Posts

Showing posts from August, 2025

অধঃপতন

Image
ফেসবুকে কিছু কিছু লেখায় দেখলাম নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রী নিয়ে কোর্টে আইনি লড়াই হচ্ছে। ডিগ্রি নিয়ে এই ছেলেমি নিঃসন্দেহে হাস্যকর। আচ্ছা ডিগ্রি থাকার সাথে প্রধানমন্ত্রী হওয়া না হওয়ার সম্পর্ক আছে কি? মানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকা কি আবশ্যক? যদি সাংবিধানিক বাধা না থাকে তবে এটা নিয়ে জল ঘোলা করা আসলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, অনেকটা বিগত টার্মে ট্রাম্পের জীবন দুর্বিষহ করার জন্য রাশাগেটের মত। মন্ত্রীর যোগ্যতা তার সাংগঠনিক শক্তির উপর নির্ভর করে। যদি সেটা ডিগ্রির উপর নির্ভর করত বাংলাদেশ আজ বিশ্ব রাজনীতিতে ভিন্ন অবস্থানে থাকত। রোগীর কাছে গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার বিদেশী ডিগ্রিধারী ইঞ্জিনিয়ারের চেয়ে বেশি উপযুক্ত। নরেন্দ্র মোদী যদি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, দেশ চালাতে না পারেন - তাহলে এই ডিগ্রি থাকা না থাকা সমান কথা। প্রায় সব রাজনীতিবিদরা যখন সব বিষয়ে উঠতে বসতে মিথ্যা বলে তখন শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে হৈচৈ আসলে সস্তা সার্কাস। এটা রাজনীতির মাঠে মকাবেলা করতে না পেরে ডিগ্রি নিয়ে খোঁটা দেওয়া। এতে নিজেদের দুর্বলতাই প্রকাশ পায়। রাজনীতির অধঃপতন অব্যাহত আছে সারা বিশ্বেই...

স্বাদহীন স্বাধীনতা

Image
বিশ্বখ্যাত আমেরিকান ফিল্ম ডাইরেক্টর উডি অ্যালেন মস্কো ফিল্ম উইক উপলক্ষ্যে ফিওদর বন্দরচুককে দেয়া এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে বলেছেন যদি অফার পান তাহলে মস্কো বা পিটারের উপর মুভি করবেন। তিনি আরো বলেন যে সংস্কৃতি রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা উচিৎ। ইউক্রেন থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে আর তাঁকে ইউক্রেনের এক সন্ত্রাসবাদী গ্রুপের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঠিক যেমনটি একসময় জামায়াত শিবির মুক্তমনা লেখকদের তালিকাভুক্ত করেছিল। আচ্ছা ইউরোপ, আমেরিকা এসব স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশ। সেখানে মানুষ বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা ইত্যাদি যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি উপভোগ করে। এসব দেশ এ নিয়ে গর্ব করে। তাই কেউ বা কোন দেশ যখন এসব দেশের মানুষের এই স্বাধীনতার উপর আঘাত হানে তখন তাদের মৌণতা সত্যিই অবাক করে। জার্মানি সেদেশের সংবিধানে ঘোষিত জনকল্যাণ রাষ্ট্র নীতি বাদ দিতে চাইছে ইউক্রেন যুদ্ধ চালিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছা থেকে যদিও তার পেছনে জনসমর্থন নেই। একসময় ইউক্রেন ইউরোপ হতে চেয়েছিল, এখন ইউরোপ দ্বিগুণ বেগে ইউক্রেনে পরিণত হচ্ছে।‌ এর শেষ কোথায়? দুবনা, ২৬ আগস্ট ২০২৫

নতজানু দেশ

Image
ছোট হোক আর বড় হোক রাষ্ট্র রাষ্ট্রই। কিছু কিছু বিচারে গ্রামের রাস্তার মোড়ের মুদি দোকানের মালিক গুগলের সিওর চেয়ে স্বাধীন। স্বাধীনতা মানেই দায়িত্ব। সেটা কখনোই সহজ নয়। তবে আত্মসম্মান বোধ সম্পন্ন যেকোনো রাষ্ট্র শত বাধা বিপত্তি এড়িয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করে। আচ্ছা একাত্তরে বিনা উস্কানিতে, বিনা ঘোষণায় বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের উপর আক্রমণের দায়িত্ব কি পাকিস্তান এড়াতে পারবে? আজ আমরা গতবছরের ছাত্র জনতার আন্দোলনে স্বৈরাচারী সরকারের পুলিশ বাহিনীর গুলি চালিয়ে হাজার খানেক মানুষের হত্যার বিচার করতে চাই, শুধু সরকার নয়, সরকারী দল, দলের যেকোনো কর্মীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাই। সেই বিচার যে করতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আবার এই আমরাই ত্রিশ লাখ মানুষ হত্যা ও তিন লাখ মা বোনকে ধর্ষণকারী পাকসেনা ও তার দেশীয় দোসরদের কাছে তাদের অপকর্মের হিস্যা চাইতে আজ দ্বিধা করি। উল্টা তারা আমাদের যখন মন পরিষ্কার করার উপদেশ দেয় বিনা প্রতিবাদে তা মেনে নেই। আর কত নতজানু হবে আমাদের সরকার। আর কত দাসত্ব বরণ করবে এরা? আমাদের শিক্ষা কি এতটাই মেরুদণ্ডহীন যে একজন নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক এর প্রতিবাদ করতে সাহস পান না? বাংলাদেশের মানুষ ...

প্রশ্ন আর প্রশ্ন

Image
খোলা চিঠি ও পরবর্তীতে মেঘনায় মৃতদেহ উদ্ধারের পরও অনেকেই সাংবাদিক ও কলামিস্ট বিভুরঞ্জন সরকারের আত্মহত্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।‌ তাহলে কি এটা হত্যা? হয়তো কেউ তাকে জীবিত অবস্থায় বা তার লাশ মেঘনার কালো জলে ফেলে দেয়নি কিন্তু সরকার এমন এক পরিবেশের সৃষ্টি করেছে যে তিনি বাধ্য হয়েছেন আত্মহনন করতে। আর বিভু দার পারিবারিক পদবী যেহেতু সরকার তাই সরকারের হাতে সরকারের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই প্রচার করা যায়। বিভু দার সুইসাইড নোট থেকে আরও জানতে পারি এই মৃত্যুর শুরু আজ নয়, এর শুরু দীর্ঘদিন আগে যখন থেকে দল দেশের ঊর্ধ্বে উঠে এসেছে, দলীয় স্বার্থ দেশপ্রেমকে হার মানিয়েছে। কিন্তু আমরা বুঝতে পারিনি যে দল থেকে ব্যক্তি খুব বেশি দূরে নয়। বুঝতে পারিনি যে দেশপ্রেমের ভিত্তি যদি হয় আদর্শ তবে দলীয় ও ব্যক্তি স্বার্থ আদর্শ বর্জিত। তাই রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে এসব লোকজন ব্যাপক হারে দলবদল করে, করছে। এই যে এক সর্বগ্রাসী আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে কয়েক যুগ ধরে সেখানে দেশপ্রেম আসলে উল্টো স্রোত। এই পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের সব সরকারই দায়ী। আমরা সত্যবাদী, সত্যসন্ধানী, দেশপ্রেমিক মানুষের জন্য একটি নিরাপদ দেশ, নি...

২১ আগস্টের লিগেসি

Image
আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল মুসলিম লীগ থেকে, জাসদের আওয়ামী লীগ থেকে। যেহেতু মূল দলের রাজনীতির সাথে বিদ্রোহ করেই জন্ম তাই তাদের পারস্পরিক শত্রুতা ছিল শুরু থেকেই। মুক্তিযুদ্ধের সময় কোন রাজনৈতিক দল পাকিস্তানের পক্ষে থাকতেই পারত। তবে যখনই সে গণহত্যার সামিল হয়েছে তখনই সে গণশত্রু হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই বাংলাদেশে জামায়াত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া অনৈতিক ছিল না। বিএনপির জন্ম জিয়ার হাতে যিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন বলে অনেকের বিশ্বাস। ফলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সম্পর্ক শুরু থেকেই সাপ বেজির। অন্যদিকে এরশাদ জিয়া হত্যার ফসল তোলায় জাতীয় পার্টি ও বিএনপি একে অন্যকে কখনও গ্রহণ করেনি। কিন্তু এসব সমীকরণের মধ্যেও রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে ছিল, এক সাথে আন্দোলন করেছে, নির্বাচন করেছে, হেরেছে, জিতেছে, একে অন্যের বিরুদ্ধে মিটিং মিছিল করেছে। তবে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার পরে বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মোড় নেয়। তখন থেকে দুই প্রধান রাজনৈতিক দল পরস্পরের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে জাতশত্রুতে পরিণত হয়। দেশের উন্নয়নের চেয়েও বিপক্ষ ধ্বংস ...

গণতন্ত্র

Image
গত পরশু রুশ গোয়েন্দা সংস্থা ক্রাস্নাদার এলাকায় একটি গাড়ি আটক করে। ইউক্রেন থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে জর্জিয়া হয়ে গাড়িটি রাশিয়ায় ঢোকে। গাড়ির ভেতরে ৩০০ কেজি বিস্ফোরক লুকানো ছিল। এর গন্তব্য ছিল ক্রিমিয়া। পথে ক্রিমিয়া ব্রিজে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। বিভিন্ন হাত ঘুরে গাড়িটি ক্রিমিয়ার দিকে এগুচ্ছিল। শেষ যে চালক সে ইউক্রেনের সমর্থক হলেও জানত না যে তাকে আত্মঘাতী হিসেবে ব্যবহার করা হবে। গত বছর এভাবেই এই সেতুর উপর আক্রমণ করা হয়। রুশ গোয়েন্দা সংস্থা গাড়িটি রাশিয়ায় ঢোকার পর থেকেই একে অনুসরণ করছিল ও এরসাথে জড়িত চক্র আবিস্কারের উদ্দেশ্যে দেশের ভেতরে ঢুকতে দেয়। গতকাল ধরা পড়েছে ছয় জনের এক দল। তিন জন সম্মুখ সমরে নিহত হয়, কমান্ডার সহ তিন জন আত্মসমর্পণ করে। এরা নরোওয়ে ও বাল্টিকের বিভিন্ন দেশে কানাডা ও ইংল্যান্ডের গোয়েন্দাদের দ্বারা প্রশিক্ষণ পেয়েছে রাশিয়ার ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর।  এক দিক ট্রাম্প যখন যুদ্ধ থামাতে চাইছে, ইউক্রেনের মানুষ শান্তির পক্ষে বলছে এসব শান্তির পায়রারা উঠেপড়ে লেগেছে শান্তির জীবন অশান্তিতে ভরিয়ে দিতে। কি চায় এরা? এই এক নতুন ফেনোমেনন ...

অধরা শান্তি

Image
ইরান এক সময় সালমান রুশদির মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল । এটা লেখকের স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ বিধায় নিন্দিত। কিন্তু মাথার মূল্য ঘোষণা করা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে একাজ করে। আমেরিকা বেন লাদেন সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদীদের মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল, এখন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাডুরোর মাথার মূল্য ঘোষণা করেছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। যদি অন্যান্য দেশ এসব করে আমরা এর বিরদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠি, কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব করলে আমরা ধরেই নেই সাহেবরা যখন বলেছেন তাহলে ঠিকই আছে। আসলে এভাবেই যুগে যুগে দেশে দেশে ব্রাহ্মণ্যবাদ গড়ে উঠেছে। ব্রাহ্মণ্যবাদ কী? এটা কারো বা কোন গোষ্ঠীর কাজকর্মকে অন্ধভাবে ন্যায্যতা দান করা। এই দেখুন ইউরোপ ও আমেরিকা বলতে গেলে রাশিয়াকে বাধ্য করল ইউক্রেন আক্রমণ করতে। কেন? তাহলে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক অজুহাত পাওয়া যায় আর সেটা দিয়ে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করে দেশটাকে নিজেদের বলয়ে আনা যায় যেমন হয়েছিল নব্বুইয়ের দশকে। এখন যখন যুদ্ধে ইউক্রেন পরাজয়ের দ্বারে, লাখ দশেক সেনা ভুপাতিত, ইউরোপের অর্থনীতির লালবাতি জ্বলার অবস্থা, যখন যুদ্ধ বন্ধ আশু কর্তব্য, তখনও তারা যুদ্ধ চালিয়ে...

অতিশিক্ষিত

Image
সত্য মিথ্যা বলতে পারব না, তবে শুনেছি পশ্চিমে নাকি অতিশিক্ষিত মানে ওভার কোয়ালিফাইড কাউকে সাধারণত কেউ চাকরিতে নিতে চায় না। রাশিয়ায় অবশ্য ওভার কোয়ালিফাইড কেউ কোন চাকরিতে ঢুকতে চাইলে সেখানে তার সেই কোয়ালিফিকেশন শুনেছি হিসেবে আনা হয় না। মানে যদি কেউ ডক্টরেট ডিগ্রি নিয়ে সুইপার হতে চায় তাহলে সেখানে তার ডক্টরেট ডিগ্রি হিসেবে আনা হয় না, কারণ সে তো ঘর মোছার উপরে ডক্টোরেট ডিগ্রি পায়নি। বিশেষ করে নিয়োগকারী যদি বৌ বা বর হয়। খবরে দেখলাম শেখ হাসিনার ৫১ লাখের শেখ রাসেল স্টিডিয়াম এখন তৈরি হবে ১৪ কোটিতে। শুনে মনে কিছু উটকো প্রশ্ন জন্ম নিল। আচ্ছা স্টেডিয়ামের নাম কি শেখ রাসেল থাকবে নাকি কোন জুলাই বিপ্লবীর নামে তা হবে? যেকোনো দেশেই সিও যত দক্ষ তার বেতন তত বেশি। সন্দেহ নেই ডঃ ইউনুস আমাদের দেশের সবচেয়ে উচ্চ মূল্যের সিও। তাই দেশ যত গরীবই হক না কেন, এমন মানুষের বেতন বা এমন মানুষের ভরণপোষণের পেছনে খরচ যে বেশি হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর যাদের বেতন যত বেশি তারা তত বেশি অর্থ লামসাম করবে তাতেই বা অবাক হবার কি আছে? দেশ অতিশিক্ষিত ভৃত্য বা অবিডিয়েন্ট সারভ্যান্ট চাইবে আর বেতন দিতে কার্পণ্য করবে সেটা তো হয় ন...

ভয়

Image
শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে অনেকটা দেবতার পর্যায়ে চলে গেছেন যদিও দেবতা নন। আওয়ামী শাসনামলে তাঁর সমর্থকেরা তাঁকে দেবতার আসনে বসায়। সেটা অবশ্য দলীয় সমর্থকেরা এই মাপের প্রায় সব নেতাকে নিয়েই করে। কিন্তু শেখ মুজিবের ক্ষেত্রে তাঁর প্রতিপক্ষ নিজেদের অজান্তেই সেটা করে চলছে। এটা অনেকটা মূর্তি ভাঙার মত। যারা মূর্তি পূজায় বিশ্বাস করে না, যারা প্রতিমা বা মূর্তিকে নেহায়েত পুতুল মনে করে তাদের জন্য স্বাভাবিক ছিল মূর্তিকে গুরুত্ব না দেয়া, মূর্তির প্রতি নির্লিপ্ত হওয়া। কিন্তু তারা মূর্তি ভাঙে। কেন? ভয় পায় যদি মূর্তি সত্যি সত্যি জাগ্রত হয়। একই ভাবে শেখ মুজিবের মূর্তি, তাঁর বাড়ি এসবের প্রতি নির্লিপ্ততা তাঁকে জনগণের চোখের আড়ালে নিয়ে যেত। কিন্তু যতই তাঁকে অপমান করার চেষ্টা করা হয় তিনি ততই মানুষের আলোচনায় ফিরে আসেন, তত বেশি করে মানুষের মন দখল করেন। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জীবিত শেখ মুজিবের উপর জেল জুলুম করে তাঁকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি। আজ মুজিব যখন ধরাছোঁয়ার বাইরে, মরেও যিনি অমর তাঁকে দাবিয়ে রাখতে চাইছে অর্বাচীন নপুংশক কিছু অমানুষ। মস্কো, ১৭ আগস্ট ২০২৫

আলাস্কা সামিট

Image
আলাস্কা সামিট নিয়ে বিভিন্ন জায়গার খবর দেখে বুঝলাম ট্রাম্প ও পুতিনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলেই বেশিরভাগ মানুষের ধারণা। এসব বলছে পশ্চিমা মাধ্যম। মনে প্রশ্ন জাগে এটা সত্য নাকি মনের ইচ্ছা কলমে প্রকাশ করা। কারণ এসব মাধ্যম ইউক্রেন ও ইউরোপের অনুপস্থিতিতে কোন চুক্তি হোক সেটা চায়নি।  আমার আরও মনে হয়েছে একদল মানুষ ধারনা করেছে আলোচনা মানেই আত্মসমর্পণ যেটা কিছুদিন আগে ফন ডের লায়েন করেছে ইউরোপের হয়ে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে একপক্ষ দুর্বল হলে সেটা হয় মাইর আর দুই পক্ষ সমান হলে হয় মারামারি। সেখানে সহজে সমঝোতা আসে না, অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রেস কনফারেন্সে পুতিন ও ট্রাম্পের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে এটা সাত দিনের প্রায় বিনা প্রস্তুতিতে আয়োজিত কোন সামিট নয়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার ফসল। ইউক্রেন নিমিত্ত মাত্র আর সেটা এদের সার্বিক যোগাযোগ থেকে দৃষ্টি এড়ানোর জন্য।  ইউক্রেন প্রশ্নে সমঝোতা হয়নি। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ পূর্ববর্তী ন্যাটোর কাছে তাদের নিরাপত্তার দাবিতে অটল সেটা নতুন করে ব্যক্ত করেছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা বাইপাস করে ইউরোপ ও ইউক্রেন নিরাপদ নয় এটা তারা বুঝিয়...

রিংকু

Image
হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রশান্তর মেসেজ থেকে রিংকুর মৃত্যু সংবাদ জানলাম। গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েট ছাড়াও রিংকুর আরেকটি পরিচয় ও রাশেদের ভাই। এছাড়া ও দীর্ঘ দিন আমার আরেক পরিচিতা উড়িষ্যার জুলির সাথে একই কোম্পানিতে কাজ করেছে। এছাড়া বিভিন্ন সংগঠন তো আছেই। তাই আমার সাথে রিংকুর পরিচয় বহুমুখী যদিও দেখা বা কথা হত কালেভদ্রে। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫ বছর পূর্তি উৎসবে দেশ থেকে অনেকেই যোগ দেয়। সেখানে আমাদের এক গেট টুগেদারে রিংকুর সাথে দেখা। তখন ও জানায় ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা। এরপর দেখা হয় ২৬ এপ্রিল মস্কো সফররত সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহুল হোসেন প্রিন্সের সাথে এক আলোচনা সভায়। আমি রিংকুকে বলতে ভুলে গেছিলাম। রাত এগারোটার দিকে সানু ফোন করে জিজ্ঞেস করে রিংকুকে বলেছি কিনা। সাথে সাথে ওকে ফোন করি। পাইনি। ২৬ তারিখ সকালে ও ফোন করলে বিকেলের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাই। ওখানেই আমাদের শেষ দেখা। গত ১৯ তারিখে বাংলাদেশের রাশান গ্র্যাজুয়েটদের পিকনিকে রাশেদের সাথে দেখা। রিংকুর কথা জিজ্ঞেস করলে জানাল ও হাসপাতালে। আজকাল ক্যান্সার আর আগের মত দূরারোগ্য ব্য...

বোধোদয়?

Image
গতকাল ভিডিওতে একটি নতুন স্লোগান শুনলাম  "তুমিও জানো আমিও জানি  জামায়াত শিবির পাকিস্তানী।" ২০১৩ সালে শাহবাগের "তুই রাজাকার" এর পরে এটা মনে হয় বাংলাদেশের পক্ষের অন্যতম প্রধান স্লোগান। স্লোগান দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। আমাদের এক সময়ের প্রাণপ্রিয় সংগঠন। এক সময়ের বলছি এ কারণে যে গত এক বছরে ছাত্র ইউনিয়ন তো বটেই সিপিবি সহ বিভিন্ন বাম দলের ভূমিকা অনেকের মনেই এই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে "সখী তুমি কার?" এই স্লোগান শুধুই সাময়িক আবেগ নাকি স্মৃতিভ্রষ্ট বামদের একাত্তরের স্মৃতি ফিরে পাওয়া এটা সময় বলবে। তবে সংবিধান সংস্কার প্রশ্নে তাদের শেষ পদক্ষেপ, জামায়াত শিবির বিরোধী স্লোগান - এসব দেখে মনে হয় অন্ধ আওয়ামী বিরোধী টনিকের নেশা দেরিতে হলেও তাদের ধীরে ধীরে কাটতে শুরু করেছে। বেটার লেট দ্যান নেভার।   দুবনা, ০৬ আগস্ট ২০২৫

ট্যারিফের তারিফ

Image
ট্রাম্পের ট্যারিফ রাজনীতির তারিফ করতেই হয়। সেই ডিভাইড এন্ড রুল - কারোও উপর বেশি করে শুল্ক আরোপ, কারোও উপর কম। সবাই রিসিভিং এন্ডে। তারপরেও সবার চেষ্টা ক্ষতি কীভাবে কমানো যায়। লাভ নিয়ে কেউ ভাবছে না। অথচ এর সাথে জড়িত বিশ্বের সব দেশ। সবাই আমেরিকার প্রতিপক্ষ। অথচ সবাই মিলে যে ঐক্যবদ্ধভাবে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার কোন লক্ষণ নেই। ধরা যাক সব দেশ এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য এক সাথে কোথাও বসল। এমনকি তারা যদি কোন সিদ্ধান্ত নাও নেয় এই বসাটাই হবে গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল। অথবা বৈদেশিক বাণিজ্যে ডলার ব্যবহার না করা, সাময়িক ভাবে সমস্ত ব্যবসা বাণিজ্য, লেনদেন বন্ধ করা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনাও আমেরিকাকে বাধ্য করত নতুন ভাবে ভাবতে, পরস্পর নির্ভরশীল এই বিশ্বে একা থাকা যায় না। এমনকি বাংলাদেশের কোন গ্রামের দরিদ্র মেয়েটি যে পোশাক শিল্পে কাজ করে সেও বিশ্ব অর্থনীতির একটি অংশ। আসলে বিভিন্ন দেশের সরকার ও ব্যবসায়ীদের নপুংশকতা ট্রাম্প বা বড় বড় কোম্পানিকে বিশ্বের ভাগ্য নিয়ে খেলার সুযোগ করে দেয়। অথচ সম্মিলিত প্রতিরোধ এখন বিশ্বের অর্থনীতির গতিপথ আমূল বদলে দিতে পারত। দুবনা, ০২ আগস্ট ২০২৫