কছডধম
আজ বার বার বন্ধুর মুখ মনে পড়ছে।
অনেক দিন কথা বলা হয়নি। জানতে ইচ্ছে করছে, কী ভাবছে ও? এর আগে এমনটি হয় নি। মনের
মিল থাকলে কথা না বলেও অনেক কিছুই বোঝা যায়। আগে বিশেষ করে দেশের ব্যাপারে কথা
বললেই বলত,
“দোস্ত, কি করুম কও? অনেক কিছুই
মানতে পারি না, তার পরেও এ তো মন্দের ভালো। এ গেলে যে আইসবো, তাতে তো দেশে থাকতে পারুম না।“
আমি সায় দেই, তাই তো। অন্য কোন
বিকল্প তো আর নেই। কিন্তু আমাদের গণ্ডী ছোট হতে হতে দেয়ালটা যখন পিঠে এসে লাগলো (না না,
আমরা আর পিছুতে পারছি না, পেছানর জায়গা নেই, দেয়ালটাই ছোট হয়ে আসছে ক্রমাগত) –
বন্ধুর মুখে ভেসে উঠলো মনের আয়নায়।
এক সময় জেলখানা তৈরি করা হতো
অপরাধীদের আটকে রাখার জন্য। আসলে ওটা ছিল এক ধরনের আইসোলেশন ক্যাম্প, খুব বেশী
খারাপ যারা তাদেরকে ভালো বা আইন মেনে চলা লোকদের থেকে আলাদা করে রাখার জন্য। আজও
জেলের দেয়াল এই দুই দলকে বিচ্ছিন্ন করে রাখে, তবে শ্যামল কান্তি ভক্তসহ অনেক ঘটনায়
মনে হয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেহেতু দেশে ভালো আর সৎ লোকের সংখ্যা ক্রমশই
শুন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে, তাই বদমাইশদের বাইরে রেখে নির্দোষ লোকগুলোকে জেলে
ঢুকিয়ে দিলেই ল্যাঠা চুকে যায়। আসল কথা তো এক দলকে আরেক দলের হাত থেকে বাঁচানো, কে
কোথায় থাকবে সেটা তো সেকেন্ডারি বিষয়। তাছাড়া এই ভালো লোকগুলো সব সময় ঝামেলা করে,
কাজের কৈফিয়ত চায়, গনতন্ত্র চায়, বাহাত্তরের সংবিধান চায় আরও কত কি? সরকারের
বুদ্ধির তারিফ না করে পারা যায় না।
হাইকোর্টের সামনে থেকে গ্রীক
দেবীর মূর্তি সরানো নিয়েই বা কী বলার আছে। আমাদের প্রাইম মিনিস্টার ওখানে দাঁড়িয়ে
থাকলেই তো পারেন। গ্রীক দেবীর চোখ বাঁধা ছিল, কিছুই দেখতেন না তিনি আর তাই
পক্ষপাতিত্ব করতে পারতেন না। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, আমাদের প্রাইম মিনিস্টারও অনেক ব্যাপারেই
অন্ধ (অন্ধের তো আর পক্ষপাতদুষ্টটা থাকে না) – তাই কী দরকার তাহলে গ্রীক দেবীকে
শাড়ী পরিয়ে দাড় করানোর?
কেন যেন মনে হয় দিন দিন আমি নিজেই
অন্ধ হয়ে যাচ্ছি। তা না হলে কেন বার বার মন্দের ভালো বলে এই দল, এই নেত্রীর পেছনে
শ্লোগান দিয়ে বেড়াচ্ছি? আমার কেন যেন মনে
হয় এরা বিরোধী দলে থাকলেই বরং দেশ ভালো থাকতো। কেননা আজ যখন মূর্তি সরানো হয়,
বিভিন্ন রকম সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমন করা হয়, এর বিরুদ্ধে কথা বলার মানুষ পাওয়া
যায় না। বাম প্রগতিশীলদের প্রতিবাদ এখন দূরবীন দিয়ে দেখতে হয়। বিএনপি বা দক্ষিনপন্থী
বিরোধীরা সরকারের বিরোধিতা করলেও এসব কাজের বিরোধিতা করে না বরং ভাবে, “ভালই তো হলো,
আমাদের কাজটা এগিয়ে নিলো।“ আমার কেন যেন মনে হয়, বিএনপির আমলে এই মূর্তি সরতো না।
আওয়ামীলীগসহ সম্মিলিত বাম আর প্রগতিশীলদের প্রতিবাদের মুখে শুধু যে মূর্তি সরতো না
তা নয়, হয়তো বা শ্যামল বাবুকেও জেলে যেতে হতো না।
দোস্ত, কিছু কিছু লোক বা দল আছে, যারা কী সরকারে কী বিরোধী দলে – সব জায়গায়ই খারাপ, আবার কিছু কিছু লোক বা দল আছে, যারা বিরোধী দল হিসেবে লোক দেখানোর জন্য হলেও কিছুটা প্রগতিশীল, কিন্তু সরকারী দল হিসেবে প্রতিক্রিয়ার প্রতিমূর্তি। তাহলে এরা যেখানে ভালো, এদের সেখানে থাকাই কি দেশের জন্য কল্যানকর নয়?
দোস্ত, কিছু কিছু লোক বা দল আছে, যারা কী সরকারে কী বিরোধী দলে – সব জায়গায়ই খারাপ, আবার কিছু কিছু লোক বা দল আছে, যারা বিরোধী দল হিসেবে লোক দেখানোর জন্য হলেও কিছুটা প্রগতিশীল, কিন্তু সরকারী দল হিসেবে প্রতিক্রিয়ার প্রতিমূর্তি। তাহলে এরা যেখানে ভালো, এদের সেখানে থাকাই কি দেশের জন্য কল্যানকর নয়?
দুবনা, ২৬ মে ২০১৭
Comments
Post a Comment