বিজন আইল

সেদিন ঢাকা যাবার পথে দেখলাম বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নামে লেন, সরণী, ঘোড়ার ডিম, হাতীর ডিম - কত কিছুই না গড়ে উঠেছে | সমাজে সম্মানিত মৃত ব্যক্তিদের নামে এসব করার রীতি শুধু আমাদের দেশেই নয়. পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই বিদ্যমান | তবে দেশে দেখছি জীবিত লোকজন পাল্লা দিয়ে নিজেদের নামে এসব তৈরী করছে | আমার তো আর বিড়ালের ভাগ্যে শিকা ছেড়ার সম্ভাবনা নেই, তাই ভাবছি ভাইকে বলে যাব শোবার ঘর থেকে রান্না ঘর পর্যন্ত উঠানে এক ইটের একটা রাস্তা বেধে দিতে যেমনটা ছোট বেলায় আমরা করতাম বৃষ্টির পর পা না ভিজিয়ে এ ঘর ও ঘর করতে আর এই এক ইটি রাস্তার নাম আমার নামে রাখতে | আমি রোগা মানুষ, তাই রাস্তাটার এর বেশি মোটা হবার দরকার নেই | তবে এটা লেন বা সরণী হবে না | যতদুর জানি এক সময় এই ভুখন্ডের নাম ছিল বঙ্গ আর এখানে জমিগুলো আল বা আইল বা বাতর দিয়ে একে অন্যের থেকে আলাদা করে রাখা হত | পরে বঙ্গ আর আল বা আইলের সমন্বয়েই বাঙাল বা বাংলা শব্দটার উত্পত্তি | এই আইল গুলো একটা ইটের সমানই চওড়া আর যে জমির মালিক ছিল সবল, সে হরহামেশাই ওই অইলটা ঠেলে দেয় অপেক্ষাকৃত দুর্বল জমির মালিকের দিকে | এভাবেই সবল নিজের জমির পরিধি বাড়ায় | তারপর এক দিন তো পুরো আইলটাই নাই হয়ে যায় | সবল হয় পুরা জমির মালিক আর দুর্বল - ভূমিহীন | যেহেতু আমার নামের এই রাস্তাটা হরহামেশাই এদিক সেদিক সরে যাবার বা একেবারেই নাই হয়ে যাবার সম্ভাবনা খুবই বেশি, তাই ভাবছি ভাইকে বলবো শোবার ঘর থেকে রান্না ঘর পর্যন্ত এক ইট চওড়া ওই রাস্তাটির নাম বিজন আইল রাখতে |
আপনারা কি বলেন ?


তরা, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬


  

Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি