প্রশ্ন

কয়েকদিন আগে এক বন্ধু প্রশ্ন করল

আত্মা (soul) কী? আত্মার কি কোনো অস্তিত্ব আছে?
কোনো ছবি? কোনো ভিডিও?
যুক্তিপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আশা করি।

কি উত্তর দেওয়া যায়? চাক্ষুস দেখাই কি শুধু কোন কিছুর অস্তিত্ব প্রমাণ করে? আমরা অনেক কিছুই দেখতে পাইনা, তার পরে বিভিন্ন ভাবে তাদের অস্তিত্ব অনুভব করি।

আসলে কিছু প্রশ্নের উত্তর হয় না, মানে যে উত্তরই কেউ দিক না কেন সেটার সত্যতা/ সঠিকটা নিয়ে প্রশ্ন করা যায়। আর এ ধরণের প্রশ্ন মানুষ মূলত করে আগে থেকেই নিজে তার একটা উত্তর তৈরি করে। আপনার উত্তর তার উত্তরের পক্ষে গেলে ভালো, না গেলে ঝামেলা। এসব যত না প্রশ্ন তার চেয়ে নিজের বিশ্বাসের পক্ষে সমর্থন যোগাড় করা নয়তো নিজে বিশ্বাসকে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা।

আমরা কি বাতাস দেখি বা বাতাসের ছবি? না। তবে বিভিন্ন ভাবে বাতাসের অস্তিত্ব অনুভব করি। তা সে বাঁশ ঝাড়ের শব্দই হোক আর ঝড়ের তাণ্ডব দেখেই হোক। তবে এসবই পরোক্ষ। যদি আরেকটু উপরর দিকে যাই কি দেখি? আমরা তো ডার্ক ম্যাটার বা ডার্ক এনার্জি দেখতে না। এমন কি দেখার কোন উপায়ও নেই। কেননা এরা স্বাভাবিক বস্তুর সাথে মিথস্ক্রিয়া মানে ইন্টার‌্যাকশন করে না। তারপরেও বিজ্ঞানীরা এদের অস্তিত্ব মেনে নেন। কারণ আমরা পরোক্ষ ভাবে মহাবিশ্বের বিবর্তনে এদের প্রভাব দেখি। তাহলে আত্মাকে কেন দেখতেই হবে? একজন মৃত ব্যক্তি চলাফেরা করে না বা কোন কিছুই করে না, অথচ একজন জীবিত ব্যক্তি কত কিছুই না করে। এটা মানুষের ক্ষেত্রে যেমন সত্য তেমনি যেকোনো প্রানীর ক্ষেত্রেই সত্য। তার মানে জীবিতের এক আলাদা শক্তি থাকে, প্রাণ শক্তি থাকে। একে আত্মা বললে কি সমস্যা আছে? মনে হয় না। সমস্যা হল মৃত্যুর পর আত্মার জীবন নিয়ে, মানে সে হাজতে বসে বিচারের অপেক্ষা করবে নাকি কোন প্রানী রূপে পৃথিবীতে আবার ঘানি টানতে আসবে এতে। আসলে জীবন এত ক্ষুদ্র যে এসব ভেবে সময় নষ্ট না করে জীবনটাকে কিভাবে অর্থবহ করা যায়, কি করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবীটা আরেকটু সুন্দর করা যায় সে কাজ করাই সময়ের সঠিক ব্যবহার।

দুবনা, ২৭ মে ২০২০


Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি