গোষ্ঠী ভাবনা
জুলাই আগস্টের আন্দোলনে নারীদের ব্যাপক ও ডিসিসিভ অংশগ্রহণ সত্ত্বেও ক্ষমতার বলয়ে আজ তারা অনুপস্থিত। এ নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি ছাত্র-জনতার আন্দোলন নামের মধ্যেও নারীদের উপস্থিতি নেই বলে একে শিক্ষার্থী-জনতার আন্দোলন বলে অভিহিত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। কেউ মন্তব্য করেছেন ছাত্র শব্দটি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নামে আছে সেটাও নারীদের উপস্থিতি অগ্রাহ্য করে।
আমার মনে হয় ঐ ভাবে ভাবলে মানুষের মধ্যেও মানবী অনুপস্থিত। আসলে ইদানিং কালে এই প্রশ্নগুলো সামনে চলে এসেছে যদিও মানুষ বললে আমরা নারী পুরুষ সবাইকে বুঝি। একই ভাবে ছাত্র বলতে ছাত্র ছাত্রী নির্বিশেষে সবাইকে বোঝায়। ইদানিং অবশ্য অনেক ক্ষেত্রেই এসব শব্দের স্ত্রীবাচক শব্দ ব্যবহার করা হয় না। তবে প্রশ্নটি যতটা না শব্দের তারচেয়ে বেশি আন্দোলনে মেয়েদের ব্যাপক ও ডিসিসিভ উপস্থিতির পরেও জনজীবন থেকে এখন তাদের রহস্যময় অনুপস্থিতি। সমস্ত দেশটাকেই যখন ধোঁকা দেয়া হল মেয়েরা বাদ যাবে কেন? তাছাড়া শিক্ষার্থী শব্দ ব্যবহার কতটুকু যৌক্তিক? কারণ শিক্ষার্থী মানে যারা শিক্ষা বা জ্ঞান অর্জন করতে আগ্রহী। ব্যতিক্রম নিশ্চয়ই আছে তবে সব দেখে মনে হয় এদের বেশিরভাগই চাকরি প্রত্যাশী বা অর্থ প্রত্যাশী এবং সেটা যত কম পরিশ্রমে হয়। তাই নামের পেছনে না লেগে কীভাবে নারী সহ সকল স্তরের জনতার অধিকার আদায় করা যায় সেটা নিয়েই ভাবতে হবে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে এই নাটক কোটা বিরোধী আন্দোলন দিয়ে শুরু হলেও এখন শুরু হয়েছে নতুন কোটা। সমস্যা হয়তো কোটায় ছিল না, ছিল ওরা কেন সুবিধা পাচ্ছে আমরা থাকতে। ওরা আমরার এই বিভাজনের কারণ আমরা এখনও গোষ্ঠী চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারিনি। বৈষম্য দূর করতে হলে সবার আগে গোষ্ঠী ভাবনা ত্যাগ করতে হবে।
দুবনা, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
Comments
Post a Comment