Posts

সিপিবি আমার প্রথম ও শেষ দল

Image
গত শনিবার সকালে টেলিফোন বেজে উঠলো, অন্যদিক থেকে পরিচিত গলা বলল, "বিজনদা, প্রথম আলোর মতিউর রহমান এখন মস্কো আছেন। বিকেলে আমাদের সময় দিয়েছেন দেখা করার জন্য। আপনি থাকবেন কিন্তু।" যদিও আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলাম না, দেখা করাটা দরকার কি না, তবুও বললাম ঠিক আছে। আজকাল আমি কিছু কিছু জিনিসের খুব অভাব বোধ করি - যেমন জ্ঞানবুদ্ধি, সময়, টাকা-পয়সা। জ্ঞানবুদ্ধির অভাব আবার বরাবরই  ছিল, এর সাথে অর্থ যোগ হয়েছে বাবার হোটেল ত্যাগ করার পর, এখন আবার সময়টা যোগ হয়েছে। তাই খুব জরুরী  কিছু না থাকলে চেষ্টা করি মস্কো গেলে বাসায়ই সময় কাটাতে। তাছাড়া বুঝতে পারছিলাম না, দেখা করেই বা কি হবে? হ্যা দেশের কথা জিজ্ঞেস করা যায়, জিজ্ঞেস করা যায় প্রথম আলোর কিছু কিছু লেখা সম্পর্কে, তার পরেও কেন যেন মন চাইছিল না যেতে - আবার ভাবলাম এই উপলক্ষ্যে কিছু বন্ধুর সাথে দেখা হবে, সেটাই বা খারাপ কি?  বাসায় বললাম বিকেল ৮ টার পর বাইরে যাবো, যাতে কোনো জরুরী  কাজ থাকলে আগেই বলে। যেমন বলেছিল, ঠিক ৯ টায় চলে এলাম মেট্রোপলিটন হরেলের সামনে। তখন কেউ আসেনি। দাড়িয়ে দাড়িয়ে বোর হচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম আদৌ আসার দরকার ছিল কি না। ধীরে ধীর...

কেন?

Image
কেন? এটা আমার আজন্ম প্রশ্ন। হয়ত পদার্থ বিজ্ঞানের ছাত্র হবার কারণে। তাই কারণে-অকারণে এই প্রশ্ন করে যাই সারা জীবন। ছেলে এক গ্লাস চা চাইল, আমি বলি, "কেন"? বউ বললো এক প্যাকেট দুধ কিনতে, আমি বলি "কেন"? জানি প্রশ্নগুলো অবান্তর তবুও করে যাই। অভ্যেস বলে কথা। আমার এমন অনেক অভ্যেস আছে, যেমন কোনো কথার উত্তরে ভালো, ঠিক আছে এইসব বলা। অনেকটা রোবটের মত - কিছু একটা শব্দ করা আর কি, যদিও আমার ক্ষেত্রে সেটা সময় আর পরিস্থতি বিবেচনায় ভিন্ন অর্থ বহন করে। যেমন ভালো আমার জন্য শুধু ভালই নয়, বুঝলাম, জানা রইলো এই সবের প্রতিশব্দ। একবার তো বউ আমাকে ওর  কোনো এক ঘনিষ্ট আত্মিয়ের মৃত্যু সংবাদ দিলে আমি ভালো বলায় আমার সাথে কয়েক দিন কথা বলাই বন্ধ করে দিল। তারপরও আমি এসব বলে যাই - কারণে-অকারণে প্রশ্ন করে যাই। মনে আছে মাথায় কত প্রশ্ন আসে দিচ্ছে না কেউ জবাব তার সবাই বলে মিথ্যে বাজে বকিসনা আর খবরদার তারপরেও না বকে পারি না, না বলে পারি না ... গত কয়েক দিনে আমাদের দেশে একজন শিক্ষক, একজন সাধু, একজন এলজিবিটি পত্রিকা চালক আর তার বন্ধু নাই হয়ে গেলেন। চাপাতিকে যদি annihilation অপারেটর হিসেবে দেখি, তবে মানুষের গ...

