প্রশ্ন

অনেক অনেক আগে যখন বিভিন্ন দেশের লোকজন অন্য কোন দেশে যেত, তা সে আরব বা সেন্ট্রাল এশিয়ার লোকজন ইন্ডিয়া হোক, আর ফরাসী, স্প্যানিস, ইংলিশ, ডাচ বা পূর্তগীজরা এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা বা অস্ট্রেলিয়ায় হোক, এমনকি সেই সুদূর অতীতে আর্যরা ভারতে হোক - সবাই তাদের সংস্কৃতি, ধর্ম ইত্যাদি নিয়ে যেত সাথে করে। এখন যদি ইউরোপের লোকজন ভাবে এশিয়া, আফ্রিকা বা আরব বিশ্ব থেকে আসা লোকগুলো রাতারাতি ইউরোপিয়ান হয়ে যাবে, তাহলে বুঝতে হবে এরা এমনকি নিজেদের ইতিহাসও জানে না। আর তাই যদি হয় তবে আমাদের কেন প্রতি পদে পদে তাদের অনুসরণ করতে হবে, কেন ভালোটা গ্রহণ করে আমরা মন্দটার প্রতিবাদ করতে পারব না। সামাজিক রীতিনীতি তো পদার্থবিদ্যার সূত্র নয় যে দেশ কাল ভেদে সব জায়গায় এক হবে, সব জায়গায় চলবে। এসব রীতিনীতি জেনারেশনের পর জেনারেশন ধরে মানুষ রপ্ত করে। এতো সহজে সেসব ভোলা বা অস্বীকার করা যায় না। আজ আমাদের আইন কানুন সব কিছুই পশ্চিমা শিক্ষা দ্বারা প্রভাবিত। এমন কি ভালো মন্দের সংজ্ঞাটাও। আমরা পশ্চিমা অনেক কিছু গ্রহণ করতে গিয়ে দেশের বৈশিষ্টের কথা মনে রাখিনি। ফলে শিক্ষিত সমাজের একাংশ সেসব গ্রহণ করলেও সাধারণ মানুষ সেটা পারে নি, সাধারণ মানুষ আসলে নিজেদের সেভাবে তৈরি করতেই পারেনি। সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়নি, তাদের যে মতামত থাকতে পারে সেটা ভাবাও হয়নি। মনে করা হয়েছে শিক্ষিত সমাজ যদি গ্রহণ করে আম জনতা বরাবরের মত মুখ বুজে সব গিলবে। ফলে যখনই কেউ যেটা মানুষ সহজে বুঝতে পারে এমন কোন মতামত নিয়ে আম জনতার কাছে হাজির হয়েছে তারা প্রশ্ন না করে সেটা গ্রহণ করেছে। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের অন্ধভাবে পশ্চিমা সবকিছু গ্রহণ করার আগ্রহই কি সাধারণ মানুষকে যা কিছু আরব থেকে আসা সেটাই প্রশ্ন না করে গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করছে না?


দুবনা, ০১ ডিসেম্বর ২০২০




Comments

Popular posts from this blog

২৪ জুনের দিনলিপি

ছোট্ট সমস্যা

প্রায়োরিটি