বুদ্ধিজীবী আজ শহীদ
বাঙালি তার অস্তিত্বের লড়াই শুরু করেছিল ১৯৪৮ সালে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ যা সশস্ত্র রূপ নেয়। ১৯৪৮ থেকে পায়ের নীচে মাটি হারাতে হারাতে যখন পরাজয় নিশ্চিত একাত্তরের ডিসেম্বরের ঠিক সেই দিনগুলিতে বাঙালি জাতীয়তাবাদের শত্রু আর দ্বিজাতি তত্ত্বের ধারক ও বাহকেরা শুরু করে তাদের নতুন যুদ্ধ বুদ্ধিজীবীসহ এদেশের সেরা সন্তানদের হত্যার মধ্য দিয়ে। বিজয়ের আনন্দে উৎফুল্ল বাঙালি তখন সেটাকে আমল দেয়নি। ফলে আমরা আজ আবারও দেখছি তাদের বিষাক্ত দাঁত, উদ্যত ফণা। যে শত্রু পরাজয় মেনে নেয়নি, ক্ষমতার লাভ লোকসানের হিসেব মিলাতে গিয়ে আমরা তাদের করেছি কৌশলগত বন্ধু। ফলে পাকিস্তানের শাসন থেকে স্বাধীন হলেও আমরা পাকিস্তানী চিন্তা চেতনা থেকে মুক্ত হতে পারছি না। জাতি আজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে মৌলবাদের বলয়ে। দ্বিধাবিভক্ত স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বার বার এই অশুভ শক্তিকে রুখতে শুধু ব্যর্থই হচ্ছে না, ইনিয়ে বিনিয়ে তাদের দাবী দাওয়া মেনে নিচ্ছে। মুক্ত চিন্তার মানুষ আজ জাতীয়তাবাদী বুদ্ধিজীবীদের অভাব আবার নতুন করে অনুভব করছে। আমাদের বুদ্ধিজীবীরা এক সময়ে সাংবাদিকতা, সাহিত্য আর সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির হাতকে শক্তিশালী করেছিলেন, আজকের বুদ্ধিজীবীরা দলীয় রাজনীতির চক্রে ঘুরপাক খেয়ে রাজনীতিকে শুধু দুর্বলই করছে না, রাজনীতিবিদদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশে এক অপরাজনীতির জন্ম দিচ্ছে। এমন এক পরিস্থিতিতে জাতি স্মরণ করছে তার সূর্য সন্তানদের। এক সময় ১৪ ডিসেম্বর ছিল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, সব দেখে মনে হচ্ছে বুদ্ধিজীবী মাত্রই আজ শহীদ!
Comments
Post a Comment