Posts

Showing posts from May, 2024

জয় পরাজয়

Image
অনেক দিন আগে একটি গল্প শুনেছিলাম ফিওদরের মুখে। শয়তান এক নিষ্ঠাবান ছেলেকে নিজের সাগরেদ করবে বলে বিভিন্ন প্রলোভন দেখায়। তাতে কাজ না হলে তাকে বিভিন্ন কষ্টে ফেলে, এমনকি তার বান্ধবীকে হত্যা পর্যন্ত করে যেন সে ক্রুদ্ধ হয়ে শয়তানকে আঘাত করে। উদ্দেশ্য একটাই ছেলেটিকে তার পথ থেকে বিচ্যুত করা।  তৎক্ষণাৎ লাভের আনন্দে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই কী মূল্যে সেটা পেলাম। আর মূল্যটা অনেক সময় হয় অকল্পনীয় রকমের বেশি যদিও সেটা খোলা চোখে দেখা যায় না। কারণ এর ফলে প্রজন্মের পর প্রজন্মের দীর্ঘ দিনের শ্রমে গড়ে তোলা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আইনি ব্যবস্থার ভিত চিরতরে ভেঙে পড়তে পারে। শত্রুকে ঠেকাতে যদি যেসব ভিত্তির ওপর রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে , যেসব ভিত্তি কোন রাষ্ট্রকে ডিফাইন করে সেসব উপড়ে ফেলতে হয় তবে সে জয় পরাজয়ের চেয়েও লজ্জাজনক। কারণ এতে কোন ব্যক্তি বা দল জিতে গেলেও সমাজ ও রাষ্ট্র নৈতিক ভাবে পরাজিত হয়। দুবনা, ০১ জুন ২০২৪

একটি ঘোষণা

Image
আজ কিছু কাজ করলাম যা আমি সাধারণত করি না। বেশ কিছু লোককে আনফ্রেণ্ড করলাম। তাদের দোষ? না কোন দোষ নেই। আসলে তাদের স্ট্যাটাসের মেসেজ আমার ভাবনার সাথে যায় না। এদের কাউকেই ব্যক্তিগত ভাবে আমি চিনি না, তাদের প্রতি আমার কোন অভিযোগ নেই, কিন্তু ভেবে দেখলাম যারা আমার চিন্তাভাবনার সাথে একমত বা আমার মত করে ভাবে এদের আমার ফ্রেণ্ডলিস্টে দেখলে তারা ভুল মেসেজ পাবে। আমরা হরহামেশাই অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ফেলে দেই বা এমন কোথাও রাখি যাতে কেউ প্রয়োজন মনে করলে সেটা তুলে নিতে পারে। বন্ধুত্ব, বিশেষ করে ফেসবুক বন্ধুত্বও সেরকম। বন্ধুত্ব তো মানুষের সাথে হয় না, হয় মানুষের চিন্তার সাথে, কাজকর্মের সাথে। অথবা অন্য ভাবে বললে বন্ধুত্ব মানুষে মানুষে হয় না, হয় মানুষের চিন্তাভাবনা, কাজকর্মের সাথে। কারণ এক সাথে চলতে গেলে মত বিনিময় করতে হয়। মতের অমিল থাকতেই পারে, কিন্তু মিলের চেয়ে অমিলের পরিমাণ বেশি হলে একসাথে আর চলা যায় না। এ জন্যে আমি কোন স্পেশাল অভিযান চালাব না। কিন্তু যখন আমার টাইম লাইনে কোন প্রচণ্ড রকমের অপছন্দের মেসেজ আসবে তখন তাদের প্রোফাইলে ঢুকে যদি দেখি এদের চিন্তা ভাবনা এমনটাই, এটা কোন আকস্মিক ঘটনা নয়, তাহলে এরপর এদ...

দোয়া

Image
আমাদের দক্ষতা ও মানসিকতার চেয়েও বেশি অভাব ধৈর্যের, ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত পড়ার। যেখানে অন্যেরা  God helps those who help themselves  পুরোটা পড়ে কাজে নামে, সেখানে আমরা God helps পড়েই নেমে পড়ি আর দোয়া, আশীর্বাদ এসবের উপর ভরসা করে বসে থাকি। যেহেতু আমেরিকা ইমিগ্র্যান্ট দের দেশ, ওরা দোয়া বেশি পায়। এসব শুনে এক পুরানো গল্প মনে পড়ল  সাত সকালে মোইশা কোথায় যেন যাচ্ছে দেখে সারা জিজ্ঞেস করল  তুমি এত ভোরে কোথায় যাচ্ছ? জান না যে সকালে ওঠে ঈশ্বর তাকে সাহায্য করে? কিছুক্ষণ পরে সব টাকা হারিয়ে কিল গুতা খেয়ে মোইশা বাড়ি ফিরলে সারা জিজ্ঞেস করল  এ কি অবস্থা তোমার? আর বল না, কে যেন আমার চেয়েও আগে ঘুম থেকে উঠেছিল।  হ্যাঁ, দোয়ার আশায় বসে থাকলে অন্যেরা বেশিরভাগ সময় বেশি দোয়া পাবে। দোয়া তো ঘুষ দিয়ে নেয়া যায় না! মস্কো, ২৪ মে ২০২৪

কয়লা

Image
সেদিন খবরে দেখলাম ১৯৭০ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত ব্রিটেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইচ্ছাকৃত ভাবে এইডস, হেপাটিট ইত্যাদি জীবানু দ্বারা দূষিত রক্ত অনেক রুগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছে। এটা শুধু অল্প পয়সায় আমেরিকা থেকে রক্ত আমদানীতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, এটা ছিল বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার একটি অংশ। খবরে প্রকাশ এই কমদামি রক্ত মূলত আমেরিকার জেলে বন্দীদের কাছ থেকে সংগৃহীত। ঋষি সুনক এটাকে লজ্জাজনক বলে বর্ণনা করেছেন। চেরনোবিলের দুর্ঘটনার সময়ও একই ধরণের ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের চাপে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা বন্ধ করে নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট চালু রাখা যায় কি না সেই পরীক্ষা করছিলেন বিজ্ঞানীরা। উদ্দেশ্য ছিল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেন্টেইনিং খরচ কমানো। তারা বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও একজন আমলা সেটা চালিয়ে যেতে বলেন। ফলাফল আমরা জানি।  এক সময় আমার ধারণা ছিল সত্তরের দশক থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের আগ পর্যন্ত ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সরকার অন্তত জনদরদী ছিল। কিন্তু এখন বুঝছি কয়লা ধুলেও ময়লা যায় না। ধনীরা সব সময়ই কেন জানি না দরিদ্রদের দারিদ্র্য বাড়িয়ে নিজেদের ধন বাড়ায় আর ক্ষমতাসীনরা অক্ষমদের অক্ষমতা বাড়িয়ে নিজেদের ক...

সখী তুমি কার?

Image
সোভিয়েত আমলে এদেশে প্রাইভেট ব্যবসা নিষিদ্ধ ছিল। বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ তারপরেও এসবের সাথে জড়িত ছিল আবার অনেকেই এসব এড়িয়ে চলত। আমাদের মধ্যেও ব্যতিক্রম ছিল না। এ নিয়ে দলাদলি ছিল। যারা ব্যবসা করত না তাদের অনেকেই যারা ব্যাবসা করত তাদের সমালোচনা করত। কিন্তু এই সব সমালোচকদের অনেকেই এসব ব্যসায়ীদের ঘরে গিয়ে ভালোমন্দ খেতে বা পান করতে দ্বিধা করত না। এটা অনেকটা চুরি করে চোর না সেজে চুরির পয়সায় ভালোমন্দ খেতে ভালো মানুষ সাজা। বাম রাজনীতি করে বলে অনেকেই আমেরিকা ও সাম্রাজ্যবাদের সমালোচনা করে। শুধু তাই নয় এটাকে তারা রাজনৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করে। তাদের কাছে এটা অনেকটা মন্ত্র জপার মত। আবার আমেরিকা থেকেই যখন রাশিয়া, ইরান, চীন ইত্যাদি পশ্চিমা বিশ্বের অপছন্দের দেশ সম্পর্কে কোন প্রোপাগান্ডা মূলক খবর প্রচার করা হয় তার সত্যতা যাচাই না করেই সেটা ফলাও করে এরা প্রচার করে। অবস্থা দেখে মনে হয় বন্ধু বলে যেহেতু আর কেউ নেই তাই সবার সাথে শত্রুতা করাই এখন তাদের ধ্যান জ্ঞান। এসব দেখে খুব জানতে ইচ্ছে করে সখী তুমি কার? কারণ সত্যের পক্ষে হলে সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে আর আদর্শের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে হলে সেটাকে...

