অধরা শান্তি

ইরান এক সময় সালমান রুশদির মাথার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছিল । এটা লেখকের স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপ বিধায় নিন্দিত। কিন্তু মাথার মূল্য ঘোষণা করা নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন সময়ে একাজ করে। আমেরিকা বেন লাদেন সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদীদের মাথার মূল্য ঘোষণা করেছিল, এখন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট মাডুরোর মাথার মূল্য ঘোষণা করেছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। যদি অন্যান্য দেশ এসব করে আমরা এর বিরদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠি, কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব করলে আমরা ধরেই নেই সাহেবরা যখন বলেছেন তাহলে ঠিকই আছে। আসলে এভাবেই যুগে যুগে দেশে দেশে ব্রাহ্মণ্যবাদ গড়ে উঠেছে। ব্রাহ্মণ্যবাদ কী? এটা কারো বা কোন গোষ্ঠীর কাজকর্মকে অন্ধভাবে ন্যায্যতা দান করা। এই দেখুন ইউরোপ ও আমেরিকা বলতে গেলে রাশিয়াকে বাধ্য করল ইউক্রেন আক্রমণ করতে। কেন? তাহলে রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিক অজুহাত পাওয়া যায় আর সেটা দিয়ে রাশিয়ার অর্থনীতি ধ্বংস করে দেশটাকে নিজেদের বলয়ে আনা যায় যেমন হয়েছিল নব্বুইয়ের দশকে। এখন যখন যুদ্ধে ইউক্রেন পরাজয়ের দ্বারে, লাখ দশেক সেনা ভুপাতিত, ইউরোপের অর্থনীতির লালবাতি জ্বলার অবস্থা, যখন যুদ্ধ বন্ধ আশু কর্তব্য, তখনও তারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাইছে শান্তির নামে। সার্বিয়ায় রঙিন বিপ্লবের আয়োজন করছে। সব দেখে মনে হয় ইউরোপের নেতারা গুড়া কৃমি দ্বারা আক্রান্ত যা তাদের কিছুতেই শান্তিতে থাকতে দেয় না। যত দিন না আমরা পশ্চিমা বিশ্বের মহত্বের মোহ কাটিয়ে উঠতে না পারছি, তারা যা বলে বা করে সেটাই ঠিক এই অন্ধবিশ্বাস থেকে বেরিয়ে আসতে না পারছি - ততদিন স্বাধীনতা, শান্তি এসব অধরাই রয়ে যাবে।

দুবনা, ২০ আগস্ট ২০২৫

Comments

Popular posts from this blog

রিসেটের ক্ষুদ্র ঋণ

প্রশ্ন

রিংকু