যদি আমি ভোট দিতাম

Image
আর মাত্র ৩ দিন পরে SAAB এর নির্বাচন - প্রার্থীদের অনেককেই চিনি জানি ব্যক্তিগত ভাবে, তাছাড়া সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ায় পড়াশুনা করেছেন বলে অনেককে না চিনলেও সবাই কেমন  যেন আপন হয়ে গেছেন। তাই ভোট দেয়াটা একটা বিরাট ঝামেলার ব্যাপার। কাউকে অখুশি করতে চাইনা, আবার সবাইকে খুশিও করা যাচ্ছে না বলে নিজের কাছেই কেমন যেন সংকোচ বোধ হচ্ছে। তার পরেও কাউকে তো বেছে নিতেই হবে। এরই মধ্যে বেশ কিছু লোক, যাদের নির্দ্বিধায় ভোট দিতে পারতাম, প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাড়িয়েছেন। দুএক জন নির্বাচিত হলে কি করবেন, মানে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার  প্রকাশ করেছেন। এখানে দু একটা আপত্তিকর নির্বচনী প্রচারনাও দেখেছি যা কষ্ট দিয়েছে। আসলে নির্বাচন মানেই মনে হয় নোংরামি - যা দেখে হতাশ না হয়ে পারিনি। তার পরেও দেশে থাকলে আর ভোটের অধিকার থাকলে তো ভোটটা  দিতেই হত - তাই এত কথা। আজ কাল আমি কাউকে কথা দেইনা - কথা দেই নিজেকে, মানে যদি কাউকে বলি এই কাজটা করব, ঠিক সেটা করি। অন্যকে ঠকানো যায়, তবে নিজেকে ঠকানো কঠিন। ভোটের ব্যাপারটাও আমার জন্য তাই। কাউকে ভোট দিলে আমি আসলে নিজেকেই ভোট দেই, কারণ ওই লোকের উপর নিজের আশা-আকাঙ্খা আর স্বপ্...

স্বাধীন! স্বাধীন? স্বাধীন ............

Image
আজ ২৬শে মার্চ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। ১৯৭১ এর ২৫শে মার্চের কালো রাতে পাকিস্তানী  হানাদার বাহিনী ঝাপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের  উপরে, সেই পাশবিক শক্তির বিরুদ্ধে দীর্ঘ ৯ মাস লড়াই করে ৩০ লক্ষ প্রাণ আর ২ লক্ষ মা-বোনের  মানের বিনিময়ে বিশ্বের মানচিত্রে উদয় হয় নতুন সূর্য্য, রক্তে রাঙ্গা লাল সূর্য্য  বাংলার সবুজ ধানে ভরা মাঠের উপরে। স্বাধীনতা পায় বাঙালি জাতি। এর পর কেটে গেছে ৪৫ বছর - আর সেই ছোট বেলায় পড়া  "স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা আরো কঠিন" বাক্যটা আরো বেশি করে সত্য হয়ে উঠছে আমাদের জীবনে। ১৯৪৭এ যখন ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতা লাভ করে, সেটা ছিল মূলত উপমহাদেশে বৃটিশ  রাজের অবসান। সে বিবেচনায় ভারত ও পাকিস্তানে স্থানীয় এলিটদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মধ্য দিয়ে বৃটিশ উপনিবেশের পতন ঘটলে এ দুটো দেশ এক অর্থে পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধু মাত্র পাকিস্তানের কাছ থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতায় নয়, এটা ছিল একই সাথে আদর্শগত স্বাধীনতা, পাকিস্তানের মূল স্তম্ভ ধর্মের ভিত্তিতে রচিত দ্বিজাতি তত্ব বর্জন করা,  রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা, স্বাধীন...

SAAB এর নির্বাচন এবং

Image
দুদিন আগে SAAB এর নির্বাচন নিয়ে একটা নোট লিখেছিলাম, যেখানে SAAB এর কাজকর্ম নিয়ে আমার চিন্তা ভাবনা আর স্বপ্নের কথা লিখেছিলাম| লিখেছিলাম বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে SAAB এর অবস্থান কি হতে পারে সে কথা| যদিও লেখাটা আমার, অনেকের সাথে কথা বলে জেনেছি SAAB   নিয়ে অনেকেই এমনটাই ভাবে, তাই বলা যায় ওটা ছিলো একটা কালেক্টিভ ভাবনা| আর যেহেতু লেখাটা নির্বচনকে সামনে রেখে, তাই স্বাভাবিকভাবেই এসেছিলো কি ধরনের নেতৃত্ব SAAB কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে সে কথা| ওই দিনকার প্রার্থী তালিকায় যে নামগুলো ছিলো, তাতে আমার মতে অধ্যাপক আবুল বারকাত ছিলেন যোগ্যতম, তাই তার নামটাও এসেছিলো ওখানে| পরে দেখলাম উনি প্রতিদ্বন্দিতা থেকে সরে দাড়িয়েছেন| এটা অবশ্য তার অধিকার, চাইলে উনি দাড়াতেও পারেন আবার সরে দাড়াতেও পারেন| এ ব্যাপারে মোকসেদুল হামিদ লিখেছিলেন, “ শ্রদ্ধেয় আবুল বারকাত ভাই নিজেকে প্রমূল্যায়ন না করে বন্ধুদের অনুরোধে নিজের অঙ্গিকারে অটল থাকতে পারেন নি। তাঁর সম্পর্কে আমার মত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র মানুষের মন্তব্য করা সমীচীন নয়। তবুও আমি নিরাশাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আশাবাদী হয়ে থাকতে চাই। ” কথাটা ঠি...

SAAB নির্বাচন ও কিছু কথা

Image
সোভিয়েত অলুম্নাই এসোসিয়েসন, বাংলাদেশ (SAAB)এর সাধারণ নির্বাচন আগামী ১লা এপ্রিল। যদিও সাব এর সাথে সরাসরি জড়িত নই, তবুও একজন সোভিয়েত অলুম্নাই হিসেবে এর দৈনন্দিন জীবন আমাকে নাড়া করে, এফ বি তে এর খবর দেখে মনে মনে হলেও বন্ধুদের পাশে গিয়ে দাড়াই, উপভোগ করার চেষ্টা করি ওই সব মুহূর্তগুলো। আমি সোভিয়েত ইউনিয়নে আসি ১৯৮৩ তে - শুরু থেকেই ছিলাম মস্কোর গণমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে - তাই এখনকার সাব এর অনেকের সাথেই সরাসরি পরিচিত। বাংলাদেশ থেকে প্রথম ছাত্ররা রাশিয়া আসে ১৯৭২ সালে, তাই ধরে নেয়া যেতে পারে প্রথম অলুম্নাই দেশে ফিরেছিলেন ১৯৭৮ বা ১৯৭৯ সালে। তখন দেশে চলছে ভিন্ন হওয়া। যে উদ্দেশ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশী তরুনদের সোভিয়েত ইউনিয়নে পাঠিয়েছিলেন, দেশ চলছে তখন তার উল্টো স্রোতে। তাই আমার আসার আগে মানে ১৯৮৩ আগে SAAB এর নাম শুনিনি - যদিও বাম রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার ফলে শোনার কথাটাই ছিল স্বাভাবিক। তবে তখনই বেশ কিছু সোভিয়েত ফেরত বিশেষজ্ঞদের জানার সৌভাগ্য হযেছিল, ওনারা ছিলেন সবাই মানিকগঞ্জ এলাকার। দেশের রাজনৈতিক কারণেই ওনারা তখন লাইম লাইটে ছিলেন না। তবে ১৯৮৪ -১৯৮৫ র দিকে যখন এক...

১৭ই মার্চ

Image
আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মদিন| দেশে আজ পাড়ায় পাড়ায় তার জন্মদিন পালন করা হবে – শত শত মানুষ তার নামে শপথ নিয়ে দেশ গড়ার স্বপ্নের কথা বলবে – বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ| এই মুজিব সৈনিকদের মধ্যে যারা খুব বেশি রোমান্টিক – তারা এখনো শুধু সোনার বাংলার স্বপনই দেখে না, একদিন যে তা বাস্তবায়িত হবে – তাতে তাদের অটুট বিশ্বাস| আরো কিছু বক্তা, যাদের বিশ্বাস তেমন পোক্ত নয়, বলতে বলতে এক সময় ক্ষনিকের জন্য হলেও বিশ্বাস করবে নিজের কথা গুলো| তবে বক্তাদের এক বিরাট অংশ যারা চেষ্টা করবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি তাদের বিশ্বাস যে সত্যিই   গভীর তা উপস্থিত জনতাকে বিশ্বাস করাতে| এরা আসলে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে যত না বিশ্বাসী, তার চেয়ে বেশি বিশ্বাসী বঙ্গবন্ধুর নামকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করতে| জন্মদিনের এই বিশাল আয়োজনে এই সব ভুয়া দেশ ও বঙ্গবন্ধু প্রেমিকরা যাতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নগুলোকে কুক্ষিগত না করে সে ব্যাপারে সজাগ থাকা দরকার| বঙ্গবন্ধুর জীবন ছিলো বাঙ্গালী জাতির জন্য ত্যাগের ইতিহাস – কতবার দেশের জন্য জেলে গেছেন, কতবার মন্ত্রিত্বের হাতছানি কাটিয়ে লড়ে গেছেন সাধারণ মানু...