আলাস্কা সামিট
আলাস্কা সামিট নিয়ে বিভিন্ন জায়গার খবর দেখে বুঝলাম ট্রাম্প ও পুতিনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলেই বেশিরভাগ মানুষের ধারণা। এসব বলছে পশ্চিমা মাধ্যম। মনে প্রশ্ন জাগে এটা সত্য নাকি মনের ইচ্ছা কলমে প্রকাশ করা। কারণ এসব মাধ্যম ইউক্রেন ও ইউরোপের অনুপস্থিতিতে কোন চুক্তি হোক সেটা চায়নি।
আমার আরও মনে হয়েছে একদল মানুষ ধারনা করেছে আলোচনা মানেই আত্মসমর্পণ যেটা কিছুদিন আগে ফন ডের লায়েন করেছে ইউরোপের হয়ে। দুই পক্ষের লড়াইয়ে একপক্ষ দুর্বল হলে সেটা হয় মাইর আর দুই পক্ষ সমান হলে হয় মারামারি। সেখানে সহজে সমঝোতা আসে না, অনেক অমীমাংসিত প্রশ্ন থেকেই যায়।
প্রেস কনফারেন্সে পুতিন ও ট্রাম্পের বক্তব্য শুনে মনে হয়েছে এটা সাত দিনের প্রায় বিনা প্রস্তুতিতে আয়োজিত কোন সামিট নয়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার ফসল। ইউক্রেন নিমিত্ত মাত্র আর সেটা এদের সার্বিক যোগাযোগ থেকে দৃষ্টি এড়ানোর জন্য।
ইউক্রেন প্রশ্নে সমঝোতা হয়নি। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ পূর্ববর্তী ন্যাটোর কাছে তাদের নিরাপত্তার দাবিতে অটল সেটা নতুন করে ব্যক্ত করেছে। রাশিয়ার নিরাপত্তা বাইপাস করে ইউরোপ ও ইউক্রেন নিরাপদ নয় এটা তারা বুঝিয়ে দিয়েছে এবং এ বিষয়ে আমেরিকার সাথে একযোগে কাজ করার আগ্রহ জানিয়েছে।
শক্তির অবস্থান থেকে কাজ করা কখনো কখনো দুর্বলতার পরিচয়। আমেরিকা সবসময় সেখান থেকে কাজ করে। ফলে তাদের ছোটখাটো ব্যর্থতা মানুষ বড় করে দেখে। এটা অনেকটা বুমরা উইকেট বা কোহলি রান না পেলে জনমনে যে হতাশা তৈরি হয় সেটার মত যদিও এসব অস্বাভাবিক কিছু নয়।
আমার ধারণা ইউক্রেনের বাইরে অনেক ব্যাপার নিয়েই আলোচনা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের অনেকেই অনেক আগে থেকেই এই সামিট ইয়াল্টা সামিটের আধুনিক রূপ মনে করছে যেখানে চার্চিল তথা বৃটেনের স্থান নেই। আর এটাই বৃটেনের এই আলোচনার বিরোধিতার কারণ। যদি তাই হয় আমরা ধীরে ধীরে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা দেখতে পাব।
অসুস্থ বিশ্ব রাজনীতিতে ইউক্রেন অনেকটা ক্যান্সারের মত। এখানে অস্ত্রোপচারের জন্য শরীরের অন্যান্য অংশের, বিশেষ করে ইউরোপের মানসিক সমস্যার উন্নতি দরকার।
এমনকি এই মুহূর্তে যদি ইউক্রেন সমস্যার কোন সমাধান নাও হয় এই আলোচনা ভবিষ্যৎ বিশ্বরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
মস্কো, ১৬ আগস্ট ২০২৫
Comments
Post a Comment