অবাক কান্ড
শনিবার সকাল। মস্কো। ঘুম থেকে ওঠার তেমন তাড়া নেই। ক্রিস্টিনার ক্লাস ছিল। ও চলে গেলো সকালে উঠেই। এর পর বেরুলো মনিকা। সেভা আমাকে চা ঢালতে বলে সেই যে কম্পিউটারে বসলো, ওঠার আর নাম নেই। ও প্রায়ই এটা করে। আমাকে কাজ করতে দেখলেই "পাপা, চা খাবো বা এটা দাও, ওটা দাও" বলে বিরক্ত করতে শুরু করে, আর আমি উঠলেই বসে পরে খেলতে। আমি অবশ্য অনেক আগেই বুঝে গেছি ওর চালাকি তা, তবে ইচ্ছে করেই এখনো উঠে যাই, কেননা আর বছর-দুই পরে ও নিজেও আর এমনটা করার দরকার বোধ করবে না।
এরই মধ্যে গুলিয়া ওকে কম করে হলেও এক হাজার বার বললো ভায়োলিন আর পিয়ানো বাজাতে - আর সেভাও এই যাচ্ছি এই যাচ্ছি করে কাটিয়ে দিলো ঘন্টা। এরপর আমরা বেরুলাম দুজনেই, গুলিয়া ওর বোনের বাসায়, আমি মিউজিক্যাল স্কুলে। কিছুটা একসাথেই যেতে হয়, পরে ও মেট্রোতে নেমে গেলো, আমি ট্রামে করে এগিযে চললাম। নামার আগে বললো আমি যেন এক ঘন্টা পরে সেভাকে ফোন করে বলি ভায়োলিন বাজাতে। আমি বললাম,
- আমার কি দরকার, তুমি ফোন করলেইতো হয়।
- আমি চাই, যে তুমি ওকে ফোন করো।
- আমি করবো না।
-কেন?
- আমি জানি, বললেও ও এখন ভায়োলিন বা পিয়ানো বাজাবে না। হয় ও আমাকে মিথ্যে বলবে অথবা আমার কথা শুনবে না। জেনে শুনে আমি এটা করবো না।
ও চলে গেলো। আমি ট্রামে করে যাচ্ছি আর ভাবছি, সারা জীবন নিজে কখনো কারো কথা শুনলাম না, ভালো-মন্দ যা কিছু করলাম, নিজের বুদ্ধিতেই। তা পদার্থবিদ্যা পড়াই হোক আর এদেশে থাকাই হোক। গুলিয়াকে জানি ২৫ বছর। ওকেও দেখিনি কখনো কারো কথা শুনতে। সব করে নিজে যেটা ভালো মনে করে। তাহলে আমরা কেন চাইবো ছেলেমেয়েরা আমাদের কথামতো চলবে, আমরা যা চাইবো তাই করবে।
আশ্চর্য এই মানুষ জাতি, নিজেরা যা না মেনে চলেছে সারা জীবন, ঠিক সেই জিনিসটাই যাতে তাদের ছেলেমেয়েরা মেনে চলে, এটাই চায় সারা জীবন। গুলিয়া ছেলেমেয়েদের কথা না শোনা নিয়ে খুব ঝামেলা করলে তাই বলি,
- আমি যদি বাবা মার্ কথা শুনতাম, তাহলে তোমাকেও বিয়ে করা হতো না, এ দেশে থাকায় হতো না। তোমার কাজ যেমন বাচ্চাদের আর মাঝে মধ্যে আমাকে বকা, বাচ্চাদের কাজ ঠিক তেমনি বাবা-মায়ের কথা না শোনা। যতদিন না ওদের নিজেদের ছেলেমেয়ে হচ্ছে, হাজারো বললেও বুঝবে না যে বাবা-মার্ কথা শোনা দরকার।
মস্কো, ১৬ অক্টবর ২০১৬
এরই মধ্যে গুলিয়া ওকে কম করে হলেও এক হাজার বার বললো ভায়োলিন আর পিয়ানো বাজাতে - আর সেভাও এই যাচ্ছি এই যাচ্ছি করে কাটিয়ে দিলো ঘন্টা। এরপর আমরা বেরুলাম দুজনেই, গুলিয়া ওর বোনের বাসায়, আমি মিউজিক্যাল স্কুলে। কিছুটা একসাথেই যেতে হয়, পরে ও মেট্রোতে নেমে গেলো, আমি ট্রামে করে এগিযে চললাম। নামার আগে বললো আমি যেন এক ঘন্টা পরে সেভাকে ফোন করে বলি ভায়োলিন বাজাতে। আমি বললাম,
- আমার কি দরকার, তুমি ফোন করলেইতো হয়।
- আমি চাই, যে তুমি ওকে ফোন করো।
- আমি করবো না।
-কেন?
- আমি জানি, বললেও ও এখন ভায়োলিন বা পিয়ানো বাজাবে না। হয় ও আমাকে মিথ্যে বলবে অথবা আমার কথা শুনবে না। জেনে শুনে আমি এটা করবো না।
ও চলে গেলো। আমি ট্রামে করে যাচ্ছি আর ভাবছি, সারা জীবন নিজে কখনো কারো কথা শুনলাম না, ভালো-মন্দ যা কিছু করলাম, নিজের বুদ্ধিতেই। তা পদার্থবিদ্যা পড়াই হোক আর এদেশে থাকাই হোক। গুলিয়াকে জানি ২৫ বছর। ওকেও দেখিনি কখনো কারো কথা শুনতে। সব করে নিজে যেটা ভালো মনে করে। তাহলে আমরা কেন চাইবো ছেলেমেয়েরা আমাদের কথামতো চলবে, আমরা যা চাইবো তাই করবে।
আশ্চর্য এই মানুষ জাতি, নিজেরা যা না মেনে চলেছে সারা জীবন, ঠিক সেই জিনিসটাই যাতে তাদের ছেলেমেয়েরা মেনে চলে, এটাই চায় সারা জীবন। গুলিয়া ছেলেমেয়েদের কথা না শোনা নিয়ে খুব ঝামেলা করলে তাই বলি,
- আমি যদি বাবা মার্ কথা শুনতাম, তাহলে তোমাকেও বিয়ে করা হতো না, এ দেশে থাকায় হতো না। তোমার কাজ যেমন বাচ্চাদের আর মাঝে মধ্যে আমাকে বকা, বাচ্চাদের কাজ ঠিক তেমনি বাবা-মায়ের কথা না শোনা। যতদিন না ওদের নিজেদের ছেলেমেয়ে হচ্ছে, হাজারো বললেও বুঝবে না যে বাবা-মার্ কথা শোনা দরকার।
মস্কো, ১৬ অক্টবর ২০১৬
Comments
Post a Comment