পরিমল

Image
অফিসে এসে ফেসবুক খুলতেই দেখলাম জয়নালের পোস্ট, পরিমল তুমি কোথায় গেলে? পরিমল ওদেসায় পড়াশুনা করেছে, পরে মস্কো ছিল, তারপর আমেরিকায়। ছাত্রজীবনে তেমন ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে মনে পড়ে না। ২০১০ সালে প্রবাসী পরিষদ গঠন করলে কয়েক বার দেখা হয়েছে, তবে ও আমাদের সংগঠনের প্রতি তেমন আগ্রহ দেখায়নি। ফলে ঠিক বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি। তবে আগে তেমন যোগাযোগ না থাকলেও ফেসবুকে নিয়মিত যোগাযোগ হত, আমার স্ট্যাটাসে নিয়মিত কমেন্ট করত। অনেক ক্ষেত্রে ভিন্ন মত পোষণ করলেও ফেসবুকের মাধ্যমেই এক ধরণের সখ্যতা গড়ে ওঠে। তারপর - বলা নেই কওয়া নেই - তারার খোঁজে বেরিয়ে পড়ল অন্ধকার আকাশে। আজ দু একজনের সাথে ওকে নিয়ে কথা হল। ওদের কাছেই শুনলাম ওর শারিরীক সমস্যা এখানে থাকতেই ছিল। যদিও যদি, কিন্তু এসব নিয়ে বাস্তবতা বর্ণনা করা যায় না, তারপরেও মনে হল কী হত যদি ও এখানে থাকত। এটা ঠিক অর্থনৈতিক সমস্যার কারণেই ও আমেরিকায় পাড়ি জমায়। তবে এখানে থাকলে বিনে পয়সায় চিকিৎসা পেত। আমেরিকায় পয়সা উপার্জন করলেও প্রায়ই মানুষ চিকিৎসার পেছনে অতি কষ্টে উপার্জিত অর্থ ব্যয় করতে চায় না। হয়তো পরিমলও করেনি। এটা একান্তই আমার কল্পনাপ্রসূত। হতে পারে যে ওর অসুস্থতা বোধই করেনি। ...

গুরু শিষ্য

Image
সত্যিকার গুরু যিনি শিষ্যের শুধু ভালোই চান না, তাকে ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়ে নিজেও তার মাঝে বেঁচে থাকতে চান তিনি শিষ্যকে বলেন তাঁকে অনুসরণ করতে। আর যে গুরু শিষ্যের কাঁধে ভর করে নিজের ভবিষ্যৎ কন্টকমুক্ত করতে চায় তারা বলে আমাকে অনুসরণ করার দরকার নেই, আমি যা বলি তা কর। আমেরিকায় FARA (Foreign Agent Registration Act) বলে এক আইন আছে যার মাধ্যমে আমেরিকায় যারা বিদেশী স্বার্থ প্রমোট করে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই আইন প্রণয়ন করা হয় ১৯৩৮ সালে। রাশিয়া কয়েক বছর আগে আমেরিকার আইনের চেয়ে শিথিল কিন্তু অনুরূপ একটি আইন পাশ করলে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে তীব্র বিরোধিতার সম্মুখীন হয় এটা অগণতান্ত্রিক ও মানবাধিকারের পরিপন্থী অভিযোগে। এখন জর্জিয়া অনুরূপ একটি আইন পাশ করতে গিয়ে আমেরিকার তীব্র সমালোচনা ও বিরোধিতার মুখে পড়েছে। কথায় বলে যা জিউসের জন্য অনুমোদিত ষাঁড়ের জন্য তা অনুমোদিত নয়। গণতন্ত্রে সবাই সমান। সমস্যা একটাই - কেউ জিউস আর বাকিরা বলদ। দুবনা, ১৫ মে ২০২৪

বিশ্বাস

Image
আজকাল প্রায়ই টেলিফোন স্ক্যামারদের লোক ঠকানোর খবর পাওয়া যায়। এবং এসব ঘটনার শিকার হন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞ লোকজন। এটাকে আমরা বোকামি ভাবতেই পারি। কিন্তু এই বোকা সাজার ইচ্ছে যেন আমাদের সবাইকে তাড়া করে। অধিকাংশ মানুষ চায় অল্প পরিশ্রমে অধিক উপার্জন করতে। তা সে কোটিপতি হোক আর রাস্তার ভিখারি হোক। এ থেকেই আমাদের স্বাভাবিক বিচার বুদ্ধি লোপ পায়। আমরা ছুটি অলৌকিক কিছুর পেছনে। ধর্ম বলি, রাজনৈতিক নেতাদের মিথ্যে আশ্বাস বলি, টেলিফোন স্ক্যামারদের কথায় বিশ্বাস বলি - এ সবই একই সূত্রে গাঁথা। এর ফলে কিছু মানুষ অগাধ সম্পদ ও ক্ষমতা লাভ করে আর অধিকাংশ মানুষ সর্বশান্ত না হলেও মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সমস্যা কোথায় - ধর্মে আর রাজনীতিতে নাকি মানুষের লোভ আর অন্ধবিশ্বাসে? লোভ, অন্ধবিশ্বাস এসব মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি, ধর্ম ও রাজনীতি হল অস্ত্র যা ব্যবহার করে লোক ঠকানো যায়। তবে ঠকাবে কি না সেটা নির্ভর করে ধর্ম ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের উপর। তাই দিনের শেষে মানুষ নিজেই তার ভাগ্য বিধাতা। দুবনা, ১৪ মে ২০২৪

গাছ ও মানুষ

Image
আজ একটা পোস্টে দেখলাম ভারতে মাথাপিছু গাছের সংখ্যা ১০, চীনে ৩০, রাশিয়ায় ৬ হাজারের বেশি , কানাডায় ১০ হাজারের অধিক ইত্যাদি। বাংলাদেশের নাম নেই সেই তালিকায়। এখন গাছের দিক থেকে দেখা যাক, মানে লেখক মানুষ না হয়ে যদি গাছ হত আর গাছেদের কান্ডবুকে স্ট্যাটাস দিত সেটা হত এমন  কানাডায় ১০ হাজারের বেশি গাছের দেখাশোনা করে মাত্র এক জন মানুষ, রাশিয়ার ৬ হাজারের অধিক গাছের সেবায় নিয়োজিত একজন মানুষ, চীনে প্রতি ৩০ জন গাছের পেছনে সময় দেয় একজন আর ভারতে দশজন গাছের সুশ্রষায় নিয়োজিত একজন মানুষ। আর বাংলাদেশে একাধিক মানুষ একটি গাছের যত্নে নিয়োজিত।  আসলে কে কোন জায়গা থেকে দেখে তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। দুবনা, ১১ মে ২০২৪

বিজয় দিবস

Image
১৯৯৫ সালে মস্কো যখন মহা সমারোহে বিজয়ের ৫০ বছর পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল জার্মানি সহ পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল। নতজানু ইয়েলৎসিনের এটা দরকার ছিল কিছুটা হলেও জনগণের মনোবল চাঙ্গা করার জন্য। অন্যদিকে ঠান্ডা যুদ্ধে নিজেদের বিজয়ী ভাবা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে রুশদের এই বিজয় উৎসব ছিল চোখের কাঁটা।‌ সোভিয়েত ইউনিয়নে বিজয় দিবস এরকম আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে পালন করা হত না, পয়লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস ও ৭ নভেম্বর অক্টোবর বিপ্লব দিবসের কাছে বিজয় দিবস ম্লান হয়ে যেত। তবে নতুন রাশিয়ায় বিজয় দিবস সব ছাপিয়ে সামনে চলে আসে। সোভিয়েত আমলে বিজয় দিবস ছিল অনেকটা পারিবারিক উৎসব।‌ এ দেশে এমন কোন পরিবার ছিল না যাদের এই যুদ্ধ পাশ কাটিয়ে গেছে। বর্তমানে সেই পারিবারিক পরিবেশের সাথে যোগ হয়েছে রাষ্ট্রীয় আয়োজন। যেকোন জাতির জন্য এ রকম কিছু উৎসব থাকাটা জরুরি যাকে ঘিরে সবাই সব ভেদাভেদ ভুলে এক হতে পারে। আজ পেছন দিকে তাকিয়ে মনে হয় শত বিপত্তির মধ্যেও সেদিন বিজয় দিবস উদযাপন করার সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে রাশিয়ার ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সবাইকে মহান বিজয় দিবসের শু...

প্রশ্ন

Image
ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনীতে দেবতা ও দানবেরা মিলে সমুদ্র মন্থন করে অমৃত মন্থন করেছিল। পরে দেবতারা কৌশলে সেটা নিজেরা নিয়ে অমরত্ব লাভ করে। স্বর্গ মানে কর্মহীন অলস জীবন, অন্তহীন ভোগবিলাস। পক্ষান্তরে নরক তার বিপরীত। অগ্নিকুণ্ডে বা অন্যান্য জায়গায় সীমাহীন দুর্ভোগ। এখন এটাকে যদি শোষক আর শোষিতের সাথে তুলনা করি তাহলে কী দেখি? দু' দল মিলে উৎপাদন করছে, একদল সমস্ত মুনাফা নিজের করে নিয়ে মহা সুখে জীবন যাপন করছে, অন্য দল নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থায় জীবনের ঘানি টানছে। কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক মানুষেতে সুরাসুর রুশরা বলে সব গল্পেই কিছুটা সত্য আছে, আছে ইঙ্গিত। সোভিয়েত আমলে যখন অনেক কিছুই প্রকাশ্যে বলা যেত না। তাই এরা বিভিন্ন আনেকডোট, বিভিন্ন কৌতুকের মাধ্যমে অনেক ঘটনার বর্ণনা দিত, গোপনকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসত। পৌরাণিক কাহিনী সে সময়ের জীবনের এরকম বর্ণনা নয়তো? দুবনা, ০৮ মে ২০২৪

সমস্যা

Image
এক বন্ধুর স্ট্যাটাস দেখলাম। বিল গেটস লাইনে দাঁড়িয়ে বার্গার কেনেন। আম্বানীদের দাদা বৌদি ডাকা যায়। আর আমরা স্যার ম্যাডাম। সমস্যা? এটা আমাদের সংস্কৃতি। অতীতকে অস্বীকার করার সংস্কৃতি। গেটস, জবস এঁরা কত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন সেটা বলতে লজ্জা পান না। শচীন, সামি, বুমরাহ, রোনালদো, মেসি এরা কেউ অতীতের অর্থ কষ্ট নিয়ে লজ্জা পান না। আমাদের তারকারা দেখাতে চায় এরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছে। আমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়ে আমরা গর্ব করতে চাই না, আবহমান কালের সংস্কৃতি বিধর্মীদের সংস্কৃতি বলে ত্যাগ করতে চাই। ১২০১ সালের আগে এ অঞ্চলে যে মানুষ ছিল, রাজ্য ছিল, ১৯৪৭ এর আগে যে এই মাটিতে অনেক গুনী মানুষের জন্ম হয়েছিল সেটা লুকাতে চাই। ইতিহাস অস্বীকার করা মানুষ মানসিক দৈন্যে ভোগে। আইডেন্টিটি ক্রাইসিস এদের চির সাথী। স্যার ম্যাডামের প্রশ্ন এসবের সাথে এক সূত্রে গাঁথা। এসব অনেকটা কাকের ময়ূর সাজার মত। দেশে পোশাক পরিচ্ছদে ইউরোপীয় বা আরব সাজলেও বাইরে আমরা ভাতের জন্য হাপিত্যেশ করি। বাঙালি সত্তাকে বর্জনের শত চেষ্টার পরেও সেটা থেকে মুক্তি পাই না। আবার বিদেশি হবার প্রবল আকাঙ্ক্ষা থাকলেও ওরা আমাদের গ্রহণ করে ...

বোধ

Image
শৃঙ্খল বিভিন্ন ধরনের। বলা হয় শুধু শিকল দিয়ে নয়, ভালোবাসা দিয়েও বাঁধা যায়। বাঁধা যায় একটু ভালো জীবনের আশা দিয়ে, ভালো চাকরি দিয়ে যা হারাতে মানুষ দশ বার ভাবে। উন্নত বিশ্বের স্বাধীনতা এই উন্নত জীবনের অদৃশ্য শিকলে বাঁধা। যতক্ষণ তুমি মেইন স্ট্রীমের সাথে গলা মিলিয়ে স্লোগান দিচ্ছ তোমার বাক স্বাধীনতা সমুন্নত। ভিন্ন স্লোগান তুলতে মানা নেই, তবে তাতে তোমার আগের সেই নিস্তরঙ্গ শান্ত জীবনে যে অশান্তি নেমে আসবে না সেটার কোন গ্যারন্টি নেই। অভিবাসীরা, যারা উন্নত বিশ্বে পুনর্জন্ম গ্রহণ করে তারা এটা বোঝে তাই কখন কী হজম করতে হবে সেটাও জানে। তারা নিজ নিজ জন্মভূমির সমালোচনায় যতটা সোচ্চার নতুন স্বর্গের বিষয়ে ততটাই তুষ্ট। মস্কো, ০৬ মে ২০২৪