শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস

সকাল থেকেই বেশ কিছু স্ট্যাটাস দেখে অবাক হলাম, কারণে আপাত দৃষ্টিতে একই চিন্তার লোকেরা লিখছিল একে অন্যকে অভিযোগ করে | আর এটা হয়েছে গত কালের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে কেন্দ্র করে | এটি বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে অন্যতম স্পর্শকাতর একটি দিন | তাই এই দিনটিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি বা মন কষাকষি, বিশেষ করে বন্ধুদের মধ্যে, মোটেও কাম্য নয় | আমাদের দেশটা স্বাধীন হয়েছে ৩০ লক্ষ প্রানের বিনিময়ে, যার অধিকাংশই ছিল সাধারণ মানুষ - অশিক্ষিত বা
অর্ধ-শিক্ষিত চাষা ভুষা | যদিও নিজ নিজ পরিবারের কাছে প্রতিটি প্রানের মূল্যই অসীম - আর সমাজের কাছে প্রতিটি প্রানের মূল্যই সমান - কিন্তু কিছু কিছু প্রানের গুরুত্ব সামাজিক ও জাতীয় বিবেচনায় একটু বেশি হতেই পারে | সেটা সব দেশেই হয় | তাই বলে যাদের নাম উচ্চারণ করা হলো না, সেই সব লাখ লাখ শহীদের প্রতি অসম্মান করা হয় না, তাদেরকে অবজ্ঞাও করা হয় না | তবে অনেক সময়ই অতি উত্সাহী কিছু লোক নাম জানা কিছু লোকের কথা বলতে গিয়ে ভুলে যায় নাম নাজানা হাজার শহীদের কথা, আর সেটা ব্যথিত করে এই সব শহীদদের সন্তানদের | তবে যেসব শহীদদের সন্তানদের ডেকে তাদের বাবা-মার সম্পর্কে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল থেকে উচ্ছসিত প্রশংসা করা হলো, এই সন্তানদের লাইম লাইটে নিয়ে আসা হলো, তাদের যেমন বোঝা দরকার এটা সম্ভব হয়েছে শুধু ওই নামগোত্রহীন লাখ মানুষের আত্মত্যাগের ফলে, তেমনি ভাবে যেসব শহীদ সন্তানরা এই সম্মান থেকে বঞ্চিত হলেন, যাদের বাবা-মাকে নিয়ে কেউ কোনো কথা বলল না, কেউ কোনো উচ্ছাস দেখালো না - সেই সব শহীদ সন্তানদেরও বোঝা উচিত - এই অবজ্ঞার জন্য আর যেই হোক - প্রথম দলের শহীদ সন্তানেরা দায়ী নন | আপনাদের এ নিয়ে অভিমান হতেই পারে, তবে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তার প্রকাশ অন্য শহীদ সন্তানদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাড় করায় সেটা কি ঠিক ? এই কষ্টের দিনে এটাই কি ওদের প্রাপ্য, বিশেষ করে সেই সব লোকেদের কাছ থেকে যারা খুব ভালো ভাবে জানেন যুদ্ধে বাবা-মা হারানোর বেদনা ?


তরা, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬    



Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি