ভাত নয় কথা চাই

দু’ দিন আগে দেশ থেকে ফিরলাম।কুয়াশায় ঢাকা শীতের বাংলাদেশের পর বরফাচ্ছন্ন দুবনাকে বেশ অপরিচিত মনে হচ্ছে। দিদির সাথে কথা হল। ফোনে।৫০ মিনিট কথা বললাম। আশ্চর্যের ব্যাপার এই যে এক মাস দেশে ছিলাম, আর বলতে গেলে পুরো সময়টাই কাটল বাড়ীতে, দিদির সাথে এত কথা কখনই বলা হয়নি। আমার সময়ের অভাব ছিল না, তবে সেই ভোর পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত দিদির কাটল হাজার রকম রান্নাবারির মধ্যে।
আমি তো ভোজন রসিক নই, খেলে বরং আনন্দের চেয়ে কষ্টই বেশি পাই, এই বুক জ্বলে তো, ওই গ্যাসের চাপে হৃদপিণ্ড গলা দিয়ে বেরিয়ে যেতে চায়। অথচ গত দুদিন কাটল একটু ভাত আর কয়েকটা ডিম খেয়ে। বুক জ্বালা নেই, গ্যাসের চাপ নেই। এমন কি গ্যাসের চাপ সইতে না পেরে আমার গ্যাস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্ল্যানটা পর্যন্ত গায়েব হয়ে গেল।
তেল ঝোলে চকচকে আর ঝালে নুনে রমরমা দেশের খাবার দেখে লোভ হয় ঠিকই, তবে তার পরবর্তী উপসর্গ সব সময় উপভোগ্য নয়। এ খাবার রাধুনির পারিদর্শয়িতা প্রকাশ করে ঠিকই, তবে আমার মত একটা দুই নম্বরি পেটের মালিক হলে খাদকদের দুর্বলতার হাড়িটাও হাটে ভেঙ্গে দেয়। তাই দেশে গেলে বাড়ী থাকা বা কারো বাসায় যাওয়া আমার জন্যে অনেকটা রাজা হরিশ্চন্দ্রের শুন্যে ঝুলে থাকার মত হয়ে দাঁড়ায়।
আসলে দেশে গেলে সবাই আদর আপ্যায়নে এত ব্যাস্ত হয়ে পড়ে যে, কথা বলার সময়ই পায় না। আর আমিতো যাই মুলত কথা বলতে, গল্প করতে, গল্প শুনতে। ভাগ্যিস টেলিফোনটা ছিল, তাই সামনা সামনি না বলতে পারলেও অনেক না বলা কথা টেলিফোনেই বলে নেয়া যায়।
দুবনা, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৬


Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি