আদর্শ

এই যে এত আদর্শ আদর্শ করেন, তা কত প্রগতিশীলই তো মৌলবাদী হয়ে গেল, কিন্তু মৌলবাদীরা তো প্রগতিশীল হয়না। কি  ব্যাপার বলুন তো?
কি আর ব্যাপার। আদর্শের প্রতি অটল বিশ্বাস?
মানে? ঠাট্টা করছেন?
ঠাট্টা কেন হবে? সত্যি কথা বলছি।
তাহলে একটু খুলে বলুন।
দেখুন, প্রগতিশীল মানেই বিজ্ঞানমনস্ক আর মার্ক্সবাদী। অন্তত গড়পড়তা সেটা এমনটাই।
ধরলাম।
এরা বিজ্ঞানের কি জানে? আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্ব, মানে তারা বিশ্বাস করে সব কিছুই আপেক্ষিক। আর মার্ক্সের কাছ থেকে তারা শিখেছে সব কিছুই পরিবর্তনশীল। ঠিক?
ঠিক!
তাই প্রগতিশীলরা মার্ক্সের তত্ত্বে বিশ্বাস রেখে বদলায়। কিন্তু বদলিয়ে যাবে কোথায়? বদলাতে বদলাতে মৌলবাদী হয়ে যায়। তখন তারা আশ্রয় নেয় আইনস্টাইনের। বলে প্রগতিশীলতা, মৌলবাদ - সবই আপেক্ষিক, আসল কথা কে, কোত্থেকে দেখছে। আর এভাবেই তারা তাদের পরিবর্তনকে যৌক্তিক করে অন্যের চোখে। তারা যে যুগের হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে তা নিয়ে গর্বও বোধ করে।
আর মৌলবাদীরা?
মৌলবাদীরা ডগম্যাটিক। তারা পরিবর্তনে বিশ্বাস করে না, তাদের জগত হাজার হাজার বছর আগে যেমন ছিল, আজও তেমনই আছে। তাদের আদর্শ আবসাল্যুট, আপেক্ষিকতার কোন স্থান নেই সেখানে। তাই তারা তাদের বিশ্বাসে অটল থেকে মৌলবাদীই থেকে যায়।  
তার মানে এটা ওয়ান ওয়ে রোড?
না। দু পক্ষই তাদের বিশ্বাসে ভর করেই সামনে এগোচ্ছে, যে পরিবর্তনে বিশ্বাস করে সে বদলে গিয়ে মৌলবাদী হচ্ছে, যে পরিবর্তনে বিশ্বাস করে না সে যেমন ছিল তেমনি রয়ে যাচ্ছে। তাই রাস্তা ওয়ান ওয়ে না হলেও ফলাফল একতরফা। বোঝা গেল?
বুঝলাম। 
কি বুঝলেন?
বুঝলাম যে কিছুই বুঝলাম না। সব আরও গোলমেলে হয়ে গেল।
সেটা খুব ভালো।

দুবনা, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯










Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি