও করে প্রচার করা হবে সমাজে নিজেদের অবস্থান দেখাতে। অবশ্য হতেই পারে যে সাধারণ মানুষটি কোন দূরাভিসন্ধি ছাড়া একটু সাহায্য করেছিল আর কেউকেটা লোকজন ভাবছিল তার ভোট অথবা ভিটা বাগিয়ে নেবার কথা। এটা সবক্ষেত্রেই। তাই বিশ্বনন্দিত শান্তির ফেরিওয়ালা বা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক যখন সাহায্যের নামে দেশের খোলনলচে বদলে দেয় সেটা আমরা সহজেই হজম করি। মেইড ইন ইউএসএ বলে কথা! দুবনা, ২১ জুলাই ২০২৫

রাব পিকনিক ২০২৫

Image
গতকাল ১৯ জুলাই ২০২৫ দীর্ঘ বিরতির পরে রাশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়েটদের সংগঠন রাবের উদ্যোগে খ্লেবনিকোভা রিসোর্টে এক পিকনিকের আয়োজন করা হয়। শতাধিক লোকের উপস্থিতিতে মুখরিত হয়ে ওঠে মস্কো নদীর তীর। ১৯৭৪ থেকে শুরু করে সদ্যজাত ভিপুস্কনিকদের অনেকেই সপরিবারে অংশগ্রহণ করে এই বন প্লাস নদী ভোজনে। একাধিক পরিবারের তিন প্রজন্মের (বাংলাদেশী গ্র্যাজুয়েট, তার সন্তান ও নাতি নাতনি) উপস্থিতি পিকনিককে আরও অর্থময় করে তোলে। অনেক দিন পরে বন্ধুদের সাথে সরাসরি মেলামেশা করার এই যে সুযোগ করে দেয় রাব সেটা সকলের প্রশংসা কুড়ায়। ফলে প্রায় রাত দশটায় সমাপনী অনুষ্ঠানে সবাই রাবকে শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে এবং রাবকে আরো গতিময় করার প্রতিশ্রুতি জানিয়ে সকাল ১১ থেকে রাত ১০ পর্যন্ত চলমান এই মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করে। মস্কো, ২০ জুলাই ২০২৫

ভুল

Image
মানুষ ভেবেছিল শেখ হাসিনা সহজে পড়বে না। ভুল ভেবেছিল। মানুষ ভেবেছিল রাজনৈতিক ভিত্তিহীন ইউনুস সরকার শক্ত হাতে দেশ চালাতে পারবে না। এত রক্ত মনে হয় এর আগে কোন আমলেই ঝরেনি। আর কত শক্ত হতে হবে হাত! মানুষ আবার ভুল করল। অনেকেই ভাবে সেনাবাহিনী দেশকে এই অরাজকতা থেকে রক্ষা করতে পারবে। গোপালগঞ্জ কি সেই বিশ্বাসে চিড় ধরায় না?শুনি দেশের ৩০ না ৪০ ভাগ মানুষ আওয়ামী সমর্থক। আরও ৩০ ভাগ বিএনপি। তাহলে কীভাবে কয়েক জন সমন্বয়ক দেশে এরকম তান্ডব লীলা চালায়? নাকি এখানেও মানুষ ভুল করছে? বাইরে বাইরে পরস্পরের বিরুদ্ধে কথা বললেও কেন যেন মনে হয় সেনাবাহিনী, মৌলবাদী শক্তি আর পশ্চিমা শক্তিগুলো স্বাধীন সার্বভৌম একাত্তরের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। এই সম্মিলিত শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে বাকিদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছানোর কোন বিকল্প নেই। নাকি বাকিরাও ভেতরে ভেতরে বর্তমানে যা ঘটছে সেটা সমর্থন করে? কিছু দিন আগে বাংলাদেশকে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য সমাধান ভাবা হত। কিন্তু আজ সে অন্য দেশ তো বটেই নিজের জন্যেও বিশাল সমস্যা। আর এর নেপথ্যে রয়েছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দেশকে অপরাজনীতির পথে ঠেলে দেবার দীর্ঘ ইতিহা...

পর

Image
আশির দশকে আমাদের ছাত্রজীবনে অনেকেই গ্রীষ্মের ছুটিতে লন্ডন যেত ইন্ডিয়ান (সিলেটী) রেস্টুরেন্টে কাজ করে কিছু পয়সা কামানোর জন্য। আমার এক পরিচিত ছুটি নিয়ে প্রায় এক বছর ওখানে কাজ করে আর বেশ ভালো অংকের টাকা (পাউন্ড) নিয়ে মস্কো ফেরে। ফিরে সে তাদের ইনস্টিটিউটের এক বড় ভাইকে সেই টাকা ধার দেয়। শুনেছি সেই বড় ভাই তাকে অল্প অল্প করে টাকা ফেরত দিত আর দিত রুবলে। যেহেতু ইনফ্লাশন তখন সেই বিগ ব্যাং -এর ঠিক পরবর্তী অবস্থার মতই, তাই বলা চলে সে কোন টাকা আর ফেরত পায়নি। এজন্যেই মা বলতেন পুঁথিগত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন আমাদের দেশের অবস্থা এখন সেই বন্ধুর মত। আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নিজেদের স্বার্থ (দেশ) বন্ধক রেখে গণতন্ত্র লাভের স্বপ্নে বিভোর দেশের নেতারা কিছু দিন পরে যা পাবে তখন তাকে দেশ বা রাষ্ট্র বলা যাবে কি না সেটাই সন্দেহ। অনেকেই আশা করেছিল ট্রাম্পের আগমনে একটা হিল্লে হবে। কিন্তু এখানে তো ট্রাম্প বাইডেনের প্রশ্ন নয়, প্রশ্ন আমেরিকার স্বার্থের। এতে দেশের কি হল না হল তাতে তাদের কি এসে যায়? বেচারা জেলেনস্কি, এতো ভালো অভিনয় করেও আমাদের দেশের নেতাদের এই সহজ সত্যটা বোঝাতে স...

অফ লাইন

Image
আজ মানে ০৭ জুলাই ২০২৫ মস্কোর বাউমান ইউনিভার্সিটিতে শুরু হল দ্বিবার্ষিক সম্মেলন - ফিজিক্যাল ইন্টারপ্রিটেশন অফ রিলেটিভিটি থিওরি । আমি গত ২০২৩ সালে প্রথমবারের মত এতে অংশগ্রহণ করি। সেবার প্রফেসর বিভূদুত্য মিশ্র আর প্রফেসর সুনীল ত্রিপাঠীর সাথে আলাপ। বিভূ আসছে জানতাম। ভেবেছিলাম সুনীলের সাথেও দেখা হবে। ওরা দু'জনেই উড়িষ্যা থেকে। সকালে বাউমান ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে বিভূর সাথে দেখা। আরও জনা দুয়েক ভারতীয় দেখে বুঝলাম ওর ছাত্র। এমন সময় হঠাৎ একজন এসেছে জিজ্ঞেস করলেন  - কেমন আছেন? বাংলায় কথা শুনে প্রচন্ড অবাক হলাম। - ভালো। কিন্তু আপনাকে তো চিনতে পারলাম না। - আমি রঞ্জন শর্মা। - ও, তাই বলুন। ফেসবুকে আলাপ। আমার ধারণা ছিল উনি সোভিয়েত ফেরৎ। ভুল ধারণা। উনি ইন্ডিয়ায় লেখাপড়া করেছেন। সাউথ আফ্রিকায় অনেক দিন কাজ করেছেন। দুই দেশেই আমাদের অনেক কমন পরিচিত। মাত্র কয়েক দিন আগেও আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কমেন্ট করেছেন অথচ বলেননি যে মস্কো আসছেন। জানালেন আমরা লেখা প্রায়ই পড়েন আর ছবি দেখেন। রোগাপাতলা হবার এই এক সমস্যা - গর্বে বুকের ছাতি ফুলে ওঠে না। এখন শিলিগুড়ি আছেন। আরও দুজন প্রফেসরের সাথে আলাপ করিয়ে দিল...

প্রশ্ন

Image
দেশের ক্রান্তিকালে মানুষ রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ভিন দেশের শান্তি রক্ষার অজুহাতে নিজ দেশের মানুষকে অশান্তির আগুনে জ্বলতে দেখেও নিশ্চিন্তে বাঁশি বাজাচ্ছে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দেখছে কীভাবে দেশটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে জয় নাকি মৌলবাদের কাছে পরাজয় ঠিক কোনটি দেশের জন্য মঙ্গলজনক সেই বিষয়ে নিশ্চিত না হতে পারা এখন তথাকথিত একাত্তরের পক্ষের অবশিষ্ট শক্তির প্রধান সমস্যা। কী সামরিক, কী রাজনৈতিক, কী বুদ্ধিবৃত্তিক - সব সেক্টরে এমন নপুংশক, দিশেহারা ও অদক্ষ নেতৃত্ব বাঙালি জাতির জীবনে কখনো এসেছে বলে মনে হয় না। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুবর্ণ সুযোগ এরা পেয়েছিল মবের কাছে সেই সুযোগ হারিয়ে ফেলার নজির বিশ্বের কোথাও আছে কি? দুবনা, ০৫ জুলাই ২০২৫

স্বার্থ

Image
রাশিয়ার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়া ও ভিয়েতনামের আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক উঠিয়ে নেয়া সম্পর্কে কিছু স্ট্যাটাস দেখলাম। হ্যাঁ, মস্কোর আফগান দূতাবাসে আগের তিনরঙা পতাকার পরিবর্তে নতুন পতাকা উড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন কথা হবে। তবে আমার মনে হয় বিভিন্ন দেশ যদি অন্যান্য দেশের গ্রাউন্ড রিয়ালিটি বিবেচনায় নিয়ে কাজ করে তাহলে পৃথিবীর অনেক সমস্যারই সমাধান হয়। গ্রাউন্ড রিয়ালিটি একেক দেশে একেক রকম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেটা স্থানীয় জনগণের দ্বারা সমর্থিত। অন্য দেশ সেটা না মানলে একটাই উপায় থাকে - সরকার পরিবর্তন। কিন্তু প্রায়ই সেটা হয় রক্তক্ষয়ী। অন্যদিকে সেই সরকারকে স্বীকৃতি না দিলে কূটনৈতিক কাজকর্ম চলে না, তাতে আর যাই হোক সে দেশের সাধারণ মানুষের কোন লাভ হয় না। কুটনীতিও চাপ সৃষ্টি করার একটি মাধ্যম। কিন্তু কথাই যদি না বলি কথা শুনাব কীভাবে? তালিবানের কাজকর্ম সমর্থনযোগ্য নয়, কিন্তু তার সংশোধনের জন্য হলেও যোগাযোগ দরকার। এই স্বীকৃতি আফগান জনগণের জন্য কোন উপকার বয়ে আনবে কিনা সেটা বলা কষ্ট, তবে চেষ্টা তো করা যাবে। হামাজকে স্বীকৃতি দিয়েছিল বলেই রাশিয়া সেখান থেকে নিজেদের লোকদের বের করে আনতে পেরেছে, ...

ক্ষমতা

Image
গতকাল "তৃতীয় শক্তির জন্য জায়গা খালি" নামে আনোয়ার ভাইয়ের (সাবেক ছাত্র নেতা আনোয়ারুল হক) একটি লেখা পড়লাম। তিনি সেখানে যথার্থ ভাবেই বৃহত্তর বাম ঐক্যের জন্য ডাক দিয়েছেন। সেই লেখা পড়ে আমার প্রতিক্রিয়া এরকম ঘর ভাঙে যখন ঘরের মানুষের মধ্যে বোঝাপড়া থাকে না। দলও একই কারণে ভাঙে। যেখানে এক দলের মানুষই নিজেদের মধ্যে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছে না সেখানে বিভিন্ন দলের লোক পারবে কিভাবে? হ্যাঁ, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক হয়েছিল কারণ শেখ হাসিনাকে সবাই শত্রু মনে করত। আর শত্রুর শত্রু বন্ধু এ তত্ত্ব তো বাজারে নতুন নয়। তাই এক্ষেত্রে এমনকি শয়তানের সাথেও আঁতাত করা যায়, করে। এটা রাজনীতিতে যেমন সত্য, তেমনি সত্য সমাজে। মানে শত্রুকে যেকোনো ভাবে পরাজিত করা জায়েজ। শত্রু নিশ্চিহ্ন করার জন্য, সেখানে পাবার কিছু নেই। কিন্তু যখন গড়ার প্রশ্ন আসে তখন সামনে কোন না কোন লক্ষ্য থাকে। লক্ষ্য কোন বিমূর্ত বিষয় নয়। এখানে থাকে ক্ষমতা ও সম্পদের হাতছানি। তখন কোন পথে এই লক্ষ্য অর্জন করব, কে এর নেতৃত্ব দেবে ইত্যাদি প্রশ্ন সামনে চলে আসে। তাই অবজেক্টিভ রিজন ও রিয়ালিটি থাকা সত্ত্বেও বাম ঐক্য অধরাই থেকে গেছে। তাছাড়া এই ঐক্যের জন্...